নীলধ্বজের প্রতি জনা| একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নীলধ্বজের প্রতি জনা প্রশ্ন উত্তর PDF |

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

 নীলধ্বজের প্রতি জনা একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নীলধ্বজের প্রতি জনা প্রশ্ন উত্তর PDF |Class 11 Bengali Kobita question in bengali  pdf

নীলধ্বজের প্রতি জনা| একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নীলধ্বজের প্রতি জনা প্রশ্ন উত্তর PDF |

আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নীলধ্বজের প্রতি জনা প্রশ্ন উত্তর PDFclass 11 Bengali Kobita question Pdf | WB Class nine Bengali question pdf |WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য একাদশ শ্রেণি বাংলা কবিতাের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |একাদশ শ্রেণি বাংলা কবিতা নীলধ্বজের প্রতি জনা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class xi Bengali Kobita Question Pdf  ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।


‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।


নীলধ্বজের প্রতি জনা mcq প্রশ্ন

 ১। “সাজিছ কি, নররাজ”—নররাজ কাকে বলা হয় ?

উত্তর এখানে ‘নররাজ’ বলা হয়েছে মাহেশ্বরী পুরীর রাজা নীলধ্বজকে।

২। “যবে ব্রক্ষ্মশাপে বিকল সমরে”—কার প্রতি কার এই ব্রক্ষ্মশাপ?

উত্তর কানীন পুত্র কর্ণের প্রতি এই ব্রষ্মশাপ দিয়েছিলেন মুনি পরাশর।

৩। “ভুলিব এ জ্বালা, এ বিষম জ্বালা”—এই বিষম জ্বালা কার এবং কেন?

উত্তর একমাত্র পুত্র প্রবীরের মৃত্যুতে এই বিষম জ্বালা তার মা জনার।

৪। “বিধাতার এ বিধি জগতে” – বিধির বিধি কী?

উত্তর যে মানুষ এই পৃথিবীতে জন্মছে, তাকে একদিন না একদিন মরতেই হবে।

৫। “সম্মুখ সমরে পড়ি, গেছে স্বর্গধামে”—কে  স্বর্গধামে গেছে?

উত্তর সম্মুখ সমরে পড়ে অর্জুনের অস্ত্রে নিহত হয়ে নীলধ্বজ ও জনার পুত্র প্রবীর গেছে স্বর্গধামে।

৬। “সেবিছ যতনে তুমি অতিথি রতনে” –‘অতিথি রতন' কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া নিয়ে পুরীতে আগত অর্জুন হলেন রাজা নীলধ্বজের ‘অতিথি-রতন'।

৭। “তব সিংহাসনে বসিছে পুত্রহা”—পুত্রহা রিপু কে?

উত্তর এখানে ‘পুত্রহা রিপু' হলেন অর্জুন।

৮। “কুলটা যে নারী”—এখানে ‘কুলটা নারী’ কে?

উত্তর অর্জুন-মাতা কুন্তীকে এখানে ‘কুলটা নারী’ বলা হয়েছে।

৯। “বৃদ্ধ পিতামহে সংহারিল মহাপাপী” –পিতামহ কে?

উত্তর এখানে বৃদ্ধ পিতামহ হলেন ভীষ্ম।

১০। “একি ভ্রান্তি তব”—কোন্ ভ্রান্তি ?

উত্তর নরনারায়ণ জ্ঞানে রাজা নীলধ্বজ কর্তৃক অর্জুনকে পূজা করা।

১১। “পাণ্ডবের শরে খণ্ড শিরোমনি তোর” পাণ্ডব ?

উত্তর তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন

৷১২। “পাণ্ডব কীৰ্ত্তন গান গায়েন সতত”—কে এই গান গান?

উত্তর মহাভারত রচয়িতা কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস।

৷৷ ১৩। “এ জনাকীর্ণ ভবস্থল আজি বিজন জনার”—জনার জন্য ভবস্থল বিজন কেন?

উত্তর একমাত্র পুত্র প্রবীরকে হারানোর জন্য।

৷৷ ১৪। “ক্ষত্রিয়ধর্ম এই কি, নৃমণি”—নৃমণি কে?

উত্তর নৃমণি হলেন রাজা নীলধ্বজ।

১৫। “চণ্ডালের পদধূলি ব্রাহ্মণের ভালে” – চণ্ডাল কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর এখানে চণ্ডাল বলতে অর্জুনকে বলা হয়েছে এবং ব্রাহ্মণ বলা হয়েছে নীলধ্বজকে।

৷৷ ১৬। “উত্তরিবে প্রতিধ্বনি”—কোন্ প্রতিধ্বনি?

উত্তর পুত্র হারানোর জ্বালায় রিক্ত-হৃদয় জনার আত্মবিসর্জনের ফলে সৃষ্টি হওয়া শূন্যতার প্রতিধ্বনি।

৷৷ ১৭। “ক্ষত্র কুলবালা আমি”—‘ক্ষত্ৰকুলবালা’ কে?

উত্তর নীলধ্বজ পত্নী জনা এখানে হলেন ক্ষত্ৰকুলবালা।

ID ১৮। “গুরুজন তুমি/পড়িব বিষম পাপে...” —এখানে গুরুজন কে?

উত্তর জনা তার স্বামী মাহেশ্বরী পুরীর রাজা ‘নীলধ্বজ’কে ‘গুরুজন’ বলে সম্বোধন করেছেন।

৷ ১৯।“যাহা প্রবীরের লোহে লোহিত”–কার হাত প্রবীরের লোহে লোহিত? 

উত্তর তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের হাত প্রবীরের লোহে লোহিত।

।২০। “নিঃসন্তানা করিল আমারে”—কে, কাকে নিঃসন্তানা করেছে?

উত্তর প্রবীরকে হত্যা করে অর্জুন জনাকে নিঃসন্তানা করেছে।

।। ২১। “এই তো সাজে তোমার”—কোন বিষয়ে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর স্থলবাহিনী, অশ্ববাহিনী, গজবাহিনী, রথবাহিনী—এই চতুরঙ্গ বাহিনী নিয়ে রাজা নীলধ্বজের যুদ্ধসাজের কথা বলা হয়েছে।

৷৷৷ ২২। “ছদ্মবেশে লক্ষ রাজে ছলিল দুম্মতি” —কার সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে?

উত্তর অর্জুনের সম্পর্কে জনা এই কথা বলেছে।

২৩।লোকমাতা কে?

লোকমাতা হলেন রমা।

ID ২৪। “শাশুড়ীর যোগ্য বধূ”— কে?

উত্তর শাশুড়ীর যোগ্য বধূ দ্রৌপদী।


একাদশ শ্রেণি বাংলা কবিতা 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও]

:একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নীলধ্বজের প্রতি জনা 1 নং প্রশ্ন উত্তর

অনধিক কুড়িটি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর 

প্রশ্ন ১শােকাগ্নি ফাল্গুনীৱ লােহে?-কী কারণে শােকাগ্নি?

:উত্তর : মাহেশ্বরীরাজ নীলধ্বজ ও রানি জনার পুত্র প্রবীর অর্জুনের সঙ্গে অসম যুদ্ধে নিহত হয়েছেন, সেই কারণে দুঃখে-মনস্তাপে শােকাগ্নি।


প্রশ্ন ২.২ ‘টুট কিরীটিৱ গৰ্ব্ব অজি ৱণগুলে’-রাজা নীলধ্বজ কীভাবে কিৱীটির গর্ব খর্ব করবেন বলে জনার প্রত্যাশা?

উত্তর : মাহেশ্বরীরানি জনার প্রত্যাশা হল রাজা নীলধ্বজ হাতির মতাে খুঁড় আস্ফালন ও গর্জনসহ প্রবল গতিতে ধাবিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনের গর্ব খর্ব করবেন।


প্রশ্ন ২,৩ ‘অন্যায় সমৱে মুঢ় নাশিল বালকে’-কে কী কারণে বালককে যুদ্ধে নিহত করেছেন?

উত্তর : তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন বালক প্রবীরকে যুদ্ধে নিহত করেছেন, প্রবীর যুধিষ্ঠিরের যজ্ঞশ্বকে আটকে রাখার কারণে।


প্রশ্ন ২.৪ ‘ভুলিব এ জ্বালা, এ বিষম জ্বালা, দেব,ভুলিব সত্বৱে’—জনা কীভাবে পুত্রশােকের জ্বালা ভুলতে চাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন?

উত্তর : জনা তাঁর স্বামীর কাছে এই আবেদন রেখেছেন যে, অর্জুনকে যুদ্ধে নিধন করলে, তবেইপুত্রশােকের জ্বালা সত্ত্বর ভুলতে পারবেন।


প্রশ্ন ২.৫ ‘কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায় কব কাৱে?

—জনা স্বামীর উদ্দেশ্যে এই খেদ প্রকাশ কৱেছেন কেন?

উত্তর : জনার খেদ প্রকাশের কারণ হল অন্যায় যুদ্ধে তাঁদের পুত্র প্রবীর-হন্তা যিনি, রাজা নীলধ্বজ তাঁকে মিত্রোত্তমরূপে অতিথি-যতনে সেবা করছেন।


২৬ কিন্তু মােৱে, শুনি, মহাৱর্থী-প্রথা কি হেএই, মহাৱথি?’-জনা মহাৱর্থী-প্রথা লঙ্ঘনের প্রশ্ন তুলেছেন কেন?

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ব্ৰত্মপাশে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে পুঁতে যায়, তিনি যখন রথের চাকা তােলায় ব্যস্ত, তখন নিরস্ত্র কর্ণকে অর্জুন বধ করেন—এটি মহারথীপ্রথা বিরােধী কাজ—জনা সে সম্পর্কে প্রশ্ন রেখেছেন।


প্রশ্ন ২.৭ ‘ভাগ্যদোষে বাম মম প্রতি তুমি’-জনার কী জন্য স্বামীর প্রতি এ অভিমান?

উত্তর : স্বামীর প্রতি জনার অভিমানের কারণ হল তাঁর স্বামী নীলধ্বজ তাঁর পুত্রহন্তার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ না করে, মিত্র হিসেবে বরণ করে সিংহাসনে বসিয়েছেন।


প্রশ্ন ২,৮ ‘মহাযাত্রা কৱি চলিল অভাগী জনা পুত্রের উদ্দেশে’-জনা এৱপৱ কী করলেন?

উত্তর : জনা এরপর জাহ্নবীর জলে আত্মবিসর্জন করতে  চললেন।


প্রশ্ন ২.৯ ) ৱাজা নীলধ্বজ রাজ-অন্তঃপুৱে প্রবেশ কৱে ‘কোথা জনা’ বলে ডাক দিলে কী শুনবেন?

উত্তর : রাজা নীলধ্বজ তাঁর ডাকের উত্তরস্বরূপ শুনবেন জনাশূন্য অন্তঃপুরের শূন্য প্রতিধ্বনি ‘কোথা জনা ।


প্রশ্ন ২.১০আজ ৱণবাদ্য কোথায় বাজছে?

উত্তর : আজ রণবাদ্য বাজছে রাজতােরণে 


প্রশ্ন ২.১১ৱাজা নীলধ্বজ ব্রণসাজে সাজছেন কেন?

উত্তর : পুত্র প্রবীরের মৃত্যুর প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য রাজা নীলধ্বজ রণসাজে সাজছেন।


প্রশ্ন ২.১২ নীলধ্বজের প্রতি জনা কী জানতে চান?

উত্তর : জনা জানতে চান রাজা নীলধ্বজ কি পুত্রঘাতক অর্জুনের রক্তে নিবাতে চান পুত্রহারা শােকের আগুন।


প্রশ্ন , ১৩ ‘অন্যায় সমৱে মূঢ় নাশিল বালকে’-এখানে বালক কে?

উত্তর : এখানে বালক হলেন রাজা নীলধ্বজের পুত্র প্রবীর।


প্রশ্ন-১,২৪ ‘কুলাচার্য তিনি কু-কূলেৱ-কু-কূল’ বলা হয়েছে কেন?

রানি জনা পৌরব রাজবংশকে ‘কু' বা খারাপ বংশ বলেছেন এই কারণে যে, ওই বংশের বধূ কুন্তী ও দ্রৌপদী কুলটা।


প্রশ্ন ২.২৫ ‘পৌৱব সৱসে নলিনী’—কথাটির অর্থ লেখো।

উত্তর : পৌরব বংশ সরােবরতুল্য। ওই সরােবরের পদ্ম হল| পৌরব কুলবধূ দ্রৌপদী।


প্রশ্ন ২.২৬“কী কাজ বিলাপে, প্রভু?—কোন্ প্রসঙ্গেএই উক্তি?

উত্তর : জনা মনে করেন অর্জুন অন্যায় যুদ্ধে প্রবীরকে হত্যা করেছেন। যদিও জন্ম-মৃত্যু বিধির বিধান। তাহলেও প্রবীরের অকালমৃত্যুর শােক ভুলতে পারছেন না, সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি।


প্রশ্ন ২.২৭ ব্যাস কার পুত্র ছিলেন?

উত্তর : কৃয় দ্বৈপায়ন বেদব্যাস হলেন মাতা ধীবর কন্যা সত্যবতী ও পিতা পরাশরের পুত্র।


প্রশ্ন ২.২৮‘নালিশ বর্বৱ তাঁৱে।–বর্বৱ’ কাকে বলা হয়েছে ও কেন

উত্তর : বর্বর বলা হয়েছে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনকে। কারণ তিনি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের মাটিতে রথের চাকা পুঁতে-যাওয়া মহাসংকটে পড়া নিরস্ত্র কর্ণকে বর্বরােচিতভাবে হত্যা করেন।


প্রশ্ন ২.২৯প্রবীৱ নিহত হয়েছিলেন কেন?

উত্তর : প্রবীর অশ্বমেধের ঘােড়াকে আটকে রাখায় মহাবীর অর্জুনের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হন।


প্রশ্ন ২.৩০ক্ষত্রমাণ তুমি, মহাবাহু’—মহাবাহু কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর : মাহেশ্বরী পুরীর রানি জনা স্বামী নীলধ্বজকে মহাবাহু বা মহাযােদ্ধা বা মহাবীর বলেছেন।


প্রশ্ন ২.৩৮) জনা স্বামীকে বীৱদর্প ও মানদৰ্পের কথা স্মরণ করিয়েছেন কেন?

উত্তর : জনা স্বামীকে বীরদর্প ও মানদৰ্পের কথা স্মরণ করিয়েছেন, কারণ তাঁর স্বামী নীলধ্বজ ক্ষত্রিয় হয়ে বীরদৰ্প ও মানদৰ্পের কথা ভুলে পুত্রঘাতক অর্জুনের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেছেন।


প্রশ্ন ২.৩১ জনা তাঁর স্বামীর কোন ব্যবহাৱে মর্মাহত?

উত্তর : জনা তাঁর স্বামীর ক্ষত্রিয় ধর্ম ও কর্ম বিরােধী কাজ এবং অন্যায় যুদ্ধে পুত্রঘাতক অর্জুনের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপনের মতাে ব্যবহারে মর্মাহত।


স্নগ্ন ২.৪০ ‘রাজদলে তেঁই সে জিতিল’-বক্তাৱ এ কথার কারণ কী?

উত্তর : বস্তা জনার এ কথা বলার কারণ হল ব্রাত্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করে অর্জুন দ্রৌপদীর সয়ম্বর সভায় উপস্থিত রাজাদের পরাস্ত করে অন্যায় করেছেন।


প্রশ্ন ২.৪১ ‘আছিলা মান,-তাও কি নাশিলি? এই কথার মাধ্যমে জনা কী বলতে চেয়েছেন?

উত্তর : পুত্রহারা মাতা জনা বিধাতার কাছে এই অভিযােগ রেখেছেন যে, পুত্র দিয়ে তাকে অকালে কেড়ে নিয়েছেন। তা ছাড়া ক্ষত্রিয়ের মানসম্মান নাশ করেছেন।


প্রশ্ন ২.৪২‘এ জনাকীর্ণ ভবঙ্খল আজি বিজন জনাৱ পক্ষে’-কারণ কী?

উত্তর : পৃথিবী জনাকীর্ণ হলেও জনা এখন জনহীন অন্তঃপুরে একাকী। কী আশা-ভরসায় তিনি প্রাণ ধারণ করবেন ? সেজন্য এই হতাশাপূর্ণ উক্তি।


প্রয়.৪৩ ‘কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা’–এ কথার মধ্যে কী প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর : পুত্রহত্যার প্রতিশােধ নেওয়ার জন্য স্বামী নীলধ্বজকে পুত্রহস্তা অর্জুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করে জনা বিফল হয়েছেন। রাজা নীলধ্বজ শত্রু অর্জুনকে মিত্রভাবে বরণ করেছেন। সেজন্য জনার উক্তিতে হতাশার প্রকাশ।


প্রশ্ন ২.৪৫ “ভার্তাৱ সাধনা কি মানে বলবাহু?” জনা ভীরুতাৱ সাধনা’ বলতে কী বুঝিয়েছেন?[একাদশ, '১৪]

উত্তর : যিনি ক্ষত্রিয় বীর, বাহুবলে বলবান, তিনি ক্ষত্রিয় বীরধর্ম রক্ষার জন্য কাপুরুষতার ভজনা করেননা, তা তাঁর বীরধর্ম বিরুদ্ধ কাজ।


প্রশ্ন ২.৪৬“দহিল খাণ্ডব দুষ্ট কৃৱে সহায়ে।”—কেকেন খাণ্ডবদাহন করেন?[একাদশ, '১৪]

উত্তর : অগ্নিদেবের একবার ক্ষুধামান্দ্য হয়েছিল, তা নিরাময় করার জন্য তিনি অর্জুন ও শ্রীকৃষ্ণুের সাহায্য নিয়ে খাণ্ডব বন দহন করেন।


.প্রশ্ন ২.৪৭ “অন্যায় সমৱে মূঢ় নাশিল বালকে,”–“মূঢ়’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? [একাদশ, '১৫]

উত্তর : মাহেশ্বরী রাজরানি জনা ‘মূঢ় বলতে তাঁর একমাত্র পুত্র প্রবীরের প্রাণঘাতক তৃতীয় পাণ্ডব মহাবীর অর্জুনকে বলেছেন।


প্রশ্ন ২.৪৮“সত্যবর্তীসূত ব্যাস বিখ্যাত জগতে।”—ব্যাস কেন বিখ্যাত?[একাদশ, '১৫]

উত্তর : সত্যবতীর পুত্র ব্যাস বিখ্যাত জগতে, কারণ


প্রশ্ন ২,৪৯ ‘মহাৱর্থী-প্রথা কি হে এই, মহাৱথি?- কোন্ কাজ মহাৱর্থী প্রথার বিরােধী? [একাদশ, '১৬]

উত্তর : ক্ষত্রিয় যােদ্ধাদের রীতি বা আদর্শ ছিল নিরস্ত্র, অসমবয়েসি, অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ যােদ্ধাকে যুদ্ধে আহ্বান ও অস্ত্রাঘাত না করা, মহারথী প্রথা। তার বিরুদ্ধ কাজ হল মহারথী প্রথার বিরােধী কাজ।


প্রশ্ন ২.৫০ ‘যবে দেশ-দেশান্তৱে জনৱব লবে এ কাহিনি,-কি কহিবে ক্ষত্ৰপতি যত?’-কোন্ কাহিনির কথা বলা হয়েছে?[একাদশ, '১৭]

উত্তর: রণক্ষেত্রে তীক্ষ্ণতম শরে শত্রুর বক্ষ ভেদ না করে মিষ্টভাষে তাঁকে তুষ্ট করছেন মাহেশ্বরীরাজ—এই কাহিনির কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন ২.৫১দুঃখের কথা, হায়, কব কাৱে?’-বক্তা কে?‘[একাদশ, '১৭]

উত্তর : এ উক্তির বক্তা হলেন মাহেশ্বরীপুরীর রানি পুত্র শােকাতুরা জনা।


নীলধ্বজের প্রতি জনা বড় প্রশ্ন উত্তর,

একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা  5 নং প্রশ্ন উত্তর

অনধিক একশাে পঞ্চাশ শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :


১। জনা চরিত্রের মাতৃহৃদয়ের পরিচয় দাও।

উত্তর প্রত্যেক নারীই পূর্ণতা পেতে চায় মাতৃত্বের মধ্য দিয়ে। সন্তান সু-সন্তান হোক অথবা  কু-সন্তান—প্রত্যেক নারীই সন্তানের মুখ চেয়ে ‘একটি চুমো খাব’র বাসনা মনে মনে পোষণ করেন, জনাও তার ব্যতিক্রম নন। স্বামী নীলধ্বজ এবং পুত্র প্রবীরকে নিয়ে জনার সুখের সংসার। স্বামী ও পুত্রকে জনা

প্রাণাধিক ভালোবাসেন। কিন্তু জনার সুখের সংসারে হঠাৎ করেই বিপর্যয় নেমে এল। যুধিষ্ঠিরের অশ্বমেধের ঘোড়া নিয়ে অর্জুন দিগ্‌বিজয়ে বের হয়ে পুরীতে পৌঁছলেন। জনাপুত্র প্রবীর যজ্ঞাশ্ব ধরলে অর্জুন মাহেশ্বরী পুরী আক্রমণ করেন। জনা শুধু বীরাঙ্গনা নন, বীরপুত্রের জননী। তিনি প্রিয়পুত্রকে নিজের হাতে রণসাজে সজ্জিত করে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দিলেন। যুদ্ধে প্রবীর নিহত হল। জনার হৃদয় পুত্রশোকে হাহাকার করে উঠল। জনা সাধারণ মহিলা নন, তাঁর বিলাপ তাই সাধারণ পুত্রশোকাতুরা নারীর বিলাপ নয়, এই বিলাপে অশ্ৰু নেই, আছে এক তেজস্বিনী ক্ষত্রিয় নারীর অগ্নিময়ী জ্বালা। জনা প্রবীরকে ততখানি ভালোবাসতেন, যতখানি একজন মা তাঁর সন্তানকে ভালোবাসেন। সেই ভালোবাসার ধন বিধাতা কেড়ে নিয়েছেন, তাই জনা গভীর দুঃখে বিলাপ করে উঠেছেন

:

“হা প্রবীর! এই হেতু ধরিনু কি তোরে,

দশ মাস দশ দিন, নানা যত্ন সয়ে,

এ উদরে? কোন্ জন্মে, কোন্‌ পাপে পাপী

তোর কাছে অভাগিনী, তাই দিলি বাছা,

এ তাপ? আশার লতা তাই রে ছিঁড়িলি!”


কিন্তু জনা শোকে কান্নাকাটি করতে চান না, তিনি চান পুত্রহত্যার প্রতিশোধ নিতে। তাই স্বামীকে আহ্বান করেছেন এভাবে :

“টুট কিরীটীর গর্ব্ব আজি রণস্থলে!

খণ্ডমুণ্ড তার আন শূলদণ্ড-শিরে!”

পুত্রহত্যার বিষম জ্বালা জনা ভুলতে পারছেন না, কিন্তু যে

কোনো উপায়ে এ জ্বালা প্রশমিত করতে চান :

“নাশ, মহেষ্বাস, তারে! ভুলিব এ জ্বালা,

এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।”

জনা জানেন ক্ষত্রিয় বীর পুত্রের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে চুপচাপ বসে থাকতে পারেন না, শোক করতে পারেন না, যুদ্ধ করে অন্যায় হত্যার প্রতিশোধ নেওয়াই তাঁর পক্ষে মানানসই। এক ক্ষত্রিয়নারী এটাই তাঁর ক্ষত্রিয় স্বামীর কাছে প্রত্যাশা করেন। কিন্তু জনা জানতে পেরেছেন, স্বামী পুত্রহস্তারককে মিত্রভাবে সেবা করছেন! জনা বিশ্বাস করতে পারছেন না তাঁর বীরবাহু স্বামী কীভাবে এই লজ্জাজনক কাজ করছেন—

“কেমনে তুমি, হায়, মিত্রভাবে পরশ সে কর, যাহা প্রবীরের লোহে             লোহিত?”

স্বামীও যখন মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন, তখন পুত্রহারা মা আর

কী-ই-বা করতে পারেন? তাই ক্ষোভে, দুঃখে জনা গোপনে কাঁদেন :

“পাণ্ডবের শরে

খণ্ড শিরোমণি তোর ; বিবরে লুকায়ে,

কাঁদি খেদে, মর্, অরে মণিহারা ফণি!”

জননী জনা পুত্রশোক বুকে নিয়ে আর বেঁচে থাকতে চান না। তাই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সিদ্ধান্ত নেন-

“ছাড়িব এ পোড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে ;”



॥ ২। পত্রকাব্য হিসেবে 'নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রটি বিচার করো।

উত্তর মধুসূদন হলেন বাংলা সাহিত্যে, বাংলা ভাষায় পত্রকাব্যের ক্ষেত্রে ভগীরথ। তিনিই বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রকাব্য রচয়িতা এবং সম্ভবত শেষ সার্থক পত্রকাব্য রচয়িতা। বন্ধু রাজনারায়ণকে একটি পত্রে মধুসূদন লিখেছিলেন “গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ‘বীরাঙ্গনা’ নামে একটি বস্তু কলমের

আঁচড়ে খাড়া করিয়াছি; প্রসিদ্ধ পৌরাণিক নারীরা তাঁহাদের প্রণয়ী অথবা পতিদের নিকট নায়িকার উপযুক্ত লিপি লিখিতেছেন—ইহাই ‘বীরাঙ্গনা’।” বিদেশি কবি ওভিদের লেখা “বীরপত্রাবলির সঙ্গে (Heroic Epistles) বহুলাংশে মিল থাকলেও বীরাঙ্গনা কাব্যের মৌলিকতাও লক্ষ করার মতো। পত্রের আঙ্গিকে কাব্যরচনা সম্ভব—এ শিক্ষা মধুসূদন ওভিদের কাছ থেকে নিলেও তাঁর গল্পের ভাব চুরি করেননি। তবে মধুসূদন ওভিদের কাছ থেকে পত্রকাব্য লেখার প্রেরণা পেলেও সংস্কৃত কাব্যসাহিত্য থেকেও তিনি উৎসাহ পেয়েছিলেন। সংস্কৃত কাব্যসাহিত্যে নারীদের দ্বারা দয়িত অথবা স্বামীকে পত্র লেখার উদাহরণ পাওয়া যায়। মহাকবি কালিদাসের ‘অভিজ্ঞানশকুন্তলম্‌’ নাটকের নায়িকা বিরহী শকুন্তলাকে আমরা দেখি যে, তিনি স্বামী দুষ্মন্তকে চিঠি লিখছেন। ভাগবতে দেখি দেবী রুক্মিণী শ্রীকৃষ্ণকে পত্র লিখছেন। সংস্কৃত সাহিত্যে নারীদের পত্র লেখার এরকম প্রচুর উদাহরণ আছে। ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ একটি বিশেষ পত্র, যা বীরাঙ্গনা কাব্যে সমস্ত পত্রের মধ্যে শ্রেষ্ঠ পত্র। গোত্র বিচারে এটি একটি অনুযোগ পত্র। ব্যক্তিগতপত্র লেখা হয় বিশেষত (১) ঘনিষ্ঠ জনকে, (২) সম্ভাষণের মাধুর্য দিয়ে পত্রের সূচনা করা হয়, (৩) উদ্দেশ্যকে জ্ঞাপিত করা হয়, (৪) অনুযোগ থাকলে তাকে নানাভাবে ব্যক্ত করা হয় এবং (৫) বিদায় সম্ভাষণে বিদায়ী বক্তব্য রেখে পত্র শেষ করা হয়। এইসব বৈশিষ্ট্যগুলি আমরা ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রে লক্ষ করি। এই পত্রটি জনা তাঁর একান্ত আপনজন মাহেশ্বরী পুরীর রাজা নীলধ্বজ রায়কে প্রেরণ করেছেন। সম্বোধনের পাত্রও হলেন স্বামী নীলধ্বজ। একমাত্র পুত্র প্রবীরকে হত্যা করেছে পার্থ, মা হিসেবে এই অন্যায় হত্যার প্রতিশোধ চান জনা। রাজপুরীর বাতাবরণ দেখে জনার মনে হল রাজা বোধ হয় যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তাই মধুর সম্ভাষণে রাজাকে ভরিয়ে দিলেন জনা :


প্রশ্ন ৩.১ ‘বীৱান শব্দের অর্থ নির্দেশ করে মাইকেল মধুসূদন দত্তেৱ ৱচিত 'বীরাঙ্গনা কাব্যের

একাদশ সর্গেৱ জনা’ চরিত্রটিকে বীরাঙ্গনা বলা যায় কিনা আলােচনা প্রসঙ্গে যুক্তি স্থাপন করাে । 73+8]

অথবা, হায়, পাগলিনী জনা’—মাইকেল মধুসূদন দত্তের নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্র অবলম্বনে জনা চরিত্র আলােচনা করো।[নমুনা প্রশ্ন, '১৪] [১+৪]


উত্তর : বীরাঙ্গনা' শব্দের অর্থ বীরনারী, বীরপত্নী বীৱত্বের পরিচয়হীন : মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের

‘বীরাঙ্গনা' কাব্যের কোনাে নায়িকাই অস্ত্রধারণ করে ঝাঁসীর রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের মতাে বীরাঙ্গনার পরিচয় দেননি। সেই অর্থে কেউই বীরনারী নন। কেউ কেউ বা বীরপত্নী, বীরপ্রেমিকা। কিন্তু মধুসূদনের এই পত্রকাব্যে কোনাে নায়িকা সেভাবে কোনাে বীরত্বের পরিচয় রাখেননি। বীৱমাতা হিসেবেও বীরাঙ্গনা নন : একাদশ সর্গের নায়িকা জনা মাহেশ্বরী রাজমহিষী। তিনি বীরস্বামীর জায়া বলে এক মুহূর্তের জন্য মনে এমন ভাবনা স্থান দেননি। বরং পুত্রহন্তার বিরুদ্ধে স্বামীকে বীরযােদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ জন্য উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস চালিয়ে গেছেন তাঁর পত্রে।


বীরপত্নী বলে মনে না করলেও বীরমাতারূপে তিনি গৌরব অনুভব করেছেন। তারই প্রেরণায় তাঁর পুত্র প্রবীর অর্জুনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরের মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু এজন্যও তাঁকেঠিক বীরাঙ্গনা বলা যায় না। বীরাঙ্গনাতুল্য : ‘বীরাঙ্গনা' কাব্যের নায়িকারা নারীব্যক্তিত্ব ও মানবিকতাবােধে বীরাঙ্গনাতুল্য দীপ্তিময়ী ও প্রাণােচ্ছল। তাঁরা তেজস্বিনী। এসব গুণে জনা মহিমময়ী। স্বামী নীলধ্বজের দুর্বলতা ও অক্ষত্রিয়ােচিত ব্যবহারে মর্মাহত জনা ক্ষুব্ধ ও রুষ্ট। সেজন্য পত্রের শুরুতে তাঁর অগ্নিস্রাবী ব্যঙ্গ ও শ্লেষের প্রকাশ।যুক্তি : পুত্রহত্যার প্রতিশােধ না নিয়ে কাপুরুষের মতাে পুত্রঘাতককে সিংহাসনে বসানাের দুর্ব্যবহারে ও অক্ষত্রিয় কাজে জনার লজ্জা, দুঃখ ও বেদনার শেষ নেই। কি লাজ দুঃখের কথা,

হায়, কব কারে ?

অর্জুনের বিরুদ্ধে স্বামীকে যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করার জন্য

স্বামীকে তাঁর বীরদর্প ও মানদৰ্পের কথা স্মরণ করিয়েছেন—

‘কোথা বীরদর্প তব ? মানদৰ্প কোথা ?

?

এভাবে জনার তেজস্বিতা ও নারীব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটেছে, যা

বীরাঙ্গনার সমতুল্য


প্রয় ৩.২ নৱনারায়ণ-জ্ঞানে, শুনিনু, পূজিছ। পার্থে,রাজা, ভক্তিভাবে ;-এ কি ভ্রান্তি তব?’—তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন বা পার্থ সম্পর্কে মাহেশ্বৱী ৱানি জনা তার বিরূপ ধারণাৱ স্বপক্ষে যেসব যুক্তি ও দৃষ্টান্ত খাড়া কৱেছেন, সেগুলি বিবৃত কৱাে ।

[অথবা, ওই প্রসঙ্গে কুন্তী ও দ্রৌপদীর বিরুদ্ধে জনাৱ অভিযােগগুলি লিপিবদ্ধ করাে।

অথবা, ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় জনা অর্জুনের কাপুরুষতাৱ কী কী দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন?[একাদশ, '১৪] [৫]

উত্তর :

উপস্থাপনা : মাহেশ্বরী রানি জনার দৃঢ় বিশ্বাস তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন (পার্থ নামেও পরিচিত) অন্যায় যুদ্ধে

জনার প্রিয়পুত্র প্রবীরকে হত্যা করেছেন। পুত্রহন্তা অর্জুনকে তিনি নরনারায়ণ বলে মনে করেন না। তাঁর স্বামী তাঁকে নরনারায়ণরূপে পূজা করছেন শুনে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, এ কি তাঁর ভ্রান্তি ? অর্জুনের প্রতি তাঁর বিরূপ ধারণার স্বপক্ষে যুক্তি ও দৃষ্টান্তও খাড়া করেছেন।

বিরূপ ধারণাৱ পক্ষে যুক্তি ও দৃষ্টান্ত : এই প্রসঙ্গেঅর্জুনের অবৈধ জন্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জনা। তিনি অর্জুনের মাতা কুন্তীকে স্বৈরিণী আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি হল কুলটা বেশ্যা মায়ের গর্ভে নরনারায়ণরূপী হৃষীকেশের জন্ম হতে পারে । শাস্ত্রে বা পুরাণে এরকম কাহিনির উল্লেখ নেই। মহাভারত রচয়িতা বেদব্যাস, যিনি পাণ্ডবদের গুণগান করেছেন, তিনি নিজেও জন্মসূত্রে শুচিশুদ্ধ ছিলেন না, জনার অভিমত। অর্জুন নররূপী নারায়ণ হলে তাঁর স্ত্রী দ্রৌপদী, যাঁর পঞ স্বামী, সেই ভ্রষ্টা রমণী লােকমাতা লক্ষ্মী হন কীভাবে ? তা ছাড়া জীবনভর যেসব অন্যায় কাজ করেছেন, সেগুলি একদিকে যেমন রথীকুলপ্রথা

বিরােধী, আর একদিকে তেমনি নরনারায়ণ হওয়ার অনােপযােগী কাজ। যেমন—ব্রায়ণের ছদ্মবেশে স্বয়ংবর সভায় হাজির হয়ে ক্ষত্রিয় যােদ্ধাদের ধোঁকা দিয়ে বিজয়ী হওয়া ; কৃষের সাহায্য নিয়ে খাণ্ডব দাহন করা, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শিখণ্ডীকে দাঁড় করিয়ে বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্মকে নিধন করা, অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে পুঁতে গেলে অসহায় কর্ণকে বর্বরের মতাে হত্যা করা।

;


প্রয়, ৩.৬ ‘কোন্ সাধে প্রাণ ধরি ধরাধামে’-বক্তার এরূপ আক্ষেপের কারণ কী? স্বামীৱ প্রতি বস্তাৱ দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দাও।R+O)

|

উত্তর :

আক্ষেপের কারণ : জনা জানেন স্বামী তাঁর ইচ্ছার অধীন নন। বরং উলটো। জনা বিধাতার বিধানে স্বামীর

অধীন। নিজের শক্তিতে মনের ইচ্ছা পূরণের ক্ষমতা তাঁর নেই। একমাত্র পুত্র প্রবীরকে হারিয়ে তিনি পুত্রহীনা অভাগী জননী। স্বামীর ব্যবহারে লাঞ্ছিতা, অপমানিতা। যে স্বামী-পুত্রকে ঘিরে তাঁর জীবন, তাঁরা কেউ তাঁর পাশে নেই। হতাশায়-দুঃখে তিনি ব্যথিতা। এইজন্য ধরাধামে প্রাণধারণের তাঁর আর বিন্দুমাত্র

সাধ নেই। 

স্বামীর প্রতি জনাৱ দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় : পুত্রঘাতক অর্জুনকে মাহেশ্বরীরাজ নীলাম্বর যুদ্ধে আহ্বান না করে মিত্রতা স্থাপন করে রাজসিংহাসনে বসিয়েছেন। এই অক্ষত্রিয়ােচিত আচরণে জনা মর্মাহত। তিনি রাগে, ক্ষোভে ও অভিমানে স্বামী নীলধ্বজকে পত্র লিখেছেন। এই পত্রের মাধ্যমে স্বামীর প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় স্পষ্ট হয়েছে। পত্রের শুরুতেই স্বামীর প্রতি তাঁর অগ্নিস্রাবী ব্যঙ্গ ও শ্লেষের প্রকাশ। যেজন্য যােগীন্দ্রনাথ বসু বলেছেন, তার পত্র গৈরিক ধাতু নিস্রাবের ন্যায় জ্বলন্ত উচ্ছাসপূর্ণ।


প্রশ্ন ৩.৮ ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কাব্যাংশের উৎস নির্ণয় করে নামকরণের যৌক্তিকতা আলােচনা 18+o

.

উত্তর :

উৎস : বাংলা ভাষায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের দশমতম রচনা ‘বীরাঙ্গনা কাব্য। বীরাঙ্গনা কাব্যের ১১সংখ্যক সর্গ ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা। সুতরাং ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা নামীয় ১১ সংখ্যক সর্গটি মাইকেলমধুসূদন দত্তের রচিত | ‘বীরাঙ্গনা কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।© নামকৱণেৱ যৌক্তিকতা : পাঠ্যপুস্তকে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’-এর ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা * নামীয় একাদশ সর্গের পুরাে অংশ সংকলিত হয়েছে। সংকলিত অংশের নাম মূলগ্রন্থে কবির দেওয়া একই নাম ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা। বীরাঙ্গনা পত্রকাব্য। এগারাে সর্গে এগারােটি পত্র লেখা হয়েছে। লিখেছেন এগারাে জন পৌরাণিক নায়িকা। যিনি যার উদ্দেশে লিখেছেন, সেই সর্গে সেই নামই দেওয়া হয়েছে।যেমন—দুর্যোধনের প্রতি ভানুমতী, দুষ্মন্তের প্রতি শকুন্তলা, নীলধ্বজের প্রতি জনা প্রভৃতি। এরকম নামকরণই সংগত ও যুক্তিযুক্ত। নামকরণের মধ্যে পত্রলেখিকা ও তাঁর উদ্দিষ্ট বাতি জনের নাম স্পষ্টত প্রকাশিত। পত্রের বক্তব্য অপ্রকাশিত থাকলেও পাঠকের আগ্রহ সৃষ্টির জন্য নামকরণ’ ও নামকরণের নীচে কবি প্রদত্ত প্রসঙ্গ নির্দেশ যথেষ্ট। এরপরে চিঠির বক্তব্যের সঙ্গে নামকরণের যােগসূত্র আছে কি না এ প্রশ্নের অবকাশ নেই, অনাবশ্যকও বটে।


কী প্রসঙ্গে জনা মহাৱর্থী-প্রথা’-র কথা উল্লেখ করেছেন? ‘মহাৱর্থী-প্রথা বলতে কী বােঝ? মহাৱর্থী-প্রথা কে, কীভাবে লঙ্ঘন করেছেন বলে জনামনে করেন?১-২-২

অথবা, “মহাৱর্থী-প্রথা কি (হ এই, মহাৱাথ”–“মহারথী-প্রথা কী? কে, কীভাবে এই প্রথাৱ উল্লেখ কৱােছিল তারবর্ণনা দাও

-

উত্তর : প্রসঙ্গ : কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পাণ্ডববীর অর্জুন পিতামহ ভীষ্ম, অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্য ও মহাবীর কর্ণকে ক্ষত্রিয় বীরপ্রথাবিরােধী ও অন্যায় পন্থায় হত্যা করেছিলেন বলে মাহেশ্বরী রাজমহিষী জনা মনে করেন। এই কথা প্রসঙ্গে তিনি রাজা নীলধ্বজের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন যে, একজন ক্ষত্রিয় মহাযােদ্ধার এ কি মহারথী প্রথা ? মহাৱর্থী প্রথা : ক্ষত্রিয় যােদ্ধাদের রীতি বা আদর্শ ছিল নিরস্ত্র প্রতিপক্ষ যােদ্ধাকে যুদ্ধে আহ্বান না করা, তাঁকে আক্রমণ করা, অসমবয়সি অপেক্ষাকৃত দুর্বলকে অস্ত্রাঘাত না করা, তাঁকে যুদ্ধে হত্যা না করা। ক্ষত্রিয় মহাবীরেরা এ মহান আদর্শ


অনুসরণ করতেন। এ ছিল মহারথী প্রথা। রাজরানি জনা এই মহারথী প্রথার কথা উল্লেখ করেছেন।

মহাৱর্থী প্রথা লঙ্ঘন : অর্জুন ক্ষত্রিয় বীর, মহাযােদ্ধা। অথচ ক্ষত্রিয় যােদ্ধার যে যুদ্ধরীতি বা মহারথী প্রথা, তিনি তা অনুসরণ করেননি। দ্রৌপদীর স্বয়ংবরসভায় তিনি ব্রায়ণের ছদ্মবেশে হাজির হয়েছিলেন। এই ছলনার আশ্রয় নিয়ে উপস্থিত যােদ্ধাদের বঞ্চিত করে দ্রৌপদীর বরমাল্য লাভ করেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শিখণ্ডীকে দাঁড় করিয়ে কৌশলে পিতামহ ভীষ্মকে বধ করেন। অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যকে মন্দ ছলনার আশ্রয়

নিয়ে নিধন করেন। মহাবীর কর্ণের রথের চাকা মাটিতে পুঁতে গেলে তাঁর অসহায় অবস্থার সুযােগ নিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। সেজন্য স্বামী নীলধ্বজের কাছে জনা জানতে চান, অর্জুনের অনুসৃত এইসব যুদ্ধরীতি কি মহারথী প্রথাসম্মত ? তাকে কি মহারথী বলা যায়


প্রশ্ন ৩.১০ ‘বীরাঙ্গনা' কাব্যেৱ উল্লেখযােগ্যবৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বিশ্লেষণ কৱাে ।101

উত্তর :

গঠনৱীতি ও পত্র নায়িকাদের হৃদয়- প্রকাশেৱ বৈচিত্র্য : অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা ‘বীরাঙ্গনা কাব্য

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রকাব্য। বাংলা সাহিত্যে এ ধরনের কাব্য প্রথম এবং শেষ। এর গঠনরীতি নতুন। ‘বীরাঙ্গনা-র এগারাে সর্গে এগারাে পুরাণ নায়িকা তাঁদের স্বামী কিংবা বাঞ্ছিতের উদ্দেশে চিঠি লিখেছেন। চিঠিগুলিতে তাঁদের হৃদয়ের কামনা-বাসনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, উদবেগব্যাকুলতা,

পত্রবিশেষে প্রেমবন্ধন ছিন্ন করার অভিলাষ, কিংবা স্বামীর ব্যবহারে ক্ষোভ, দুঃখ, অভিমান প্রকাশিত হয়েছে। অনুসরণ ও নায়িকাদেৱ উৎস : ‘বীরাঙ্গনা' বিখ্যাত রােমক কবি ‘ওবিদ (Ovid)-এর ‘হেরাইদিয়া (Heroides)-এর অনুসরণে লেখা। ওবিদের ‘হেরাইদিয়ায় একুশটি পত্র আছে। পত্রের প্রতিটি নায়িকা চরিত্র গ্রিক কিংবা লাতিন থেকে নেওয়া হয়েছে। মধুসূদন ‘বীরাঙ্গনা'-র নায়িকাদের নিয়েছেন রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত থেকে। ৰচনাৱ নিজস্বতা ও মৌলিকতা : রােমক কবি ওবিদের পত্ৰকাব্যের অনুসরণে মধুসূদনের ‘বীরাঙ্গনা' লেখা হলেও উভয়ের কাব্যের মধ্যে মিল যেটুকু, তা বাইরের গঠনরীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাকি যা কিছু, যেমন—ভাব, ভাষা, কবিত্ব,

|

প্রকাশভঙ্গি ইত্যাদি, তা মধুকবির নিজস্ব এবং মৌলিক। বড়ােকথা এই যে, ‘বীরাঙ্গনার বিষয় ও কাহিনি পুরােপুরি ভারতীয়। শ্রেণিকরণ ও পত্রবৈচিত্র্য : বীরাঙ্গনার ১১খানি পত্রকেবিষয় অনুযায়ী চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন— প্রেমপত্র, প্রত্যাখ্যান- পত্র, স্মরণার্থপত্র ও অনুযােগপত্র। প্রেমপত্র ৪টি। নায়িকারা নিজ নিজ কাঙ্ক্ষিত প্রেমিকের কাছে


প্রশ্ন ৩.১২জনা চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করাে।

.

ভাষায় ব্যঠা ও শ্লেষের প্রকাশ : কবিবর মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা' কাব্যে

জনা চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। মাহেশ্বরীরাজ নীলধ্বজ পুত্রহন্তাকে অর্জুন মিত্রভাবে বরণ করে সিংহাসনেবসানােয় রানি জনা স্বামীর দুর্বলতা ও অক্ষত্রিয়ােচিত ব্যবহারে

মর্মাহত, ক্ষুদ্ধ ও রুষ্ট হন। সেজন্য পত্রের শুরুতেই তাঁর অগ্নিস্রাবী ভাষায় ব্যঙ্গ ও শ্লেষের প্রকাশ দেখা যায়। জনার লজ্জা, দুঃখ ওবেদনার শেষ নেই। কি লজ্জা দুঃখের কথা, হায়, কব কারে ?

আর এই সুতীব্র মর্মবেদনার ফলেই স্বামীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন তাঁর ক্ষত্রিয় ধর্মের কথা—“ক্ষত্রিয়ধৰ্ম্ম এই কি, নৃমণি ? কুন্তী ও দ্রৌপদীৱ চরিত্রের ওপৱ কটাক্ষ হেনে পৱােক্ষে নিজের চরিত্রমহিমা প্রকাশ : অর্জুনকে নরনারায়ণ জ্ঞানে নীলধ্বজ পূজা করছেন শুনে জনার ব্যঙ্গাত্মক প্রশ্ন ‘এ কি ভ্রান্তি তব ? তিনি তখন অর্জুন ও বেদব্যাসের জন্মবৃত্তান্তের উল্লেখ করে কুন্তী ও দ্রৌপদীর সতীত্বের ওপর কটাক্ষ করে পরােক্ষে নিজের চরিত্র-মহিমার কথা ঘােষণা করেছেন। অর্জুনের বিরুদ্ধে স্বামীকে যুদ্ধে অনুপ্রাণিত করার জন্য জনা স্বামীকে তাঁর বীরদৰ্প ও মানদৰ্পের কথা স্মরণ করিয়েছেন—“কোথা বীরদর্প তব ? মানদৰ্প কোথা ?জায়া ও জননী দু-দিক থেকেই জনা আশাহত : মৃত পুত্রের প্রতি শােকোচ্ছ্বাসের মধ্যে জনার মাতৃহৃদয়ের প্রকাশ ঘটেছে। স্বামী ও সন্তানকে ঘিরে নারীর জীবনের সার্থকতা। কিন্তু এই দু-দিক থেকেই শশাকে-দুঃখে, লাঞ্ছনায়-অপমানে জনার অন্তর ক্ষতবিক্ষত। ব্যথাদীর্ণ। জনার কাছে জগৎসংসার অর্থহীন।জাহ্নবীর জলে আত্মবিসর্জনের জন্য সে উন্মুখ। ছাড়িব এ পােড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে ; জনা নিশ্চিত যে, নীলধ্বজ রাজ-অন্তঃপুরেফিরে এসে অনুভব করবেন জনশূন্য রাজপুরীর ট্র্যাজিক মহাশূন্যতাকে। নরেশ্বর, “কোথা জনা ?” বলি ডাক যদি উত্তরিবে প্রতিধ্বনি “কোথা জনা ?” বলি।



প্রশ্ন ৩.ব্রজতােৱণে রণবাদ্য বাজাৱ আওয়াজ শুনে মাহেশ্বৱীৱাজ নীলধ্বজের প্রতি জনাৱ ব্যঙ্গ ও

শ্লেষেৱ যে প্রকাশ ঘটেছে, তা আলােচনা প্রসঙ্গে তাঁৱ হতাশ চিত্তের ক্ষোভ ও অভিমানেৱ পৱিচয় দাও।[৫]


অথবা, স্বামী নীলধ্বজেৱ প্রতি জনাৱ ক্রদ্ধ অভিমানীস্বৱেৱ পরিচয় দাও।


[অথবা, নীলধ্বজের প্রতি জনা’ কবিতায় জনাৱ কুদ্ধ অভিমানী স্বৱ কীভাবে ধরা পড়েছে?[একাদশ, '১৫] [৫]

উত্তর: সুতীব্র ব্যঙ্গা ও শ্লেষ : মাহেশ্বরীর রানি জনারাজা নীলধ্বজের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, তিনি কি রণসাজে সজ্জিত হয়েছেন পুত্রহত্যার প্রতিশােধ নিতে ? নইলে - রাজতােরণে রণবাদ্য বাজে কেন ? কেন রাজসৈন্য রণমদে মত্তহয়ে প্রতি মুহূর্তে হুংকার ছাড়ছে ? পুত্রঘাতক অর্জুনেররক্তাঞ্জলিতে রাজা নীলধ্বজ কি পুত্রশােকের আগুন নিবাতে চান ?সুতীব্র ব্যঙ্গ ও শ্লেষাত্মক। কারণ রাজা নীলধ্বজ পুত্রঘাতক অর্জুনের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করে তাঁকে মাহেশ্বরীর রাজসিংহাসনে বসিয়েছেন। ক্ষোভ ও অভিমান : জনা নিজেকে পাগলিনি বলে হতাশ প্রকাশ করেছেন। সভার মাঝে নাচে-গানে বীণাধ্বনিতে পুত্রহন্তা অর্জুনকে মিত্রভাবে বরণ করে সিংহাসনে বসানােয় স্বামীর প্রতি ক্ষোভে ও অভিমানে জনা লজ্জা ও দুঃখের কথা লিখেছেন। হতাশাপূর্ণ চিত্তে জনা ব্যঙ্গাত্মক প্রশ্ন করেছেন যে, মাহেশ্বরীরাজ নীলধ্বজ কি পুত্রশােকে হতজ্ঞান হয়ে এ কাজ করেছেন ? নইলেপুত্রহন্তা অর্জুন তাঁর রাজসভায় সম্মানীয় অতিথি কেন ? রাজা নীলধ্বজই বা কীভাবে পুত্রহত্যাকারী অর্জুনের রক্তরঞ্জিত হাত স্পর্শ করেছেন ? এ কি ক্ষত্রিয়ধর্ম ? রণক্ষেত্রে তীক্ষ্ণতম শরে শত্রুর বক্ষভেদ না করে মিষ্ট ভাষায় তাঁকে তুষ্ট করা হচ্ছে।কেন ? এ কথা দেশ-দেশান্তরে প্রচার হলে মাহেশ্বরীরাজ কীজবাব দেবেন ?


প্রশ্ন ৩,২২ ‘কিন্তু বৃথা এ গঞ্জনা’ -বক্তা কে? তিনি কাকে গঞ্জনা দিতে চেয়েছেন? কেন তার মনে হয়েছেএই গঞ্জনা বৃথা?

উত্তর : উক্ত উদ্ধৃতির বক্তা হলেন মাহেশ্বরী পুরীর রাজা নীলধ্বজের মহিষী বীরাঙ্গনা জনা।

তিনি গঞ্জনা করতে চেয়েছেন মাহেশ্বরীরাজ নীলধ্বজকে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’পত্ৰকবিতায় মাহেশ্বরী পুরীর রাজা নীলধ্বজের প্রতি রাজমহিষী জনা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ মহারাজ নীলধ্বজ পুত্রহত্যাকারী অর্জুনের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেছেন। তিনি জলাঞ্জলি দিয়েছেন ক্ষাত্ৰতেজ ও বীরদর্প। জনার আশা ছিল রাজাক্ষত্রধর্ম রক্ষার জন্য ক্ষাত্রকর্ম সম্পন্ন করবেন। দুঃখের বিষয়, জনার আশা ব্যর্থ হয়েছে। নীলধ্বজ শুধু মিত্রতাই স্থাপন করেননি, তিনি

পুত্ৰহন্তা অর্জুনের মনােরঞ্জনের জন্য নাচ-গানের আয়ােজনও করেছেন। সেজন্য জনার মর্মবেদনার অন্ত নেই। তাঁর ক্ষোভ ও অসন্তোষ আকাশছোঁয়া। রাজার ওই মৈত্রী আচরণ জনা মেনে নিতে

পারছেন না। তিনি মনে করেছেন নীলধ্বজের ওহেন আচরণ যেন। ‘চণ্ডালের পদধূলি ব্রায়ণের ভালে’। এই নিরাশা আর ব্যর্থতাই তাঁকে মনে করিয়ে দিয়েছে রাজার ক্ষত্রধর্ম ও ক্ষত্রকর্মের উজ্জীবিত সব | চেষ্টা বিফলে গেছে। সেজন্য তাঁর স্বগতােক্তি বৃথা এ গঞ্জনা'।


৩। 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' পত্র অবলম্বনে জনা চরিত্রের’ ট্র্যাজেডি আলোচনা করো।

উত্তর একাধিক রসের সমন্বয়ে জনা এক অসাধারণ চরিত্র হয়ে উঠেছেন। বলা যায়, চরিত্র হিসেবে ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের প্রমীলা এবং ‘বীরাঙ্গনা' কাব্যের ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রের জনা সমধর্মী চরিত্র। বীর, রৌদ্র ও করুণরসের সংমিশ্রণে দুটি চরিত্রই অনন্যা। জনা চরিত্রে ট্র্যাজেডি এসেছে অবরুদ্ধ

পরিস্থিতিতে তাঁর মনে তৈরি হওয়া অন্তর্দ্বন্দ্ব থেকে। এই অন্তর্দ্বন্দ্ব তাকে শেষ পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে যায় সার্বিক বিনষ্টির দিকে। তবে এই অন্তর্দ্বন্দ্ব কোনো চরিত্রগত ত্রুটি থেকে সৃষ্ট হয়নি, বরং বলা যায়, নিয়তি বা ভাগ্যই এর সৃষ্টিকর্তা। এখানে আমরা গ্রিক ট্র্যাজেডির স্পর্শ পাই। অশ্বমেধের যজ্ঞাশ্ব ধরায় প্রবীরের সঙ্গে পার্থের যুদ্ধবাধে। এই অন্যায় এবং অসম যুদ্ধে পার্থের হাতে প্রবীর নিহত হয়। জনার হৃদয় দুঃখে পূর্ণ হয়ে যায়। তবে তিনি বিলাপে কাল কাটাতে রাজি নন। জনা জানেন, পুত্রের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কোনো ক্ষত্রিয় রাজাই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না। পুত্রহত্যার প্রতিশোধ নেওয়াই তাঁর পরম মোক্ষ। ক্ষত্রিয় নারী হিসেবে জনাও চান স্বামী পুত্রহত্যার বদলা নিক। কিন্তু জনা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করলেন, পুত্রের রক্তে রঞ্জিত এবং কলঙ্কিত যে হাত, স্বামী সেই হাত ধরেছেন পরম মিত্রতায়, পুত্র হন্তারক রাজার মিত্র! তাহলে পুত্রহত্যার প্রতিশোধ নয়, পুত্রহত্যাকারীর আপ্যায়নের জন্য এত সংগীত, বাদ্য প্রভৃতি আয়োজনের ঘটা। সব জানেন, তবুও জনা কাপুরুষ স্বামীর জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন করতে চেয়ে বললেন : তুমি সরাসরি স্বামীকে লজ্জায়, ঘৃণায় তিরস্কার করেন—

“তব সিংহাসনে

বসিছে পুত্রহা রিপু—মিত্রোত্তম এবে?”

এ কথাও জনা স্বামীকে জানাতে ভুললেন না যে, স্বামীর সঙ্গে পার্থের বন্ধুত্ব ব্রাহ্মণের সঙ্গে চণ্ডালের বন্ধুত্ব। কী করে নীলধ্বজ ক্ষত্রিয় আত্মশ্লাঘা বিসর্জন দিতে পারলেন? স্বামীকে চরম ব্যঙ্গ করলেও জনা কিন্তু স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কোমলতাকে বিসর্জন দেননি। একদিকে স্বামীর প্রতি তীব্র শ্লেষের কটুভষণ, আবার অপরদিকে নারীর অনুশাসন—জনা চরিত্রে ট্র্যাজেডির রসকে ঘনীভূত করে তুলেছে। পুত্রশোকে যে হৃদয় হতাশ্বাস হয়নি, স্বামীর উপেক্ষায় তা কিন্তু ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। স্বামীর প্রত্যাখ্যান জনাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করল—“ছাড়িব এ পোড়া প্রাণ জাহ্নবীর জলে।” যে শোচনীয় অবস্থায় পৌঁছে তিনি মৃত্যুকে বরণ করলেন, সেটাই বীরাঙ্গনা জনার জীবনের চরম ট্র্যাজেডি। অন্তরের মহৎ আদর্শ ও বাইরের চরম আঘাত জনার মধ্যে যে অন্তর্দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছে, তাকেই কবি ট্র্যাজেডিতে পরিণত করে চরিত্রটিকে সার্থকতা দিয়েছেন।

॥ 


৫। ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্র অনুসারে নীলধ্বজের পরিচয় দাও।

উত্তর ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রটির কোথাও নীলধ্বজের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি নেই। তবে উপস্থিত থাকার কথাও নয়, কেননা এখানে জনা তার স্বামী নীলধ্বজকে একটি পত্র লিখছেন এবং সেই পত্রসূত্রেই তাঁর পরিচয় আমরা পেয়েছি। তবে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত না থাকলেও জনার কথাবার্তার মধ্য দিয়ে তাঁর স্বামী নীলধ্বজের চরিত্র বৈশিষ্ট্যের অনেকগুলি দিক আমরা খুঁজে পেয়েছি। স্বামী নীলধ্বজ এবং পুত্র প্রবীরকে নিয়ে জনার সুখের সংসার। অর্জুন সেই সুখের সংসারে আগুন লাগালেন। অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া মাহেশ্বরী পুরীতে পৌঁছলে প্রবীর যজ্ঞাশ্ব ধরে ফেলে, অর্জুনের সঙ্গে প্রবীরের যুদ্ধ হয়, প্রবীর নিহত হয়। জনার বুকে ক্রোধের আগুন জ্বলে। একমাত্র পুত্রের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়ে তিনি মনের জ্বালা জুড়োবেন। তাই রাজসমীপে পত্র প্রেরণ করলেন, আমরা নীলধ্বজের পরিচয় পাওয়ার সুযোগ পেলাম।

জনা জানেন, তাঁর ক্ষত্রিয় স্বামী নীলধ্বজ মহাবাহু, মহাবীর, তিনি অবশ্যই পারবেন পুত্রহত্যার বদলা নিতে। জনার উক্তিতে আমরা নীলধ্বজের চরিত্রের বীরত্বের সন্ধান পেলাম : 

“এই তো সাজে তোমারে, ক্ষত্রমণি তুমি,

মহাবাহু! যাও বেগে গজরাজ যথা

যমদণ্ডসম শুণ্ড আস্ফালি-নিনাদে!

টুট কিরীটীর গর্ব্ব আজি রণস্থলে!”

রাজা নীলধ্বজ জ্ঞানী মানুষ কিন্তু তিনি কখনো কখনো অ-জ্ঞানের পরিচয় দেন। পার্থ তাঁর পুত্রকে হত্যা করেছে, সেই পার্থকেই তিনি মিত্রভাবে সিংহাসনে বসিয়েছেন? জনা ভেবে পাচ্ছেন না জ্ঞানী নীলধ্বজ কি করে এমন কাজ, এমন লজ্জাজনক কাজ করতে পারলেন—

“কি লজ্জা! দুঃখের কথা, হায়, কব কারে?

হতজ্ঞান আজি কি হে পুত্রর বিহনে,

মাহেশ্বরী পুরীশ্বর নীলধ্বজ রথী?”

নীলধ্বজ কি পার্থের কুল পরিচয় জানেন না? কু-কুলের কুলাচার্যের কথাই বা তিনি মেনে নিচ্ছেন কেন? নীলধ্বজ সূক্ষ্ম বিবেচক, তবু তিনি এই ভুল কাজ কীভাবে করছেন? জনা বলেন :

“জানি আমি কহে লোক রথীকূল-পতি

পার্থ। মিথ্যা কথা, নাথ! বিবেচনা কর,

সূক্ষ্ম বিবেচক তুমি বিখ্যাত জগতে।”

নীলধ্বজ সর্বজ্ঞ একথা জনার অজ্ঞাত নয়। তাই জনা বলে—“কি না তুমি জান রাজা?” জনার দুঃখ এখানেই যে এমন গুণবান স্বামী কী সাংঘাতিক ভুল করে বসেছেন। স্বামীর আচরণ নিন্দনীয়, তাকে গঞ্জনা দিলেও জনা শালীনতার মাত্রা অতিক্রম করে না, কারণ স্বামী তাঁকে ভালোবাসেন, শুধু সময়টা অশুভ

বলে সেই প্রেমের স্পর্শ জনা পাচ্ছেন না-

“তুমি পতি, ভাগ্যদোষে বাম মম প্রতি

তুমি! কোন্ সাধে প্রাণ ধরি ধরাধামে?”

জনা বাঁচতে চান না, তিনি জাহ্নবীর জলে প্রাণ ত্যাগ করত



৬। “এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে” –বক্তা কে? বক্তার বিষম জ্বালাটি কী? সেই বিষম জ্বালা বক্তা কীভাবে ভুলতে চেয়েছেন?

উত্তর আলোচ্য উক্তিটি ‘বীরাঙ্গনা' কাব্য গ্রন্থের ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রের অন্তর্গত। এই উক্তিটির বক্তা হলেন জনা। যুধিষ্ঠির অশ্বমেধ যজ্ঞ করেন। সেই যজ্ঞাশ্ব নিয়ে অর্জুন বিজয় পরিক্রমায় বের হন। যজ্ঞাশ্ব মাহেশ্বরী পুরীতে পৌঁছলে রাজা নীলধ্বজ রায়ের পুত্র প্রবীর সেই যজ্ঞাশ্ব ধরলে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে অর্জুনের হাতে প্রবীর নিহত হয়। প্রাণপ্রিয় পুত্রের মৃত্যু জনাকে বিচলিত করে, হৃদয়ে তাঁর পুত্রশোকের জ্বালা তাঁকে দগ্ধ করতে থাকে। জনার স্বামী ক্ষত্রিয় বীর, জনা নিজে ক্ষত্রিয় রমণী। ক্ষত্রিয়ের

ধর্ম হল বীরথম। পুত্রহত্যার প্রতিশোধ না নিয়ে ক্ষত্রিয় বীর হাত-পা ছড়িয়ে কান্নাকাটি করে বিলাপ করতে বসেন না। জনা ক্ষত্রিতেজে পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিতে চান। জনা জানেন, মৃত পুত্রকে পুনরায় ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু হত্যাকারীর সমুচিত শাস্তি হলে অন্তত কিছুটা সান্ত্বনার প্রলেপ হৃদয়ে পড়বে, হৃদয়জ্বালা কিছুটা হলেও জুড়োবে। তাই তিনি ক্ষত্রিয় স্বামীকে বলেন— “এই তো সাজে তোমারে, ক্ষত্রমণি তুমি, মহাবাহু! যাও বেগে গজরাজ যথা যমদণ্ডসম শুণ্ড আস্ফালি-নিনাদে! টুট কিরীটীর গর্ব্ব আজি রণস্থলে! খণ্ডমুণ্ড তার আন শূলদণ্ড-শিরে!” এইভাবে অর্জুনের সর্বনাশ সাধিত হলে তবেই জনার ‘বিষম জ্বালা’ জুড়োবে। তাই জনা বলে :

“নাশ, মহেষ্বাস, তারে! ভুলিব এ জ্বালা,

এ বিষম জ্বালা, দেব, ভুলিব সত্বরে।”


৫। ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ সারবস্তুর পরিচয় দাও।

সারবস্তু

‘বীরঙ্গনা’ কাব্যগ্রন্থের একাদশ সর্গ ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ অংশটির প্রারম্ভেই কবি তাঁর এই লেখার উৎসভূমি সম্পর্কে বলেছেন—“মাহেশ্বরী পুরীর যুবরাজ প্রবীর অশ্বমেধ-যজ্ঞাশ্ব ধরিলে,—পার্থ তাহাকে রণে নিহত করেন। রাজা নীলধ্বজ রায় পার্থের সহিত বিপদ পরান্মুখ হইয়া সন্ধিকরাতে, রাজ্ঞী জনা পুত্রশোকে একান্ত কাতরা হইয়া এই নিম্নলিখিত পত্রখানি রাজসমীপে প্রেরণ করেন। পাঠকবর্গ মহাভারতীয় অশ্বমেধ পর্ব পাঠ করিলে ইহার সবিশেষ বৃত্তান্ত অবগত হইতে পারিবেন।” কবি মধুসূদন এই পত্র প্রেরণের কারণ সম্পর্কে একটা পূর্বাভাস এই অংশে দিয়েই দিয়েছেন। সেই কারণটি হল পুত্র প্রবীরের মৃত্যু। পার্থ জনার একমাত্র প্রিয়তম পুত্র প্রবীরকে হত্যা করে জনার হৃদয়কে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন। পুত্রের মৃত্যুশোক জনা কোনোভাবেই সহ্য করতে পারছেন না। জনার অন্তরে যে ক্রোধের আগুন জ্বলছে, তা নির্বাপিত হতে পারে একমাত্র পুত্রহন্তারককে সমুচিত শাস্তি দিতে পারলে। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করতে পারেন স্বামী নীলধ্বজ। রাজতোরণে যুদ্ধের বাজনা বাজতে শুনে এবং অশ্বের ডাক, হাতির গর্জন শুনে, রাজপতাকা ওড়া দেখে আর যুদ্ধোন্মত্ত সেনানীদের হুঙ্কার শুনে জনা ভাবলেন রাজা বোধ হয় যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন


[TAG]:   একাদশ শ্রেণি নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতা pdf,নীলধ্বজের প্রতি জনা কবিতা mcq,নীলধ্বজের প্রতি জনা বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণি,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা 3 নং প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা  বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা 1 প্রশ্ন উত্তর,Class 11 Bengali Kobita question in bengali,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url