আবহবিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণি ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF | Class 9 Geography 5th chapter question in bengali pdf

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আবহবিকার নবম শ্রেণির ভূগোলের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর |নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF | Class 9 Geography 5th chapter question in bengali pdf

 

আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি  নবম শ্রেণির ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় আবহবিকার প্রশ্ন উত্তর PDFClass IX geography five chapter question Pdf in bengali | WB Class Nine Geography question in bengali | WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য নবম শ্রেণি ভূগোলের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে | নবম শ্রেণি ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় আবহবিকার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class ix Geography 5th chapter important Question in Bengali Pdf  ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf , Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।


‘আবহবিকার’ নবম শ্রেণির ভূগোলের প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।


আবহবিকার mcq প্রশ্ন

1.

2.



নবম শ্রেণি ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও]

নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের 1 নং প্রশ্ন উত্তর

1.

2.





নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় ২ নং প্রশ্ন উত্তর

1 .আবহবিকার (Weathering) 

সংজ্ঞা : আবহাওয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদান, যেমন –উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, তুষারপাত প্রভৃতির দ্বারা যান্ত্রিকভাবে শিলা বিচুর্ণীকৃত হলে কিংবা অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল প্রভৃতির দ্বারা রাসায়নিকভাবে শিলা বিয়ােজিত হলে, তাকে আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বলে।

বৈশিষ্ট্য : 0 আবহবিকারে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা বিচুর্ণীকৃত বা বিয়ােজিত হয়। ® বিচুর্ণীকৃত বা বিয়ােজিত পদার্থগুলি মুল শিলার কাছাকাছি পড়ে থাকে।


উদাহরণ : ক্ষুদ্রকণা বিসরণ, প্রস্তরর্চাই খণ্ডীকরণ,শঙ্কমােচন (যান্ত্রিকভাবে সৃষ্ট), অঙ্গারযােজন, জারণ, আবিশ্লেষণ(রাসায়নিকভাবে সৃষ্ট) প্রভৃতি প্রক্রিয়ায় আবহবিকার সংঘটিত হয়।


2 .যান্ত্রিক আবহবিকার (Mechanical Weathering)* * [ME 91, 80, 88, 87)

সংজ্ঞা : উয়তার তারতম্য, উয়তা ও শুষ্কতার পার্থক্য, শিলাস্তরে চাপের প্রভেদ, তুষার ও লবণের কেলাস গঠন, জৈবিক কার্যকলাপ ইত্যাদির প্রভাবে শিলাসমুহ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে সেই স্থানে অবস্থান করলে, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলার ভৌত পরিবর্তন হয় কিন্তু কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ শিলা উপাদানের নিজস্ব ধর্ম অক্ষুন্ন থাকে।

প্রক্রিসমূহ : যান্ত্রিক আবহবিকার প্রধানত পাঁচটি পদ্ধতিতে ঘটে থাকে, যথা-

  • তাপের প্রভাবে শিলার সংকোচন ও প্রসারণ,

  • কোসন প্রক্রিয়া,

  • চাপমোচনের ফলে প্রসারণ,

  • কলয়েভীর উৎপাটন এবং

  • বৃষ্টিপাত ও আর্দ্রতার প্রভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার।

প্রভাবিত অঞ্চল : 0 উয় মরু ও @ শীতল জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রভাব সর্বাধিক।


3. হিউমাস (Hunus) 

উত্তর সংজ্ঞা : উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মৃত্তিকার উপরিস্তরে জৈব পদার্থরূপে সঞ্চিত হয়। ওই সব পদার্থ মৃত্তিকাহিত আণুবীক্ষণিক জীব দ্বারা বিয়ােজিত হয় এবং তা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে এক জটিল কালাে বর্ণের পদার্থ সৃষ্টি করে, একে হিউমাস বলে। হিউমাসসমৃদ্ধ মাটি খুব উর্বর ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়। এই ধরনের মাটির জলধারণ ক্ষমতাও খুব বেশি। কিন্তু, হিউমাস মাটিতে দীর্ঘদিন থাকতে পারে না। এটি ধীরে ধীরে খনিজ পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে মাটিতে মিশে যায়। হিউমাস সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন ব্ৰলে।


4. রেগােলিথ (Regolith)

উত্তর সংজ্ঞা : মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে আদি শিলা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ হয়। এই শিলাচূর্ণ ভূত্বকের উপর শিথিল ও কোমল একটি আবরণ সৃষ্টি করে। একে রেগােলিথ বলে। রেগােলিথই মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায় ও প্রধান শর্ত। কালক্রমে বিভিন্ন জৈবিক, রাসায়নিক ও জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্লেগােলিথের সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণগুলি বিশ্লিষ্ট ও স্তরীভূত হয়ে মৃত্তিকা সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে, ব্রেগােলিথ হল আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট যাবতীয় বস্তুভারের অসমৃদ্ধ স্তর। এই বস্তুটি শিলাচূর্ণ ও মৃত্তিকার মাঝামাঝি অবস্থা।

উদাহরণ : পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্জিত ট্যালাস, স্ক্রি ইত্যাদি হল রেগােলিথ জাতীয় পদার্থ।


5. পুঞ্জিতক্ষয় (Mass Wasting) *[ME 03]

উত্তর সংজ্ঞা : আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট বিয়ােজিত ও চূর্ণবিচূর্ণ শিলাখণ্ড, মৃত্তিকা প্রভৃতি পুঞ্জাকারে পিচ্ছিল তলের মাধ্যমে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে দ্রুত বা ধীরভাবে নীচে নেমে আসার সময় ভূ-গাত্রে যে ক্ষয় হয়, তাকে পুঞ্জিতক্ষয় বলে।

কারণ :

বৈশিষ্ট্য : @ গাছের গােড়ার বক্রতা দেখে পুতিক্ষয়ের গতি বােঝা যায়, ও পার্বত্য অঞলে পুতিক্ষয় প্রায়ই হয়, ও জল পুঞ্জিতক্ষয়ে সহায়তা করলেও পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে না।

শ্রণিবিভাগ :

ফলাফল :

উদাহরণ : ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞলে পুঞ্জিতক্ষয় প্রচুর পরিমাণে সংঘটিত হয়।


6.নগ্নীভবন কাকে বলে ? *

উত্তর আবহবিকার, কয়ীভবন এবং পুঞ্জিতক্ষয়ের সম্মিলিত প্রভাবে শিলাস্তরের উপরিভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অপসারিত হলে অভ্যন্তরভাগ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এভাবে শিলাস্তরের ভিতরের অংশ ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হলে, তাকে বলা হয় নগ্নীভবন। সুতরাং, নগ্নীভবন হল আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্ছিতক্ষয়ের সম্মিলিত ফল। 




6 স্ক্রি বা ট্যালাস কাকে বলে ?

উত্তর। শীতপ্রধান পার্বত্য অঞলে যান্ত্রিক আবহবিকারের মাধ্যমে শিলাস্তর ফেটে টুকরাে টুকরাে অসংখ্য কোণবিশিষ্ট প্রস্তরখণ্ডের সৃষ্টি করে। এই কোণবিশিষ্ট প্রস্তরখণ্ডগুলি উল্লম্বভাবে পর্বতগাত্রে অবস্থান করলে তাকে, স্ক্রি বা ট্যালাস বলে।


7 ফেলসেনমার বা ব্লকস্পেড কাকে বলে?

উত্তর তুষারের দ্বারা আবহবিকৃত কোণবিশিষ্ট স্ক্রি বা ট্যালাসে পর্বতের পাদদেশ আবৃত থাকলে, তাকে ফেলসেনমার বা ব্লকম্পেড় বা প্রস্তরক্ষেত্র বলা হয়।


9টেরারােসা কী ? *

উত্তর ‘টেরা' (Terra) শব্দের অর্থ মৃত্তিকা এবং ‘রােসা’ (Rossa) শব্দের অর্থ ‘লাল 

ক্রান্তীয়। অঞ্চলে ল্যাটেরাইটের মতাে একপ্রকার লাল রঙের মৃত্তিকাকে টেরারােসা বলে। আবহবিকারের ফলে (প্রধানত কার্বনেশন প্রক্রিয়ায়)চুনাপাথরযুক্ত বা কাস্ট অঞ্চলে লৌহকণাযুক্ত যে ভূ-আস্তরণের সৃষ্টি

হয়, তাকে ‘টেরারােসা’ বা লাল মাটি বলে।


14 কাস্ট ভূমিরূপ কাকে বলে?

উত্তর চুনাপাথরযুক্ত অঞলে ভৌমজলের কার্যের ফলে যে বিশেষ ধরনের তুমিনুপের সৃষ্টি হয়, তাকে কার্ট ভূমিরূপ বলে। সাধারণত কার্বনেশন প্রক্রিয়া জল, বাতাসের কার্বন ডাইন্যাইড চুনাপাথরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম বাইকার্বোনেট উৎপন্ন করে এই প্রকার ভুমিরুপ গঠন করে। 


15 সােলাম কী ? **

সংজ্ঞা : ইংরাজি 'Soi৷' শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ 'So-lum' (সসালাম) থেকে, যার অর্থ ভূমি বা মেঝে (Floor)। আবহবিকারের ফলে আদি শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যে রেলগালিথের সৃষ্টি হয় তার উপরিভাগের যে মৃত্তিকা স্তর থেকে উদ্ভিদ খাদ্য সংগ্রহ করে তাকে সসালাম বলে। এককথায় মৃত্তিকার E ও B স্তরকে একত্রে সােলাম বলে।

বৈশিষ্ট্য ; 0 অপরিণত মাটিতে সােলাম গঠিত হয় ।কেবলমাত্র পরিণত মাটিতেই সােলাম গঠিত হয়। @ এটি উদ্ভি ছােটো প্রাণী ও জীবাণুকুলের আবাসস্থল। এটি মৃত্তিকার জৈরসায়নাগার হিসেবে কাজ করে।


16 ফালি চাস বা Strip Cropping কী ?

উত্তর অরক্ষিত বা উদিবিহীন ঢালু জমিতে আড়াআড়িভাবে

17 ধাপ চাব বা Step Cropping কী ?

উত্তর পাহাড়ি অঞলে ঢল কয়েকটি ভাগে কেটে ধাপের (step)সৃষ্টি করে প্রবহমান জলের গতি প্রশমিত করা হয় এবং কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। এই কৃষিকাজকে ধাপ চাষ বা Step Cropping বলে। এর ফলে পাহাড়ের ঢালে মৃত্তিকা ক্ষয় কম হয়।


18 সমােন্নতি শস্যায়ন (Contour farming) কাকে বলে?

উত্তর শস্য চাষের জন্য মালভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলের ঢালু জমিতেসমােন্নতি রেখা বরাবর আল ও নালা  (Ridge) তৈরি করা হয়। এর ফলে শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টির জল আলে বাধা।পেয়ে মৃত্তিকায় অনুপ্রবেশ করে এবং অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জল নালার মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যায়, এই শস্যায়নকে সমােন্নতি শস্যায়ন বলে। ঢালু জমিতে মৃত্তিকাকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার অন্যতম পদ্ধতি হল এই সমােন্নতি শস্যায়ন।


3 রেগােলিথ মাটি নয় কেন?

উত্তর সময়ের সঙ্গে পরিণত পর্যায়ের শেষে আবহবিকারজাত সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণের সঙ্গে খনিজদ্রব্য, জৈবপদার্থ, জল ইত্যাদি মিশে মাটি তৈরি হয়। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আবহবিকারের ফলে শিলা বিচূর্ণীভূত হয়ে রেগােলিথ সৃষ্টি হয় যা ভূত্বকের উপর পাতলা, কোমল ও শিথিল আস্তরণরূপে বিরাজ করে। এদের বিশেষ কোনাে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম থাকে না। তাই রেগােলিথকে মাটি বলা যায়না। এজন্য যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্জিত ট্যালাস বা স্ক্রি-কে মাটি বলা যায় না।



আবহবিকার 3 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় 3 নং প্রশ্ন উত্তর

[1]  1 আবহবিকার কাকে বলে? * 

উত্তর আবহবিকাৰ : আবহবিকার’ (Weathering) শব্দটি আবহাওয়া (M.Weather) থেকে সৃষ্ট। আবহবিকার শব্দটির সরল অর্থ হল আবহাওয়ার দ্বারা ভূপৃষ্ঠের বিকার বা পরিবর্তন।

আহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের (উতা, আদ্রর্তা, বায়ুপ্রবাহ, বৃতিপাত, তুষারপাত ইত্যাদি) প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের শিলাসমূহের উপরিভাগের যে বিচূর্ণীভবন ও বিয়ােজন হয়, তাকে আবহবিকার বলে। এর ফলে, শিলাসমূহের উপরিভাগ চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থায় মূল শিলাস্তর থেকে বিয়ােজিত হয়ে ওই স্থানেই অবস্থান করে।


| উদাহরণ : লােহাতে মরচে পড়া, পুরানাে বাড়ির ঢালাই ফেটে যাওয়া এগুলি সবই আবহবিকারের ক্ষুদ্র সংস্করণ। এ ছাড়া, শীতল পার্বত্য অঞ্চল, উম্ন মরু অঞলে আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন ভূমিরূপ দেখা যায়।

শ্রেণিবিভাগ : আবহবিকার প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত।

যথা i. যান্ত্রিক আবহবিকার, ii. রাসায়নিক আবহবিকার এবংiii. জৈব আবহবিকার। তবে, জৈব আবহবিকার যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উভয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে থাকে।


 2 যান্ত্রিক আবহবিকার কোন্ ধরনের জলবায়ুতে বেশি ঘটে, কারণসহ উল্লেখ করাে। 


 3 রাসায়নিক আবহবিকার কোন্ ধরনের জলবায়ু অঞ্চলে অধিক মাত্রায় কার্যকরী হয়? অথবা,বৃষ্টিবহুল ক্রান্তীয় অঞলে কোন্ ধরনের আবহবিকার দেখা যায় ? 


উত্তর ভূপৃষ্ঠে যান্ত্রিক আবহবিকারের তুলনায় রাসায়নিক আবহবিকারের গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ, পৃথিবীর সর্বত্র রাসায়নিক আবহবিকার বেশি মাত্রায় সংঘটিত হয়। রাসায়নিক আবহবিকার প্রধানত দু'ধরনের জলবায়ুতে দেখা যায়। যথা

i.নিরক্ষীয় জলবায়ু : সারাবছর বৃষ্টিপাত হওয়ায় এখানে। জলের প্রভাবে আবিশ্লেষণ, অঙ্গারযােজন, জারণ, দ্রবণ দল রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়াগুলি কার্যকরী হয়। আবার, এই অণ্ডলে যে ঘন চিরহরিৎ অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে তার ভাল, পাতা, ফল, ফুল প্রভৃতি মাটিতে পড়ে পচে হিউমিক অ্যাসিড সৃষ্টি হয় এবং এর প্রভাবে শিলার রাসায়নিক আবহবিকার ঘটে।


ii.মৌসূমি জলবায়ু : মৌসুমি জলবায়ু অলে একটানা আর্তnও শুষ্ক ঋতু চলার ফলে পর্যায়ক্রমে ধৌত ও কৈশিক প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উভয় প্রকার আবহবিকার অধিক পরিমাণে সংঘটিত হয়ে থাকে।


iii.এছাড়া আদ্ৰ নাতিশীতোেম্ন অঞলেও রাসায়নিক আবহবিকারের প্রভাব বেশি।



4পুঞ্জিত ক্ষয়(Mass Wasting) সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও। অথবা, পুঞ্জিত ক্ষয় বলতে কী বােঝাে ? * *


উত্তর সংজ্ঞা : মুলত, অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে ভূমির ঢাল বেয়ে আবহবিকার প্রাপ্ত চূর্ণবিচূর্ণ শিলারশি ও মৃত্তিকার উপর থেকে নীচের দিকে থানান্তরিত হওয়াকে পুঞ্জিতক্ষয় (Mass Wasting) বলে।

বৈশিষ্ট: 0 জালের উপস্থিতি পুতিক্ষয়কে সাহায্য করলেও জল পরিবহণের মাধ্যম হয় না। @ পুঞ্জিতক্ষয় ধীর ও দ্রুত উভয়ভাবেই সংঘটিত হয়। ® পার্বত্য অঞ্চলে এর প্রক্রিয়া সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ৩ ভূমির ঢালের উপর পুঞ্ছিতক্ষয়ের তীব্রতা নির্ভর করে।


কারণ : 0 আবহবিকার ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি (নদী, হিমবাহ) দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত পদার্থের সঞ্চয় পুঞ্ছিত ক্ষয় ঘটায়। ® ভূমির পাড় ঢাল পুঞ্ছিতক্ষয় সৃষ্টির প্রধান শর্ত। © বসতি স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণ প্রভৃতি কাজের ফলে পার্বত্য ঢালে যে চাপের সৃষ্টি হয় তা পুঞ্জিত ক্ষয়র বটার। ৩ জল দ্বারা সিক্ত হয়ে শিলার সহনশীলতা হ্রাস পেলে পুতিগচয় ঘটে।


প্রণিবিভাগ ; পুঞ্ছিতক্ষয়কে সাধারণত প্রধান চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা এ প্রবাহ বা Flow (দার ও দুত প্রবাহ),ও অবপত(Fall) © ধস (Slide), ৩ বিসর্পণ (Creep)।


ফলাফল;পুঞ্জিত ক্ষয় ফলে পর্বতের পাদদেশে ট্যালাস ব্যঞ্জি গড়ে ওঠে। ® ধন বাহিনী সঞ্জপাতের ফলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়। € কর্মপ্রবাহে দ্য খাতের সৃষ্টি হয়। ১ পুঞ্জিত ক্ষয়র ফলে তৃনিঢালের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।


7.ঝুম চাষ কাকে বলে 

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গারো খাসি লাগা প্রভৃতি আদিবাসী মানুষ bon kate পুড়িয়ে চাষের জমি তৈরি করে সেখানে বৃষ্টির জলের সাহায্যে আলু, ভুট্টা, সবজি প্রভৃতি চাষ করে। দু-তিন বছর চাষ করার পর সেই জমি ত্যাগ করে একইভাবে অন্য স্থানে জমি তৈরি করে চাষ। করে। এই কৃষিকাজ স্থানান্তর কৃষি বা ঝুম চাষ নামে পরিচিত। ওড়িশায় একে ‘পড়ু'; কেরালায় ‘পােনম বলে।


প্রভাব : @ মৃত্তিকায় বৃদ্ধি : বনভূমি পুড়িয়ে ফেলার ফলে মৃত্তিকা আলগা হয়ে পড়ে এবং সহজেই ক্ষয়ের শিকার হয়।@ মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস : অবৈজ্ঞানিক প্রথায় ঝুম চাষের ফলে মাটির ক্ষুদ্র জীবাণু নষ্ট হয়ে উক্ত জমির উর্বরতা দ্রুত হ্রাস পায়। এ কারণে দু-তিন বছর অন্তর ঝুম চাষিরা জমি পরিবর্তন করেন।ও পরিবেশ দূষণ : বনভূমি পােড়ানাের ফলে প্রচুর CO, বাতাসে। মেশে, এ ছাড়া উদ্ভিদ হ্রাসের কারণে বাতাসে CO, বৃদ্ধি পায়। ফলে, বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকে। @ বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস : ঝুম চাষের

ফলে বনভূমির বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। পশুপাখি তাদের বাসস্থান হারায়, জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়। 6 ধস : পাহাড়ের ঢালে ঝুম চাষের ফলে ধসের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।




পঞ্চম অধ্যায় আবহবিকার বড় প্রশ্ন উত্তর,

নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় 5 নং প্রশ্ন উত্তর


[1] 1.আবহবিকার কাকে বলে? বিভিন্ন ধরনের আবহবিকার সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে। *

উত্তর। আবহবিকার (Weathering)


যান্ত্রিক আবহবিকার (Mechanical Weathering) :

আবহাওয়ার অন্তর্গত আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান, যথা উয়তা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ইত্যাদি দ্বারা যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থাৎ, স্বাভাবিকভাবে শিলাসমূহ চূর্ণবিচূর্ণ হলে, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলা হয়।


রাসায়নিক আবহবিকার (Chemical Weathering) :

রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সংঘটিত আবহবিকার রাসায়নিক আবহবিকার নামে পরিচিত। বায়ুর বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে জল যুক্ত হলে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়। তাই, জল শিলার মধ্যে প্রবেশ করলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে মূল শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন করে।


» জৈব আবহবিকার (Biological or Organic Weathering) :

প্রধানত জীব কর্তৃক (উদ্ভিদ ও প্রাণী) সৃষ্ট আবহবিকার জৈব আবহবিকার নামে পরিচিত।


> রেগােলিথ (Regolith) : আবহবিকারের ফলে ভূত্বকের উপর শিলাচূর্ণের এক ভূ-আস্তরণের সৃষ্টি হয়, একে রেগােলিথ বলে। এটি মাটি সৃষ্টির প্রথম পর্যায়।


মৃত্তিকা (Soil) : ভূপৃষ্ঠস্থ শিথিল, নিষ্ক্রিয়, ধূসর বর্ণের স্তর যা বৃক্ষসমূহকে ধারণ করে, তাকে মৃত্তিকা বলে।


> মৃত্তিকা ক্ষয় (Soil Erosion) : বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে মাটি ক্ষয়প্রাপ্ত হলে, তাকে মৃত্তিকা ক্ষয় বলে।


> মৃত্তিকা সংরক্ষণ (Soil Conservation) : মাটিকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়, তাকে মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলে।


বিভিন্ন উপাদানের (উয়তা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রভৃতি) দ্বারা যান্ত্রিকভাবে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলার বিচূর্ণীকরণ কিংবা রাসায়নিকভাবে বিয়ােজনকে আবহবিকার (Weathering) বলা হয়।



আবহবিকারের শ্রেণিবিভাগ

  • যান্ত্রিক আবহবিকার।

  • রাসায়নিক আবহবিকার

  • জৈব আবহবিকার


যান্ত্রিক আবহবিকার (Physical Weathering) :

ভূপৃষ্ঠস্থ যাবতীয় শিলা যখন উয়তা, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত, প্রবহমান জলধারা, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ প্রভৃতির দ্বারা বিচূর্ণীকৃত হয়, তাকেই যান্ত্রিক আবহবিকার (Physical Weathering) বলে।


> প্রভাবিত অঞ্চল : পৃথিবীর উন্ন মরু অঞ্চল, শীতল মেরু অঞ্চল, কিংবা শুষ্ক ও শীতল নাতিশীতাের জলবায়ুতে যান্ত্রিক আবহবিকার দেখা যায়।


> পদ্ধতি : সূর্যতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, তুষারপাত প্রভৃতির দ্বারা ক্ষুদ্রা বিসরণ, প্রস্তর চাই খণ্ডীকরণ, শল্কমােচন, কেলাস গঠন প্রভৃতি প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আবহবিকারগ্রস্ত


 রাসায়নিক আবহবিকার (Chemical Weathering) :

ভূপৃষ্ঠ যাবতীয় শিলা বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাইঅক্সাইড, অক্সিজেন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতির দ্বারা যখন বিয়ােজিত হয়, তাকে রাসায়নিক আবহবিকার (Chemical Weathering) বলে।


>> প্ৰভাৱিত অঞ্চল : পৃথিবীর উম্ন আর্ন নিরক্ষীয় জলবায়ু ও নাতিশীতাের জলবায়ুতে রাসায়নিক আবহবিকার দেখা যায়।



2.যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়াগুলি সংক্ষেপে লেখাে৷ [ME 98] অথবা, যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি আলােচনা করো। * * *

উত্তর। যান্ত্রিক বা ভৌত আবহবিকার (Mechanical or Physical Weathering) : উয়তার তারতম্য, আদ্রর্তা ও শুষ্কতার পার্থক্য,শিলাস্তরে চাপের প্রভেদ, তুষার ও লবণের কেলাস গঠন, জৈবিক কার্যকলাপ ইত্যাদির প্রভাবে শিলার আবহবিকার ঘটলে, তাকে যান্ত্রিক বা ভৌত আবহবিকার বলে।

 যান্ত্রিক আবহবিকারে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয় এবং পরিশেষে মৃত্তিকায় পরিণত হয়।


যান্ত্রিক আবহবিকারের গতিসমূহ এ সৃষ্ট ভূমিরূপ :

(A) তাপীয় প্রসারণ, (B) কেলাসন প্রক্রিয়া, (C) শিলাস্তরের চাপ হ্ৰাসজনিত প্রক্রিয়া, (D) বৃষ্টিপাতের ক্রিয়া, (E) কলয়েড উৎপাটন। এবং (F) কলিকরণ ইত্যাদি পদ্ধতির দ্বারা যান্ত্রিক আবহবিকার সংঘটিত হয়।


(A) তাপীয় প্রসারণ :

প্রস্তর চাই খঙীকরণ (Block Disintegration) :

১. সংজ্ঞা : উয়তার তারতম্যের কারণে সৃষ্ট প্রসারণ ও সংকোচন বলের প্রভাবে শিলাস্তর যখন বড়াে বড়াে চাই-এর আকারে ভেঙে যায়, তখন তাকে প্রস্তর চাই খণ্ডীকরণ বলে।


প্রক্রিয়া : দিনের বেলা প্রখর সূর্যতাপে শিলাস্তর উম্ন হয়ে প্রসারিত হয় এবং রাতের বেলা তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়ে পড়ে। এইভাবে, প্রতিনিয়ত অসম প্রসারণ ও সংকোচনের কারণে শিলাস্তরে ব্যাপক পীড়নের সৃষ্টি হয়। পীড়ন নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে শিলাস্তরে অসংখ্য উল্লম্ব ও সমান্তরাল

ফাটলের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে, এই ফাটল বরাবর বড়াে বড়াে চাই মূল শিলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।


> উদাহরণ : মরু বা মরুপ্রায় অণ্ডলে পাললিক শিলা ও ব্যাসল্ট শিলায় এই আবহবিকার অধিক দেখা যায়।



শল্কমােচন (Exfoliation) :

> সংজ্ঞা; শঙ্ক' শব্দের অর্থ ‘পেঁয়াজের খােসা', এবং “মােচন’-এর অর্থ ত্যাগ। উয়তার= হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে যখন কোনাে শিলার উপরের স্তরটি পেঁয়াজের খােসার মতাে খুলে যায়, তখন তাকে শল্কমােচন বলে।

> প্রক্রিয়া : একই জাতীয় খনিজ দ্বারা গঠিত সমসত্ত্ব শিলার স্তরগুলি যদি সমকেন্দ্রিক হয় তাহলে দিনেরবেলা সূর্যতাপে উপরের স্তরটি ভিতরের স্তরগুলির তুলনায় অধিক উয় ও প্রসারিত হয় এবং রাতে অধিক শীতল ও সংকুচিত হয়। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে উপরের স্তরটি পেঁয়াজের খােসার মতাে খুলে যায়। এর ফলে, শিলার আকৃতি গােলাকার বা উপগােলাকার হয় বলে শঙ্কমােচনকে গােলাকার বা উপগােলাকার (Spheroidal) আবহবিকার বলে।

) উদাহরণ : গ্রানাইট শিলায় এই আবহবিকার অধিক দেখা যায়। তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরমের কৃয় ভেন্নাই পান্ধ’ নামক বিখ্যাত গ্রানাইট গম্বুজটি এভাবে সৃষ্ট।



© ক্ষুদ্রকণা বিসরণ (Granular Disintegration) :

- সংজ্ঞা : দিন ও রাতের উয়তার তারতম্যের কারণে সৃষ্ট সংকোচন ও প্রসারণের প্রভাবে যখন কোনাে শিলা ফেটে গিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়, তখন তাকে ক্ষুদ্রকণা বিসরণ বলে।


> প্রক্রিয়া : বিভিন্ন খনিজ দ্বারা গঠিত বিষমসত্ত্ব শিলার বিভিন্ন খনিজগুলি উয়তার হাস-বৃদ্ধির ফলে ভিন্ন ভিন্ন হারে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এইভাবে, বারংবার অসম সংকোচন ও প্রসারণের ফলে শিলাটি বিভিন্ন খনিজের সংযােগ বরাবর সশব্দে ফেটে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় ভেঙে যায়।


। উদাহরণ : থর, সাহারা, কালাহারি প্রভৃতি মরুভূমিতে সূর্যাস্তের পর প্রায়ই পিস্তলের গুলি ছােড়ার মতাে শব্দ করে শিলা ফেটে যায়।


গণ্ডশিলা বিদারণ (Boulder Cleaving) : অনেক সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত শিলার মধ্যে থাকা কোনাে বড়াে বােল্ডারের অর্ধেক অংশ ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত থাকলে ওই অংশ তাপের প্রভাবে ভেঙে গিয়ে ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, এই পদ্ধতিকে গণ্ডশিলা বিদারণ (Boulder Cleaving) 


ডার্ট ক্র্যাকিং (Dart Cracking) : শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যস্থিত পদার্থসমূহ সূর্যতাপে উত্তপ্ত ও প্রসারিত হলে ফাটলরেখা বরাবর শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়, একে ডার্ট ক্র্যাকিং (Dart Cracking) বলে।



(B) কেলাসন প্রক্রিয়া : কেলাসন প্রক্রিয়া দুভাবে সংঘটিত হয় তুষার কেলাস গঠন এবং ® লবণ কেলাস গঠন।


তৃষার কেলাস গঠন বা তুষার কার্য :

(1) তুহিন খণ্ডীকরণ বা তুষার কীলক গঠন : পার্বত্য অঞ্চলে বৃষ্টির জল শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে ঢুকে গিয়ে শৈত্যের প্রভাবে তা বরফে পরিণত হয়। জল জমে বরফে পরিণত হলে তা আয়তনে শতকরা দশভাগ বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, শিলাস্তরে প্রবিষ্ট তীক্ষমুখী বরফের ফলাকে তুষার কীলক বলে। এর ফলে ফাটলের দুপাশের শিলাস্তরে প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি করে। এই চাপের প্রভাবে ফাটল ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং শেষে শিলাস্তর ফেটে গিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোণযুক্ত শিলাখণ্ডের সৃষ্টি হয়। ওই প্রস্তরখণ্ডগুলি পর্বতের পাদদেশ বরাবর সমান্তরালভাবে জমা। হলে, তাকে ফেলসেনমার বা ব্লকস্পেড (Felsenmer or Blockspade) বলা হয়। আবার, ওই প্রস্তরখণ্ডগুলি পর্বতের গা বরাবর উপর-নীচে অর্থাৎ, উল্লম্বভাবে সঞ্চিত হলে, তাকে স্ত্রি বা ট্যালাস (Scree or Tallus) বলে।


(ii) হিমায়িত স্ফীতি : নাতিশীতােয় অণ্ডলে গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির জল সচ্ছিদ্র মৃত্তিকার মধ্যে ঢুকলে শীতকালে তা শৈত্যের প্রভাবে বরফে পরিণত হয়। এর ফলে, স্ফীত বরফের চাপে মাটি ফেটে যে আবহবিকার সংঘটিত হয়, তাকে হিমায়িত স্ফীতি বলে। এরকম ঘটনা ঘটলে চাষ আবাদের পক্ষে বিশেষ সুবিধা হয়। শিলাস্তরে নিম্নমুখী চাপ শিটিং স্প্যালিং



লবণ কেলাস গঠন : শুষ্ক অঞলে ভৌমজলে দ্রবীভূত লবণ কৈশিক প্রক্রিয়ায় উপরে উঠে

 এবং শিলাস্তরের ফাটলে লবণের কেলাস গঠিত হয়। ফলে, প্রচণ্ড চাপে শিলা ভেঙে টুকরাে

টুকরাে হয়ে যায়, একে লবণ কেলাস গঠন বলে।


(C) চাপ ঘাসজনিত প্রক্রিয়া : শিলার উপরের চাপ হ্রাস পেলে শিলা প্রসারিত হয় এবং ফেটে যায়। কোনাে শিলার ভূপৃষ্ঠের সমান্তরাল ফাটলের মাধ্যমে পাতলা পাতলা পাতের আকারে ভেঙে প্রতিক্রিয়া যাওয়াকে শিটিং (Sheeting) বলে। পাতলা পাতের পরিবর্তে টুকরাে টুকরাে খণ্ডে বিভক্ত হয়ে

পড়াকে স্প্যালিং (Spalling) বলে।


(D) বৃষ্টিপাভের ক্রিয়া : বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্নভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার হয়ে থাকে। যথা – ® কোমল শিলাস্তর দীর্ঘকাল ধরে বৃষ্টির ফোটার আঘাতে দুর্বল হয়ে ভেঙে যায়, ® অনেক সময় শিলার মধ্যস্থিত খনিজ পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়া ছাড়াই বৃষ্টির জলের সংস্পর্শে আয়তনে বেড়ে যায় এবং অবশেষে ভেঙে যায়, © শিলার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রগুলি বৃষ্টির জলে ভরে যায়, আবার সূর্যের তাপে শুকিয়েও যায়। ক্রমাগত আদ্রর্তা ও শুষ্কতার পরিবর্তনে শিলা টুকরাে টুকরাে হয়ে যায়, ® মরু অঞ্চলে অতি উয় শিলার উপর হঠাৎ বৃষ্টির জল পড়লে শিলা সংকুচিত হয় ও ফেটে যায়।


(E) কলায়ড উৎপাটল (Coloid Plucking) : কলয়েড’ শব্দের অর্থ আঠা। খনিজ ও জৈব সংমিশ্রণে সৃষ্ট মাটির একপ্রকার আঠালাে উপাদান হল কলয়েড। এই কলয়েড ধর্মের জন্য শিলার গায়ে লেগে থাকা মাটি শুকিয়ে পড়ে যাওয়ার সময় শিলার গা থেকে কিছু অংশ উৎপাটন করে, একে কলয়েড উৎপাটন (Coloid PIucking) বলে।


(F) কলিকরণ (Slaking) : সমুদ্র উপকূল বরাবর পর্যায়ক্রমে জোয়ার-ভাটা বা সমুদ্রতরঙ্গের প্রভাবে শিলা আর্দ্র এবং সূর্যতাপে শুষ্ক হয়। ফলে, শিলাস্তরে অসম টান বা পীড়নের সৃষ্টি হয় ও শিলা ফেটে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। এই আবহবিকার প্রক্রিয়াটি কলিকরণ নামে পরিচিত।

এছাড়াও,

(G) বুদ্বুদজনিত আবহবিকার : শিলার ফাটলের মধ্যে জলের বুদ্বুদ প্রবেশ করে ফেটে গেলে তা শিলাস্তরে প্রচণ্ড চাপ দিয়ে শিলাকে ফাটিয়ে দেয়।


(H) অ্যাল্য যান্ত্রিক আবহবিকার : 0 ক্রমান্বয়ে শিলা আর্দ্র ও শুষ্ক হওয়ার ফলে, ® মরু অঞ্চলে প্রচণ্ড উত্তপ্ত শিলার উপর হঠাৎ বৃষ্টির জল পড়লে, © দাবানলের প্রচণ্ড তাপে, ৩ বৃহৎ উল্কাপিণ্ডের সংঘাতে শিলাস্তর ফেটে গিয়ে আবহবিকারপ্রাপ্ত হয়।






3 রাসায়নিক আবহবিকার তাকে বলে প্রধান চার প্রকার রাসায়নিক আবহবিকারের বর্ণনা দাও। * * *

যে প্রক্রিয়ায় জল, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, জলীয় বাষ্প ও বিভি৷ অন্ত্রের প্রভাবে শিলা বিয়োজিত

হয়ে হাসান, কবে পরিবর্তিত হয়, তাতে রাসায়নিক আবহবিকার বলে।| প্রবীন র প্রত মালিক আবরিকার বলা )


প্রধান চার প্রকার রাসায়নিক আবহবিকারের বর্ণনা 

জারণ /Oxidation):

শিলা গঠনকারী খনিজের সঙ্গে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়াকে জারণ বা অক্সিডেশান বলে।

প্রক্রিয়া : সাধারণত লােহাযুক্ত শিলায় জারণ ঘটে থাকে। লােহা যখন ফেরাস অক্সাইডৰূপে শিলার মধ্যে অবস্থান করে তখন।তা ভীষণ কঠিন, কিন্তু জারণ প্রক্রিয়ায় তা যখন ফেরিক অক্সাইডে পরিণত হয় তখন সহজেই শিলা ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। শিলার উপর।দ-বাদামি ছােপ দেখা যায়, একে মরচে বলে। ফেরাস অক্সাইড। এই প্রক্রিয়ায় লিমােনাইটে পরিণত হয়।

বিক্রিয়া :

ফেরাস অক্সাইড + অক্সিজেন → ফেরিক অক্সাইড

ফেরাস + জল + অক্সিজেন → লিমােনাইট অক্সাইড


অঙ্গারযোজনা (Carbonation) :

সংজ্ঞা : শিলা গঠনকারী খনিজের সঙ্গে কার্বন ডাইঅক্সাইডের সংযােগকে অারযােজন বা কার্বনেশান বলে।

> প্রক্রিয়া : বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO,) বৃষ্টির জলের (HO) সঙ্গে মিশে মৃদু কার্বনিক অ্যাসিড (H,co,) সৃষ্টি হয়। এই অ্যাসিডবৃষ্টি ভূপৃষ্ঠে চুনাপাথর, ডলােমাইট, ক্যালসাইট প্রভৃতি শিলাকে সহজেই রাসায়নিকভাবে বিয়ােজিত করে দেয়। ক্যালশিয়াম কার্বনেট ক্যালশিয়াম বাইকার্বনেটে পরিণত হয়, যা অতি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

বিক্রিয়া :

ক্যালশিয়াম কার্বনেট  + কার্বনিক অ্যাসিড→ ক্যালশিয়াম বাইকার্বনেট



জলযােজন  (Hydration):

সংজ্ঞা : শিলা গঠনকারী খনিজের সঙ্গে জলযুক্ত হয়ে শিলা বিয়ােজিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে জলযােজন বা হাইড্রেশান বলে।

> প্রক্রিয়া : শিলা মধ্যস্থ খনিজে আণবিক বিশুদ্ধ জল প্রবেশ করলে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয় এবং ওই শিলার গঠন দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে, শিলাটি সহজেই আবহবিকারপ্রাপ্ত হয়। অনার্দ্র ক্যালশিয়াম সালফেট জলযােজনের ফলে ভঙ্গুর জিপসামে পরিণত হয়। হেমাটাইট ভঙ্গুর লিমােনাইটে পরিণত হয়।

ক্যাসশিয়াম সালফেট + জল → জিপসাম

হেমাটাইট + জল লিমােনাইট


আদ্র বিশ্লেষণ বা হাইড্রোলিসিস 

সংজ্ঞা : শিলা মধ্যবর্তী খনিজ ও জলের অণুর একসঙ্গে বিয়ােজন ও বিক্রিয়াকে আদ্র বিশ্লেষণ বা হাইড্রোলিসিস বলে।

> প্রক্রিয়া : জলের অণু বিয়ােজিত হয়ে যে হাইড্রোজেন আয়ন (H) ও হাইড্রক্সিল আয়ন (OH-) গঠন করে, তা শিলা গঠনকারী খনিজের ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নের সঙ্গে বিক্রিয়া ও আয়ন বিনিময় করে আবহবিকার ঘটায়। সাধারণত ফেসপার ও অভ্রের উপর এই প্রক্রিয়া বিশেষভাবে কার্যকরী হয়।

বিক্রিয়া :

আর্থক্রেজ ফেসপার + জল — অ্যালুমিনাে সিলেসিক অ্যাসিড পটাশিয়ামহাইড্রক্সাইড



® দ্রবণ (Solution) : রাসায়নিক আবহবিকারের একটি অন্যতম প্রক্রিয়া হল দ্রবণ বা সলিউশন। বেশ কিছু নরম শিলা খনিজ, যেমন – জিপসাম, হ্যালাইট, সৈন্ধব লবণ প্রভৃতি জলের সংস্পর্শে এসে সহজেই দ্রবীভূত হয়ে যায়, একে দ্রবণ বলে। এর ফলে, শিলার রাসায়নিক গঠনের পরিবর্তন ঘটে।




4জৈব আবহবিকার কাকে বলে ? জৈব আবহবিকার কী কী পদ্ধতিতে সংঘটিত হয়? * অথবা, জৈব আবহবিকার একই সঙ্গে যান্ত্রিক এবং রাসায়নিক – প্রমাণ করাে। 


উত্তর সংজ্ঞা : জীবজগৎ দ্বারা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ ও বিয়ােজিত হলে, তাকে জৈব আবহবিকার বলে।

প্পদ্ধতি : জৈব আবহবিকার প্রধানত দুটি পদ্ধতিতে সংঘটিত হয়। যথা – 0 জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার, ও জৈব-রাসায়নিক আবহবিকার।


@ জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার (Bio-Mechanical Weathering) : জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার আবার তিন ভাগে বিভক্ত। যথা - (i) উদ্ভিদ দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার এবং (ii) প্রাণীদের দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার এবং (iii) মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলি।


(i) উদ্ভিদ দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার : শিলাস্তরের উপর কোনাে গাছপালা জন্মালে ওই গাছপালার শিকড় শিলার মধ্যস্থিত ফাটলের মধ্যে প্রবেশ করে শিলাস্তরকে ফাটিয়ে দেয়। এর ফলে, শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মূল শিলাস্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।


(ii) প্রাণীদের দ্বারা সৃষ্ট জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার : কেঁচো, ছুঁচো, ইদুর, খরগোেশ, প্রেইরী কুকুর ইত্যাদি প্রাণী এবং নানা প্রকার কীটপতঙ্গ শিলার উপর গর্ত খুঁড়ে শিলার আবহবিকারে সাহায্য

করে।

(iii) মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলি : রাস্তা নির্মাণ, কৃষিকাজ, খনিজ দ্রব্য উত্তোলন, বৃক্ষচ্ছেদন-এর ফলেও শিলায় আবহবিকার হয় এবং এর ফলে শিলা বিচূর্ণও হয়ে থাকে।


জৈব-রাসায়নিক আবহবিকার (Bio-Chemical Weathering) : শিলার উপর অনেক সময় মস্, লিচেন, শৈবাল ইত্যাদি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ জমে থাকে। এরা শিলাস্তরের উপরিভাগে জল আটকে রাখে। ওই সমস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদসমূহ কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে পচে গিয়ে হিউমাস সৃষ্টি করে। ওই হিউমাস র ওপর বৃষ্টির জল পড়লে হিউমিক অ্যাসিড বা জৈব অ্যাসিডের (CH০) সৃষ্টি হয়।ওই হিউমিক অ্যাসিড ব্যাসল্ট, ম্যাগনেশিয়াম, ফেণ্ডাপার এবং সালকার যৌগ দ্বারা গঠিত শিলাস্তরে খুব দ্রুত রাসায়নিক আবহবিকার ঘটায়।



৪ উষ্ণ মরু অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্য লাভের কারণ উল্লেখ করাে। 

উত্তর মরু অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্য লাভের

তাপমাত্রার উচ্চ প্ৰসর : মরু অঞ্চল উয় প্রকৃতির হলেও এখানে দিন ও রাত্রির তাপমাত্রাগত প্রসর অনেক বেশি। উদাহরণ স্বরূপ, এখানে দিনের তাপমাত্রা যেমন যথেষ্ট বেশি, তেমনি রাতের তাপমাত্রা যথেষ্ট কম। ফলে, এখানকার শিলা ক্রমাগত সংকোচন ও প্রসারণের ফলে যান্ত্রিকভাবে বিচুর্ণীকৃত হয়।


বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা : মরু অঞ্চলে স্বল্প বৃষ্টিপাতের কারণে যান্ত্রিক আবহবিকার ছাড়া অন্য কোনাে আবহবিকার প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।


শিলায় বিষম প্রকৃতির খনিজের উপস্থিতি ; মরু অঞ্চলে একই শিলায় বিষম প্রকৃতির খনিজের উপস্থিতি থাকে যাদের একই উন্নতায় সংকোচন ও প্রসারণের হার ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, বলা যায়

গ্রানাইট ও নিস শিলার মধ্যে কোয়ার্টজ এবং অভ্র’ – এই দুরকমের খনিজ পদার্থই অবস্থান করে। উয়তার সংস্পর্শে এলে কোয়ার্টজ অতি সহজেই স্ফীত এবং সংকুচিত হয়, কিন্তু অভ্র তা হয় না। ফলে,

ওই শিলার মধ্যে অসমান চাপের সৃষ্টি হয় বলে প্রচণ্ড টানের(Strain) উদ্ভব ঘটে এবং শিলাটি একসময়ে শব্দ করে ফেটে যায়।এই কারণে, মরু অঞ্চলে সন্ধ্যার সময় মাঝে মাঝে বন্দুকের গুলি

ছােড়ার মতাে শিলা ফাটার শব্দ শােনা যায়।


 শিলায় সমপ্ৰকৃতির খনিজের উপস্থিতি : অনেক সময় সমপ্রকৃতির শিলার উপরের স্তর ভেতরের স্তরের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পেলে তা পেঁয়াজের খােসার মতাে ধীরে ধীরে খুলে যায়, একে শল্কমোেচন বলে।


হঠাৎ বর্ষণ : অধিক উয় শিলায় হঠাৎ বর্ষণের ঠান্ডা জল পড়ে শিলার মধ্যে হঠাৎ সংকোচনের কারণে পীড়ন সৃষ্টি হয় যা শিলাকে বিচূর্ণ করে। অন্যদিকে, লবণ সমৃদ্ধ বৃষ্টির জল বাষ্পীভূত হয়ে লবণ কেলাস গঠন করে ও শিলাকে বিচুর্ণ করে।


অধিক বাষ্পীভবন : উয় মরু অঞ্চলে বাষ্পীভবন বেশি পরিমাণে হলে লবণ কেলাস তৈরি হয়ে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা যান্ত্রিকভাবে আবহবিকারগ্রস্থ হয়।


বায়ুর কার্যাবলি : মরুভূমিতে বাতাস বাধাহীনভাবে প্রবল বেগে বয়ে চলায় বাতাসের আঘাতে কিছু শিলা যান্ত্রিকভাবে বিচূর্ণীকৃত হয়।



8 আবহবিকারের ফলাফল সংক্ষেপে আলােচনা করাে। **

উত্তর ভূপৃষ্ঠে আবহবিকারের ফলে নানা অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে পৃথিবীতে আবহবিকারের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবহবিকারের ফলাফল ধ্বংসাত্মক হলেও অনেক ক্ষেত্রে মানুষের অশেষ কল্যাণসাধন করে।


আবহবিকারের ফলাফলগুলি নিম্নরূপ —

ভূ-আস্তরণের উৎপত্তি : আবহবিকারের ফলে শিলাসমূহ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে একপ্রকার ভূ-আস্তরণের সৃষ্টি করে, যা রেগােলিথ। (Regolith) নামে পরিচিত। এটি শিলা ও মৃত্তিকার মধ্যবর্তী অবস্থা।


মৃত্তিকার উৎপত্তি: রেগােলিথ থেকে পরবর্তীকালে মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়। ক্রান্তীয় মৌসুমী অণ্ডলে শুষ্ক ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে। রাসায়নিক আবহবিকারের হার অত্যন্ত বেশি। এই কারণে উক্ত অঞ্চলটিতে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার উদ্ভব ঘটে।


খনিজ সৃষ্টি : রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে বিভিন্ন প্রকার খনিজ দ্রব্য, যেমন – লৌহ আকরিক, ম্যাঙ্গানিজ, বক্সাইট, নিকেল, লিমােনাইট, জিপসাম, কেওলিন ইত্যাদি খনিজ পদার্থ সৃষ্টি হয়।


মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি : রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে বিভিন্ন খনিজ দ্রব্য মৃত্তিকার সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এর ফলে, উদ্ভিদের পক্ষে প্রয়ােজনীয় খাদ্য ও সার সংগ্রহ করতে সুবিধা হয়।


ভূ-বৈচিত্র্যের সৃষ্টি : বিখ্যাত ভূ-বিজ্ঞানী William Thornbury-এর মতে, আবহবিকারের ফলে কোনাে নতুন ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় না, শুধুমাত্র ভূমিরূপের কিছু কিছু পরিবর্তন হয়। যেমন - (i) গ্রানাইট শিলাগঠিত অঞলে শল্কমােচন প্রক্রিয়ায় গােলাকার ভূমিরূপ, (ii) ব্যাসল্ট শিলা গঠিত অঞলে উল্লম্ব দারণ, (iii)চুনাপাথর গঠিত অঞলে রাসায়নিক দ্রবণ আবহবিকারের ফলে। গহুর, স্তম্ভ, স্ট্যালাকটাইট,

স্ট্যালাগমাইট, টানেল, সুড়ঙ্গ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়।


প্রস্তরক্ষেত্র গঠন : যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে ছােটো বড়াে নানান আকৃতির অজস্র ছুঁচোলাে পাথরের খণ্ড বিক্ষিপ্ত- ভাবে অবস্থান করেপ্রস্তরক্ষেত্র গঠন করে।


কৃষিকাজে সহায়ক : আবহবিকারের ফলে মৃত্তিকা বিচূর্ণীকৃত হয়ে কৃষিকার্যে সহায়তা করে।


ভৌমজল সঞ্জয় :আবহবিকারের ফলে শিলাস্তরে ভৌমজল সঞ্জয়ের সুবিধা হয়।


ভূমিকম্পের সম্ভাবনা : আবহবিকারের ফলে ভূপৃষ্ঠে চাপ হ্রাসের ফলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা থাকে।


ভূমিরূপের উচ্চতা হ্রাস : আবহবিকারের দ্বারা ভূপৃষ্ঠস্থ যাবতীয় ভূমিরূপের উচ্চতা হ্রাস পায়।

নদীর নাব্যতা হ্রাস : আবহবিকারগ্রস্ত পদার্থ নদীবক্ষে জমে নদীর নাব্যতার হ্রাস ঘটায়।

মরুকরণ : ব্যাপক আকারে ঘটিত আবহবিকার মরুকরণ (Desertification) বাড়ায়।



11মৃত্তিকা ক্ষয় বলতে কী বোঝায় মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ গুলি লেখ or অনুৰূপ প্রশ্ন : 0 মৃত্তিকাক্ষয়ের মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলি লেখাে।মৃত্তিকাক্ষয় কাকে বলে?


উত্তর বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি, যেমন- জলপ্রবাহ বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ, বৃষ্টিপাত প্রভৃতির দ্বারা এবং মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপের ফলে মাটির উপরের অংশ অসংবদ্ধ ও আলগা হয়ে অপসারিত হলে, তখন তাকে মৃত্তিকা ক্ষয় বলে।


2মৃত্তিকা ক্ষয় কারণ মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলিকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা

(A) প্রাকৃতিক কারণ ও (B) মনুষ্যসৃষ্ট কারণ ।


(A) প্রাকৃতিক কারণ :

জলপ্রবাহ: তীব্র জলপ্রবাহের কারণে ঢকির উপরের গুর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ভূমির ঢাল বরাবর প্রবাহিত নদীর দুলাহােতের আঘাতে মৃত্তিকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।


বায়ুপ্রবাহ : শুদ্ধ ও আলগা মাটির পৃষ্ঠরের উপর দিয়ে প্রবল বেগে বায়ু প্রবাহিত হলে মাটি সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।


 হিমবাহ ও সমুদ্ররণ; পার্বত্য অঞ্চলে হিমবা ক্ষয়কার্যের ফলে এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে সতরঙ্গের আঘাতে মাটি ব্যাপকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।


বৃষ্টিপা: উপর থেকে সবােঙ্গে নামতে থকা বিভিন্ন আকৃতির বৃষ্টির ফোটা মাটিকে সজোরে আঘাত করে। কলে, মাটির দানাদার গঠন ধ্বংস হয়, মাটি আলগা হয়ে যায় এবংসহজেহর


মিচান : যেসমস্তঅঞ্চলে ভূমির ঢাল সর্বাধিক দেখানার মৃত্তিকা কণা দুত অপসারিত হয়ে ভূমিক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে। এই কারণে, পার্বত্য অঞলে বেশি ভূমিক্ষয় দেখা যায়।


B) মনুষ্যসৃষ্ট কারণ :

অনিয়ন্ত্রিত বৃক্ষচ্ছেদ : উদ্ভিদের শিকড় মাটিকে আঁকড়ে ধরে রাখে। গাছের পাতা বৃষ্টির আঘাত থেকে মাটিকে রক্ষা করে। কিন্তু, মানুষ নিজের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক হারেবৃক্ষ ছেদন হর চলেছে, ফলে মৃত্তিকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।


অবৈজ্ঞানিক কৃষি পদ্ধতি: চাবের জমিতে লাঙ্গল, হার, হারভেস্টর প্রভৃতি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেশি হলে মৃত্তিকা - পরি। এ ছাড়া, থানান্তর কৃষিকাজের ফলে মৃকিা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত


অনিন্ত্রিত পশুচারণ : অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণের কালে তৃণভূমির তৃণ নির্মূল হয়ে মাটি আলগা হয়ে পড়ে। এ ছাড়া, পশুদের পায়ের ক্ষুরের আঘাতে পৃষ্ঠস্তরের মাটি ব্যাপকভাবে প্রাপ্ত হয়।


নির্মাণ কাজ : রাস্তাঘাট ও সেতুনির্মাণ, ইটভাটা স্থাপন,বাঁধনির্মাণ, বাড়ি তৈরি, পুকুর, খাল, পরিখা খনন, পয়ঃপ্রণালী তৈরি, খনি খনন প্রভৃতি কাজের সময় যন্ত্রের আঘাতে মৃত্তিকা আলগা হয়ে পাড়ে ও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।


খাত ক্ষয় (Gully Erosion) : বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও স্থায়িত্ব বেড়ে গেলে নালিগুলির মধ্য দিয়ে বেগে প্রবাহিত জল মাটিকে আরাে গভীরভাবে কাটতে থাকে। ফলে, সংকীর্ণ ও অগভীর নালিগুলি ক্রমশ চওড়া ও গভীর খাতে পরিণত হতে থাকে। এরূপ খাত খােয়াই অঞ্চল) সৃষ্টি হয়ে মৃত্তিকা ক্ষয় য়াকে খাতক্ষা বলে।

মধ্যপ্রদেশের চম্বল উপত্যকায় ও পশ্চিমবঙ্গোর শান্তিনিকেতনের খােয়াই অঞ্চলে মৃত্তিকার নালি ও খাতক্ষয় ব্যাপকভাবে লক্ষ করা যায়।


(RiII Erosion) : ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে বৃষ্টির জল যখন সংকীর্ণ ও অগভীর নালার আকারে প্রবাহিত হয় তখন জলের গতিবেগ ও মাটিকে ক্ষয় করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। মাটির এ ধরনের ক্ষয়কে নালিক্ষয় বলে।



12)মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলতে কী বােঝাে? মৃত্তিকা সংরক্ষণের উপায় গুলি লেখো। *


উত্তর মৃত্তিকা সংরক্ষণ ক্ষয় ও অবনমনের হাত থেকে রক্ষা করে, মৃত্তিকা সম্পদকে মানুষের কল্যাণে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করার জন্য যেসমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাকে মৃত্তিকা সংরক্ষণ বলে।


 মৃত্তিকা সংরক্ষণ উপায় বা পদ্ধতিসমূহ :

 বৃক্ষরােপণ (Afforestation) : গাছের শিকড় মাটিকে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই, মৃত্তিকাক্ষয় রােধ করার জন্য বৃক্ষরােপণের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়ােজন।


নিয়ন্ত্রিত পশুচারণ : ভূমির উপর তৃণের আচ্ছাদন জলের পৃষ্ঠপ্রবাহের হাত থেকে মৃত্তিকাকে রক্ষা করে। তাই, পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করে তৃণভূমির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা যায়।


শস্যাবর্তন (Crop totation) কৃষি জমি পতিত না রেখে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের ফসল শস্যাবর্তন পদ্ধতিতে চাষ করলে একদিকে যেমন মৃত্তিকার উর্বরতা বজায় থাকে, তেমনি অপর দিকে সারাবছরই মাটি শস্য দ্বারা আবৃত থাকায় ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়।

*

ধাপ চাষ (Step farming) :পাহাড় বা পর্বতের ঢালে ধাপ কেটে চাষ করলে জলের গতি হ্রাস পায় ও মৃত্তিকায় নিয়ন্ত্রিত হয়।


সমােন্নতিরেখার  বরাবর চাষ (Contour farming) : পার্বত্য অঞলে সমােন্নতিরেখা বরাবর বাঁধ দিয়ে চাষ করলে প্রবাহিত জলধারা বাবপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্তিকা , হ্রাস পায়।


ফালি চাষ (Stric cropping) :সমােন্নতিরেখার সমান্তরালে চাষ না করে ঢালের আড়াআড়িভাবে ফালি তৈরি করে চাষ করলে মাটি


স্থানান্তর কৃষি (Shifting cultivation) বােধ : আদিবাসী কৃষকদের সচেতন করে স্থানান্তর কৃষি বা বুমচাষ বন্ধ করতে পারলে অন সর সঙ্গে সঙ্গে মাটির , বােধ রা সম্ভব হবে।


জৈবসারের ব্যবহার বৃদ্ধি :মৃত্তিকাতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে অধিক পরিমাণে জৈবসার ব্যবহার করলে মৃত্তিকার গঠন, গ্ৰথন, প্রবেশ তা প্রভৃতি ধর্মগুলি বজায় থাকে, ফলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ সম্ভব হয়।


বাঁধ নির্মাণ :নদীপাড়ে বা সমুদ্র উপকূলে বাঁধ নির্মাণ করলে, অথবা কংক্রিট দিয়ে নদীপাড় ও উপকূল অংশ বাঁধালে মৃত্তিকায় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব


শেল্টার বেল্ট (Shelter Belt) : শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের গতিপথে অসংখ্য গাছ সমান্তরালভাবে রােপণ ব্রলে বায়ুপ্রবাহে গতি প্রতিরোধ করে মৃত্তিকারের পরিমাণ হ্রাস করা যায়! মরু অণ্ডলে এভাবে মাটির ক্ষয় রােধ করা সম্ভব।


মাচিং :শু বা প্রায় অণ্ডলে মাটির উপর লতাপাতা, খড়কুটো, ঘাস, আগাছা প্রভৃতি বিছিয়ে রাখলে মাটির বঙ্গভবহের হয় এবং তার্তা বজায় থাকে। ফলে, চাষাবাদের সুবিধা হয়। মৃত্তিকা সংরক্ষণের এই পদ্ধতিকে মালচিং বলে।


* অনন্য পদ্ধতি : এ ছাড়া অন্নধর্মী মৃকিায় চুন মিশিয়ে অজ্ঞতা নিয়ন্ত্রণ, জল নিষ্কাশনের সুব্যবস্থার মাধ্যমে মৃত্তিকরবণতা হস,প্রভৃতি ব্যবস্থার মাধ্যমে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা যায়।




[TAG]:   আবহবিকার পঞ্চম অধ্যায় pdf,আবহবিকার mcq,পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর,নবম শ্রেণি,নবম শ্রেণির ভূগোল,নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়,নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায়ের ২ নং প্রশ্ন উত্তর,নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর,নবম শ্রেণির ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর,






Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url