ভারতীয় জাতীয়তাবােধের বিকাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গােরা' উপন্যাসের কী ভূমিকা ছিল|জাতীয়তাবােধের বিকাশে ‘গােরা' উপন্যাসের ভুমিকা।

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ভারতীয় জাতীয়তাবােধের বিকাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গােরা' উপন্যাসের কী ভূমিকা ছিল|জাতীয়তাবােধের বিকাশে ‘গােরা' উপন্যাসের ভুমিকা।


ভূমিকা: ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতবাসীর মধ্যে জাতীয়তাবােধ ও স্বদেশপ্রেমের ভাবধারা জাগ্রত করার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘গােরা' (১৯১০ খ্রি.) উপন্যাসটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


প্রকৃত ভারতের রূপ: ‘গােরা' উপন্যাসের প্রধান চরিত্র গােরা বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের সুখ-দুঃখের খোঁজখবর নিতে গিয়ে ভারতবর্ষের সত্যিকারের রূপটি চিনতে পারেন।


গােরার আঘাত: গােরা উপলদ্ধি করেন যে, শহরের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের চেয়ে পল্লিগ্রামের মানুষের মধ্যে সামাজিক বন্ধন অনেক বেশি তীব্র। কিন্তু এই পল্লিসমাজ প্রয়ােজনে মানুষকে সহায়তা বা বিপদে ভরসা না দিয়ে বরং সামাজিক আচারবিচারের মাধ্যমে মানুষে-মানুষে বিভাজন তৈরি করে। গােরা এরূপ সমাজের ওপর তীব্র আঘাত হানে।


ধর্মীয় পরিচয়ের গুরুত্বহীনতা: ভারতীয় সভ্যতার প্রতি ব্রিটিশদের ঘৃণা ও বিদ্বেষ লক্ষ করে গােরা একসময় উগ্র হিন্দুত্ববাদী আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কিন্তু পরে তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং সে উপলদ্ধি করে যে, ধর্মীয় পরিচয় একমাত্র বা সবচেয়ে বড়াে পরিচয় নয়।


আক্রমণের বিরােধিতা: গােরার চরিত্রের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ পাশ্চাত্য সভ্যতার বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁর গােরা সুপ্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার উৎকর্ষতায় মুগ্ধ হয় এবং সংকল্প করে যে, স্বদেশের প্রতি স্বদেশবাসীর শ্রদ্ধা সে ফিরিয়ে আনবেই, তারপর অন্য কাজ। হিন্দুসভ্যতার বিরােধী জনৈক মিশনারির বিরুদ্ধে সে সম্মুখ বিতর্কে অংশগ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নেয়।


দেশাত্মবােধ: মহিম বা কৃয়দয়ালের মতাে দু-একজন স্বার্থপর ব্যক্তি ছাড়া গােরা' উপন্যাসে উল্লেখিত ব্রাহ্সমাজের অধিকাংশ সদস্যই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ। “মা, তুমিই আমার মা, “আমি ভারতীয়—গােরার এসব উক্তি ভারতবাসীর মনে জাতীয়তাবােধ জাগ্রত করে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url