খাদ্যগ্রহণের সময় অধিক জলপান করা উচিৎ নয় কেন?
WhatsAp Group
Join Now
Telegram Group
Join Now
1.একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক কী পরিমাণ জলপান করা উচিৎ?
উঃ-একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক দুই থেকে তিন লিটার জলপান করা উচিৎ।2. আমাদের তৃষ্ণা পায় কেন?
উঃ-আমাদের দেহ থেকে সব সময়ই কিছু পরিমাণ জল বেরিয়ে যাচ্ছে। মূলত মূত্রের মাধ্যমে এটি ঘটে। এ ছাড়া স্বেদ বা ঘাম হিসেবে এবং নিঃশ্বাসের সঙ্গেও জল বাইরে বেরিয়ে যায়। আবার বিভিন্ন বিপাক ক্রিয়া পরিচালনায় জল ব্যবহৃত হয়। যদিও বিপাক ক্রিয়ায় আমাদের দেহে কিছু পরিমাণ জল উৎপন্ন হয়, তবুও তা প্রয়ােজনের তুলনায় খুবই কম। এইসব কারণে দেহে জলের অভাব হলেই আমাদের তৃষ্ণা পায়।
3, খাদ্যগ্রহণের সময় অধিক জলপান করা উচিৎ নয় কেন?
উঃ-খাদ্যগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে বেশি জলপান করা উচিৎ নয়। কারণ, বিভিন্ন লালাগ্রন্থি এবং পাকগ্রন্থি-নিঃসৃত উৎসেচক এবং পরিপাকে সাহায্যকারী অম্লরসগুলি বেশি জলপানের ফলে জলের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে একেবারে পাতলা হয়ে যায়, এরফলে পরিপাক ক্রিয়া বিঘ্নিত হয় এবং অনেক সময় বদহজম, অম্ল ও অজীর্ণ সৃষ্টি হয়। এই কারণে খাদ্যগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে জলপান না করে, খাদ্যগ্রহণের দুই ঘণ্টা পরে, যখন গৃহীত খাদ্যের অংশ পাচিত হয় অথবা উৎসেচক ও পারসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়, ওই অবস্থায় জলপান করলে জল দ্রুত অন্ত্রে পৌঁছােয় এবং শােষণে অংশ নেয়। বর্তমানে পুষ্টিবিদদের মতে, খাদ্যগ্রহণ শুরু করার পূর্বে অল্প পরিমাণে জলপান করা যেতে পারে।
4. দেহে জলের আধিক্য ঘটলে কী হয়?
উঃ-কোনাে কারণে, যদি দেহে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় অথচ অজৈব লবণের পরিমাণ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি না পায়।তখন দেহে ‘ওয়াটার ইনটক্সিকেশন’ নামে একধরনের উপসর্গ দেখা যায়। এরফলে, কোশে অতিরিক্ত জল প্রবেশ করার ফলে কোশে জল জমে, দেহ তাপ কমে যায়, হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, দেহ টলমল করে,দুর্বল লাগে এবং বমিবমি ভাব হয়, কিডনি স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না।
মানবদেহে জলের উৎস:
- মানবদেহে জলের প্রধান উৎস হল পানীয় জল বা পাের্টেবেল ওয়াটার।
- এছাড়াও বিভিন্ন রকম তরল পানীয় খাদ্য যেমন—দুধ, চা, কফি, সরবৎ, ঝােল ইত্যাদির মাধ্যমেও আমাদের দেহে জল প্রবেশ করে।
- বিভিন্ন রকম কঠিন খাদ্যে যেমন—ফল, ভাত, রুটি, ডাল ইত্যাদির মাধ্যমেও আমাদের দেহে জল প্রবেশ করে।
- এ ছাড়া বিভিন্ন খাদ্য জারিত হয়ে এবং বিপাক ক্রিয়ার ফলেও কিছু পরিমাণ জল আমাদের দেহে উৎপন্ন হয়।
জল সাম্যের অভাবে ফলে কি হয়?
1. রক্তরস, কোবহির্ভূত রস ও কোশাভ্যন্তরীণ রসের ঘনত্ব বেড়ে যায়। কোশের ভিতর থেকে জল বাইরে বের হয়ে আসে এবং কোশগুলি জলবিহীন বা শুকনাে হয়ে পড়ে।
2, ক্ষুধামান্দ্য দেখা যায়। পরিপাক ও শােষণ ব্যাহত হয়, দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
3, রক্তচাপ কমে যায় ও রক্তসংবহনে বিঘ্ন ঘটে। ত্বক শুকিয়ে যায়, অনেক সময় ত্বক কুঞ্চিত হয়।
4. বৃক্কের কার্যাবলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মূত্রের পরিমাণ
কম হয় ও রক্তে নাইট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ।
5. দেহকোশে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য বিঘ্নিত
হয়। দেহে অম্লাধিক্যের (acidosis) প্রবণতা
লক্ষ করা যায়।।
6, স্নায়ু এবং পেশিকোশের দুর্বলতা এবং অবসাদ
দেখা দেয়। অনেক সময় পেশিতে টান ধরে।
7, চোখ ভিতরে ঢুকে যায়, শিশুদের অশু ছাড়া কান্না হয়।