জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়|উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান|class 10

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

 

জীব   জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ সমন্বয়

📚উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান:-

📚◼️ সংবেদনশীলতা -কোন নির্দিষ্ট বাহ্যিক বা অভ্যন্তরিন পরিবর্তন এর প্রভাবে জীবের সাড়া প্রদানের ক্ষমতা বা ধর্ম কে বোঝায় 

🔹উদাহরণ:-লজ্জাবতী লতার পাতাকে স্পর্শ করলে এই উদ্ভিদের পত্রফলকগুলি নুয়ে পড়ে   

◼️ উদ্দীপক -পরিবেশের যেসব পরিবর্তনগুলি জীবের দ্বারা শনাক্ত হয় এবং যাদের উপস্থিতিতে জীব সাড়া প্রদান বা তার ধর্ম বা আচরণ দেখায় তাদের উদ্দীপক বলে  

উদ্দীপক প্রধানত দুই প্রকার হয়-------

Ø বাহ্যিক উদ্দীপক- জীবদের বাইরে বা বাহ্যিক পরিবেশে উৎপন্ন উদ্দীপকের প্রভাবে জীবদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়   যেমন -

Ø অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক- জীবদেহের ভিতরে বা অভ্যন্তরীণ পরিবেশে উৎপন্ন উদ্দীপকের প্রভাবে জীবদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়  যেমন - উদ্ভিদের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে ঘটে  

 

📚উদ্ভিদের চলন:-


◼️চলন- যে প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা উদ্দীপকের উপস্থিতিতে দেহের অঙ্গ পতঙ্গের বা কোন অংশের সঞ্চালন ঘটায় কিন্তু কোনরকম স্থান পরিবর্তন করে না।

উদ্ভিদের চলনের প্রকারভেদ-

·      ট্যাকটিক চলন

·      ট্রপিক চলন

·      ন্যাস্টিক চলন

ট্যাকটিক চলন:- পরিবেশের কোন উদ্দীপকের প্রভাবে সমগ্র উদ্ভিদেহের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন   

 বৈশিষ্ট্য:-

ü উদ্ভিদের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন ঘটে 

ü পরিবেশের কোন উদ্দীপক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় 

ü সিলিয়া বা ফ্ল্যাজেলা ট্যাকটিক চলনে সহায়তা করে  


 


ট্যাকটিক চলন বিভিন্ন প্রকারের হয়---

·      ফোটোট্যাকটিক-আলোর অভিমুখে চলন

·       কেমোট্যাকটিক-রাসায়নিক পদার্থের অভিমুখে চলন

·      থার্মোট্যাকটিক-উষ্ণতার অভিমুখে চলন

·      হাইড্রোট্যাকটিক-জলের অভিমুখে চলন

 

 

Ø ফোটোট্যাকটিক চলন-আলোক উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন কে ফোটোট্যাকটিক চলন বলে

🔹উদাহরণ- ক্ল্যামাইডোমোনাস,ভলভক্স 

Ø কেমোট্যাকটিক চলন-রাসায়নিক পদার্থের উদ্দীপকের প্রভাবে সামগ্রিক চলন কে কেমোট্যাকটিক চলন বলে 

Ø থার্মোট্যাকটিক চলন-উষ্ণতার উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন কে থার্মোট্যাকটিক চলন 

Ø হাইড্রোট্যাকটিক চলন-জলের অভিমুখে উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন কে বলা হয় হাইড্রোট্যাকটিক চলন 

 


ট্রপিক চলন: উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন বহিস্থ বা বাহ্যিক উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তখন তাকে ট্রপিক চলন বা ট্রপিজম বলে  

বৈশিষ্ট্য:-

ü ট্রপিক চলনের ফলে উদ্ভিদের অঙ্গে বক্রতা বা বাঁকের সৃষ্টি হয়  

ü ট্রপিক চলন পরিবেশের যেকোনো বহিঃস্থ উদ্দীপক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় 

ü উদ্ভিদের বৃদ্ধি প্রাপ্ত যুক্ত অঞ্চল বা বর্ধনশীল অঞ্চলে ঘটে 

ট্রপিক চলন বিভিন্ন প্রকারের হয়------

v ফটোট্রপিক চলন- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন আলোক উৎসের গতিপথ অনুসারে ঘটে তখন তাকে ফটোট্রপিক চলন বলে  

উদাহরণ-অন্ধকার ঘরে লাগানো কোন চারা গাছ আলোর উৎসের গতিবেগ অনুসারে বাড়ির জানালা দিয়ে বা সূর্যের আলো প্রবেশ করে এমন যেকোনো স্থান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে  

ফটোট্রপিক চলনে উদ্ভিদের কান্ড শাখা-প্রশাখা আলোর উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায় বলে, উদ্ভিদের কান্ড শাখা-প্রশাখা আলোক অনুকূলবর্তী এবং উদ্ভিদের মূল আলোর বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায় বলে, উদ্ভিদের মূল আলোক প্রতিকূলবর্তী  

 

v জিওট্রপিক চলন- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন পৃথিবীর অভিকর্ষের গতিপথ অনুসারে ঘটে তখন তাকে জিওট্রপিক চলন বলে  

উদাহরণ-উদ্ভিদের মূল সব সময় মাটির নিচে থাকে বা অভিকর্ষর দিকে বৃদ্ধি পায়  

 

জিওট্রপিক চলনে উদ্ভিদের কান্ড শাখা-প্রশাখা পৃথিবীর অভিকর্ষের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায় বলে, উদ্ভিদের কান্ড শাখা-প্রশাখা অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী। এবং উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষের দিকে বৃদ্ধি পায় বলে, উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষ অনুকূলবর্তী  

 

v হাইড্রোট্রপিক চলন- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন জলের উৎসের গতিপথ অনুসারে ঘটে তখন তাকে হাইড্রোট্রপিক চলন বলে  

উদাহরণ-উদ্ভিদের মূল জলের উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায় 

হাইড্রোট্রপিক চলনে উদ্ভিদের কান্ড জলের উৎসের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায় বলে, উদ্ভিদের কান্ড শাখা-প্রশাখা জল প্রতিকূলবর্তী। এবং উদ্ভিদের মূল জলের উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায় বলে, উদ্ভিদের মূল জল অনুকূলবর্তী  


ন্যাস্টিক চলন:- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন উদ্দীপকের গতিপথ অনুসারে না ঘটে উদ্দীপকের তীব্রতার প্রভাবে ঘটে তখন তাকে ন্যাস্টিক চলন বলে  

 

 

 

 

 

উদ্দীপকের প্রকৃতি অনুসারে ন্যাস্টিক চলন বিভিন্ন প্রকারের হয়

Ø
ফটোন্যাস্টিক চলন- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন আলোর তীব্রতার প্রভাবে ঘটে ,তখন তাকে ফোটোন্যাস্টিক চলন বলে  যেমন- পদ্ম সূর্যমুখী ইত্যাদি ফুলগুলি

তীব্র আলোতে ফোটে এবং সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় । 

 

Ø থার্মোন্যাস্টিক চলন- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন আলোর তীব্রতার প্রভাবে ঘটে ,তখন তাকে থার্মোন্যাস্টিক চলন বলে  যেমন- টিউলিপ ফুল স্বাভাবিক উষ্ণতায়

ফোটে এবং উষ্ণতা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়

 

Ø সিসমোন্যাস্টিক চলন- উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন আঘাত স্পর্শ বা ঘর্ষণ জনিত তীব্রতার প্রভাবে ঘটে  ,তখন তাকে সিসমোন্যাস্টিক চলন বলে  যেমন- লজ্জাবতী গাছের

পাতায় সিসমোনাস্টিক চলন দেখা যায়  

 

Ø
কেমোন্যাস্টিক চলন-উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন রাসায়নিক পদার্থের তীব্রতার প্রভাবে ঘটে তখন তাকে কেমোন্যাস্টিক চলন বলে  

         যেমন- সূর্যশিশির,ডায়োনিয়া প্রভৃতি । 

 

Ø নিকটিন্যাস্টি চলন -যখন উদ্ভিদ অঙ্গের চলন আলো উষ্ণতা উভয় প্রকার উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা প্রভাবিত হয় তখন তাকে নিকটিন্যাস্টি চলন বলে  

যেমন -প্রখর আলো উষ্ণতায় তেতুল পাতা খুলে যায়  

 

বৃদ্ধিজ চলন:- উদ্ভিদের বৃদ্ধি প্রাপ্ত যুক্ত অঞ্চল বা বর্ধনশীল বর্ধনশীল অংশে অসমান বৃদ্ধির মাধ্যমে যে চলন সম্পন্ন হয় তাকে বৃদ্ধিজ চলন বলে বৃদ্ধিজ চলন  

প্রকরণ চলন-কোষের রসস্ফীতির তারতম্যের জন্য উদ্ভিদের পরিণত অংশে যে চলন দেখা যায় তাকে প্রকরণ চলন বলে 

ট্যাকটিক চলন ,ট্রপিক চলন ন্যাস্টিক চলন পার্থক্য

ট্যাকটিক চলন

ট্রপিক চলন

ন্যাস্টিক চলন

এই প্রকার চলনে উদ্ভিদের সমগ্র দেহের স্থান পরিবর্তন ঘটে

এই প্রকার চলনে উদ্ভিদের সমগ্র দেহের স্থান পরিবর্তন ঘটে

এই প্রকার চলনে উদ্ভিদের সমগ্র দেহের স্থান পরিবর্তন ঘটে না

এই প্রকার চলন উদ্দীপকের উৎস গতিপথ উভয়ের তীব্রতা প্রভাবে ঘটে

এই প্রকার চলন উদ্দীপকের উৎসের দিক অথবা উৎসের বিপরীত দিকে

ঘটে

এই প্রকার চলন শুধুমাত্র উদ্দীপকের তীব্রতার উপর নির্ভর করে

উদ্ভিদের চলন সমগ্র উদ্ভিদের ঘটে

উদ্ভিদের চলন অপরিণত বর্ধনশীল অঙ্গে ঘটে

উদ্ভিদের চলন পরিণত উদ্ভিদে অংশ

উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে না

উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে

উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে না

চলনের অভিমুখ হল সরল

চলনের অভিমুখ হল সরল

পালনের অভিভাবক হলো বক্র

এই চলনে অক্সিন এর কোন প্রভাব নেই

এই চলনে অক্সিন এর প্রভাব আছে

এই চলনে অক্সিন এর কোন প্রভাব নেই

Ø হরমোন হলো এক প্রকার অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক  

Ø ট্রপিক চলনের অপর নাম হল দিক নির্নীত চলন  

Ø ট্যাকটিক চলন একমাত্র এককোষী উদ্ভিদের দেখা যায়  

Ø দিনের বেলায় পুকুরের জল সবুজ দেখায় এটি ফটোট্যাকটিক চলনের জন্য ঘটে

Ø শীতকালীন পর্ণমোচী বৃক্ষ হল ফোরসাইথিয়া  

Ø লজ্জাবতী বিজ্ঞানসম্মত নাম মাইমোসা পুডিকা  

Ø বনচাঁড়ল গাছের পাতা হল ত্রিফলকযুক্ত  

Ø বনচাঁড়ল উদ্ভিদটি 'ভারতীয় টেলিগ্রাফ উদ্ভিদ' নামে পরিচিত । 

Ø উদ্ভিদের পাতা আলোর প্রভাবে তির্যকভাবে বৃদ্ধি পায় এটি আলোক তির্যকবর্তী চলন  

Ø আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্রপ্রভাবে আবিষ্কার করেন  

Ø ক্রেসকোগ্রাফ এর সাহায্যে উদ্ভিদের সামান্য সাড়াপ্রদানের ঘটনাও পরিমাপ করা যায়  

Ø বিজ্ঞানী বসু এই যন্ত্রের সাহায্যে লজ্জাবতী লতা বনচাঁড়াল উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান-সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা করেন  

Ø উদ্ভিদের কান্ড শাখা-প্রশাখা হলো আলোক অনুকূলবর্তী  

Ø উদ্ভিদের মূল হল আলোক প্রতিকূলবর্তী  

Ø উদ্ভিদের মূল হলো অভিকর্ষ অনুকূলবর্তী  

Ø উদ্ভিদের কাণ্ড শাখা-প্রশাখা হলো অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী  

Ø সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের চলন হল অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী  

Ø উদ্ভিদের কাণ্ড শাখা-প্রশাখা হলো জল প্রতিকূলবর্তী  

Ø উদ্ভিদের মূল হল জল অনুকূলবর্তী  

Ø ন্যাস্টিক চলন উদ্দীপকের তীব্রতার প্রভাবে ঘটে  

Ø লজ্জাবতী গাছের পাতায় সিসমোনাস্টিক চলন দেখা যায়  

Ø ক্ল্যামাইডোমোনাস ভলভক্স এর ফটো ট্যাকটিক চলন দেখা যায়  

Ø তেঁতুল গাছের পাতার পত্র ফলক গুলো কম আলোতে বন্ধ হয়ে যায়  

Ø পদ্ম সূর্যমুখী ইত্যাদি ফুলগুলি তীব্র আলোতে ফোটে এবং সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় । 

Ø টিউলিপ ফুল স্বাভাবিক উষ্ণতায় ফোটে এবং উষ্ণতা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় । 

Ø সিম গাছের পাতা অধিক উষ্ণতায় বন্ধ হয়ে যায় ।

Ø আমরুল,বাবলা প্রভৃতি গাছের নিকটিন্যাস্টিক চলন দেখা যায়

Ø কেমোন্যাস্টিক চলন উদাহরণ-সূর্যশিশির ডায়োনিয়া উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পতঙ্গকে ঘিরে ফেলে খাদ্যরূপে গ্রহন করে। 

Ø সিমোন্যাস্টিক চলন উদাহরণ-লজ্জাবতী লতা-কে স্পর্শ করা মাত্রই পাতার পত্রকগুলি সঙ্গে সঙ্গে মুড়ে যায়। 

Ø সূর্যশিশির,ডায়োনিয়া প্রভৃতি হল পতঙ্গভুক উদ্ভিদ । 

Ø পতঙ্গভুক উদ্ভিদের কেমোন্যাস্টিক চলন দেখা যায়  

Ø অক্সিন হরমোন ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে  

Ø ট্যাকটিক চলনে উদ্ভিদের সামগ্রিক স্থানান্তর ঘটে  

Ø ফোটোন্যাস্টিক চলনের উদাহরণ- জুঁই ফুলের পাপড়ি রাতের বেলায় প্রস্ফুটিত হয়  

Ø পতঙ্গভুক উদ্ভিদের চলন কে বলে কেমোন্যাস্টিক চলন  

Ø গমনে সক্ষম জীব হল ক্ল্যামাইডোমোনাস  

Ø বনচাঁড়ালের পার্শ্বপত্রে প্রকরণ চলন দেখা যায়  

Ø টিউলিপ ফুলের উন্মোচন হল একপ্রকার থার্মোন্যাস্টিক চলন  

Ø উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা সংক্রান্ত আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী হলেন আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস  

Ø উদ্ভিদের সাড়া পরিমাপক যন্ত্রটি হল ক্রেসকোগ্রাফ  

 

 

 

 

 




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url