বিজ্ঞানসাধক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রবন্ধ রচনা|Scientist Acharya Prafulla Chandra Roy essay writing in bengali
প্রবন্ধ রচনা বিজ্ঞানসাধক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়| Acharya Prafulla Chandra Roy essay writing in bengali
ভূমিকা: বাংলাদেশ চিরকালই অজস্র কৃতী সন্তানের জন্ম দিয়েছে। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে-সাহিত্যে ও সংস্কৃতির অন্যান্য ক্ষেত্রে এইসব বরেণ্য মানুষ বিশ্বের দরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। বিজ্ঞানসাধনার ক্ষেত্রে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র তেমনই একটি নাম| মহাত্মা গান্ধি তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন—“It is difficult to believe that the man in simple indian dress wearing simple manners could possibly be the great scientist and professor."
জন্ম ও শিক্ষা; ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট অধুনা বাংলাদেশের খুলনা জেলার বালিকাটিপুর গ্রামে প্রফুল্লচন্দ্রের জন্ম। প্রথম সাত বছর গ্রামে পড়াশােনার পরে পরিবার কলকাতায় স্থানান্তরিত হওয়ায় প্রফুল্লচন্দ্র ভরতি হন হেয়ার স্কুলে | কিন্তু অসুস্থতার জন্য তাঁর পড়াশােনায় ছেদ পড়ে।দুবছর পরে তিনি ভরতি হন অ্যালবার্ট স্কুলে। এরপরে প্রফুল্লচন্দ্র প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত মেট্রোপলিটন ইন্সটিটিউশনে ভরতি হন। কিন্তু সেখানে বিজ্ঞান বিষয়ে যথাযথ পড়াশােনার সুযােগ না থাকায় প্রফুল্লচন্দ্র বিজ্ঞান পড়তে যেতেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেখানেই আলেকজান্ডার পেল্লারের সান্নিধ্য তাঁকে রসায়নশাস্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট করে তােলে| ১৮৮২ সালে পূর্ব ভারতে একমাত্র প্রফুল্লচন্দ্রই গিলক্রিস্ট স্কলারশিপ পান। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি বিলেত যান এবং এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হন। ১৮৮৬-তে সেখান থেকেই তিনি বিএসসি এবং ডিএসসি পাস করেন। সেখানে পড়ার সময়েই প্রফুল্লচন্দ্র এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন সংসদের সহ-সভাপতি হন।
কর্মজীবন: ১৮৮৯ সালে দেশে ফিরে এসে প্রফুল্লচন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৮৯৬ সালে মারকিউরাস নাইট্রেট যৌগের ওপরে তাঁর গবেষণাপত্র সমগ্র বিজ্ঞানজগতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ১৯১৬-তে প্রেসিডেন্সি থেকে অবসরগ্রহণের পরে প্রফুল্লচন্দ্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পালিত অধ্যাপক হিসেবে যােগ দেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দেশ-বিদেশের নানা পত্রপত্রিকায় প্রফুল্লচন্দ্রের ২০৭টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।জনহিতকর কার্যাবলি: প্রফুল্লচন্দ্র তাঁর উপার্জিত অর্থের সবটাই দান। করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাকে আরও উন্নত করার জন্য। কিন্তু এই কর্মসাধকের কাজের পরিধি অন্যান্য অনেক দিকে প্রসারিত ছিল। উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা হলে তিনি গড়ে তুলেছিলেন। ‘বেঙ্গল রিলিফ কমিটি', যারা প্রায় দশ কোটি টাকা অর্থ সংগ্রহ করেছিল। বিপন্ন মানুষদের সাহায্যার্থে। বাঙালিকে শিল্পোদ্যোগী করে তােলার লক্ষ নিয়েই প্রফুল্লচন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন ‘বেঙ্গল কেমিক্যান্স।
সাহিত্যানুরাগ : প্রফুল্লচন্দ্র যেমন বহু ভাষা জানতেন, তেমনি সাহিত্যের প্রতিও তাঁর তীব্র অনুরাগ ছিল। তিনি নিজে তার বিজ্ঞানী হয়ে ওঠাকে দৈবদুর্ঘটনা বলেছিলেন। ১৯৩২-এ প্রকাশিত হয় প্রফুল্লচন্দ্রের আত্মজীবনী