সদ্য রােগ থেকে মুক্ত পাওয়া ব্যক্তির পথ্যতালিকার

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

 সদ্য রােগমুক্ত ব্যক্তির পথ্যতালিকার:(diet chart for an adult during convalescence )

সদ্য রোগ থাকে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তি আগের মতো সব কিছু খেতে পারে না। রোগ ভালো হওয়ার পর থেকে কিছু দিন একটু নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করতে হয়। সঠিক নিয়মে খাওয়া দাওয়া করে খুব তাড়াতাড়ি আগের অবস্থায় ফিরে যায় যায়।



সদ্য রােগমুক্ত ব্যক্তির পথ্যতালিকার প্রধান বৈশিষ্ট্য ( Main features of diet chart for an adult during convalescence ) :

 সদ্য রােগমুক্ত ব্যক্তির খাদ্যতালিকা উচ্চ তাপশক্তিযুক্ত এবং উচ্চ প্রােটিনযুক্ত হওয়া দরকার । উচ্চ তাপশক্তিযুক্ত খাদ্যের বৈশিষ্ট্য হল , এতে ক্যালােরির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি হবে । এই খাদ্যে সাধারণত 3000 kcal বা তার বেশি ক্যালােরির ব্যবস্থা করা হয় । উচ্চ প্রােটিনসমৃদ্ধ খাদ্য বলতে । বােঝায় , সাধারণ খাদ্যের চেয়ে প্রােটিনের পরিমাণ 100 g থেকে 150 g বেশি । 


সদ্য রােগমুক্ত ব্যক্তির পথ্যের প্রকৃতি(Nature of diet of an adult duringconvalescence ) :


সঠিক চিকিৎসায় ধীরে ধীরে রােগের লক্ষণগুলি লােপ পায় ও রােগী সুস্থ হয়ে ওঠে । রােগের লক্ষণ দূরীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু রােগী পূর্বের স্বাস্থ্য ফিরে পায় না । কারণ দীর্ঘদিন রােগে ভােগার ফলে রােগী যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে , অন্যদিকে তার দেহের ওজনও কমে যায় । তাই সদ্য রােগমুক্ত মানুষের খাদ্য বা পথ্য প্রস্তুতির সময় কতকগুলি বিষয় বিবেচনা করা প্রয়ােজন । এগুলি হল — 


  • সদ্য রােগমুক্ত ব্যক্তির পরিপাকতন্ত্র প্রথমদিকে বেশ দুর্বল থাকে । তাই রােগীকে সহজপাচ্য খাদ্য দেওয়া উচিত । 



  •  রােগে ভােগার ফলে শরীরে যে ক্ষয় হয় , তা পূরণের জন্য রােগীকে ক্ষয়পূরণে সহায়ক খাদ্য দেওয়া প্রয়ােজন । বিশেষ করে , সহজপাচ্য প্রথম শ্রেণির প্রােটিন , যেমন — মাছ , মাংস , দুধ , ডিম প্রভৃতি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা দরকার । 



  •  চর্বিহীন টাটকা ছােটো মাছ ভালােভাবে সেদ্ধ করে , অল্প মশলা । সহযােগে রান্না করে রােগীকে দেওয়া যেতে পারে । চর্বিযুক্ত বড়াে মাছ হজমের ব্যাঘাত ঘটায় । দুধ ও অর্ধসেদ্ধ ডিম দেওয়া যেতে পারে ।  



  • এই সময় রােগীর দৈনিক প্রােটিনের চাহিদা 125 g থেকে 150 g পর্যন্ত হয়ে থাকে । 




  •  রােগগ্রস্ত অবস্থায় রােগীকে যদি তরল খাদ্য পরিবেশন করা হয় , তবে রােগমুক্তির পর তাকে কঠিন খাদ্য না দিয়ে অর্ধতরল খাদ্য দিতে হবে । ধীরে ধীরে তার সঙ্গে কিছু কঠিন খাদ্য দিয়ে রােগীকে পুনরায় কঠিন খাদ্যবস্তু পরিপাকে অভ্যস্ত করাতে হবে ।



  •  রােগমুক্তির পর রােগীর জন্য খই , কর্নফ্লেক্স , ওট মিল প্রভৃতি বেশ উপযােগী খাদ্য । শরীরে কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণের জন্য সরু চালের গলানাে ভাত এবং চিনি ও গুড় দেওয়া যেতে পারে । 



  • স্নেহপদার্থের চাহিদা পূরণের জন্য ক্রিম বা মাখন দেওয়া যেতে পারে । ।





অ্যালার্জি আছে এমন ব্যক্তির পথ্য :


পরীক্ষানিরীক্ষায় দেখা গেছে , কিছু কিছু প্রােটিনসমৃদ্ধ খাদ্য ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে । অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাদ্যের বিশেষ উপায়ে গুণ পরিবর্তন করে তার অ্যালার্জিক ক্ষমতা নষ্ট করে রােগীকে দেওয়া যেতে পারে । যেমন — দুধে অ্যালার্জি হওয়া ব্যক্তিকে দুধ ভালােভাবে ফুটিয়ে দিলে , রােগীর অ্যালার্জি সৃষ্টি নাও হতে পারে । অ্যালার্জি রােগীর পথ্য প্রস্তুতির সব থেকে ভালাে উপায় হল — রােগীর কোন কোন খাদ্যে অ্যালার্জি আছে তা জেনে নিয়ে সেই খাদ্য খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং তার পরিবর্তে পরিপূরক খাদ্য রােগীকে পরিবেশন করা । যেমন — দুধে অ্যালার্জি থাকলে দুধ ও দুধ থেকে প্রস্তুত খাদ্য খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে । সেক্ষেত্রে পরিপূরক খাদ্য হিসেবে সবুজ শাকসবজি , ফল , মাছ , মাংস , ডিম প্রভৃতি রােগীকে দিতে হবে , যাতে রােগীর ভিটামিন , ক্যালােরি ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ হয় । কোনাে ব্যক্তির একাধিক খাদ্যে অ্যালার্জি থাকলে , উক্ত খাদ্যগুলিকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং কিছু দিন পর পরীক্ষা স্বরূপ রােগীকে ওই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাদ্যগুলি আবার অল্প পরিমাণে দিতে হবে । রােগীর তা সহ্য হলে , তার পরিমাণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে হবে । যদি তা সহ্য না হয় , তবে তা খাদ্যতালিকা থেকে একেবারে বাদ দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url