উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় / উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ / উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
WhatsAp Group
Join Now
Telegram Group
Join Now
-:উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় / উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ / উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়:-
আমাদের বয়স বৃদ্ধি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অত্যন্ত বেড়েই চলে। কিন্তু বিশেষভাবে যাঁদের ওজন বেশি, যাঁদের হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার অভ্যাস কম, যাঁরা চর্বিজাতীয় খাবার ও লবণ বেশি খান, ধূমপান করেন, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পারিবারিক ইতিহাসও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে উচ্চ রক্তচাপ থাকার কারণে স্ট্রোক, কিডনি বিকল, চোখের ক্ষতি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করে তার প্রতিকার করতে হয়। । তবে ওষুধ সেবনই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় নয়। জীবনযাপনের ধরনও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপের রোগী হন তবে এখন থেকেই জীবনাচরণে কিছু পরিবর্তন আনুন।
চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা জেনে নেওয়া যাক।
আলোচনার বিষয় হল:-উচ্চরক্তচাপ আসলে কি? এর কারন কি এবং এর প্রতিকারের উপায় কি?
উচ্চরক্তচাপ :-
প্রবহমান রক্ত রক্তবাহের প্রাচীরে যে পার্শ্বচাপ প্রদান করে তাকে রক্তচাপ (Blood Pressure / B.P.) বলে। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন পূর্ণবয়স্ক লােকের সিস্টোলিক চাপ 120 mm Hg এবং ডায়াস্টোলিক চাপ 80 mm Hg হয়। কিন্তু কোনাে কারণে পর্ণবয়স্ক ব্যক্তির সিস্টোলিক চাপ 150mm Hg এবং ডায়াস্টোলিক চাপ 90mm Hg-এর বেশি হলে,তাকে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।
উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।চলুন কি কি কারনে হয় বিস্তারিত জেনেনি।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের কারণ:-
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ বহু মানুষের মধ্যে দেখা যায়। সাধারণত 40 বছরের বেশি বয়সি মানুষদের ক্ষেত্রে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ লক্ষ করা যায়। তবে এর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে যে বিষয়গুলি কোনাে ব্যক্তির মধ্যে হাইপারটেনশন’ বা উচ্চ রক্তচাপ রােগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তােলে সেগুলি হল—1. বংশগত : পিতা মাতা বা পরিবারের অন্য কোনাে সদস্যের মধ্যে হাইপারটেনশন থাকলে, সন্তানসন্ততিদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।
মেদাধিক্য ; কোনো ব্যক্তির দেহে অধিক পরিমাণ মেদ সঞ্চিত হলে এবং দেহের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় খুব বেশি বেড়ে গেলে ওই ব্যক্তির উচ্চরক্তচাপ বা
হাইপারটেনশন দেখা দেয়।
হরমােনের প্রভাব ও অন্যান্য কারণ : আমাদের শরীররে মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হরমোন থাকে যা আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এরকম কিছু হরমোনের ত্রুটির বা ঘাটতির কারনে বা প্রভাবে রক্তবাহী নালী সরু হয়ে গেলে অথবা রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রক্তবাহের অন্তঃস্থ প্রাচীরে জমা হলে যে অ্যাথেরােস্ক্রেরােসিস অবস্থা ঘটে, তার ফলেও
হাইপারটেনশন সৃষ্টি হয়।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপসম্পন্ন ব্যক্তির রোগ নিরাময়ের জন্য তার খাদ্য তালিকা প্রতি নজর রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। কারন সঠিক খাদ্য না খাওয়ার কারনে ও এই রোগ দেখা দিতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কেমন ধরনের খাদ্য খাওয়া উচিত।
উচ্চরক্তচাপ রোগী খাদ্য তালিকা প্রস্তুতির মূলনীতি :
এইরূপ রােগীর পথ্যতালিকা প্রস্তুতির মূলনীতি নিম্নরূপ।
1 ক্যালােরির পরিমাণ : হাইপারটেনশন সম্পন্ন ব্যক্তির দৈহিক ওজন অনুযায়ী দৈনিক ক্যালােরি চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করতে । মেদবহুল ব্যক্তির ক্ষেত্রে ক্যালােরির পরিমাণ এমনভাবে কমাতে হবে যাতে তার দেহের ওজন স্বাভাবিক অবস্থায় পৌঁছে যায়।
2. প্রােটিনের পরিমাণ : প্রাপ্তবয়স্ক হাইপারটেনশনযুক্ত ব্যক্তিকে দৈনিক 20 g-এর বেশি প্রােটিন সরবরাহ করা উচিত নয়।
3. ফ্যাটের পরিমাণ ; হাইপারটেনশনের রােগীদের খাদ্যে প্রাণীজ ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ তেলের ব্যবস্থা করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি না পায়।
4. ভিটামিনের পরিমাণ : খাদ্যতালিকায় উপযুক্ত পরিমাণ ভিটামিনের ব্যবস্থা করা দরকার। প্রয়ােজনে 1টি করে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খাওয়ানোর ব্যাবস্থা করতে হবে।
5, খনিজ পদার্থ : খাদ্যে সাধারণ লবণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দৈহিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে কিছু পরিমাণ (200-400 mg) সােডিয়াম লবণ গ্রহণ করা যেতে পারে।প্রক্রিয়াজাত খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে বলে এ ধরণের খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক হোন।
হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপসম্পন্ন ব্যক্তির গ্রহণীয় ও বর্জনীয় খাদ্যসমূহ :
উচ্চরক্তচাপ রােগীর যেসব খাদ্য খাওয়া উচিত এবং যেসব খাদ্য বর্জন করা প্রয়ােজন, তা নীচে আলোচনা করা হল।
1. যেসব খাদ্য খাওয়া উচিত : কম সােডিয়ামযুক্ত চালের ভাত, উদ্ভিজ্জ তেল, সবুজ শাকসবজি, ফলের রস, মাল্টি-ভিটামিন ও মিনারেলস ট্যাবলেট।
2. যেসব খাদ্য খাওয়া অনুচিত। শটকি মাছ, সামুদ্রিক মাছ, বেকিং পাউডারযুক্ত খাবার, লবণযুক্ত বাটার ও চিজ, আচার, লবণাক্ত মাংস, কড়া ধরনের কফি ইত্যাদি।