ভিটামিন A এর উৎস,শারীরবৃত্তীয় কাজ,অভাবজনিত লক্ষণ

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now
ভিটামিনের কি? : যে বিশেষ খাদ্যোপাদান খাদ্যে অতি অল্প পরিমাণে উপস্থিত থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে  সতায়তা করে এবং শরীরে রােগ  প্রতিরােধক ক্ষমতা গড়ে তােলে , তাকে ভিটামিন বলে ।

ভিটামিন A এর রাসায়নিক নাম হল- রেটিনল

ভিটামিন  A এর উৎস:

হ্যালিবাট , কড় , হাঙর ইত্যাদি মাছের যকৃৎ তেল , গাজর , ব্রকলি  পাতা , রাঙা আলু , পালংশাক ,   কুমড়াে । এ ছাড়া অন্যান্য  শাকসবজি , মাখন , ডিম , দুধ ,

অল্পখরচে খাদ্যতালিকায় ভিটামিন A সরবরাহু :

ভিটামিন A বা রেটিনলের প্রধান উৎসগুলি প্রাণীজ এবং এগুলির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি । তবে ক্যারােটিনসমৃদ্ধ , উদ্ভিজ্জ উৎসগলির দাম কম । ভিটামিন A র পরিবর্তে ক্যারােটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ । করলে প্রয়ােজনীয় ভিটামিনের প্রায় 4গুণ ক্যারােটিন গ্রহণ করা উচিত । অল্প খরচে খাদ্যতালিকায় , প্রাণীজ ভিটামিন A বা রেটিনলের । পরিবর্তে ক্যারােটিন সমৃদ্ধ উদ্ভিজ্জ খাদ্য রাখা যায় , যেমন
1.ভােজ্য তেল হিসেবে পাম তেল
2.সবুজ শাকসবজির মধ্যে শজিন, পালং শাক , মুলা শাক ,
3.গাজর ও পাকা কুমড়াে ,
4.ফল হিসেবে পাকা আম , পাকা পেঁপে এবং পাকা টম্যাটো ইত্যাদি ।

ভিটামিন A এর শারীরবৃত্তীয় কাজ:

মানবদেহে ভিটামিন  A বিভিন্ন প্রকার শারীরবৃত্তীয় কাজে সহায়তা করে যেমন-

         1.চক্ষুর কর্মক্ষমতা রক্ষা করে।
          2.স্নায়ুকলার কর্মক্ষমতা দান করে
          3.অস্থি ও দন্তের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
          4.পেশি গঠন ও কার্য নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে
          5.ত্বকের কোমলতা রক্ষা করে।


ভিটামির অভাবজনিত লক্ষণগুলি লেখাে

ভিটামিন A - এর অভাবে মানবদেহে নিম্নলিখিত রোগ লক্ষণ দেখা যায় । যেমন-

1.চোখের রােগ : ভিটামিন Aর অভাবে চোখের অক্ষিপট বা রেটিনায় অবস্থিত রড কোশ এবং কোন কোশ আক্রান্ত হয় । রেটিনায় যথাযথভাবে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না । দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয় । প্রথম দিকে ভিটামিন Aর অভাবে নিক্টালােপিয়া বা রাতকানা রােগ দেখা দেয় পরে , অর্থাৎ দীর্ঘ দিন ভিটামিন Aর অভাব ঘটলে জেরপথ্যালমিয়া এবং কেরাটোম্যালেশিয়া  রােগ দেখা দেয় ।

2.ত্বকের রােগ :ভিটামিন Aর অভাবে আমাদের ত্বকের ওপরে ছােটো ছােটো গুটির সৃষ্টি হয় মুখমণ্ডলে ব্রণ দেখা দেয় ।ত্বক ব্যাং এর ত্বকের মতাে অমসৃণ হয় ।এই রােগকে ব্যাংত্বক ( toadskin ) বা ফ্রিনােডার্মা ( phrynoderma ) বলা হয়

3.. আবরণী কলার ক্ষতি : ভিটামিন Aর অভাবে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের আবরণী কলা আক্রান্ত হয় এবং ওই আবরণী কলা । ধীরে ধীরে একটি কঠিন আস্তরণে পরিণত হয় । মুখের ভিতরের গাত্রের আবরণী কলা , শ্বাসনালী , খাদ্যনালী , মূত্রনালী প্রভৃতির আবরণী কলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে । মুখের ভিতরের লালাগ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে লালা নিঃসরণ বন্ধ হয়ে গেলে । মুখের ভিতরের অংশ শুকনাে হয়ে যায় , যাকে জেরােস্টোমা বলা হয় )

4. রােগ সংক্রমণ ; আবরণী কলা নষ্ট হওয়ায় দেহের রােগজীবাণুকে বাধা দেবার ক্ষমতা কমে যায় । ফলে সহজেই নানা রােগের সংক্রমণ ঘটে

 5 .কঙ্কালতন্ত্রের ক্ষতি : ভিটামিন Aর অভাবে আমাদের কঙ্কালতন্ত্র আক্রাণন্ত হয় । অস্থির গঠন এবং দাঁতের গঠন ঠিক মতাে হয় না, এদের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটে ।


ভিটামিন  A এর অপচয় রােধের উপায়:

রান্নার সময় আমাদের ভূল ত্রুটির কারনে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজির মধ্যে থাকা ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায় ,তাই আমি আপনাদের জানাবো কি ভাবে রান্না করলে ভিটামিন নষ্ট হবে না।
ভিটামিন A -এর অপচয় রােধে জন্য নিম্নোক্ত উপায়গুলি অবলম্বন করা যেতে পাৰে ।

 1.বাযুর অক্সিজেন দ্বারা ভিটামিন A জারিত হয় । তাই ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্যসামগ্রীকে বেশি সময় ধরে খােলা বায়ুতে রাখা অনুচিত ।

2.অধিক উত্তাপে ভিটামিন A বিনষ্ট হয় । সে কারণে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাদ্যসামগ্রীকে বেশি তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করা অনুচিত ।

3.আলাের সংস্পর্শে  ভিটামিন A বিনষ্ট হয় । সেই জন্য ভিটামিন A যুক্ত খাদ্যসামগ্রীকে বাদামি বা কালাে রঙের বােতলে রাখা উচিত ।

4. ভিটামিন A - যুক্ত খাদ্যসামগ্রীকে শুকনাে করলে ভিটামিন A নষ্ট হয় । সেই জনা এইজাতীয় খাদ্যকে শুকনাে না করে , ফ্রিজের মধ্যে রাখা উচিত । এর ফলে তা দীর্ঘ দিন অবিকৃত অবস্থায় থাকে এবং এর অপচয় রােধ হয় ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url