চরিত্রগঠনে খেলাধুলার ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা |চরিত্রগঠনে খেলাধুলার ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা |Caritragathane kheladhulara bhumika prabandha racana
চরিত্রগঠনে খেলাধুলার ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা PDF|
ভূমিকা: মন ও মননের চর্চার পাশাপাশি শরীরের চর্চাও যে অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় সেকথা মানুষ যু যুগ ত্যাগেই উপলদ্ধি করেছে। খেলার মাধ্যমে শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন যেমন হয় তেমনি তাতে পাওয়া যায় বিশুদ্ধ য়।আনন্দ | তাই খেলাধুলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙো মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। ইংরেজিতে একটি কথা আছে, All work and no a dull boy অথচ অনেকে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ছাত্রজীবন থেকে খেলাধুলাকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবেন। এর ফলে তারা অজ্ঞতাবশতর। জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশকেই ব্যাহত করতে সচেষ্ট হন।শিক্ষা ও খেলাধুলা: প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার সঙ্গে খেলাধুলার কোনাে বিরােধ নেই। বিদ্যালয়জীবনে পড়াশােনার পাশাপাশি নিয়মিত খেলাধুলার অভ্যাস থাকলে দেহ যেমন সুস্থ থাকে তেমনি মনও থাকে নির্মল।অধ্যয়নই ছাত্রদের তপস্যা—একথা সত্য, কিন্তু শরীরে নিরানন্দ মনে তপস্যা সম্ভবনয়৷সেই তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করতে হলে সুস্থসবল দেহ-মনের অধিকারী হতে হবে।
চরিত্রগঠনে খেলাধুলা: বিদ্যালয়জীবনে চরিত্রগঠনের ক্ষেত্রে খেলাধুলার একটি বিশিষ্ট স্থান আছে। নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সময়সচেতনতা, পারস্পরিক সহযােগিতার বােধ,নীতিবােধ, সততা প্রভৃতি হল মানবচরিত্রের কয়েকটি উল্লেখযােগ্য দিক | খেলাধুলার মাধ্যমে এগুলির পর্যাপ্ত অনুশীলন হয়ে থাকে। খেলার মাঠে যে নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলার অভ্যাস তৈরি হয়, তার প্রতিফলন ঘটে বাস্তবজীবনেও খেলাধুলার মাধ্যমে অর্জিত এই সমস্ত গুগ শুধু ব্যক্তিজীবনকেই সমৃদ্ধ করে না, সমৃদ্ধ করে সমাজকেও | অন্যান্য গুণ অর্জনে খেলাধুলা খেলাধুলার মাধ্যমে আরও কয়েকটি গ্রুপ ছাত্রছাত্রীরা অর্জন করে থাকে। খেলতে গিয়ে দলবদ্ধভাবে লক্ষ্যে। পৌছােনাের অভ্যাস গড়ে ওঠে। তৈরি হয় দলগত সংহতির বােধ| খেলাধুলায় মন থেকে ভীরুতা দূর হয়, একটা সুস্থ প্রতিযােগিতামূলক মনােভাব তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, খেলায় হারজিতের বিষয়টিকে সহজভাবে গ্রহণ করতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে বলে বাস্তবজীবনের হারজিতের খেলায় তারা ভেঙে পড়ে না। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকেও তারা খেলােয়াড়সুলভ মনােভাব নিয়ে গ্রহণ করতে পারে।
সতর্কতা: বিদ্যালয়জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব যেমন অসীম, তেমনি এ বিষয়ে সতর্কতারও প্রয়ােজন আছে | কোনাে শিক্ষার্থীর সমস্ত মনােযােগ যদি শুধু খেলাধুলার দিকেই থাকে, তাহলে পড়াশােনায় যথেষ্ট ক্ষতির সম্ভাবনা রয়ে যায়। মনে রাখতে হবে, পড়াশােনার সঙ্গে খেলাধুলা, পড়াশােনা বাদ দিয়ে নয়। অতিরিক্ত খেলাধুলায় শরীর বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়লে তখন ইচ্ছে। থাকলেও লেখাপড়ায় আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করা মুশকিল।
উপসংহার : বিদ্যালয়জীবনে খেলাধুলার যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে সে বিষয়ে আজ সরকারি এবং বেসরকারি মহল যথেষ্ট সচেতন।বহু ক্ৰীড়াকুশল ছাত্রছাত্রী আজ ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রতিভা-প্রদর্শনের বহু সুযােগ যেমন পাচ্ছে, তেমনি অনেকে খেলাকেই পঠনপাঠনের বিষয় করে তােলার সুযােগ পাচ্ছে।শৈশব ও কৈশােরের সুকুমার প্রবৃত্তিগুলি বজায় রাখার জন্য ছাত্রজীবনে। খেলাধুলার একান্ত প্রয়ােজন। আজকের মানুষ বুঝেছে খেলাধুলার মাধ্যমে শুধু জাতীয় ঐক্য নয়, বিশ্বভ্রাতৃত্ববােধ গড়ে তােলাও সম্ভব।
অনুসরণে লেখা যায়
- চরিত্রগঠনে খেলাধুলার ভূমিকা
- ছাত্রজীবন ও খেলাধুলা
- ছাত্রজীবনের উৎকর্ষবিধানে খেলাধুলা
- বিদ্যালয়জীবনে খেলাধুলার ভূমিকা