ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF | Class 9 history 3rd chapter question in bengali pdf

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ নবম শ্রেণির ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর PDF | Class 9 history 3rd chapter question in bengali  pdf

 

আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি  নবম শ্রেণির ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় ঊংবিংশ শতকের ইউরোপপ্রশ্ন উত্তর PDFClass IX third chapter question Pdf in bengali | WB Class Nine history question in bengali |WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য নবম শ্রেণি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |নবম শ্রেণি ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class ix History 3rd chapter important Question in Bengali Pdf  ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf , Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।


 ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ নবম শ্রেণির ইতিহাসের প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।


 ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ mcq প্রশ্ন

File Details:-

File Name:-  

File Format:- Pdf

Quality:- High

File Location:- Google Drive

Download: click Here to Download



নবম শ্রেণি ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও]

নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের ৪ নং প্রশ্ন উত্তর

উনবিংশ শতকের ইউরোপ(1)


1.কোন সময়ে ইউরােপে জাতি-রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছিল ?

পঞ্চদশ ও ষােড়শ শতকে ইউরােপে জাতি-রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছিল।

2প্রথম কোথায় জাতি-রাষ্ট্র গঠিত হয়?

উত্তর প্রথম স্পেনে জাতি-রাষ্ট্র গঠিত হয়।

3/ ভিয়েনা কোন দেশে অবস্থিত ?

উত্তর ভিয়েনা অস্ট্রিয়াতে অবস্থিত।

4 নেপােলিয়নের পতনের পর কত খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন আনুষ্ঠিত হয়?

উত্তর নেপােলিয়নের পতনের পর ১৮১৪-১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

5.বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন কোন্ সম্মেলনকে বলা হয় ?

উত্তর। বিশ্বের ইতিহাসে ভিয়েনা সম্মেলনকে (১৮১৪-১৫ খ্রি.) প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন বলা হয়।

7ভয়না সম্মেলনের সভাপতি কে ছিলেন?

উত্তর। ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন মেটারনিখ।

ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক কে ছিলেন ?

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক ছিলেন মেটারনিখ

8.ভিয়েনা সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধি কে ছিলেন ?

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধি ছিলেন জার প্রথম আলেকজান্ডার।

9_ ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের প্রথম প্রতিনিধি কে ছিলেন?

উত্তর। ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের প্রথম প্রতিনিধি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসালরি।

I 10 ভিয়েনা সম্মেলনে পরাজিত ফ্রান্সের প্রতিনিধি কে ছিলেন?

উত্তর। ভিয়েনা সম্মেলনে পরাজিত ফ্রান্সের প্রতিনিধি ছিলেন তালেরা।

12.ভিয়েনা সম্মেলনের নায্য অধিকার নীতি অনুসারে তার সিংহাসনে কোন বংশের শাসন প্রতিত হয়েছিল উওর। ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি অনুসারে ফ্রান্সের সিংহাসনে বুরবো বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

13 ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি অনুসারে ফ্রান্সের সম্রাট কে হয়েছিলেন?

উত্তর। ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি অনুসারে ফ্রান্সের সম্রাট হয়েছিলেন অটাদশ লুই।

[13_ ভিয়েনা সম্মেলনের পর (১৮১৫ খ্রি) বেলজিয়ামকে কোন দেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল?

উত্তর। ভিয়েনা সম্মেলনের পর বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল।

14 ভিয়েনা সম্মেলনের পর (১৮১৫ খ্রি.) নরওয়েকে কোন দেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল ?

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনের পর নরওয়েকে সুইডেনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল।

I15 মেটারনিখ কে ছিলেন ? অথবা, মেটারনিখ কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ?

উত্তর। মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলার বা প্রধানমন্ত্রী।

16/কোন সময়কে মেটারনিখের যুগ' বলা হয় ?

উত্তর। ১৮১৫-১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে ‘মেটারনিখের যুগ বলা হয়।

17_ কৃটনীতির রাজকুমার’ কাকে বলা হত ?

উত্তর। কূটনীতির রাজকুমার' বলা হত প্রিন্স মেটারনিখকে।

18 | কে নিজেকে নেপােলিয়ন বিজেতা’ বলে মনে করতেন?

উত্তর মেটারনিখ নিজেকে ‘নেপােলিয়ন বিজেতা’ বলে মনে করতেন।

19 || কালর্সবাড ডিক্রি' কে জারি করেন?

উত্তর কার্লসড ডিক্রি জারি করেন প্রিন্স মেটারনিখ।

| 20। কার্লসড ডিক্রি' কত খ্রিস্টাব্দে জারি করা হয় ?

উত্তর কার্লসবাড ডিক্রি’ ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে জারি করা হয়।

21। কালর্সবাড ডিক্রি' কোথায় জারি করা হয় ?

উত্তর। কার্লসড ডিক্রি জার্মানিতে জারি করা হয়।

22। ইউরােপীয় শক্তি সমবায়’ বা ‘কনসার্ট অফ ইউরােপ' কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয় ?

উত্তর ইউরােপীয় শক্তি সমবায় বা কনসার্ট অফ ইউরােপ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়।

23 | পবিত্র চুক্তির উদ্ভাবক কে ছিলেন?

উত্তর। পবিত্র চুক্তির উদ্ভাবক ছিলেন রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার।

24 । পবিত্র চুক্তি কত খ্রিস্টাব্দে ঘােষণা করা হয় ?

উত্তর। পবিত্র চুক্তি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ঘােষণা করা হয়।

I 25 | চতুঃশক্তি চুক্তির উদ্ভাবক কে ছিলেন?

উত্তর চতুঃশক্তি চুক্তির উদ্ভাবক ছিলেন প্রিন্স মেটারনিখ।

T_26_j চতুঃশক্তি চুক্তি কত খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়?

উত্তর। চতুঃশক্তি চুক্তি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়।

 27 চতুঃশক্তি চুক্তি বা শক্তি সমবায়ের প্রথম বৈঠক কত খ্রিস্টাফ অনুষ্ঠিত  হয়?

উত্তর। চতুঃশক্তি চুক্তি বা শক্তি সমবায়ের প্রথম বৈঠক ১৮১) খ্রিস্টাব্দে হয়।

[28; চতুঃশক্তি চুক্তি বা শক্তি সমবায়ের প্রথম বৈঠক কে?

উত্তর। চতুঃশক্তি চুক্তি বা শক্তি সমবায়ের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়

জার্মানির আই-লা-স্যাপেল শহরে।

29_j শক্তি সমবায়ের বা চতুঃশক্তি চুক্তির দ্বিতীয় বৈঠক কোথায়

অনুষ্ঠিত হয়?

উত্তর। শক্তি সমবায়ের বা চতুঃশক্তি চুক্তির দ্বিতীয় বৈঠক ঐপাে-তে

অনুষ্ঠিত হয়।

30_j শক্তি সমবায়ের ট্রপাে বৈঠক কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল?

উত্তর। শক্তি সমবায়ের ট্রলাে বৈঠক ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল।

31ট্রলাে প্রােটোকল' বা ট্রলাের ঘােষণাপত্র কত খ্রিস্টাব্দে জারি করা হয় ?

উত্তর। ট্রলাে প্রােটোকল বা ট্রলাের ঘােষণাপত্র ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে জারি করা হয়।

[32] কাকে ইউরােপের প্রধানমন্ত্রী' বলা হত?

উত্তর। প্রিন্স মেটারনিখকে ইউরােপের প্রধানমন্ত্রী’ বলা হত।

33_j কাকে ইউরােপীয় রক্ষণশীলতার জনক' বলা হয় ?

উত্তর। প্রিন্স মেটারনিখকে ইউরােপীয় রক্ষণশীলতার জনক’ বনা হয়।

কত খ্রিস্টাব্দে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে ?

উত্তর। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে।

35 ফ্রান্সে কত খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লব হয়েছিল?

উত্তর। ফ্রান্সে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লব হয়েছিল।

36.ফরাসি সম্রাট অষ্টাদশ লুই-এর পর কে ফ্রান্সের সম্রাট হন।

উত্তর ফরাসি সম্রাট অষ্টাদশ লুই-এর পর ফ্রান্সের সম্রাট হন দশম চার্লস।

37.দশম চালর্স কত খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সম্রাট হন ?

উত্তর। দশম চার্লস ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সম্রাট হন।

38_ পলিগন্যাক কে ছিলেন?

উত্তর। পলিগন্যাক ছিলেন সম্রাট দশম চার্লসের প্রধানমন্ত্রী।

39_ জুলাই বিপ্লবের ফলে কোন্ সম্রাট সিংহাসনচ্যুত হন।

উত্তর। জুলাই বিপ্লবের ফলে সম্রাট দশম চার্লস সিংহাসনচ্যুত হন।

40। দশম চালর্স কে ছিলেন ?

উত্তর দশম চার্লস ছিলেন ফ্রান্সের বুরবো বংশের সম্রাট


নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের ২ নং প্রশ্ন উত্তর


উনবিংশ শতকের ইউরোপ(2)


1‘জাতীয়তাবাদ' বলতে কী বােঝায় ?*

উত্তর মানবজাতির ক্রমবিবর্তনের ইতিহাসে জাতীয়তাবাদ একটি মহান আদর্শরূপে পরিচিত। জাতীয়তাবাদের উদ্ভব হয় নিজের দেশ ও জাতির প্রতি ভালােবাসা থেকে। জাতীয়তাবাদ একটি ভাবগত ধারণা কোনাে একটি জনসমাজের মধ্যে বংশ, ভাযা, ধর্ম, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি। ইত্যাদি কারণে ঐক্যবােধ সৃষ্টি হওয়ার ফলে যখন স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য রাজনৈতিক আদর্শ গড়ে ওঠে, তখন সেই আদর্শকে জাতীয়তাবাদ’ বলা হয়।


2 | আদর্শ জাতীয়তাবাদ’ বলতে কী বােঝাে?*

উত্তর আদর্শ জাতীয়তাবাদ : আদর্শ জাতীয়তাবাদের মূল কথা হল নিজে বাঁচো, অপরকে বাঁচতে দাও’ (Live and Let Live)। আদর্শ জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে একটি জাতি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে পারে, মানুষ পরস্পরস্কে শ্রদ্ধা করতে শেখে। আদর্শ জাতীয়তাবাদের মহান আদর্শ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে,

3 | বিকৃত জাতীয়তাবাদ’ বলতে কী বােঝাে?

উত্তর বিকৃত জাতীয়তাবাদ : অনেক সময় জাতীয়তাবাদ সংকীর্ণ হয়ে ওঠে। যে জাতীয়তাবাদ নিজের জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে সচেষ্ট হয় এবং এর পাশাপাশি অন্য জাতিকে নিকৃষ্ট বলে বা ঘৃণা করে, তখন

তাকে বিকৃত জাতীয়তাবাদ বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জার্মানির রাষ্ট্রনেতা হিটলারের (Hitlar) জাতীয়তাবাদ ছিল বিকৃত জাতীয়তাবাদ। কারণ তিনি জার্মানি জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রচারের পাশাপাশি অন্যান্য জাতিকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছেন।


4 জাতি কাকে বলে? /

উত্র স্বাধীন রাষ্ট্রে বসবাসকারী অথবা রাজনৈতিকভাবে এক হয়ে স্বাধীনতার জন্য সচেষ্ট জনসমাজকে জাতি বলা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্রাইস বলেছেন যে, রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত এবং বিদেশি শাসন থেকে মুক্ত বা মুক্তিলাভের জন্য সচেষ্ট জাতীয় জনসমাজকে জাতি বলা হয়।


5.তি-রাষ্ট্র' বলতে কী বােঝায় ?

উত্তর জাতিরাষ্ট্র কথাটির মধ্যে রয়েছে জাতি ও রাষ্ট্র নামে দুটি বিষয়। সাংস্কৃতিক ও জাতিগত স্বাতন্ত্র্যমুক্ত একটি জাতির সার্বভৌম রাজনৈতিক কর্তৃত্বযুক্ত ভৌগােলিক এলাকাই জাতি-রাষ্ট্র নামে পরিচিত।

6 | কী পরিঘির্তিতে ভিয়েনা চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল?

উত্তর এলবা দ্বীপে নেপােলিয়নের নির্বাসনের পর ইউরােপীয় রাজ্যগুলির পুনর্গঠন, পুনর্বিন্যাস এবং উদ্ভূত অপরাপর সমস্যার সমাধানের জন্য ইউরােপীয় শক্তিবর্গ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনাতে

এক সম্মেলনে সমবেত হন (১৮১৪ খ্রি., ১ সেপ্টেম্বর)। নেপােলিয়ন আকস্মিকভাবে ফ্রান্সে ফিরে আসায় কিছুদিন সম্মেলনের কর্ম বন্ধ থাকে! ওয়াটারলুর যুদ্ধে নেপােলিয়নের চূড়ান্ত পরাজয়ের পর আবার সম্মেলন শুরু হয় এবং দীর্ঘ আলাপ-আলােচনার পর ১৮১২ খ্রিস্টারে ৯ জুন ভিয়েনা চুক্তি সম্পাদিত হয়।

File Details:-

File Name:-  

File Format:- Pdf

Quality:- High

File Size:-  4Mb

PAGE- 60

File Location:- Google Drive

Download: click Here to Download

7.ভিয়েনা সম্মেলন কবে, কোথায় ও কী উদেশ্যে আহ্বান

উত্তর নেপােলিয়নের পতনের পর ইউরােগের বিজয়ী শক্তিগুলি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা নগরীতে মিলিত হয়।

এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউরােপকে প্রাক-সি বিপ্লব অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, ইউরােপের রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনগঠন ও পুনর্বণ্টনের মাধ্যমে রাজতন্ত্রকে শক্তিশালী করা, ফ্রান্সের শকি নিয়ছেন ও যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ আদায় করা ও ইউরােপের শাছি বজায় রাখা।


৪| ডিয়েনা সম্মেলনে কেন্ কােন্ রাষ্ট্রে প্রধান হিম।

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনে যেসব রাষ্ট্রের প্রাধান্য ছিল সেগুলি হল-

 অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া এবং ইংল্যান্ড অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স মেটারনিখ ছিলেন এই সম্মেলনের সভাপতি। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রিয়ার রাজা প্রথম ফ্রাজিল, রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার, এশিয়ার রাজা তৃতীয় ডেন্ত্রিক উইলিয়ম, ইংল্যান্ডে মন্ত্রী কামালরি প্রমুখ। এই সম্মেলনে পরাজিত যুগলের প্রতিনিধি ছিলেন টেলিব্যান্ড (লের)।


4 ভিয়েনা সমনে হয় এখান' (১e For) নামে পৱিাত?*

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনে ইউরােপের সৎ শে এতি নাহ উপাখত থাকলেও গৱটি রাষ্ট্র প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল এরা মনে করত নেপােলিয়নের পতনে এদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই চারটি রাষ্ট্র হল অস্ট্রিয়া, @ রাশিয়া, 3 প্রাশিয়া ও


৫) ইংল্যান্ড। এরাই ‘চার প্রধান’ নামে পরিচিত।


(12) ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত লক্ষ্য কী ছিল?

উত্তর প্রকৃত লক্ষ্য : ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত লক্ষ্য ছিল—ফরাসি বিপ্লবপ্রসূত উদারনৈতিক ভাবধারা দমন করা ও পুরাতনতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

2ি। ইউরােপের বিভিন্ন অঞ্চল বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যে ভাগ করে নেওয়া।


14 ভিয়েনা সলেনে কী কী নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল ?

উত্তর ভিয়েন সম্মেলনে তিনটি নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। এই তিনটি নীতি হল– ও ন্যায্য অধিকার নীতি; @ক্ষতিপূরণ নীতি ও শক্তিসাম্য নীতি। হয়ে লেনের সম্পদক ফ্রেডরিক ভন জেমস (Friedrick Von Ger) বলেছিলেন যে, বিরের সমবেত হয়েছে বিয়ের ফসল নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার জন্য(The real object of Congress was to divide among the conquerors the spoils of the vanquished):


15 ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি বলতে কী। বােঝায়?

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত ‘ন্যায্য অধিকার নীতি’ বলতে বােঝায়- ফরাসি বিপ্লবের আগে যে রাজা বা রাজবংশ যেখানে রাজত্ব।

করতেন সেখানে আবার তাদের রাজত্ব করার অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। অর্থাৎ ইউরােপে প্রাক্-বিপ্লব যুগের পুনঃপ্রবর্তন করা। এই নীতি অনুসারে ফ্রান্সে বুরবো বংশ, হল্যান্ডে অরেঞ্জ বংশ এবং ইটালিতে

পােপের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

A6াভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত ক্ষতিপূরণ নীতি’ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর নেপােলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেসব রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের সেই ক্ষতি পূরণ করার জন্য যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, তাকে ক্ষতিপূরণ নীতি’ বলা হয়।

এই নীতি অনুসারে অস্ট্রিয়া উত্তর ইটালিতে লম্বার্ডি, ভেনেসিয়া,টাইরল প্রভৃতি লাভ করে। ইংল্যান্ড তার বাণিজ্যিক সুবিধার জন্য ইউরােপের বাইরে মাল্টা, সিংহল, মরিসাস প্রভৃতি পায়। অর্থাৎ

নেপােলিয়নের সাম্রাজ্যভুক্ত অংশগুলি থেকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।


15.পডিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত শক্তিসাম্য নীতি' বলতে কী নীতি বােঝায়?

উত্তর ভিয়েনা সম্মেলনে প্রধান তিনটি নীতির অন্যতম ছিল শক্তিসাম্য।

 এই নীতির মূল কথা হল আগামী দিনে ফ্রান্স যাতে শক্তিশালী হয়ে।ইউরােপের শান্তিবিঘ্নিত করতে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এই নীতি অনুসারে ফ্রান্সের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের। সঙ্গে এবং রাইন প্রদেশগুলিকে প্রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

25 ‘ওয়ার্টবার্গ উত্সব' কাকে বলে ?

উত্তর ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের পর জেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা

বুরসেনসাট নামে একটি জাতীয়তাবাদী ছাত্র সংগঠন গড়ে তােলে।জার্মানির ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্র ও অধ্যাপক এর সদস্য হয়। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে মার্টিন লুথারের ৩০০তম জন্মজয়ন্তী

পালনের জন্য ছাত্র ও অধ্যাপকেরা ওয়াটবার্গে সমবেত হয়ে জার্মানির জাতীয়তাবাদ ও ঐক্যের সমর্থনে বক্তৃতা দেয়। একেই বলে ওয়ার্টবার্গ উৎসব।


29 ইউরােপীয় শক্তি সমবায় কী ও তা কেন গঠিত হয় ?*

উত্তর ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে মেটারনিখের উদ্যোগে অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে যে চতুঃশক্তি সমবায়’ গড়ে ওঠে, তাকে ইউরােপীয় শক্তি সমবায়’ বলা হয়।

এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল— তা ইউরােপে শান্তি বজায় রাখা এবং ফরাসি বিপ্লবের হাত থেকে ইউরােপকে রক্ষা করা। @ ভিয়েনায় স্বীকৃত ইউরােপের রাষ্ট্রনৈতিক ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখা। ও ভবিষ্যতে

ফরাসি আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইত্যাদি।


31। মেটারনিং' কে ছিলেন?

উত্তর মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলার বা গ্রধানমন্ত্রী তিনি ছিলেন সমকালীন ইউরােপের সর্বাপেক্ষা তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন কূটনীতিবিদ এবং ইউরােপীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রক। তাকে কূটনীতির রাজকুমার' বলা হত।

১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে ইউরােপের ইতিহাসে 'মেটারনিখের যুগ' বলা হয়।

32ইউরােপের ইতিহাসে কোন সময়কে ‘মেটারনিখের যুগ বলা হয় ? মেটারনিথের যুগ কেন বলা হয় ?

উত্তর ইউরােপের ইতিহাসে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ।পর্যন্ত সময়কালকে মেটারনিখের যুগ বলা হয়।

৩ ভিয়েনা সম্মেলন বা ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে মেটারনিখ ইউরােপীয় রাজনীতির উপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। এই সময়কালে তার ইচ্ছা অনুসারে ইউরােপীয়

রাজনীতি পরিচালিত হয়েছে- তিনিই ছিলেন ইউরােপের ভাগ্যনিয়ত তাই ঐতিহাসিক লুই ফিশার এই সময়কালকে ‘মেটারনিখের যুগ' বলেঅভিহিত করেছেন।


35) মেটারনিখ পদ্ধতি কী ?

উত্তর প্রিন্স মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার ‘চ্যান্সেলার বা প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছিলেন বিপ্লববিরােধী ও ঘােরতর রক্ষণশীল। তিনি প্রাক্-ফরাসি বিপ্লব যুগের রাজনৈতিক অবস্থার পুনঃপ্রবর্তন। ও গণতান্ত্রিক ভাবধারার গতিরােধ করার জন্য যে দমনমূলক নীতি। গ্রহণ করেছিলেন, তাকে ‘মেটারনিখ পদ্ধতি বলা হয়।।


37) মেটারনিখ নীতির উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তর মেটারনিখের নীতির উদ্দেশ্য ছিল-

1 ইউরােপে ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী যুগের রাজনীতি ফিরিয়ে আনা।

[2] ইউরােপে জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক ভাবধারার গতিরােধ করা।

3। ইউরােপের রাজনীতিতে অস্ট্রিয়ার নিরঙ্কুশ প্রাধান্য বজায় রাখা।


39/মেটারনিখ পদ্ধতি কেন ব্যর্থ হয় ?*

উত্তর মেটারনিখ জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক প্রভাব থেকে উদ্ভূত সমস্যাগুলির যথাযথ সমাধানের চেষ্টা না করে শক্তির দ্বারা দমন করতে। গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হন। ১৮৪৮-এর বিপ্লবে যা মারাত্মক আকার ।

ধারণ করে। মেটারনিখ পদ্ধতি ছিল রক্ষণশীলতার সমর্থক ও যুগধর্ম| বিরােধী। ইতিহাসের নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করে তিনি সমুদ্রের ঢেউকে বালির বাঁধ দিয়ে আটকাতে চেয়েছিলেন।


Ad কালসড ডিক্রি' কী ?*

উত্তর কালসড় হল জার্মানির একটি শহর। ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে মেটারনিখ কালর্সবার্ড থেকে যে হুকুমনামা জারি করেন, তা কার্লসবার্ড।


41 মনরাে নীতি কী ?*

উত্তর দক্ষিণ আমেরিকার স্পেনীয় উপনিবেশগুলিতে স্বাধীনতাআন্দোলন শুরু হলে শক্তি সমবায় ওই উপনিবেশগুলির আন্দোলন দমনে উদ্যোগী হয়। এই অবস্থায় মার্কিন রাষ্ট্রপতি জেমস মনরাে

১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে তার বিখ্যাত মনরাে নীতি ঘােষণা করেন। এতে বলা হয় - ক আমেরিকা সম্পূর্ণভাবে আমেরিকাবাসীর জন্য,@ আমেরিকায় ইউরােপীয় হস্তক্ষেপ মার্কিন দেশ সহ্য করবে না এবং

3) আমেরিকায় উপনিবেশ বিস্তারের সমস্ত প্রচেষ্টায় বাধা দেওয়া হবে।


44(১৮১৫ থেকে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে ইউরােপের পুনর্গঠনের যুগ বলা হয় কেন?

উত্তর নেপােলিয়ন বােনাপার্টের পতনের পর ১৮১৫ থেকে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে ইউরােপের ইতিহাসের প্রধান বিষয় ছিল ইউরােপের রাজনৈতিক ও ভৌগােলিক কাঠামাের পুনর্বিন্যাসের জন্য সংঘাত— তাই এই সময়কালকে ইউরােপের পুনর্গঠনের যুগ’বলা হয়।


51জুলাই রাজত' বলতে কী বােঝো?*

উত্তর ১৮৩০ খ্রিস্টাকে ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লবের ফলে তুরৰে বংশে শাসনের অবসান হয়। ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন অলিয়ে নেয় লুই ফিলিপ। তিনি বিপ্লবী সংবিধান মেনে শাসন পরিচালনার পন্য ।

গ্রহণ করেন। জুলাই বিপ্লবের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সম্রাট লুই ফিলিপের শাসনকালকে (১৮৩০-১৮s৮ খ্রি.) জুলাই রাজতন্ত্র বলা হয়।


52জুলাই রাজতন্ত্র কত বছর স্থায়ী হয়েছিল? এই সময় ফ্রান্সের রাজা কে ছিলেন ?

উত্তর জুলাই রাজতন্ত্র ১৮ বছর (১৮৩০-৪৮ খ্রি.) শায়ী হয়েছিল।জুলাই রাজতন্ত্রে ফ্রান্সের রাজা ছিলেন অলিয়েন্স বংশের লুই ফিলিপ।

54 নাগরিক বাজা কাকে বলা হত? তাঁর রাজত্বকাল নে

বিখ্যাত?

উত্তর ফ্রান্সের রাজা লুই ফিলিপকে নাগরিক রাজা' বলা হত কারণ— লুই ফিলিপ উত্তরাধিকারসূত্রে সিংহাসনে বসেননি, ফ্রান্সের নাগরিকদের ইচ্ছানুসারে ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেছিলেন।

লুই ফিলিপের রাজত্বকাল ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের জন্য বিখ্যাত।


60 ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে বিপ্লবের বছর’ কেন বলা হয় ?

উত্তর ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব শুরু হলে তার প্রভাবে সমগ্র ইউরােপে বিপ্লবের ঢেউ ওঠে। স্বৈরাচারী শাসনতন্ত্র এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনাচারের বিরুদ্ধে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি,ইটালি, জার্মানি এমনকি ইংল্যান্ড-এও ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে এবং একই বছর অনেকগুলি আন্দোলন সংঘটিত হয়।

ইতিপূর্বে ইউরােপে কখনই এরকম স্বতঃস্ফূর্ত জাতীয়তাবাদী গণ আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। এজন্য ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে ‘বিপ্লবের বছর’ বলা হয়।


61 কবে ও কীভাবে ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র ও দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয় ?

উত্তর ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে লুই কিলিপ ক্ষমতাচ্যুত হলে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু কিছুদিন পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নেপােলিয়নের ভ্রাতুস্পুত্র লুই নেপােলিয়ন ক্ষমতা

লাভ করেন। ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে লুই নেপােলিয়ন প্রজাতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

64/ফ্রান্সকে ‘বিপ্লব নগরী’ বলা হয় কেন?*

উত্তর ফ্রান্সে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লব, ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লব এবং ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব সংঘটিত হয়।এর ফলে ফ্রান্সে বহুবার রাজতন্ত্রের উত্থান ও পতন ঘটে। সেইজন্য

অনেক ঐতিহাসিক ফ্রান্সকে বিপ্লব নগরী’ বলেছেন।


65.জাতীয় কর্মশালা কী ?*

উত্তর ১৮৪৮খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র ঘােষিত হলে প্রজাতান্ত্রিক সরকার বেকার মানুষদের কর্মসংস্থানের জন্য জাতীয় কর্মশালা’ বা ন্যাশনাল ওয়ার্কশপ’থাপন করে।


67)রিসঅগিমেন্টো' কী?

উথর ‘বিসর্গিমেন্টো' কথাটির অর্থ ‘নবজাগরণ। বৈদেশিক শাসন ও শােষণে অতিষ্ঠ ইটালিবাসী ১৮৩০-৪৮ খ্রিস্টাব্দে এক প্রতিরােধ আন্দোলন গড়ে তােলেন যার লক্ষ্য ছিল বিদেশি শাসন থেকে মুক্তি ও সংস্কারমূলক শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করা। এর ফলে ইটালির ভাবজগতে এক আলােড়নের সৃষ্টি হয়। এই আলােড়নই ইটালির ইতিহাসে ব্রিসঅর্গিমেন্টো' নামে পরিচিত।


68 কাবোনারি' কী ?

উত্তর কার্বোনারি হল ইটালির এক গুপ্ত সমিতি। ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত রক্ষণশীল শাসনব্যবস্থার অবসানের জন্য ইটালিতে যেসব গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠেছিল সেগুলির মধ্যে কার্বোনারি’ (১৮১৫ খ্রি.)

অন্যতম। কার্বোনারি' কথার অর্থ জলন্ত অঙ্গারবাহী। নেপলস ছিল এর প্রধান কেন্দ্র। ইটালি থেকে বিদেশি শাসনের অবসান, ঐক্যবদ্ধ ইটালি গঠন ও উদার গণতান্ত্রিক শাসন প্রবর্তনই ছিল কার্বোনারিদের

প্রধান লক্ষ্য। এরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিপ্লবী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পক্ষপাতী ছিলেন।


71 ইয়ং ইটালি' কী ?*

উত্তর ইটালির যুবসমাজকে জাতীয়তাবােধে উদ্বুদ্ধ করার জন্য জোসেফ ম্যাসিনি ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের মার্সাই শহরে ইয়ং ইটালি’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই দলের উদ্দেশ্য ছিল— শিক্ষাপ্রসার,চরিত্র গঠন ও আত্মত্যাগের দ্বারা ইতালীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবােধ জাগ্রত করা। ম্যাৎসিনি এই দলের আদর্শ প্রচার করার জন্য ইয়ং ইটালি’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন


87 জোলভেরেইন' কী?

উত্তর জোলভেরেইন হল একটি শুল্কসংঘ। এটি ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে জার্মান অর্থনীতিবিদ মাজেন-এর উদ্যোগে এবং প্রাশিয়ার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিভিন্ন জার্মান রাজ্যগুলিতে যে বিভিন্ন ধরনের

আমদানি-রপ্তানি শুল্ক চালু ছিল তা দূর করার জন্য এই শুল্কসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সব জার্মান রাজ্য এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। জোলভেরেইন জার্মানির ঐক্য আন্দোলনের পটভূমি রচনা করেছিল।

91 বিসমার্কের রক্ত ও লৌহ' নীতি বলতে কী বােঝায় ?*

উত্তর প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মান রাজ্যগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীন জার্মানি গড়ে তােলার জন্য রক্ত ও লৌহ’নীতি গ্রহণ করেছিলেন। রক্ত ও লৌহ’নীতি বলতে বােঝায় যুদ্ধ ও কঠোর শৃঙ্খলা’। বিসমার্ক একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন করে ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। তার রক্ত ও লৌহ’ নীতির ফলে ঐক্যবদ্ধ স্বাধীন জার্মানি গড়ে ওঠে।


98এমস টেলিগ্রাম কী ?*

১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে এমস নামক স্থানে প্রাশিয়ার রাজা ফ্রেডরিক উইলিয়মের সঙ্গে ফরাসি রাষ্ট্রদূত কাউন্ট বেনেদিতির মধ্যে স্পেনের সিংহাসনের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলােচনা হয়। এই আলােচনার বিষয়বস্তু প্রাশিয়ার রাজা বিসমার্ককে টেলিগ্রামের মাধ্যমে জানান। এটি এমন টেলিগ্রাম’ নামে পরিচিত।



 ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ 4 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের ৪ নং প্রশ্ন উত্তর

উনবিংশ শতকের ইউরোপ(4)


2 জাতীয়তাবাদ’ বলতে কী বােঝায়? এর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখাে।*73)

উত্তর জাতীয়তাবাদ: কোনাে নির্দিষ্ট ভৌগােলিক এলাকার মধ্যে। বসবাসকারী জনসমষ্টির মধ্যে ভাষা, ধর্ম, সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রভৃতি। কোনাে একটি কারণে গভীর একাত্মবােধের জন্ম হলে এবং এই জনগণের প্রতিটি অংশ যখন নিজেদের একে অপরের সুখ-দুঃখের সঙ্গী বলে। মনে করে, তখন সেই গণ অনুভূতিকেই জাতীয়তাবাদ’ বলা হয়।অর্থাৎ জাতীয়তাবাদ হল একটি রাজনৈতিক আদর্শ, আর তার ধারকহল রাজনৈতিকভাবে স্বীকৃত একটি জাতি।

* জাতীয়তাবাদের বৈশিষ্ট্য:

ভাবগত ধারণা ; একটি নির্দিষ্ট ভৌগােলিক এলাকা তথা জনগণের একই ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা ও স্বদেশপ্রেম জনগণের মধ্যে এক গভীর ঐক্যবােধ গড়ে তােলে।

[2] পুঁজিবাদের উত্থান : জাতীয়তাবাদ ইউরােপে মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সূচনার পথ প্রশস্ত করে।

3 | জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ববােধ : জাতীয়তাবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রত্যেক জাতির জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের তত্ত্ব অহংবােধের সঙ্গে জাতিবৈরিতাও সৃষ্টি করেছিল। যেমন— জার্মানরা টিউটনিক জাতি, রুশরা শ্লাভ জাতি এবং ইংরেজরা অ্যাংলাে-স্যাকসন জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করেছিল।

4 স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা : জাতীয়তাবাদী আদর্শ এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার উপনিবেশগুলিতে সাম্রাজ্যবাদবিরােধী। আন্দোলন শুরু করলে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে স্বদেশি শক্তির জাগরণ ঘটে।

5। ধমনিবপেক্ষতার প্রসার : জাতীয়তাবাদ ধর্মকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখায় ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির সূচনা হয়। তাই বলা যায়, আধুনিক জাতীয়তাবাদ সম্পূর্ণভাবে পরিপুষ্ট হয়েছিল ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে। এই বিপ্লবের সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার আদর্শে ইউরােপের জনজীবন দীর্ঘ শােষণ, বঞ্চনা, স্বৈরাচার

ও নিপীড়নের অন্ধকার থেকে মুক্তির আশায় জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে

সংগ্রামী প্রতিরােধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।


4 টিকা লেখাে : ভিয়েনা সম্মেলন (Congress of Vienna,১৮১৫ খ্রি.)*

উত্তর নেপােলিয়নের পতনের পর ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে বিক্ষিপ্ত

ইউরােপের পুনর্গঠনের জন্য ইউরােপের রাষ্ট্রনেতাগণ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা শহরে সমবেত হয়েছিলেন। এটি ইতিহাসে ভিয়েনা সম্মেলন (১৮১৫ খ্রি.) নামে খ্যাত।

সম্মেলনের প্রধান নেতৃবৃন্দ : ভিয়েনা সম্মেলনে ইউরােপের সমস্ত রাষ্ট্রের প্রতিনিধি (পােপ ও তুরস্কের সুলতান ছাড়া)

অংশগ্রহণ করলেও অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ড—এই চারটি রাষ্ট্র প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। চার প্রধান (Big Four) নামে পরিচিত এই চারটি দেশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী

মেটারনিখ, প্রাশিয়ার সম্রাট ফ্রেডরিক উইলিয়ম, রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার এবং ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্যাসালরি।

উদ্দেশ্য : ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল— @ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব স্থাপন করা।

@ ইউরােপে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। @ তবে এই আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল ফ্রান্সের শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা ও ইউরােপে ফরাসি বিপ্লবের আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনা।

সম্মেলনে গৃহীত নীতি : দীর্ঘ আলাপ-আলােচনার পর এই

সম্মেলনে তিনটি নীতি গৃহীত হয়েছিল— @ ন্যায্য অধিকার নীতি,@ ক্ষতিপূরণ নীতি ও @ শক্তিসাম্য নীতি।পরবর্তী প্রায় ৪০ বছর ইউরােপের শান্তি বজায় রাখতে ভিয়েনা

সম্মেলন সক্ষম হলেও শেষ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছিল। এই সম্মেলনে ইউরােপের রাষ্ট্রগুলি নেপােলিয়নকে পরাজিত করার পর ইউরােপের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে

চেয়েছিল— যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে।

9. ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত শক্তিসাম্য নীতি' (Principle of Balance of Power) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে। (5

উত্তর নেপােলিয়নের পতনের পর ইউরােপীয় শক্তিবর্গ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা শহরে সম্মেলনে সমবেত হন (১৮১৪-১৫ খ্রি.) । এই সম্মেলনে দীর্ঘ আলাপ-আলােচনার পর যে তিনটি নীতি গৃহীত হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল শক্তিসাম্য নীতি।

শক্তিসাম্য নীতি : ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক অংশের ২ নম্বর প্রশ্নের শক্তিসাম্য নীতি’ অংশটি লিখতে হবে।


16টিকা লেখাে : মেটারনিখ ব্যবস্থা (Metternich System) *

উত্তর প্রিন্স মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি নেপােলিয়নের পতনের পর ফরাসি বিপ্লবের আদর্শকে অস্বীকার করে পুরাতন স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন,

তা ইতিহাসে মেটারনিখ ব্যবস্থা (Metternich System) নামে পরিচিত। ১৮১৫ খ্রিষ্টা থেকে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ছিলেন। ইউরােপীয় রাজনীতির ভাগ্যনিয়ন্তা এবং তার ইচ্ছানুসারে ইউরােপীয় । রাজনীতি পরিচালিত হত। তাই এই সময়কে ঐতিহাসিক লুই ফিশার মেটারনিখের যুগ' বলে অভিহিত করেছেন।

মেটারনিথ ব্যবথ : মেটারনিখ ছিলেন প্রতি বিপ্লব ২বিপ্লবের বিরােধিতার মূর্ত প্রতীক। তার নীতি ছিল প্রতিক্রিয়াশীল প্রগতিবিরােধী। ন্যায্য অধিকার নীতি প্রয়ােগ করে তিনি ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী যুগের রাজনৈতিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন

উদ্দেশ্য : মেটারনিখ ব্যবস্থার উদ্দেশ্য ছিল- ইউরােপের রাজনীতিতে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করা। ৫) ইউরােপে প্রাক-ফরাসি বিপ্লব যুগের রাজনৈতিক অবস্থাকে ফিরিয়ে আনা।

প্রয়ােগ ; মেটারনিখ ইউরােপের বিভিন্ন দেশে তার এই নীতি সফলভাবে প্রয়ােগ করেছিলেন () নেপােলিয়ন ইউরােপের বিভিন্ন দেশে যেসব রাজাদের সিংহাসনচ্যুত করেছিলেন সেই বংশের রাজাদের ওই দেশের সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন মেটারনিখ।

(2) জার্মানির জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করার জন্য তিনি সেদেশে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে কার্লসড ডিক্রি জারি করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংবাদপত্রের কণ্ঠরােধ করেছিলেন।তবে মেটারনিখ ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ—

0 তিনি পুরাতন রাজতন্ত্রকে সমর্থন করে ও প্রগতিশীলতার বিরােধিতা করে যুগবিরােধী কাজ করেছিলেন। (ঠ তা ছাড়া শিল্পবিপ্লবের ফলে ইউরােপে যে আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছিল সেখানে পুরাতন রাজতন্ত্র ছিল সম্পূর্ণ বেমানান। এ ছাড়াও তার অদূরদর্শিতা ও ইংল্যান্ডের বিরােধিতা মেটারনিখ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল।


23 ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের গুরত্ব না ফলাফল দেখে||

উর ফ্রান্স তথা ইউরােপ মেসকল বিপ্লবের জন্য বিশ্ব ইতিহ\(\ খ্যাত। হয়ে আছে, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে সপিটি ফেব্রুয়ারি বিপ্লব। ফ্রান্সের ইতিহাসে এই বিপ্লব নানান কারণে গুৰুত্বপূর্ণ।

গুরুত্ব :

[1] ফ্রান্সে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ; ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের প্রথম পর্ষয়ে। লুই ফিলিপ ও গিজো পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। দ্বিতীয় পর্যায়ে। উদারপন্থীরা ফ্রান্সকে প্রজাতন্ত্ররুপে ঘােষণা করে। এইভাবে

ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের অবসান এবং প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়।

[2] জনসাধারণের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা ; ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে ধনী বুর্জোয়াদের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠিত হয় জনসাধারণের প্রাধান্য। এর ফলে আর্থ-সামাজিক জীবনযাত্রার মানােন্নয়ন ঘটেছিল।

[3] সর্বজনীন ভােটাধিকারের স্বীকৃতি : ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে সর্বজনীন ভােটাধিকারের দাবি স্বীকৃত হয় এবং সর্বজনীন ভােটাধিকারের ভিত্তিতেই আইনসভার সদস্যদের নির্বাচিত করার প্রস্তাব গৃহীত হয়।

[4] দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা ; ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে লুই নেপােলিয়ন তৃতীয় নেপােলিয়ন (Napoleon l) নামধারণ করে নিজেকে ফ্রান্সের সম্রাট ঘােষণা করেন ও দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।

সর্বোপরি ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর ফ্রান্সের প্রজাতান্ত্রিক সরকার দাসব্যবস্থার উচ্ছেদসাধন করে। এর ফলে বহু মানুষ স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার সুযােগ পায়।


28) ইটালির ঐক্যে জোসেফ ম্যাসিনির (GiuseppeMazzini) অবদান কী ছিল?

উত্তর ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা কংগ্রেসে ন্যায্য অধিকার নীতির ভিত্তিতে ইটালি সম্পর্কে যে ব্যবস্থা গৃহীত হয় তাতে ইটালি একটি ‘ভৌগােলিক সংজ্ঞায় পরিণত হয়। ইটালিকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করে ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য যারা উল্লেখযােগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জোসেফ ম্যাৎসিনি(Giuseppe Mazzini)

ম্যাৎসিনি : ইটালির জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ম্যাৎসিনি ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ইটালির জেনােয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। ইটালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে সফল করার জন্য তিনি প্রথম জীবনে কার্বোনারি নামক গুপ্ত সমিতিতে যােগদান করেন। কিন্তু কার্বোনারির হঠকারিতা ও অবাস্তব ভাবাবেগ তার মনঃপুত হয়নি। তিনি উপলব্ধি করেন ইটালিকে স্বাধীন করার জন্য প্রয়ােজন গণসংযােগ ও দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত যােগদান।

ইয়ং ইটালি (Young Italy) : নিজের উদ্দেশ্য ও কর্মপন্থাকে সফল করার জন্য ম্যাসিনি ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ইয়ংইটালি বা নব্য ইটালি নামে একটি যুবসংগঠন তৈরি করেন।

এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল দেশের যুবসম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের মধ্যে জাতীয় চেতনা জাগ্রত করা এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া।

ম্যাসিনির প্রচেষ্টা : ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সূত্র ধরে ইটালির লম্বার্ডি, ভেনিস ও পােপের রাজ্য রােমে বিদ্রোহ শুরু হয়। ম্যাসিনির উদ্যোগে এই সময় টাসকানি ও রােমে প্রজাতন্ত্র

প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের দমননীতির ফলে ম্যাসিনির সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় এবং তিনি ইংল্যান্ডে আশ্রয় নেন।

29 টীকা লেখাে : ইয়ং ইটালি (Young Italy)।*

উত্তর প্রথম জীবনে ইটালির মুক্তির উদ্দেশ্যে ম্যাসিনি কার্বোনারি দলে যােগদান করলেও এই দলের ধ্বংসাত্মক ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মপন্থা তার পছন্দ ছিল না। ফলে তিনি ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ইয়ং ইটালি’ বা নব্য ইটালি’ নামে একটি নতুন দল গঠন করেন।*

ইয়ং ইটালি : ম্যাসিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, দেশের যুবশক্তি এবং জনগণের সমবেত শক্তির মাধ্যমেই বহুবিভক্ত ইটালির

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব। চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত যে-কোনাে ব্যক্তি এই দলের সদস্য হতে পারতেন।

আদর্শ : কার্বোনারির মতাে গুপ্ত সমিতি হলেও ইয়ং ইটালি দল।নাশকতামূলক কাজকর্মে বিশ্বাসী ছিল না। দলের আদর্শ ছিল শিক্ষাপ্রচার,আত্মত্যাগ ও জনসাধারণের মনে জাতীয়তাবাদের সঞর করা। তাদের মূল মন্ত্র ছিল ঈশ্বর, জনগণ ও ইটালি।

জনপ্রিয়তা : খুব অল্প সময়ের মধ্যে ইটালিতে ইয়ং ইটালি দল *ম্যাসিনি নির্বাসিত অবস্থায় ফ্রান্সের মার্সাই শহরে ইয়ং ইটালি দল গঠন করেছিলেহয়


30 ইটালির ঐক্যে কাউন্ট ক্যাভুরের (Count Cavour) অবদান লেখাে।*

উত্তর ইটালির ঐক্য আন্দোলনে যে সকল ব্যক্তি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কাউন্ট ক্যামিলাে ক্যাভুর।ইটালির ঐক্য আন্দোলনে তিনি ছিলেন রক্ষণশীল ধারার প্রবর্তক।

ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে তিনি ম্যাসিনির নীতি পরিত্যাগ করে একটি স্বতন্ত্র নীতি গ্রহণ করেন।

ক্যাভুরের নীতি : ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য ক্যাভুর বিদেশিশক্তির সাহায্যের প্রয়ােজনীয়তা উপলদ্ধি করেন। তিনি মনে করতেন, একমাত্র বিদেশিশক্তির সাহায্যেই ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব হবে। ইটালির এই ঐক্য সংগ্রামে পিডমন্ট রাজ্যের নেতৃত্বকে বাস্তব ও সঠিক পন্থা বলে মনে করতেন তিনি। এজন্য তিনি পিডমন্টকে জাতীয় আন্দোলনের উপযুক্ত করে গড়ে তােলেন। এরপর তিনি

ইউরােপীয় দেশগুলির সহানুভূতি লাভের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের পক্ষে যােগদান করেন। এই যুদ্ধে জয়লাভের ফলে তিনি ঐক্য আন্দোলনে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সহানুভূতি লাভে সক্ষম হন।

প্লোমবিয়ার্সের চুক্তি (Plombieres Agreement) : ইটালি থেকে অস্ট্রিয়াকে বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে ক্যাভুর ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপােলিয়নের সঙ্গে প্লোমবিয়ার্সের চুক্তি স্বাক্ষর করেন (১৮৫৮ খ্রি.)। এর দ্বারা স্থির হয় অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফ্রান্স পিডমন্টকে সামরিক সাহায্য দেবে এবং বিনিময়ে স্যাভয় ও নিস পাবে। তৃতীয় নেপােলিয়নের সাহায্যেই তিনি অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে মধ্য ইটালিকে সার্ডিনিয়ার

সঙ্গে যুক্ত করতে সক্ষম হন।এইভাবে ক্যাভুরের প্রচেষ্টায় মধ্য ইটালির ঐক্য সফল হয়েছিল।

উত্তর ও দক্ষিণ ইটালির সংযুক্তির ক্ষেত্রেও ক্যাভুরের অবদান ছিল। তার নির্দেশে গ্যারিবল্ডি(Garibaldi) রাজা ইমান্যুয়েলের আনুগত্য করলে উত্তর ও দক্ষিণ ইটালির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়। এই কারণে ক্যাভুরকে ইটালির ঐক্য আন্দোলনের মস্তিষ্ক’ বলা হয়।


36 বিসমার্ক-এর রক্ত ও লৌহ নীতি (Blood and fron Poy) বলতে কী বােঝায়?

উত্তর অটো লিওপােল্ড ভন বিসমার্ক (Otto Leopold Vor) Bismarck) ইতিহাসে বিসমার্ক নামে অধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন। সমকালীন ইউরােপীয় রাজনীতির প্রধান পরিচালক ও নিয়ন্ত্রক। তিন প্রথম ৮ বছর (১৮৬২-১৮৭০ খ্রি.) প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং পরবর্তী ২০বছর(১৮৭০-১৮৯০ খ্রি.) জার্মানির প্রধানমন্ত্রী পদে অত্যন্ত দক্ষ সঙ্গে কাজকরেছেন। তিনি রক্ত ও লৌহ' (Blood and Iron)নীতি দ্বারা জার্মানিকে একটি ঐক্যবদ্ধ ওসংগঠিতরাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন।

বিসমার্কের পূর্ব পরিচয় : বিসমার্ক ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ব্যাভেনবার্গের অন্তর্গত শ্যেনহাউজেন অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। বিসমার্ক ছিলেন জুংকার (Junker) বা জমিদার পরিবারের সন্তান। তিনি বার্লিন ও গাটিংজেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশােনা করেন। বিসমার্কের নানান ভূমিকা সম্পর্কে ব্যঙ্গচিত্র

বিসমার্কের উথান : প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিক উইলিয়ামের মৃত্যুর পর তার ভাই প্রথম উইলিয়ম প্রাশিয়ার রাজা হন। তিনি ছিলেন বাস্তববাদী ও সামরিক শক্তিতে বিশ্বাসী রাজা। তিনি ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে বাস্তববাদী ও রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ বিসমার্ককে তার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন।

বিসমার্কের ‘রক্ত ও লৌহ' নীতি (Blood and Iron Policy); বিসমার্ক বাস্তববাদী রাজনীতিতে (Real Politik) বিশ্বাস করতেন। তিনি প্রাশিয়ার আইনসভায় ঘােষণা করেছিলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজ বক্তৃতা

বা ভােটের দ্বারা হবে না, তাতে হবে রক্ত ও লৌহ নীতি দিয়ে। রক্ত ও লৌহ নীতি বলতে বােঝায় যু ও কঠোর শৃঙ্খলাবােধকে।

রক্ত ও লৌহনীতির প্রয়ােগ : বিসমার্ক রক্ত ও লৌহ নীতি অনুসরণ করে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠন করেন। ১৮৬৪ থেকে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ— এই ৬ বছরের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ করে জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ করেন। এই তিনটি যুদ্ধ হল—

[1] ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ (১৮৬৪ খ্রি.)।

2 ] প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে স্যাডােয়ার যুদ্ধ, (১৮৬৬ খ্রি.) সাত সপ্তাহের যুদ্ধ বা কোনিগ্রাৎস-এর যুদ্ধ।

3. ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সেডানের যুদ্ধ। বিসমার্কের কূটনৈতিক দক্ষতার ফলে প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়ম জার্মানির সম্রাট বা কাইজার বলে ঘােষিত হন (১৮৭১ খ্রি.)।



তৃতীয় অধ্যায় ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ বড় প্রশ্ন উত্তর,

নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের ৮ নং প্রশ্ন উত্তর


উনবিংশ শতকের ইউরোপ(8)


1 জুলাই বিপ্লবের গুৰুত্র :

ইউরােপের ইতিহাসে জুলাই বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রথমত জুলাই বিপ্লবের ফলে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের অধিকার বিলুপ্ত হয়।

দ্বিতীয়ত :সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা স্বীকৃতি লাভ করে।

তৃতীয়ত : এই বিপ্লবের প্রভাব ফ্রান্সের গণ্ডি ছাড়িয়ে সমগ্র ইউরােপে বিস্তৃত হয়। প্রায় একই সঙ্গে ইটালি, জার্মানি ও পােল্যান্ডে জাতীয় আন্দোলন শুরু হয়। অবশ্য শাসকরা এই বিদ্রোহগুলি কঠোর হাতে দমন করেন। একমাত্র বেলজিয়ামের বিপ্লব সাফল্য লাভ করে। জুলাই বিপ্লবের প্রভাবে গ্রিস, ইংল্যান্ড, স্পেন, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশে আন্দোলন হয়। জুলাই বিপ্লব ইউরােপের পুরাতনতন্ত্রকে ভেঙে ফেলতে না পারলেও এর ভিত্তি যে দুর্বল করেছিল তা অনস্বীকার্য।


2. বিসমার্ক (Bismarck) কীভাবে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন ?*

উত্তর ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে অটোভন বিসমার্ক (Oto Von Bismarck) নামে এক কূটনীতিজ্ঞ প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হলে জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়।

জার্মানির ঐক্যসাধন :

বিসমার্কের কূটনীতি : জার্মানির ঐক্যসাধন বিষয়ে বিসমার্কের কূটনীতির দৃষ্টান্তগুলি উল্লেখযােগ্য— @ তিনি কেন্দ্রীয় আইনসভায় অস্ট্রিয়ার মর্যাদা নষ্ট করে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানির ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিকে সংগঠনে সচেষ্ট হন, @ তিনি ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয় বাণিজ্যচুক্তি সম্পাদন করে ফ্রান্সের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন, পােলদের বিদ্রোহ দমনে রাশিয়াকে সাহায্য করে বিসমার্ক রাশিয়ার আস্থা অর্জন করেন।


৩.রক্ত ও লৌহ নীতি (Blood and Iron Policy) : রক্ষণশীল রাজতন্ত্রের ঘাের সমর্থক বিসমার্ক মনে

করতেন, প্রাশিয়ার রাজতন্ত্রের অধীনেই জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতির উপর তাঁর আস্থা ছিল না। তিনি বলেন যে, বক্তৃতা দিয়ে বা সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রস্তাব পাস করিয়ে দেশের সমস্যার সমাধান হবে না, এর জন্য গ্রহণ করতে হবে রক্ত ও লৌহ নীতি (Blood and Iron Policy)। রক্ত ও লৌহ নীতি হল সামরিক শক্তির উপর নির্ভরশীলতা। সামরিক শক্তির দ্বারাই জার্মানির ঐক্যলাভ সম্ভব— এ কথা তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন। শেষ পর্যন্ত সামরিক শক্তির সাহায্যে তিনটি যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। তিনটি যুদ্ধ হল—

® ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ, © অস্ট্রো-প্রাশিয় যুদ্ধ, ঔ ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয় যুদ্ধ বিসমার্ক

ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ (Battle with Denmark) : শ্লেজউইগ ও হলস্টিন প্রদেশ জার্মানির রাজ্যসীমার অন্তর্ভুক্ত হলেও আইনত ডেনমার্কের অধীন ছিল। বিসমার্ক অস্ট্রিয়ার সঙ্গে মিলিত হয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে যুদ্ধ ঘােষণা করেন। পরাজিত ডেনমার্ক ভিয়েনা চুক্তির দ্বারা দুটি প্রদেশের উপর সব দাবি ত্যাগ করে। কিন্তু অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে এই দুই প্রদেশের কর্তৃত্ব নিয়ে বিবাদ বাধে।

সাইকােপে অশান্তি দেখা দিত গ্যাস্টিনের সন্ধি (Treaty of Gastein, ১৮৬৫ খ্রি.) দ্বারা প্রাশিয়া শ্লেজক ও অস্ট্রেলিয়া পার্টিশন প্রদেশ লাভ করেন 

[2] অস্ট্রো-প্রাশিয় যুদ্ধ (Austro-Prussian War) : বিসমার্ক অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যে ইউরােপীয় রাজনীতিতে তাকে মিত্রহীন করার জন্য সচেষ্ট হন। পােল বিদ্রোহের সময় রাশিয়া প্রাশিয়ার সাহায্য পেয়েছিল। আর ইটালি অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যােগ দিলে ভেনেসিয়া পেতে পারে এবং ফ্রান্স নিরপেক্ষ থাকলে জার্মানির কিছু ভূখণ্ড লাভ করতে পারে এই আশায় রাশিয়া, ইটালি, ফ্রান্স অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে চলে যায়। সাত সপ্তাহের যুদ্ধে (Seven Weeks War) এবং স্যাডােয়ার যুদ্ধে (Battle of Sadowa)

১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়া শােচনীয়ভাবে পরাজিত হয় এবং প্রাগের সন্ধির (Peace of Prague, ১৮৬৬ খ্রি.) দ্বারা যুদ্ধের অবসান ঘটে।

[3] ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয় যুদ্ধ (Franco-Prussian War) : অস্ট্রিয়ার পরাজয়ের পর ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য অগ্রসর হয় প্রাশিয়া। অস্ট্রিয়া, ইটালি ও রাশিয়াকে নিরপেক্ষ রেখে বিসমার্ক ফ্রান্সকে যুদ্ধের জন্য প্ররােচিত করেন। ফ্রান্স বিসমার্কের কূটনৈতিক জালে জড়িয়ে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করে। সেডানের যুদ্ধে (Battle of Sedan) ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপােলিয়ন (Napoleon lll)

চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে ফ্রাঙ্কফোর্টের সন্ধির (Peace of Frankfurt) দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান ঘটে। জার্মানির রাজনৈতিক ঐক্য সম্পন্ন হয়। এইভাবে বিসমার্ক কূটনীতি ও যুদ্ধনীতির মাধ্যমে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন। ঐক্যবদ্ধ জার্মানির প্রথম সম্রাট হন কাইজার প্রথম উইলিয়ম (kaisar William l )


2.ক্রিমিয়ার যুদ্ধের (Crimean War) ফলাফল সম্পর্কে আলােচনা করাে।

*উত্তর ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফল : ক্রিমিয়ার যুদ্ধের গুরুত্ব ও ফলাফল নিয়ে ঐতিহাসিক মহল দ্বিধাবিভক্ত ছিল। কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক এই যুদ্ধকে অনাবশ্যক যুদ্ধ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ এই যুদ্ধের আবশ্যিকতাকে অস্বীকার করেননি। ফরাসি ঐতিহাসিক ও মন্ত্রী থিয়ার্স (Thiers) ক্রিমিয়ার যুদ্ধকে অভিহিত করেছেন এইভাবে যে, গ্রোটো গির্জার চাবিকাঠি নিয়ে হীনমনােবৃত্তিসম্পন্ন যাজকদের মধ্যে দ্বন্দুপ্রসূত যুদ্ধ (A war to give a few Wretched monks the key of Grotto)। অপরদিকে ঐতিহাসিক গ্রান্ট ও টেম্পারলি এই যুদ্ধকে “ইউরােপের ইতিহাসে এক বিশেষ যুদ্ধ’ আখ্যা দিয়েছেন (The crimean war occupies a peculiar place in the history of Europe in the 19th century.)। অধ্যাপক এ জে পি টেলর (A J P Taylor) মনে করেন— “পারস্পরিক আগ্রাসন নয়, পারস্পরিক সন্দেহ থেকেই এই যুদ্ধের সূত্রপাত, যদিও এটি অনাবশ্যক যুদ্ধ নয়” (Mutual fear, not mutual aggression caused the Crimean War, neverthelessit was not a war, without a purpose.)

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলাফলকে প্রত্যক্ষ এবং পরােক্ষ দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।


প্রত্যক্ষ ফলাফল : ক্রিমিয়ার যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফলাফলগুলি হল—

[1] এই যুদ্ধের দ্বারা বলকান অঞ্চল ও কৃয়সাগরে রুশ অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। রাশিয়া তুরস্কের যেসব অঞল দখল করেছিল, তুরস্ক সেগুলি ফেরত পায়।

[2] তুরস্ক ইউরােপীয় শক্তি সমবায়ের সদস্যপদ লাভ করে। শক্তি সমবায় তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়। শক্তি সমবায়ভুক্ত ইউরােপীয় আধুনিক রাষ্ট্রগুলির সংস্পর্শে এসে তুরস্ক আধুনিক সংস্কারের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবনের সুযােগ পায়।

3] ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপােলিয়ন (Napoleon ||) যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। একই সঙ্গে তার এবং ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন তিনি।

পরােক্ষ ফলাফল : ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পরােক্ষ ফলাফল ছিল অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। লর্ড ক্রোমার এই যুদ্ধকে “Watershed of European History” অর্থাৎ “ইউরােপীয় ইতিহাসের জলবিভাজিকা” আখ্যা দিয়েছেন। জলবিভাজিকা বা ঝরনার জলধারার মতাে ক্রিমিয়ার যুদ্ধও ইতিহাসের গতিপ্রকৃতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছিল।

1। ইউরােপে সাম্রাজ্যবিস্তার নীতি প্রতিহত হওয়ায় রাশিয়া মধ্য এশিয়ায় সেই নীতি অনুসরণ করে। এর ফলে ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়।

2। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয়ের ফলে জারতন্ত্রের দুর্বলতা প্রকট হয়ে পড়ে। এই যুদ্ধের পর থেকেই রুশ জনগণ জারবিরােধী আন্দা করে গণবিক্ষোভ প্রশমিত করার জন্য পরবর্তী জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার (Alexander ||) বেশ কিছু সংস্কার প্রবর্তন করেন।

3 | ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ইটালি ও জার্মানির ঐক্যের সহায়ক হয়। পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া এই যুদ্ধে যােগদান করে ইটালির সমস্যাকে আন্তর্জাতিক সমস্যার পরিণত করে। সার্ডিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ক্যাভুর ইটালির ঐক্য প্রচেষ্টায় ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের সহানুভূতি আদায়ে সক্ষম হন।

4 ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়া রাশিয়াকে সমর্থন না করায় রাশিয়া জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে প্রাশিয়ার পক্ষ নেয়। প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক রাশিয়ার সাহায্যে জার্মানি থেকে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য খর্ব করে জার্মানির ঐক্য প্রচেষ্টাকে সহজ করেন। ঐতিহাসিক কেটেলবি (Ketelbee) বলেছেন, ক্রিমিয়ার যুদ্ধের ফলেই নব ইটালি এবং নব জার্মানি জন্মলাভ করে’ (It was out of the mud of Crimea that a new Italy was made and less obviously, a new Germany)

5 | ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর বলকান জাতিগুলির মধ্যে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ক্রিমিয়ার যুদ্ধ

দেখা দেয়। বিভিন্ন জাতিগােষ্ঠী স্বাধীনতার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। এই তৎপরতা বলকান অঞ্চলকে ইউরােপের অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করে।

গুরুত্ব : ক্রিমিয়ার যুদ্ধের গুরুত্ব ও ফলাফল নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতবিরােধ আছে। অনেকে এই যুদ্ধকে অনাবশ্যক ও অপ্রয়ােজনীয় যুদ্ধ বলে মনে করেন। আবার অনেকে বলেন, এর ফলে বলকান অঞলে রাশিয়ার আগ্রাসন বাধাপ্রাপ্ত হয়।

[2] তুরস্কের আধুনিকীকরণ সম্ভবপর হয় এবং পরােক্ষভাবে ইটালি ও জার্মানির ঐক্য আন্দোলন সম্ভব হয়।

19 রাশিয়ায় ভূস প্রথার অবসান কে করেন এবং কীভাবে? ভূমিদাস আইনের ত্রুটিগুলি কী ছিল ?" ক "S)

উত্তর রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথার অবসান ঘটান জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার (Tsar Alexander II)।

ভূমিদাস প্রথার উচ্ছেদের জন্য জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার তার সেনাপতি রােস্টোভস্টেভের (Rostovtsev) নেতৃত্বে একটি কমিটি নিয়ােগ করেন। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই কমিটিররিপাের্ট প্রকাশিত হলে জার ভূমিদাসদের মুক্তির ঘােষণাপত্র জারি করেন।


মুক্তির ঘোষণাপত্র (Edict of Emancipation) : ভূমিদাস মুক্তির ঘােষণাপত্র চারটি নীতির উপর রচিত হয়। এগুলি হল—

® ভূমিদাসদের স্বাধীন ও মুক্ত নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে। @ ভূমিদাসদের চাষের জন্য জমি দেওয়া হবে। @ অভিজাত বা সামন্তদের আর্থিক ক্ষতি না করে ভূমিদাসদের মুক্ত করা হবে এবং @ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমগ্র ব্যবস্থাটি পরিচালিত হবে।

* ভূমিদাস উচ্ছেদ আইন : ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ভূমিদাস উচ্ছেদ আইন পাস হয়। এই আইনে বলা হয় যে, ® রাজকীয় জমি ও সামন্তদের জমিতে নিয়ােজিত ভূমিদাসরা স্বাধীন প্রজার মর্যাদা পাবে, @ মুক্ত ভূমিদাসদের উপর জমিদার বা সামন্তদের কোনাে অধিকার থাকবে না,@ জমিদারদের জমির প্রায় অর্ধেক মুক্তিপ্রাপ্ত ভূমিদাসদের দেওয়া হবে, ® জমির জন্য জমিদারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং কৃষকেরা ৪৯ বছরের কিস্তিতে এই অর্থ সরকারকে প্রদান করবে ইত্যাদি।

* ভূমিদাস আইনের ত্রুটি : জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ভূমিদাস প্রথা উচ্ছেদ আইনের জন্য রুশ জনগণের নিকট মুক্তিদাতা জার’ (Tsar Liberator) হিসেবে পরিচিত হন। কিন্তু ভূমিদাস প্রথা উচ্ছেদ আইনের বেশ কিছু ত্রুটি ছিল, যার জন্য এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। যেমন- রাশিয়ায় ভূমিদাস প্রথার অবসান ঘােষণা ও জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার

1| জমির জন্য কৃষকেরা সরকারকে যে অর্থ প্রদান করত তা প্রাপ্ত জমি অপেক্ষায় অনেক বেশি ছিল।

|2| জমিদাররা উর্বর এলাকাগুলি নিজেদের কাছে রেখে দিয়ে অনুন্নত এলাকাগুলি মুক্তিপ্রাপ্ত ভূমিদাসদের দিত। এজন্য বারংবার কৃষক বিদ্রোহ দেখা দিত।

3। কৃষকদের জমি ভােগ করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল, মালিকানাস্বত্ব নয়। ত্রুটি সত্ত্বেও একথা অনস্বীকার্য যে, জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারের আন্তরিক প্রয়াসের ফলে রাশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ভূমিদাস প্রথার অবসান সম্ভব হয়েছিল। তার এই প্রয়াস তাকে মুক্তিদাতা জার-এ রূপান্তরিত করেছিল।

File Details:-

File Name:-  

File Format:- Pdf

Quality:- High

File Size:-  4Mb

PAGE- 60

File Location:- Google Drive

Download: click Here to Download



[TAG]:   ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ তৃতীয় অধ্যায়pdf, ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ mcq,তৃতীয় অধ্যায় ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ বড় প্রশ্ন উত্তর,নবম শ্রেণি,নবম শ্রেণির ইতিহাস  ঊংবিংশ শতকের ইউরোপ,নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়,নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়ের ২ নং প্রশ্ন উত্তর,নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়বড় প্রশ্ন উত্তর,নবম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়প্রশ্ন উত্তর,




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url