1) শিখন সংজ্ঞা, ? শিখনের উপাদান হিসাবে মনােযােগ সংজ্ঞা,মনােযােগের বৈশিষ্ট্য,মনােযােগের ব্যক্তিগত নির্ধারক ও বস্তুগত নির্ধারক গুলো আলোচনা কর।
Hi Students ,
নমস্কার বন্ধুরা আজকে আপনাদের সঙ্গে H.S Education Project Topic Learning in Bengali PDF টি শেয়ার করছি । Higher Secondary এর Education Project এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । সুতরাং সময় নষ্ট না করে নীচের দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইলটি সংগ্রহ করে নিন এবং বাড়িতে বসেই Project লিখতে থাকুন।
Note-
এই পেজের নীচের দিকে PDF download link দেওয়া আছে।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবিজ্ঞান Project |
1) শিখন সংজ্ঞা, ? শিখনের উপাদান হিসাবে মনােযােগ সংজ্ঞা,মনােযােগের বৈশিষ্ট্য,
মনােযােগের ব্যক্তিগত নির্ধারক ও বস্তুগত নির্ধারক গুলো আলোচনা কর।
শিখন সংজ্ঞা : শিখন হল সেই মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে ব্যক্তি নতুন আচরণ সম্পন্ন করার দক্ষতা অর্জন করে, অর্থাৎ যে-মানসিক প্রক্রিয়া অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রগতিশীল আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যক্তির দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে তাকে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে অভিযােজনে সাহায্য করে,
তাকেই বলা হয় শিখন।
মনােবিদ ম্যাকগিয়ক (McGeoch) বলেছেন, “সক্রিয়তা, অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ব্যক্তিজীবনে কর্মসম্পাদনের প্রকৃতি পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকেই বলা হয় শিখন।”
থর্নডাইক (Thorndike)-এর মতে—“উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার (Stimulus and Response) মধ্যে সঠিক সম্বন্ধ স্থাপনই হল শিখন।”
গেটস (Gates) বলেছেন-“শিখন হল অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আচরণের পরিবর্তন।
ড্রেভার (Drever) বলেছেন—“প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে আচরণের মধ্যে পরিবর্তনসাধন হল শিখন।”
বিভিন্ন মনােবিদের দেওয়া সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে একটি সংজ্ঞা প্রদান করা হয়, তা হল—পরিবেশের সঙ্গে সার্থক সংগতিবিধানের জন্য যে-মানসিক প্রক্রিয়া অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন অভিজ্ঞতা আয়ত্ত করার মাধ্যমে ব্যক্তির আচরণধারার মধ্যে পরিবর্তন ঘটায়, তাই হল শিখুন।
4) শিখনের উপাদানগুলি (Factors of Education)
শিখন হল অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আচরণের ক্রমপরিবর্তন। এটি একটি জটিল মানসিক প্রক্রিয়া। পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে মানিয়ে নেওয়ার প্রয়ােজনে, নতুন নতুন অবস্থার সঙ্গে অভিযােজন ঘটাতে গেলে শিখন বিশেষভাবে দরকার। আমাদের ব্যক্তিত্ব, আচার-আচরণ, চিন্তন, স্বভাব, জ্ঞান সবই শিখনের ফল। তাই যথাযথ শিখন ঘটলে আমাদের মানসিক শক্তিগুলির উন্নতি হয় এবং আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারি।
শিখনের বৈশিষ্ট্যগুলি পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, শিখন কয়েকটি উপাদানের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই সমস্ত উপাদানগুলিকে বলা হয় শিখুনসহায়ক উপাদান।
শিখনের উপাদান হিসাবে মনােযােগ সংজ্ঞা, কোনাে বিষয়ের সঙ্গে মনের যােগকে বলে মনােযােগ। উদ্দেশ্যলাভের জন্য যখন কোনাে বস্তুকে চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে হাজির করা হয়, তখন আমরা তাকে বলি মনােযােগ।মনােযােগের জন্য মন কোনাে একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত (Focussed) হয়। মনােযােগ সম্পর্কে উডওয়ার্থ (Woodworth) বলেছেন, “বহু উদ্দীপকের মধ্যে থেকে একটি বিশেষ উদ্দীপককে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া হল মনােযােগ।” অর্থাৎ মনােযােগ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার ফলে চেতনা বহুবিষয়ের মধ্যে থেকে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের প্রতি কেন্দ্রীভূত হয়।
মনােযােগের বৈশিষ্ট্য:
মনােযােগ সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে হলে তার বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করা দরকার। এই বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
A কেন্দ্রানুগ প্রক্রিয়া : টিচেনারের (Titchner) মতে চেতনার দুটি স্তর, যথা—কেন্দ্রীয় চেতনার স্তর ও প্রান্তীয় চেতনার স্তর। বস্তু যখন কেন্দ্রীয় চেতনার স্তরে অবস্থান করে তখন বস্তু সম্পর্কে আমরা সচেতন হই অর্থাৎ মনােযােগী হই। আর বস্তু যখন প্রান্তীয় চেতনার স্তরে থাকে তখন বস্তুকে আমরা প্রত্যক্ষ করি না।
B) নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া : মনােবিদ ফ্লেচার (Fletcher) বলেছেন, “মনােযােগ হল একটি নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া।” এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে আমাদের মন বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে থেকে বিশেষ একটি বিষয় নির্বাচন করে আমাদেরকে সেই বিশেষ বিষয়ের প্রতি মনােযােগী করে তােলে।
C.পরিবর্তনশীলতা : মনােযােগ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। এটি দোলকের মতাে সবসময় আন্দোলিত হতে থাকে। কোনাে নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি স্থিরভাবে থাকে না, বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে সঞ্চালিত হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি দু-সেকেন্ড অন্তর এটি ঘটে। উদ্দীপকের শক্তির ওপরে মনােযােগের পরিবর্তনশীলতা নির্ভর করে। উদ্দীপকের শক্তি যত বেশি হবে মনােযােগের পরিবর্তনশীলতার পরিমাণ তত হ্রাস পাবে।
D ইচ্ছামূলক প্রক্রিয়া : মনােযােগ হল ইচ্ছামূলক মানসিক সক্রিয়তা, যার দ্বারা জ্ঞান নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ এই মানসিক প্রক্রিয়াটি যে-দিকে চালিত হয় সেই বিষয়ের ধারণা স্পষ্ট হয়।
E মনােযােগের পরিসর : কোনাে একটি মুহূর্তে আমরা একসঙ্গে অনেকগুলি বস্তুর প্রতি মনােযােগ দিতে পারি না। কারণ চেতনার পরিধিতে বহু বস্তু বা ঘটনা অবস্থান করে, তাদের মধ্যে একটি ঘটনা চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসে উপস্থিত হয়, তখন তার প্রতি আমরা মনােযােগ দিয়ে থাকি।
মনােযােগের ব্যক্তিগত নির্ধারক:
ব্যক্তিগত নির্ধারক: যে-সমস্ত মানসিক অবস্থা ব্যক্তির মনােযােগকে আকর্ষণ করতে সাহায্য করে, তাদেরকে বলা হয় ব্যক্তিগত নির্ধারক। এগুলি হল-
1 আগ্রহ : ম্যাকডুগাল (McDougall)-এর মতে, “Interest is the latant attention and attention is interest in action”—অর্থাৎ আগ্রহ হল সুপ্ত মনােযােগ এবং মনােযােগ হল সক্রিয় অনুরাগ। আগ্রহ ও মনােযােগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বর্তমান। অর্থাৎ যার খেলার প্রতি আগ্রহ আছে সে স্বভাবতই সংবাদপত্রের খেলার পৃষ্ঠায় মনােযােগী হয়।
2 প্রবৃত্তি : মনােবিদ ম্যাকডুগাল (McDougall) প্রবৃত্তি সম্পর্কে আলােচনা করতে গিয়ে মনোেযােগর কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, প্রবৃত্তি মনােযােগের অন্যতম শর্ত। উদাহরণস্বরূপ ক্ষুধা হল একপ্রকার প্রবৃত্তি, তাই যখন আমাদের খিদে পায়, তখন আমরা খাওয়ার সামগ্রীর প্রতি মনােযােগী হই।
3.অভ্যাস : অভ্যাসও মনােযােগের শর্ত হিসেবে কাজ করে। অভ্যাসের বশেই আমরা কোনাে কোনাে জিনিসের প্রতি মনােযােগ দিয়ে থাকি। যাদের সকালে খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস, তাদের সহজেই সংবাদপত্রের দিকে মন চলে যায়।
4.সেন্টিমেন্ট: সেন্টিমেন্ট হল একধরনের মানসিক সত্তা যা কোনাে ব্যক্তি, ঘটনা, বস্তু বা বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ—জন্মভূমির প্রতি ভালােবাসা, ধর্মের প্রতি বিশ্বাস ইত্যাদি।
5.প্রবণতা: প্রবণতাও মনােযােগ আকর্ষণ করে। দক্ষ গায়ক, শিল্পী, চিত্রকর প্রভৃতি নিজ নিজ প্রবণতার ফলেই নিজের বিষয়ের প্রতি মনােযােগী হন।
বস্তুগত নির্ধারক:
বাহ্যিক জগতের কোনাে বস্তু বা উদ্দীপক যখন ব্যক্তির মনােযােগ আকর্ষণ করে, তখন তাকে বলা হয় বস্তুগতনির্ধারক। এই বস্তুগত নির্ধারকগুলির মধ্যে অন্যতম হল-
1.তীব্রতা : উদ্দীপকগুলির মধ্যে যে-উদ্দীপকটির তীব্রতা সব থেকে বেশি তার প্রতি আমাদের মনােযােগ চলে যায়।যেমন—উজ্জ্বল রং বা তীব্র শব্দ সহজেই আমাদের মনােযােগ আকর্ষণ করে।
2 বিস্তৃতি : উদ্দীপকের বিস্তৃতি আমাদের মনােযােগকে আকর্ষণ করে। অস্বাভাবিক দীর্ঘ, বেঁটে বা স্থূলকায় ব্যক্তির প্রতি আমাদের মনােযােগ সহজেই চলে যায়।
3 পুনরাবৃত্তি : একই জিনিস পুনরাবৃত্তি হলে তার দ্বারা আমাদের মনােযােগ আকৃষ্ট হয়। শ্রেণিকক্ষে একই বিষয়বস্তু বারে বারে উপস্থাপিত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা আবশ্যিকভাবে তার প্রতি মনােযােগী হয়।
4 অভিনবত্ব : অভিনব কোনাে বস্তু আমাদের মনােযােগ আকর্ষণ করে। অর্থাৎ নতুন ধরনের পােশাক পরিহিত ব্যক্তি দেখলে সকলের মধ্যে তার প্রতি মনােযােগ চলে যায়।
5 গতিশীলতা : স্থিরবস্তুর তুলনায় গতিশীল বস্তু আমাদের মনােযােগ সহজেই আকর্ষণ করে। চলমান আলাের বিজ্ঞাপনের প্রতি আমরা আকৃষ্ট হই।