নুন| একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতার প্রশ্ন উত্তর|একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নুন প্রশ্ন উত্তর PDF

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নুন একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতার প্রশ্ন উত্তর |একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নুন প্রশ্ন উত্তর PDF |Class 11 Bengali Kobita question in bengali  pdf

নুন| একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতার প্রশ্ন উত্তর|একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নুন প্রশ্ন উত্তর PDF

আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নুন প্রশ্ন উত্তর PDFclass 11 Bengali Kobita question Pdf | WB Class nine Bengali question pdf |WBBSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য একাদশ শ্রেণি বাংলা কবিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |একাদশ শ্রেণি বাংলা কবিতা নুন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর pdf download । Class xi Bengali Kobita Question Pdf  ডাউনলোড করো । এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

‘নুন’ একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

নুন mcq প্রশ্ন

1.


একাদশ শ্রেণি বাংলা কবিতা 1 নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর [একটি বাক্যে উত্তর দাও]

একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা নুন 1 নং প্রশ্ন উত্তর

অনধিক কুড়িটি শব্দে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর


প্রস্থ ২.১ হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষেৱ দিন চলে কীভাবে?

উত্তর : হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের দিন চলে সাধারণ ভাতকাপড়ে।

ঐশ্ন ২.২ “কী হবে দুঃখ করে?’–এই বােধের কারণ কী?

উত্তর : দীনদুঃখী দিনমজুররা জানে দুঃখ করে দুঃখ নিরসন হয় না, কাজেই দুঃখ করার যৌক্তিকতা আছে বলে তারা মনে করে না।

প্রয় ২,৩ ‘বাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে —গাঞ্জকাতে টান দেয় কেন?

উত্তর : রাত্তিরে দু-ভাই মিলে গঞ্জিকাতে টান দেয় সংসারের অভাব-অনটন, দুঃখদারিদ্র, অসুখবিসুখ, ধারদেনার চাপ ও দুশ্চিন্তা ভুলে থাকার জন্য। 


এয় ২৪ ‘সর দিন হয় না বাজাৱ ; হলে, হয়। মাত্রাছাড়া’-এই ব্যতিক্রমী ব্যাপাৱেৱ কারণ কী?

উত্তর : দিনমজুরদের প্রতিদিন কাজ না থাকায় আয়ের অনিশ্চয়তার কারণে প্রতিদিন বাজার করা সম্ভব হয় না, হলে কখনাে-সখনাে তা বেহিসেবিপনায় মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ।


প্রশ্ন উত্তর বাড়ি ফেরার পথে কী ঘটে?

উত্তর : বাড়ি ফেরার পথে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য সামগ্রী না কিনে হিসেবিয়ানার বাইরে গােলাপের চারা কিনে ঘরে আসে।

প্রশ্ন উত্তর সে অনেক পৱেৱ কথা।’-কী প্রসঙ্গে এ ভাবনা?

উত্তর : গােলাপের চারা কোথা পুঁতবে, তাতে ফুল হবে কিনা অগ্রপশ্চাৎ কোনাে কিছু না ভেবে গােলাপের চারা কিনে ফেলা প্রসঙ্গে এই ভাবনা।

27=মাঝে মাঝে দিল চুলার অরথা না থাকলে কী হয়?

এর; মাঝে মাঝে দিন চলার অবস্থা না থাকলে দুপুররাত। করে বাড়ি ফেরে এবং ঠান্ডা ভাতে নুনের সংস্থান না থাকলে মাথায়। রাগ চড়ে। গৱিব খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে মাঝে


দিন চলে না, তখন তারা বাড়ি ফেৱে কখন?

ত্তর : গরিব খেটে খাওয়া মানুষদের মাঝে মাঝে যখন দিন চলে না, তখন তারা বাড়ি ফেরে দুপুর রাতে।

প্রশ্ন ২.৯) জয় গােস্বামী ‘বীৱেন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার’ পেয়েছেন কত খ্রিস্টাব্দে?

উত্তর : জয় গােস্বামী বীরেন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার পান ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে।

ক্রয়2,১০ ‘আমি তার মাথায় চড়ি’–এখানে কাৱ মাথায় চড়ার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর : এখানে কবি জয় গােস্বামী রাগের মাথায় চড়ার কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ২, ১১ ‘যাৱা বৃষ্টিতে ভিজেছিল’ কাব্যোপন্যাস গ্রন্থের জন্য জয় গােস্বামী কোন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন?

(উত্তর: 'যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল' কাব্যোপন্যাস গ্রন্থের জন্য কবি জয় গােস্বামী দ্বিতীয়বার আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন।

প্রশ্ন ২,১২ পাগলী তােমার জন্য’-কাব্যের জন্য জয় গােস্বামী কোন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন?

আটত্তির : ‘পাগলী তােমার জন্য কাব্যের জন্য জয় গােস্বামী সাহিত্য অকাডেমি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।

প্রশ্ন কিন্তু পুঁতবাে কোথায়?’-এখানে কি পাতার কথা বলা হয়েছে ?

সুর; এখানে গােলাপচারা পোঁতার কথা বলা হয়েছে। \

প্রশ্ন ঠান্তা ভাতে’ কীসের জোগান নেই?

সুর : ‘ঠান্ডা ভাতে’ নুনের জোগান নেই।


প্রশ্ন ২, নুন’ কবিতায় আমরা কারা?

উত্তর ; 'নুন' কবিতার কথক ‘আমরা হল, এ দেশের সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষ, যাদের দিন চলে সাধারণ ভাতকাপড়ে।

প্রশ্ন ২,৩১ সব দিন হয় না বাজাৱ” –সবাদন বাজাৱ না হওয়ার কারণ কী? /একাদশ, '১৫)

উত্তর : খেটে-খাওয়া গরিব মানুষের সবদিন হাতে পয়সা থাকে না, সেজন্য বাজার করা হয় না।

প্রশ্ন ২.৩২ ‘ৱাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি’ -মাথায় রাগ চড়লে কী ঘটনা ঘটে। / একাদশ, '১৬)

উত্তর : মাথায় রাগ চড়লে বাপ-ছেলেতে, ভাইয়ে-ভাইয়ে তুমুল চেঁচামেচি করে সারাপাড়ার বিরক্তির কারণ হয় তারা—এই ঘটনা ঘটে।

ঐশ্ন ২.৩৩ ‘নুন’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে? /একাদশ, '১৭।

উত্তর : নুন' কবিতাটি কবি জয় গােস্বামীর লেখা ‘ভুতুম ভগবান’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন ২.৩৪ কিন্তু পুঁতবাে কোথায়?’-কথকেৱ এ মন্তব্যের কারণ কী? {একাদশ, '১৭}

উত্তর : এ মন্তব্যের কারণ হল গরিব শ্রমজীবী কথক ঘরে ফেরার সময় গােলাপ চারা কিনে ফেলেছে, কিন্তু থাকার ঘরটুকু ছাড়া চারা পোতার মতাে জায়গা নেই।

প্রশ্ন ‘আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত- কাপড়ে।–সাধারণ ভাতকাপড়ে দিন চলে যাওয়ার কারণ কী?[একাদশ, ১৮ ]

উত্তর : শ্রমজীবী মানুষেরা দীন-দুঃখী, সাধারণ ও সামান্য মানুষ। তারা অল্পতে খুশি। সেজন্য সাধারণ ভাতকাপড়ে তাদের জীবন চলে যায়।

 ১। ঠান্ডা ভাতে নুনের দরকার কেন?

উত্তর নুন ছাড়া ঠান্ডা ভাত বিশ্বাদ, পান্‌সে, জোলো। তাই ঠান্ডা ভাতে নুনের দরকার।

২। গোলাপচারা কেনে কারা?

উত্তর যাদের প্রচুর অর্থ, বাড়িতে গাছ লাগাবার পর্যাপ্ত জায়গা আছে, যারা নিসর্গ প্রেমিক, রোমান্টিক— সেইসব মানুষ পুষ্পবিলাসী হতে পারে, গোলাপচারা

৩। “আমরা তো অল্পে খুশি”—এখানে 'আমরা' বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?

উত্তর যারা দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে, যারা প্রত্যেকদিনের কঠিন পরিশ্রমে প্রত্যেকদিন রোজগার করে, ‘আমরা’ বলতে তাদের বোঝানো হয়েছে।

॥ ৪। “দিন চলে যায়”—কীভাবে দিন চলে যায়?

উত্তর সাধারণ ও সামান্য মানুষ যারা, তারা অসুখে ভোগে,ধারদেনা করে, কিন্তু এত কষ্ট করলেও হেসে খেলে সাধারণ ভাতকাপড়েই দিন চালিয়ে নেয়।

 ৫।“হলে হয় মাত্রাছাড়া”— মাত্রাছাড়া কী হয়?

উত্তর যারা দরিদ্র মানুষ, তাদের রোজগার অতি সামান্য, কিন্তু যেদিন তাদের বেশি রোজগার হয়, সেদিন তারা বিলাসী হয়ে উঠে মাত্রাছাড়া বাজার করে বসে।

গঞ্জিকাতে”—কারা, কেন গঞ্জিকাতে

॥ ৬। “টান দিই টান দেয়?

উত্তর যারা দরিদ্র মানুষ তারা প্রায়শই ধারদেনায় জর্জরিত হয়, অসুখে ভোগে, রাতদুপুরে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা

ভাতে নুনটুকুও পায়না, তারা দুঃখকষ্ট ভুলতে গঞ্জিকাতে টান দেয়।

॥ ৭। ঠান্ডা ভাতে নুন না থাকার মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তর ঠান্ডা ভাতে নুন না থাকার মধ্য দিয়ে সমাজের দারিদ্র্যের ছবি কবি তুলে ধরেছেন।

৮। নুন কবিতার মানুষটির বাড়ি ফিরে রাগের কারণ কী?

উত্তর সারাদিন অক্লান্ত, অমানুষিক খাটাখাটনির পর ক্লান্ত, বিধ্বস্ত মানুষটি দুপুররাতে বাড়ি ফিরে যখন দেখে ঠান্ডা ভাতে ‘নুন’ টুকুও নেই—তখন সে নিজেকে সামলে রাখতে পারে না, তার ক্ষোভের বিস্ফোরণ

হয়, সে রেগে যায়।

৯। “রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি”—এ কথার অর্থ কী?

উত্তর সাধারণ মানুষ খেয়ে, পরে বেঁচেবর্তে থাকতে চায়। তার মৌল চাহিদাগুলি হল খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান। কিন্তু ‘সামান্য’ মানুষগুলির মৌল চাহিদাগুলি কিছুতেই পূর্ণ হতে চায় না, এমনকি ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও জোটে না।ফলে মাথায় রাগ চড়ে যায় এতটাই যে, সারা পাড়ায় অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই রাগের তীব্রতা বোঝাতেই উদ্ধৃত অংশটির অবতারণা করা হয়েছে।

৷৷ ১০। “বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারাপাড়া মাথায় করি” এর অর্থ কী?

উত্তর কাজ সেরে বাড়ি ফিরে কবিতার ‘সামান্য’, হতদরিদ্র মানুষটি এবং তার বাবা যখন ঠান্ডা ভাতে নুন পান না, তারা তখন প্রচণ্ড রেগে যান। দুঃখ ভুলতে তারা গঞ্জিকা সেবন করেন, কিন্তু কোনোকিছুই ভুলতে না পেরে চিৎকার চেঁচামেচি করে সারাপাড়ায় একটা অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করেন।

৷৷ ১১। ‘নুন’ কবিতায় গঞ্জিকা সেবনের প্রসঙ্গ কতবার আছে?

উত্তর ‘নুন’ কবিতায় গঞ্জিকা সেবনের প্রসঙ্গ দু-বার আছে।

৷৷ ১২। “করি তো কার তাতে কী?” কবি এ কথা বলেছেন কেন?

উত্তর যাঁরা উঁচুতলার মানুষ, যাঁরা খেয়ে পরে সুখে-শান্তিতে থাকেন শুধু নয়, যাঁদের খেয়েও খাবার উপচে পড়ে— তাঁরা নীচুতলার মানুষের দুঃখ-দারিদ্র্য বোঝেন না, তাদের দারিদ্র্য দূরীকরণে সচেষ্ট হন না। তাই নীচুতলার মানুষ যখন ঠান্ডা ভাতে নুন না পেয়ে চিৎকার করে পাড়া মাত করে—তখন সেই চিৎকার থামাতে উঁচুতলার মানুষের নাক না গলানোই ভালো। তারা যা করে ঠিক করে।


13.“বাড়ি ফিরি দুপুর রাতে”—বক্তা দুপুররাতে বাড়ি ফেরেন কেন?

উত্তর প্রত্যেকদিন বিক্রিবাটা যা হবে, তাতে সংসার চলবে। বিক্রিবাটা প্রত্যেকদিন একই সময়ে শেষ হয় না, একই রকম হয়না। তাই প্রত্যেকদিন সকাল-সকালবাড়ি ফেরার গল্প থাকে না। তা ছাড়া কথক নেশাভাঙ করা একজন বোহেমিয়ান, যার জীবনযাপনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ নেই। তাই সে যে দুপুররাতে বাড়ি ফেরে— এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।


নুন বড় প্রশ্ন উত্তর,

একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা 5 নং প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ৩.৩ আমাদেৱ শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক।”—কে বলেছে? এ দাবি কার কাছে? কেন?[একাদশ, '১৪] [১+১+৩)

অথবা, আমাদেৱ শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা (হাক।”—কাৱা, কাদের কাছে এই দাবি করেছে? এই দাবি কতটা যুক্তিসংগত? [একাদশ, '১৭] [১+১+৩]

উত্তর : প্রখ্যাত কবি জয় গােস্বামীর ‘নুন' কবিতার কথক শ্রমজীবী হতদরিদ্র মানুষটি। ‘আমাদের শুকনাে 

 ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক’ | এই দাবি সেই কর্তাব্যক্তিদের কাছে, সামান্য নুনটুকু জোগান দেওয়ার দায়দায়িত্ব যাঁদের। ন্যায্য অধিকার দাবি : ধনতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সম্পদের অসম বণ্টনের ফলেই সমাজে ধনী ও গরিবের শ্রেণিবৈষম্য। শ্রমজীবী মানুষের শ্রমজাত সম্পদ ধনীর কুক্ষিগত হয়। শােষণ ও বঞ্চনার ফলে ধনী হয় আরও ধনী। গরিব নিঃস্ব ২ থেকে আরও নিঃস্ব ও নিরন্ন হতে থাকে। তাদের আয়ের | নিশ্চয়তা থাকে না। তাদের শ্রমের জোগানও থাকে না নিয়মিত। তাদের জীবন চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে, ধারদেনা করে। সাধারণ ভাতকাপড়ে। মাঝে মাঝে আয়ের অঙ্ক শূন্যতে থাকায় বাজার করাও হয় না। সেদিন বাড়ি ফিরতে মাঝরাত গড়িয়ে যায়। উদরপূর্তির জন্য জোটে সকালের ঠান্ডা শুকনাে ভাত। সামান্য নুনটুকুরও সংস্থান না থাকায় আলােনা ভাত মুখে বিস্বাদ ঠেকে। তখনই মাথায় রাগ চড়ে। তা নিয়ে বাপ-ব্যাটায় কিংবা ভাইয়ে- ভাইয়ে চাচামেচি শুরু হয়। চাচামেচিতে পাড়া মাথায় করে। ওই অপ্রিয় অসহিষ্ণুতার জন্য পরে তারা নিজেরাও ব্যথিত হয়। তাই তাদের কাতর আবেদন—নিদেনপক্ষে তাদের শুকনাে ভাতে নুনটুকুর ব্যবস্থা হােক। তাদের আর্জি এই সভ্যসমাজে, হতদরিদ্র মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এই প্রশাসনিক মানবিকতাটুকু তাদের ওপর বর্ষিত হােক। দয়া নয়, করুণা নয়, এ হল ন্যায্য অধিকারের বিনীত দাবি।


প্রশ্ন ৩.৪ আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাত- কাপড়ে ।‘সাধারণ ভাতকাপড়’ বলতে কী বােঝানাে

হয়েছে? এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বা কী বােঝাতে (চয়েছেন?(২+৩}

উত্তর :

:সাধারণ ভাতকাপড়’ কথার তাৎপর্য : সাধারণ

ভাতকাপড়’-এর আক্ষরিক অর্থ মােটা চালের সাধারণ ভাতের সঙ্গে মাঠ-ঘাট থেকে কুড়িয়ে আনা শাক-পাতার একটু তরকারি। গরিবের আর্থিক সামর্থ্যে কেনার উপযােগী মােটা সুতাের সস্তা

কাপড়। তা ছাড়া, সাধারণ ভাতকাপড় কথার দ্বারা কবি বােঝাতে চেয়েছেন নিম্ন আয়ের হতদরিদ্র মানুষের সাধারণ জীবনধারণ— নিতান্ত খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা। ‘দিন চলে যায়’ কথার অর্থ এই দিন চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বক্তা বােঝাতে চেয়েছেন তাদের সামান্য আয়ে ভালাে খাওয়া-পরার স্বপ্ন দেখা দিবাস্বপ্নতুল্য অবাস্তব। কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়েই দিন চালাতে হয় তাদের। দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যাপারে তাদের এরকম বােধ ও ভাবনাচিন্তা। সম্পদে বৈভবে অভিজাত জীবনযাপনের স্বপ্ন তারা দেখে না। বিলাসিতা তাদের কাছে দুঃস্বপ্ন। সাধারণ বাঙালি জীবনের ভাবনাচিন্তা হল খেয়ে- পরে জীবনটা চলে গেলেই হল। যেজন্য ঈশ্বরী পাটনীর কামনা ছিল, আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে। এ প্রত্যাশা সাধারণ বাঙালির। তাদের আবহমানকালের মনস্কামনা। তাদের। সংসারে দুঃখদারিদ্র্য থাকলেও তারা অকপটে ও অক্লেশে বলতেপারে আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে।


৫। 'নুন' কবিতায় সারকথা, তা বর্ণনা করো।

সারকথা : ‘নুন' কবিতার কথক অত্যন্ত ছা-পোষা,নিরীহ, সাধারণ স্তরের মানুষ। তাঁরা ‘সদানন্দের মেলা’র লোক নন, তাঁরা ‘সব পেয়েছির আসর'এর লোক নন। কথক বাঁধা মাইনের সরকারি চাকুরে নন, কথক ‘রোজ আনি রোজ খাই’ অথবা ‘কোনো কোনো দিন খেতে পাই না' গোছের লোক। মানুষের যে ক-টি প্রধান চাহিদা তথা basic needs আছে, তাদের মধ্যে রয়েছে খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান। কথক অল্প কিছুতেই খুশি হন, বেশি মাত্রার দুঃখ-টুঃখ করার লোক নন, ভাত-কাপড় জুটলেই তিনি খুশি। বড়ো কোনো ভাবনাকে, উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে মনে তিনি ঠাঁই দিতে পারেন না, সাধারণ প্রবৃত্তি চর্চাতেই তিনি সীমাবদ্ধ। প্রবৃত্তির চর্চাটাও ঠিকমতো সবসময় হয় না। একে অর্থনৈতিক অপ্রতুলতা, তার ওপরে রোগ-জ্বালা লেগেই থাকে, ফলে অনেক কথক ঋণজর্জর। ফলে একরাশ বিরক্তিতে কখনো কখননো ‘গঞ্জিকা’র মুখোশে কথকরা বাপ-ব্যাটা দুজন মিলে মুখ লুকোন। বোহেমিয়ান জীবন কোনো কোনোদিন সুস্থিত হতে চায়, বিশেষ করে যেদিন রোজগারপাতি একটু বেশি হয়। সেদিন বাড়ি ফেরার পথে রোমান্টিক হয়ে পড়া কথক গোলাপচারা কিনে আনেন। কিনে তো আনেন কিন্তু লাগাবেন কোথায়? যে বাড়িতে ভালো করে মাথা গোঁজবার ব্যবস্থা নেই, পরিবারের সদস্যদেরই স্থান- সংকুলান হয় না, সেখানে গোলাপ চারা! সামান্য খুশিতে, হেসে-খেলে কথকের দিন অতিবাহিত হয়ে যায়। অধরাকে ধরতে চেয়ে, অপ্রাপনীয়কে পেতে চেয়ে লাভ কী? কথক তো ‘সামান্য’ লোক, আর সামান্য লোকদের বেশি চাইতে নেই! কাজ সেরে রাত করে বাড়ি ফিরে ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুন না পেলে মাথায় রাগ চড়ে যায়, রাগের চোটে চিৎকারে সারা পাড়ায় তুলকালাম বাধিয়ে দেন কথক। বেশ করেন, ঠিক করেন। তাঁদের মতো ‘সামান্য’ লোকের ব্যঞ্জনহীন শুকনো ভাতে আগে লবণের ব্যবস্থা হোক, তাহলে তাঁরা চিৎকার থামিয়ে দেবেন।


৫। 'নুন' কবিতায় নামকরণ তা বর্ণনা করো।

নামকরণের গুরুত্বকে অস্বীকার করাটা কোনো কাজের কথা নয়। প্রবাদে বলে—“Morning shows the day" দিনটা কেমন যাবে তা সকালটা দেখেই বোঝা যায়। তেমনি কোনো লেখার ক্ষেত্রে নামকরণ দেখেই বোঝা যায়, অন্তত একটা পূর্বাভাস পাওয়া যায় লেখার মূলবিষয়টা কেমন হবে। তাই বেহিসেবির মতো আমরা ফস্ করে বলে দিতে পারিনা যে, ‘What's in a name ?' নামে কি যায় আসে? আমাদের নামে অনেক কিছু যায় আসে। আমরা নামকরণ নামক সিঁড়িতে পা দিয়ে প্রথমে বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটা আগাম পূর্বাভাস নিয়ে সাবধানী পদক্ষেপে বিষয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করি, ধীরে ধীরে লেখার অন্তিমে পৌঁছই। এটা করি এজন্যই যে বিষয়টি পাঠ করার পর যেন মনে কোনো অসন্তোষ ধূমায়িত না হয়। নামকরণ নানাভাবে হয়ে থাকে। কখনও চরিত্র মুখ্য নামকরণ, কখনও ঘটনামুখ্য নামকরণ, কখনও ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ, কখনও রূপকধর্মী নামকরণ ইত্যাদি। আমরা আমাদের পাঠ্য ‘নুন’ কবিতাটি বিচার করে দেখতে চাই তার নামকরণে কোন্ পন্থা অবলম্বিত হয়েছে এবং সেই নামকরণ যথার্থ ও সংগত কিনা। মানুষের সহজ, সরল, সাধারণভাবে বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান—এই তিনটি জিনিসের খুব প্রয়োজন, এগুলি না হলে জীবন বাঁচে না। যারা সামান্য লোক, যারা মাটির কাছাকাছি বাস করেন তথা যাদের মাটিতে চরণ পড়ে, যারা below the poverty line-এ আছেন, যাদের উঁচু স্বপ্ন বা প্রাচুর্যপূর্ণ হওয়ার গল্প নেই, যারা প্রবৃত্তিচর্চাটুকুকে সম্বল করে বেঁচে আছেন—তারা ভাত-কাপড় পেলেই খুশি, কেননা এই ভাত-কাপড়ও সহজে জোগাড় হতে চায় না। রোজগারের অনেকটাই চলে যায় রোগ-জ্বালার কারণে, এ কারণে ধারদেনাতে ডুবে থাকতে হয়। রোজগার না হলে খাবার বন্ধ, রোজগার একটু ভালো হলে আনন্দের পারদটা একটু চড়ে। রোজগারে ভাটার টান হলে কথক বিরক্তিতে গঞ্জিকাতে টান দেন, রোজগার একটু ভালো হলে কথক বাড়ি ফেরার পথে গোলাপচারা কিনে আনেন, তবে এটুকু শখও কি গরিবের পক্ষে মানায়! গাছ তো এল, কিন্তু বাড়িতে জায়গা কই? পোঁতা হবে কোথায়? যাই হোক, হেসে খেলে আনন্দেতে কথকের দিন চলে যায়। তবে যেদিন কাজ সেরে দুপুর-রাতে বাড়ি ফিরে ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে কথক নুন পান না—সেদিন কথকেরমাথায় রাগ চড়ে যায়। তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি করে পাড়া মাত করে দেন। বেশ করেন, যারা সবকিছু পায়, তাদের কোনোকিছু বলা মানায় না। কথক চিৎকার কোনোদিন করবেন না যদিগরিবের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। লবণ খুব দামী বস্তু নয় কিন্তু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বস্তু। কোনো রান্নাই স্বাদু হতে পারে না লবণ না থাকলে। তবে যাদের নিয়মিত গরম ভাত জোটে, সেইসব উপরতলার মানুষের লবণ ছাড়াও চলতে পারে। কিন্তু যাদের কপালে জোটে ঠান্ডা ভাত



প্রশ্ন ৩, ১৪কবি জয় গােস্বামী নুন’ কবিতায় সমাজের শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার যে ছবিএঁকেছেন, তা বর্ণনা করাে।

অথবা, সমাজের দাৱিদ্রলাঞ্জিত শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা কবি জয় গােস্বামীৱ ‘নুন’ কবিতা অবলম্বনে।

উত্তর :শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ছবি : কবি জয় গােস্বামী ‘নুন’ কবিতায় সমাজের অতিসাধারণ শ্রমজীবী নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেন। তারা শ্রমজীবী, ‘দিন আনে দিন খায়’ এমনি হতদরিদ্র বটে, কিন্তু তারা অল্পে খুশি। তারা জানে দুঃখ করে দুঃখকষ্টের সুরাহা হয় না। দুঃখ

কার কাছেই বা করবে ? দুঃখ জানিয়ে দুঃখের সুরাহা হবে এমন দরদি সমাজ-সংসার এদেশে নেই। কাজেই সাধারণ ভাতকাপড়ে তাদের দিন চলে। তাদের দিন চলে অসুখেবিসুখে ধারদেনা করে। কিন্তু দুঃখদারিদ্র্য, অসুখবিসুখ, দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা সবকিছু ভুলে থাকার জন্য রাতে দু-ভাই মিলে গাঁজার কলকেতে টান দেয়। অভাবের সংসারে সবদিন বাজার করা হয় না। যেদিন হয় সেদিন বেহিসেবিপনা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। কারণ গরিবের সংসারে অপ্রয়ােজনীয় গােলাপের চারা কিনে বাড়ি ফেরে : গােলাপচারা পুঁতে বাগান বানাবে, তেমন জায়গাটুকু তাে নেই। কষ্ট ভােলার জন্য তারা যথারীতি গাঁজাতে।টান দেয়। নেশাভাঙেই তাদের আনন্দ, তাতেই তারা খুশি। এভাবে হেসেখেলে কষ্ট করে তাদের দিন চলে যায়। মাঝে মাঝে অভাব- অনটনে সংসার অচল হয়ে যায়। সেদিন মাঝরাতে তারা বাড়ি

ফেরে। ভাত তখন ঠান্ডা। সামান্য নুনের জোগাড়টুকুও হয়নি। ফলে খেতে বসে মাথায় রাগ চড়ে। রাগ চড়ে গিয়ে এমন হয় যেন রাগের মাথায় সে চড়ে বসে। ফলে বাপব্যাটায় কিংবা দু- ভাইয়ে মিলে মারামারি ও চঁচামেচি করে সারাপাড়া মাথায় করে। অবশ্য তাদের রাগারাগি ও আত্মকলহে কাদের কী এসে যায় ?

তারা খেটে-খাওয়া অতি নগণ্য মানুষ। তাদের চাওয়া বলতে ‘আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক। সমাজের কাছে, রাষ্ট্ৰচালকদের কাছে এটুকুই তাদের আর্জি।


প্রশ্ন ৩.১৭ আমরা তাে সামান্য লােক/আমাদেৱ শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক।-কবি জয় গােস্বামীৱ নুন’ কবিতার বিষয়বস্তু আলােচনা প্রসঙ্গে উদ্ধৃতাংশেৱ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে। [২+৩]

অথবা, আমরা তাে সামান্য লােক’-কে, কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছে? ‘সামান্য লােক’ শব্দেৱ তাৎপর্য ব্যাখ্যা কৱাে। [একাদশ, '১৮] [২+৩]

.

উত্তর: কবিতাৱ সংক্ষিপ্ত বিষয় : কবি জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতার বিষয় হল জনৈক হতদরিদ্র শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের আত্মকথা। এই শ্রেণির মানুষ অল্পে খুশি। তারা জানে দুঃখ প্রকাশ

করে দুঃখের সুরাহা হয় না। সাধারণ ভাত-কাপড়ে তাদের জীবন চলে। অসুখে ধারদেনা করে তারা সামাল দেয়। অর্থাভাবে সবদিন বাজার করতে পারে না। কখনও বা বাজার করার মতাে অর্থের

সংস্থান হলে বাজার করা মাত্রা ছাড়ায়। শৌখিনতার বিলাস কখনও বা ঘাড়ে চড়ে।সংসারের অভাব-অনটনের কথা ভুলে বেহিসেবিবশত গােলাপচারা কিনে ফেলে। মাঝে মাঝে সংসার অচল হয়ে পড়ে। তাদের বাড়ি ফিরতে দুপুররাত হয়। খেতে বসে ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও

জুটে না। তখনই মাথায় রাগ চড়ে। বাপব্যাটা কিংবা দু-ভাইয়ে মিলে চঁচামেচি করে পাড়া মাথায় করে। তাৎপর্য বিশ্লেষণ : তারা দীনদুঃখী সামান্য শ্রমজীবী মানুষ। তাদের চাওয়াপাওয়া সামান্য। প্রত্যাশাও যৎকিতি। তাদের কামনা। শুকনাে ভাতে সামান্য নুনের ব্যবস্থা থােক। সারাদিনের হাড়ভাঙাপরিশ্রমের পরে বাড়ি যখন ফেরে তখন ক্ষুধায় কাতর। খেতে বসে। পাতে পরিবেশিত হয় সকালের রান্না করা ঠান্ডা ও শুকনাে ভাত। শুধুই ভাত। ব্যঞ্জনের ব্যবস্থাদি নেই। কারণ কেনাকাটার টাকাকড়ির সংস্থান নেই। একই কারণে সামান্য নুনটুকুও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।নুনবিহীন সবকিছু বিস্বাদ। ঠান্ডা শুকনাে ভাত তাে খাওয়া সম্ভবই নয়। তাই দুঃখে-বেদনায় তাদের বিনীত আবেদন তাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক। যাদের এটুকু ব্যবস্থা করার দায়দায়িত্ব, তাদের কাছে আবেদন-গরিবের সপক্ষে এটুকু অন্তত করা হােক।

|


প্রশ্ন ৩,১৯ কবি জয় গােস্বামীৱনুন’কবিতাৱ আত্মকথক শ্রমজীবী হতদরিদ্র মানুষের স্বভাবচরিত্রের পরিচয় দাও। এবং ওই প্রসঙ্গে কবির দরদি চিত্তের যে পরিচয় মেলে তা সংক্ষেপে লেখাে।

অথবা, আমরা তাে অল্পে খুশি ;-কবিতায় ফুটে ওঠা বক্তাৱ জীবনচরিত্রের পরিচয় দাও। (নমুনা প্রশ্ন, '১৪] [৫] অথবা, আমরা তাে অল্পে খুশি ;–‘অল্পে খুশি’ মানুষদের জীবনযন্ত্রণার যে ছবি ‘নূন’ কবিতায় ফুটে উঠেছে তার পরিচয় দাও।


স্বভাবচৱিত্ৰ : কবি জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতার আত্মকথক মানুষ হতদরিদ্র শ্রমজীবী। আত্মকথক নির্দিষ্ট কোনাে মানুষ নয়, গরিব শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধি, অন্তত কবি সেভাবেই তাদের দারিদ্র্যপীড়িত জীবনের ছবি তুলে ধরেছেন। এরা বিত্তহীন। কিন্তু চিত্তহীন নয়। নেশাভাং করে এরা দারিদ্রপীড়িত জীবনের

অশেষ দুঃখকষ্ট-যন্ত্রণাকে ভুলতে চায়।কখনও নেশার বসে বাপব্যাটায় কিংবা ভাইয়ে-ভাইয়ে চঁাচামেচি করে পাড়া মাথায় তােলে, কিন্তু ওই অসংযমী কাজটুকু ছাড়া অসামাজিক কাজে নিজেকে নষ্ট করে । চুরি, বাটপাড়ি করে নিজেকে অমানুষ করে তােলে না। চরম অভাব-অনটনকে ‘হেসে খেলে, কষ্ট করে, সয়ে নেয়। অসুখে- বিসুখে ধারদেনা করে সামাল দেয়। কিন্তু মাঝে মাঝে শৌখিনতার বিলাস ঘাড়ে চড়ে, তখন বেহিসেবি হয়ে গােলাপচারা কিনে বসে মাঝে মাঝে রুজিরােজার না হলে রাত করে বাড়ি ফেরে। সেদিন ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও জোটে না। তাদের দারিদ্র্যের এই রূঢ় বাস্তবচিত্র বড়ােই হৃদয়বিদারক। এদের কথাবার্তায় আচরণে উগ্রতা নেই। সহজ সরল এরা। অল্পে তুষ্ট চাওয়াপাওয়া প্রত্যাশা অতি সামান্য। অদৃষ্টবাদী নয়। দুঃখদারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, কিন্তু হাঁকডাক করে দুঃখ প্রকাশে বিশ্বাসী নয়। কারণ তারা জানে তাতে দুঃখের সুরাহা হয় না। তাদের চাওয়াশুকনাে ভাতের সঙ্গে যেন একটুকুনুনের ব্যবস্থা হয়। দরদি চিত্তের পরিচয় : কবি জয় গােস্বামী এই গরিব দীনদুঃখী শ্রমজীবী মানুষের প্রতি গভীর দরদি। কবিতায় কোথাও তিনি প্রত্যক্ষভাবে হাজির হয়ে দরদ, সহানুভূতি বা সহমর্মিতার কথা উচ্চারণ করেননি। কিন্তু ওই শ্রেণির মানুষের জীবনের ছবি আঁকতে গিয়ে তাঁর দরদ ও সহানুভূতি প্রকাশিত হয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রে।


১। “আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।”—কার লেখা, কোন্ কবিতা থেকে নেওয়া

হয়েছে? এই প্রার্থনা কে করেছেন? এই প্রার্থনা সঠিক কিনা বিচার করো। ১+১+৩=৫

উত্তর জয় গোস্বামীর লেখা, ‘ভুতুম ভগবান’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘নুন’ কবিতার অংশ। এই প্রার্থনাটিকরেছেন ‘নুন’ কবিতার কথক তথা কবি স্বয়ং। যারা অর্থনৈতিকভাবে নীচুতলার মানুষ, অর্থাৎ নিম্নবিত্ত মানুষ, তাদের বেঁচে থাকাটা খুব কষ্টকর, এরা কোনো রকমে দিনগত পাপক্ষয় করে চলে। তবে তারাও বেঁচে থাকতে চায়। এই বাঁচার জন্য তিনটি জিনিস খুব জরুরি, সেগুলি হল খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান। আর কিছু হোক না হোক ভাতকাপড় চাই।কারণ এই শ্রেণির মানুষগুলির উচ্চকোটির মানুষদের মতো চাহিদা নেই, উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই, বড়োমাপের স্বপ্ন নেই, প্রবৃত্তিচর্চাটুকু সম্পন্ন করতে পারলেই এরা খুশি

“আমরা তো অল্পে খুশি ; কী হবে দুঃখ করে? আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে।” রোজগার হলেও অসুখে-বিসুখে অনেকটাই বেরিয়ে যায়, কখনও ঋণও করতে হয়। আবার যখন কোনো রোজগার হয়। না তখন বড়ো কষ্ট—“মাঝে মাঝে চলেও না দিন...।” কাজ সেরে অনেক রাত করে বাড়ি ফিরে যখন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাত নিয়ে এই ‘সামান্য' লোকেরা খেতে বসে, তখন সে-ভাতে নুন না থাকলে মাথা গরম হয়ে যায়, তখন রাগে চিৎকার করে এই সামান্য লোকেরা পাড়া মাথায় করে, অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়। এই চিৎকার নিয়ে শাসক বা উঁচুতলার কারোর কিছু বলার থাকতে পারে না, কারণ নুন ছাড়া, ব্যঞ্জন ছাড়া ঠান্ডা ভাত গেলা যায় না, অন্তত নুনটুকু লাগে। তাই সামান্য লোকেরা চিৎকার থামিয়ে দেবে যদি শুকনো ভাতে লবণ জোটে। তাই এই দাবি বা প্রার্থনা ন্যায়সংগত বলেই মনে হয়।


। ২। “বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপচারা”—বক্তা কে? বক্তা কেন গোলাপচারা

কিনে আনেন? অংশটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য কী? ১+১+৩=৫

উত্তর বক্তা হলেন একজন ‘সামান্য’ লোক তথা কথক তথা কবি স্বয়ং। রোজ একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে সবাই চায়—অসামান্য লোক থেকে শুরু করে সামান্য লোক পর্যন্ত। বেসামাল, টালমাটাল সংসারে একটু সুন্দরের ছোঁয়া দিতে রোমান্টিক কথক গোলাপচারা কেনেন। সুখী হতে, খুশি হতে সবাই চায়। অবরুদ্ধ অর্থনৈতিক চাপে রোগজ্বালা সামলে সংসার ভালোভাবে চলতেই চায় না। রোজগার হলে যদি বা চলে, কোনো কারণে রোজগার না হলে সংসারে ‘চাক্কা বন্ধ’। আসলে সবার কপালে সুখ সহ্য হয় না, বিশেষত নিম্নবিত্তদের তো কোনোভাবেই হয় না। তবু, যেদিন একটু বেশি রোজগার হয়, সুখসন্ধানী মন সুখ কিনতে চায়—“বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপচারা।” কিন্তু কিনেও সুখ নেই—“কিন্তু পুঁতব কোথায়?” যে বাড়িতে সদস্যদেরই স্থান সংকুলন হয় না, মাথা গোঁজার যথাযথ স্থান নেই–সেখানে গোলাপচারা কোথায় পোঁতা হবে? দুঃখ করে তাই ‘গোলাপচারা’ কেনা সামান্য লোক বলতেই পারে—“এ বিরাট পৃথিবীতে/ আমার এ ছোট্ট প্রেম/বাসা পেল না।” তা ছাড়া ফুল একারণেই সুন্দর হয়ে ওঠে, যে দেখছে বা দেখতে চায়—তার দৃষ্টিটা সুন্দর। কিন্তু যেখানে অভাব আর অভাব, ‘নুন নেই ঠান্ডা ভাতে'—তার ফুল বিলাসিতা শোভা পায় না। তাই অভাবের সংসারে গোলাপচারা ফুল হয়ে ফুটতে পারে না, সংশয়টা থাকেই—‘ফুল কি হবেই তাতে?’ তাই বিশৃঙ্খল সংসারে সুস্থিত গোলাপ ফুল ফুটতেই পারে না—একথা হলফ করে বলা যায়।


৩। “আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ কবিতার অংশ? ‘সাধারণ ভাতকাপড়ে”—কোন্ ভাতকাপড়ে’ কথাটি কোন্ অর্থে প্রযুক্ত? ‘দিন চলে যায়’ কথাটির মধ্য দিয়ে বক্তা কী বুঝিয়েছেন?১+১+৩=৫


উত্তর আলোচ্য অংশটি কবি জয় গোস্বামীর ‘ভুতুম ভগবান’ কাব্যের ‘নুন’ কবিতার অংশ।

সাধারণ মানুষ কোনোমতে দিন গুজরান করে, দিনগত পাপক্ষয় করে চলে। তাদের রোজগারের কোনো নিয়মনির্দিষ্ট ব্যাপার নেই। তাই কোনোদিন ‘দিন চলে যায়’ আবার ‘মাঝে মাঝে চলেও না দিন’। ভাত এবং কাপড় পেলেই এই সামান্য মানুষরা খুশি। তাদের প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্য, মাঝে মাঝে জৈবিক প্রবৃত্তিটা মেটে। তাই কোনোরকমে দিন কেটে যাওয়া ব্যাপারটিকেই উক্তিটিতে বোঝানো হয়েছে।

‘নুন’ কবিতায় যে মানুষদের কথা বলা হয়েছে তারা ধনী বা উচ্চমধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত নয়, নিম্নবিত্ত তথা গরিব। এই মানুষগুলি একটা নির্দিষ্ট ঘেরাটোপে বাস করে। তারা কোনো উচ্চাশা পোষণ করে না, অপ্রাপ্তনীয়কে ধরতে চায় না, তাই অপ্রাপ্তির দুঃখ বা বেদনা তাদের নেই। সাধারণ ভাতকাপড় পেলেই এরা খুশি—“আমরা তো অল্পে খুশি ; কী হবে, দুঃখ করে?” এদের রোজগার হলে ভাতকাপড় জোটাতে এবং অসুখ সারাতে বেশিটাই খরচ হয়ে যায়, বরং কখনো-কখনো ঋণধার করতে। আবার রোজগার না হলে দিন চলে না। আবার রোজগার বেশিহলে গোলাপচারা কিনে বিলাসী ও রোমান্টিক হতে চায়। অবশ্য এটুকু হতে চাওয়া অন্যায় নয়, বাড়াবাড়ি নয়। কিন্তু চারাটা পুঁতবে কোথায়, যে বাড়িতে নিজেদেরই স্থান সংকুলান হয় না? তা ছাড়া ফুল কি ফুটবে? কে জানে! তবে এজন্য বিরাট দুঃখ হয় না, হলেও গঞ্জিকাতে টান দিলেই দুঃখ দূর হয়ে যায়, তাই ‘যথা পূর্বক তথা পরং’ একঘেঁয়ে দিন অতিবাহিত হয় সামান্য পেয়ে, “হেসে খেলে, কষ্ট করে, আমাদের দিন চলে যায়...।”


ID ৪। “রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি”—বক্তা কে? ‘আমি তার মাথায় চড়ি, বলতে কী বোঝানো হয়েছে? উদ্ধৃিতিটির প্রসঙ্গ কী? ১+১+৩=৫

উত্তর এখানে বক্তা হলেন ‘নুন’ কবিতায় উল্লিখিত একজন ‘সামান্য মানুষ’ তথা কথক তথা কবি নিজেই।

বক্তা বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন জীবন সংগ্রামে লিপ্ত থাকেন, কারণ প্রতিদিনকার গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য বক্তাকে প্রতিদিন রোজগার করতে হয়, তিনি 'Hand to mouth' মানুষ। যেদিন রোজগারে টান পড়ে, সেদিন রাতদুপুরে বাড়ি ফিরে খিদের চোটে তরিতরকারিহীন শুকনো বিস্বাদ ঠান্ডা ভাতে নুন না পেয়ে

বক্তা রেগে যান। তাঁর রাগের তীব্রতা (Intencity) কতখানি,  তা বোঝাবার জন্য কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। ‘নুন’ কবিতার বক্তা খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, বলা ভালো 'Hand to mouth' অর্থাৎ রোজ আনি রোজ খাই টাইপ। কোনোদিন রোজগার হয়, কোনোদিন হয় না, কোনোদিন আবার বেশ বেশি রোজগার হয়। রোজগার হলেও সেটা সুখেরবার্তা নয়, ভাতকাপড়ের ব্যবস্থা করতে এবং রোগ-অসুখ সামলাতে সেটা খরচ তো হয়েই যায়, অনেকসময় ধারদেনা করতে হয়। রোজগার না হলে সংসারের সেদিনের কথা কহতব্য নয়। বক্তা নিজেই বলেছেন—“মাঝে মাঝে চলেও না দিন।” রোজগারপাতি বেশি হলে বক্তা কোনো কোনো দিন গোলাপচারা কিনে আনেন। কিন্তু আনাই সার, পোঁতার জায়গা নেই। তবে এর জন্য বক্তা হাহুতাশ করেন না, কারণ ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ সংসারে এটাই তো ভবিতব্য, ‘কী হবে দুঃখ করে?’ ভাতকাপড় জুটলেই বক্তারা খুশি—“আমরা তো এতেই খুশি ; বলো আর অধিক কে চায়?” কিন্তু যেদিন কাজ সেরে, রাতদুপুরে বাড়ি ফিরে খেতে বসেন বক্তা এবং দেখেন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও নেই—তখন বক্তা প্রচণ্ড রেগে যান। বক্তার রাগ কতটা বুনো হয়ে ওঠে, তা বোঝাতেই প্রাসঙ্গিকভাবে বলা হয়েছে—“রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি...।”


৫। 'নুন' কবিতায় সাধারণ মানুষের দুঃখদুর্দশার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা বর্ণনা করো।

উত্তর যারা দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করে, তারা সবাই এক, তাদের স্বতন্ত্র অস্ত্বিত্ব নেই বলেই মনে হয়। কারণ, তাদেরসংসারগুলোয় চিরকালীন অভাবের ছাপ, সংসারের মানুষগুলির বছরভর রোগভোগ করা ও তা সামলাতে নাভিশ্বাস ওঠা, ভাত-কাপড়ের অর্থাৎ ন্যূনতমভাবে বেঁচে থাকার রসদ জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খাওয়া, বড়োসড়ো স্বপ্ন দেখতে না চাওয়া এবং ছোটোখাটো স্বপ্নপূরণ না হওয়া। এই সামান্য মানুষগুলি ‘ঝাঁকের কই’। বেশি কিছু চাওয়া বা পাওয়া তাদের ক্ষেত্রে অন্যায় ৷ মৌল চাহিদাগুলি মিটলেই, অর্থাৎ ভাতকাপড়ের ব্যবস্থা হলেই ঢের, আর কি চাই? প্রবৃত্তির নিবৃত্তি হলে আর কিছু চাওয়ার নেই। আর ভাতকাপড়ের ব্যবস্থা না হলে দুঃখ ভোলার উপকরণ তো হাতের সামনে আছেই—গঞ্জিকাতে টান দাও।

তাই কবি তার ‘সামান্য মানুষ’ কথক অনায়াসে বলতে পারেন- “আমরা তো অল্পে খুশি ; কী হবে দুঃখ করে? আমাদের দিন চলে যায় সাধারণ ভাতকাপড়ে।” এই মানুষগুলি মাঝে মধ্যে ব্যতিক্রমী হতে চায়। যেদিন রোজগার বেশি হয় সেদিন কথক একটু রোমান্টিক হয়ে উঠতে চান : “বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপচারা।” কিন্তু যে বাড়িতে মানুষ থাকার জায়গা নেই, সেখানে গোলাপচারা পোঁতা হবে কোথায়? কথক মনে মনে যেন বলে ওঠেন—

“আমার এ ছোট্ট প্রেম বাসা পেল না।” তাছাড়া ফুল কি সে গাছে ফুটত? ফুলের ফোটা শুরু

সৌন্দর্যপ্রেমিকের দৃষ্টির সামনে! কিন্তু যে বাড়িতে ভাতে নুন জোটে না সেখানে সৌন্দর্যের দৃষ্টি? তবে না পেতে পেতে সব সহ্য হয়ে গেছে, বোহেমিয়ান হয়ে ওঠ, গঞ্জিকাতে টান দাও, তাহলে আর দুঃখই থাকবে না, অতি সহজে বলা যাবে : “আমরা তো এতেই খুশি, বলো আর অধিক কে চায়? হেসে খেলে, কষ্ট করে, আমাদের দিন চলে যায়।” তবে সবকিছুর একটা সীমা থাকে, সহ্যেরও একটা সীমা আছে, কাজ সেরে দুপুররাতে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা ভাতে নুন না পেলে মাথায় খুন চেপে যায়, চিৎকার করেন কথক, “সারা পাড়া মাথায় করি।” কথক চিৎকার করবেন। যাদের ‘খেয়েও খাবার উপচে পড়ে'—তাদের কিছু বলার নেই। কথক চিৎকার তখনই থামাবেন যদি তাঁর এবং তাঁর মতো মানুষের ঠান্ডা শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হয়।

 

প্রশ্ন ৩.২০ “আমি তার মাথায় চড়ি”-কে, কার মাথায় চড়ে? পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।

| একাদশ, '১৫] [১+১+৩]

উত্তর : ক্ষুধার্ত হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষটি তার রাগের মাথায় চড়ে। 

রাগ চড়ার কারণ : ‘আমার মানুষটি একটি হতদরিদ্র শ্রমজীবী লােক। ‘দিন খাটে দিন খায় এমনি আর্থিক অবস্থা সংসারের। সংসারের এই দুঃখকষ্ট, অভাব-অনটন মুখ বুজে সয়ে নেয়। ফলাও করে বলে না। প্রতিবাদে সােচ্চার হয় না। কারণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে তার ধারণা এভাবে দুঃখকষ্টের কথা বলে দুঃখের প্রতিকার হয় না। তার বক্তব্য কী হবে দুঃখ করে ? আর সেজন্য যেটুকু উপায় করে তাতেই খুশি থাকে। সাধারণ ভাতকাপড়েদিন চললে তাতেই সন্তুষ্ট। ধারদেনা করে অসুখ-বিসুখ সামাল দেয়। অবশ্য গঞ্জিকার কলকেতে টান দেয় রাত্রিতে। কখনাে- সখনাে বাড়ি ফেরে মাঝরাতে। তখন ব্যঞ্জনহীন ঠান্ডা ভাতে নুনেরসংস্থান না থাকায় ভাত বিস্বাদ হয়। একদিকে ভয়াবহ দারিদ্র্যেরকশাঘাত। তার ওপর ক্ষুধার্ত পেটে বিস্বাদ ভাত গলা দিয়ে নানামায় রাগ মাথায় চড়ে। রাগ চড়ার কারণ হল এই। তাৎপর্য বিশ্লেষণ : রাগ যখন সংযমের সীমা টপকে যায়, তখন দিকবিদিক জ্ঞান থাকে না। তখন মানুষের জ্ঞান, বােধবুদ্ধি, ন্যায়-অন্যায়ের বিচারবিবেচনা সব লােপ পায়। মনুষ্যত্ব লােপ পেয় পশুত্ব প্রাধান্য পায়। হিতাহিত বােধের অস্তিত্বটুকুও থাকে না। রাগের থেকে বড়াে হয়ে দাঁড়ায় ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির মনুষ্যত্বহীনপশুত্ব। হিতাহিত জ্ঞানহীন অন্ধ ক্রোধােন্মত্ততা। তা যেন রাগের মাথার ওপর ক্রোধােন্মত্ত মানুষটির চড়ে বসা। তার ফলও হাতেহাতেমেলে। বাপব্যাটায় বচসা হয়, ভাইয়েভাইয়ে কলহ বাধে। তাতেপাড়ার লােকের ঘুম ছুটিয়েসারা পাড়া যেন মাথায় করে।




[TAG]:   একাদশ শ্রেণি নুন কবিতা pdf,নুন কবিতা mcq,নুন বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণি,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা 3 নং প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা  বড় প্রশ্ন উত্তর,একাদশ শ্রেণির বাংলা কবিতা 1 প্রশ্ন উত্তর,Class 11 Bengali Kobita question in bengali,

Next Post Previous Post
1 Comments
  • নামহীন
    নামহীন ২৭ এপ্রিল, ২০২২ এ ১:৪৪ PM

    Aswome

Add Comment
comment url