মাংস রান্না করার সময় যে বিষয়গুলির প্রতি নজর রাখা উচিত

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now
মাংস কম বেশী সকলেরই একটা খুব প্রিয় খাদ্য।
'মাংস হল এক বিশেষ গন্ধযুক্ত প্রােটিনসমৃদ্ধ খাদ্য। একে কাঁচা অবস্থায় একেবারেই ভক্ষণ করা যায় না।
তেলমশলা সহযােগে উত্তমরূপে রন্ধনের পরই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায়। মাংস রন্ধনের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল তাকে সহজপাচ্য করে তােলা এবং মুখরােচক বা সুস্বাদু করে তােলা। মাংসকে কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় না।মাংসকে রান্না করে খেতে হয়। এই মাংস রান্না করার সময় মাংসের সঠিক গুন বজায় রাখতে হলে সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করে রান্না করতে হবে তাহলে মাংসের সঠিক গুন বজায় থাকবে।



কাঁচা মাংসের তুলনায় সেদ্ধ করা মাংস বেশি উপকারী হওয়ার কারণ:---

1)কাচা মাংস দুর্গন্ধযুক্ত  অন্যদিকে সেদ্ধ মাংস সুগন্ধযুক্ত এবং সুস্বাদু হয়।

2)কাঁচা মাংসে বিভিন্ন প্রকার জীবাণু থাকে, অন্যদিকে রান্না করা মাংস তথা সেদ্ধ মাংস জীবাণুমুক্ত হয়।

3)কাঁচা মাংস সহজে পাচিত হয় না। রান্না করলে তথা সিদ্ধ করলে মাংসের কোলাজেন জিলেটিনে পরিণত হয়,ফলে তা সহজে পাচিত হয়।

4)সেদ্ধ করলে কাচা মাংসের ফ্যাট গলে গিয়ে স্বাদ বর্ধন করে। এ ছাড়া মাংসের ভিতরের ক্যালশিয়াম নিষ্কাশিত হয়ে এর পুষ্টিমূল্য বৃদ্ধি করে।


মাংস রান্না করার সময়  যে বিষয়গুলির প্রতি নজর রাখা উচিত:-----

মাংস রন্ধনের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর নজর রাখা উচিত।

1. অত্যধিক উত্তাপে মাংসের প্রােটিন সংকুচিত হয়ে কঠিন হয় ও তা দুম্পাচ্য হয়ে পড়ে। তাই রান্নার সময় তাপ প্রয়ােগ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে যাতে মাংসের মধ্যে থাকা প্রােটিন তাপের প্রভাবে বেশি জমে গিয়ে পরিপাকের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে।

2. রন্ধনের সময় মাংসের প্রােটিন, ভিটামিন এবং খনিজ লবণগুলির অধিক অপচয় রােধ করার জন্য বারবার হাতা দিয়ে নাড়ানাে চলবে না।

 3. মাংসের মধ্যে উপস্থিত লােহিত রক্তকণিকা এবং তার মধ্যেকার হিমােগ্লোবিন যেন পুরােপুরি নষ্ট না হয়।

4. মাংস রন্ধনের পর যে বিশেষ গন্ধ সৃষ্টি হয় তা যেন বজায় থাকে এবং মাংস যেন সুস্বাদু হয়, যা মাংস গ্রহণকারীকে তৃপ্তি দেয়।

5. মাংস রন্ধনের সময় কখনও উচ্চতাপ প্রদান করা উচিত নয়। মাংসের পুষ্টিমূল্য বজায় রাখার জন্য 180°F বা ৪০°C তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে মাংস রান্না করতে হয়। অধিক তাপ প্রদান করলে মাংসের পেশিগুলি শক্ত হয়ে ঠায় ফলে খাওয়ার সময় কষ্ট হয়।

6. মাংস ক্রয় করে এনে দ্রুত রান্না করা উচিত, যাতে তাতে কোনাে জীবাণুর সংক্রমণ না ঘটে।

7. মাংস সেদ্ধ করা জল বা স্টু অনেকসময় ফেলা দেওয়া হয়। এই মাংসের নির্যাস সমন্বিত জল ভিটামিন ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ হয়, তাই ফেলে না দিয়ে রান্নায় ব্যবহার করা উচিত।


মূলনীতি

মাংস রান্না করার সময় নিম্নলিখিত নীতিগুলি অনুসরণ করা প্রয়ােজন।-----

1. মাংস ক্রয় করে বাড়িতে আনার পর তা বেশিক্ষণ ফেলে রাখলে তাতে নানা ধরনের জীবাণু আশ্রয় নেয়। তাই দোকান থেকে এনেই দ্রুত রান্নার ব্যবস্থা করতে হবে।

2. মাংসের টুকরােগুলি যতদূর সম্ভব বড়াে রাখতে হবে। এতে রান্নার স্বাদ ও খাদ্যদ্রব্যের পুষ্টিমূল্য উভয়েই বর্ধিত হয়।।

3. মাংস রান্নার সময় জল উপযুক্ত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। মাংসের নিষ্কাশিত রসে (একসট্রাকটিভ) ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলি মিশ্রিত হয়ে যায়, তাই মাংস রান্নায় ব্যবহৃত জল ফেলে দেওয়া চলবে না। কারণ জল ফেলে দিলে বহু ভিটামিন ও খনিজ লবণ জলের সাথে অপচয় হয়।

4. মাংসকে অল্প তাপে ধীরে ধীরে সেদ্ধ করতে হবে। অধিক তাপমাত্রায়। মাংসের প্রােটিনগুলি শক্ত ও দুম্পাচ্য হয়ে যায়।

5. রন্ধনের সময় রান্নার পাত্রমুখ ঢেকে রান্না করতে হবে। এতে পুষ্টিমূল্য কিছুটা সংরক্ষিত হয়।

6. মাংস রন্ধনের জন্য প্রেশার কুকার ব্যবহার করলে ভালাে হয় এতে সময় কম লাগে ও মাংস সুসিদ্ধ হয়।

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Admin
    Admin ১২ জুলাই, ২০২২ এ ৭:০৭ AM

    Thank You

Add Comment
comment url