বোঝাপড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অষ্টম শ্রেণী বাংলা বোঝাপড়া হাতেকলমের সমাধান প্রশ্ন উত্তর।।Class 8 bengali bojapora question answer pdf
বোঝাপড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অষ্টম শ্রেণী বাংলা গল্প বোঝাপড়া প্রশ্ন উত্তর।
বোঝাপড়া লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অষ্টম শ্রেণী বাংলা গল্প বোঝাপড়া প্রশ্ন উত্তর pdf।
অষ্টম শ্রেণী বাংলা বোঝাপড়া হাতেকলমের সমাধান প্রশ্ন উত্তর।
১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
১.১ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন্ পত্রিকায়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন?
উত্তর: জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ‘ভারতী’ ও ‘বালক’ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন।
১.২ ভারতের কোন্ প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়?
উত্তর: ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয় ।
২ নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও।
২.১ “সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয়।”—কোন্টি সবার চেয়ে শ্রেয়?
উত্তর: কবির মতে, জীবনের খারাপ সময়ে অথবা বিপদের সময়ে ভেঙে না পড়ে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয়। চলার পথে এই মানিয়ে নেওয়াই সবার চেয়ে শ্রেয়।
২.২ “ঘটনা সামান্য খুবই।”—কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: মানুষের জীবন অনিশ্চিত। কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যা মানুষকে দিশেহারা করে তোলে। কিন্তু সেইসব ঘটনা এমনও নয় যে, তা আর কারও জীবনে ঘটেনি। এই সহজ ব্যাপারটিকেই এখানে ‘সামান্য’ ঘটনা বলা হয়েছে।
২.৩ “তেমন করে হাত বাড়ালে/সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।” —উদ্ধৃতিটির নিহিতার্থ স্পষ্ট করো।
উত্তর: জীবনে আমরা যা চাই, সব সময় তা পাই না। না পাওয়ার বেদনা আমাদের মনকে বিষণ্ন করে তোলে। আমরা যদি আমাদের সামর্থ্যের সঙ্গে চাহিদাগুলির সামঞ্জস্য বজায় রাখি, তবে জীবনে সহজেই সুখী হওয়া যায়।
২.৪ “মরণ এলে হঠাৎ দেখি / মরার চেয়ে বাঁচাই ভালো।” — ব্যাখ্যা করো। [মল্লারপুর ধরণী দেবেন শিক্ষা নিকেতন]
উত্তর: প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানুষ কখনো কখনো জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে মৃত্যু কামনা করে। সে মনে করে মৃত্যুতেই বুঝি সব দুঃখের অবসান। কিন্তু মৃত্যু যখন সামনে এসে দাঁড়ায়, তখন মানুষ আকুল হয়ে ভাবে, এ জীবন বড়ো সুন্দর। মানুষ আর প্রকৃতির মাঝে থাকার মধ্যেই রয়েছে জীবনের সার্থকতা।
২.৫ “তাহারে বাদ দিয়েও দেখি/বিশ্বভুবন মস্ত ডাগর।”— উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে জীবনের কোন্ সত্য প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর: এই বিশ্বসংসারে সব কিছুই পরিবর্তনশীল। প্রিয়জনের বিচ্ছেদে কোনো ব্যক্তি গভীর শোক পেলেও বিশ্বসংসার কিন্তু তার স্বাভাবিক নিয়মেই চলে। কারণ ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র চাওয়া-পাওয়া, মোহ বা আসক্তির চেয়েও মানবজীবন মহত্তর। জীবনের এই সহজ এবং সর্বজনীন সত্যটিই প্রশ্নে উদ্ধৃত পক্তি দুটির মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে।
২.৬ কীভাবে মনের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে?
উত্তর: জীবনে চাওয়া ও পাওয়ার মধ্যে অনেক ফারাক থাকে। যদি আমরা চাহিদার ওপর বেশি নজর দিই ও ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলো নিয়ে হাহাকার করতে থাকি, তাহলে কোনোদিনই জীবনে সুখী হতে পারব না। আমাদের সুখী থাকার উপকরণটুকুও জীবন থেকে তখন হারিয়ে যাবে। তাই না-পাওয়ার কষ্ট ও হতাশা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঝেড়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে খানিক কেঁদে মনের বোঝা হালকা করে নিতে হবে। এভাবেই নিজেদের মনকে বশে রাখতে হবে।
২.৭ “দোহাই তবে এ কার্যটা/যত শীঘ্র পারো সারো।” —কবি কোন্ কার্যের কথা বলেছেন? সেই কার্যটি শীঘ্র সারতে হবে কেন?
উত্তর: উদ্দিষ্ট কার্য: মিথ্যা অহংকার আর আমিত্বে পূর্ণ মানুষ নিজেকে অন্য মানুষজনের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। ধীরে ধীরে একা হয়ে যায় সে। এমন মানুষ যত তাড়াতাড়ি নিজের ভুল বুঝতে
পারে, ততই মঙ্গল।‘এ কাৰ্যটা’ বলতে এই ভুল বুঝে নিজেকে শুধরে নেওয়ার কথাই বলা হয়েছে।
বোঝাপড়া হাতেকলমের সমাধান প্রশ্ন উত্তর
২.৮ কখন আঁধার ঘরে প্রদীপ জ্বালানো সম্ভব?
উত্তর: জীবনে কেবল ব্যর্থতার হিসাব কষে চলা, অন্যের পাওয়ার সঙ্গে নিজের না-পাওয়ার তুলনা করা, হাহাকারে জীবনকে ভরিয়ে তোলা—এসব অতিক্রম করে মনকে বুঝিয়ে এগিয়ে চলার কাজ শুরু করলে আঁধার ঘরে প্রদীপ জ্বালানো যায়। অর্থাৎ এভাবেই নিজের হতাশাগ্রস্ত জীবনকে আনন্দে ভরিয়ে তোলা সম্ভব হয়।
২.১ “ভুলে যা ভাই, কাহার সঙ্গে/কতটুকুন তফাত হলো।” — এই উদ্ধৃতির মধ্যে জীবনের চলার ক্ষেত্রে কোন্ পথের ঠিকানা মেলে?
উত্তর: চলার পথের হদিশ: মানুষের চেহারা ও প্রকৃতির মতোই তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলোও ভিন্ন ভিন্ন। জীবনে কে কত বেশি পেল, জীবনপথে কে কতখানি এগিয়ে গেল—এইসব তুলনা জীবনের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করে। তাই পাওয়া-না- পাওয়ার হিসাব ভুলে জীবনকে মঙ্গলময় ও আলোকিত করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে। সেই পথেরই সন্ধান মেলে প্রশ্নে উল্লিখিত উদ্ধৃতিটির মধ্যে।
২.১০ “অনেক ঝঞ্ঝা কাটিয়ে বুঝি/এলে সুখের বন্দরেতে,”—‘ঝঞ্ঝা কাটিয়ে আসা’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: জীবনের নানান ওঠা-পড়াকে অতিক্রম করলে তবেই আমাদের জীবনে সাফল্য আসে। জাহাজ তার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে, অনেক বাধা অতিক্রম করে বন্দরে আসে। মানুষকেও অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে সাফল্য লাভ করতে হয়। এই প্রতিকূল পরিবেশ জয় করাকেই ‘ঝঞ্ঝা কাটিয়ে আসা’ বলা হয়েছে।
বোঝাপড়া প্রশ্ন উত্তর pdf|অষ্টম শ্রেণী বাংলা গল্প বোঝাপড়া প্রশ্ন উত্তর
৩ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৩.১ “ভালো মন্দ যাহাই আসুক/সত্যেরে লও সহজে।” —তুমি কি কবির সঙ্গে একমত ? জীবনে চলার পথে নানা বাধাকে তুমি কীভাবে অতিক্রম করতে চাও?
উত্তর: আমার মত : “ভালো মন্দ যাহাই আসুক/সত্যেরে লও সহজে”—‘বোঝাপড়া' কবিতায় কবির উল্লিখিত এই মতামতকে আমি সমর্থন করি।
● জীবনের বাধা অতিক্রম করার উপায় : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বোঝাপড়া’ কবিতা পড়ে আমি শিক্ষালাভ করেছি যে, হঠাৎ পাওয়া আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেমন জীবনকে তাচ্ছিল্য করব না, তেমনই সামান্য দুঃখকষ্টে ভেঙেও পড়ব না। এতে জীবনের ছন্দ বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। চলার পথে বাধা এলে আমি গুরুজনদের এবং বন্ধুদের পরামর্শ নিতে লজ্জাবোধ করব না। বিপদ বা বাধাকে এড়িয়ে না গিয়ে তাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। তবুও যদি কখনও দুর্বল হয়ে পড়ি, তবে মহাপুরুষদের জীবনী পাঠ করে মনের জোর বৃদ্ধি করব। জীবনকে সুন্দর করে তোলার জন্য মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব। কারণ একাত্মবোধই জীবনে সাফল্যলাভের অন্যতম উপায়।
৩.২ “মনেরে আজ কহ যে,/ভালো মন্দ যাহাই আসুক/সত্যেরে লও সহজে।”—কবির মতো তুমি কি কখনও মনের সঙ্গে কথা বল ? সত্যকে মেনে নেবার জন্য মনকে তুমি কীভাবে বোঝাবে— একটি পরিস্থিতি কল্পনা করে বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: হ্যাঁ, কবির মতো আমিও মাঝে মাঝে নিজের সঙ্গে মনে মনে কথা বলি।
● কাল্পনিক পরিস্থিতির সাহায্যে ব্যাখ্যা: জীবনে আমাদের নানারকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু চলার পথে বাধা পেয়ে থমকে গেলে চলবে না। আমি প্রতিবছর পরীক্ষায় ভালো ফল করি। কিন্তু এমনও হতে পারে, কোনো এক বছর আমি আশানুরূপ ফল করতে পারলাম না। তাই বলে আমি তখন হতাশ হয়ে পড়ব না। বরং ব্যাপারটাকে সহজে মেনে নিয়ে আমি পরীক্ষায় খারাপ ফল হওয়ার কারণটা খুঁজে বার করার চেষ্টা করব। নিজেকে বোঝাব যে, এই পরীক্ষাই জীবনের শেষ পরীক্ষা নয়। তা ছাড়া আমি উপযুক্ত পরিশ্রম করিনি, তাই আমার পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছে। মন থেকে যাবতীয় হতাশা ঝেড়ে ফেলে আমি নতুন উদ্যমে নিজেকে তৈরি করব আগামী পরীক্ষার জন্য।
৩.৩ “তেমন করে হাত বাড়ালে/সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।” —‘তেমন করে’ কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও। এখানে কবি কী ধরনের সুখের ইঙ্গিত করেছেন—লেখো।
উত্তর: ‘তেমন করে' কথার অর্থ: জীবনে যেমন দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা রয়েছে, তেমনই রয়েছে হঠাৎ করে পাওয়া আনন্দও। শুধু দুঃখ-কষ্টের কথা চিন্তা না করে জীবনটাকে ইতিবাচক দিক থেকে দেখতেহবে। মানুষ দুঃখ পায় তার অতিরিক্ত আশার জন্য। বেশি আশা না করে যদি নিজের জিনিস নিয়ে সুখী হওয়া যায়, তবে জীবনযাপন সহজ হয়ে যায়। এখানে ‘তেমন করে’ বলতে এভাবেই জীবন কাটানোর কথা বোঝানো হয়েছে।
● সুখের ধরন: আমরা যদি নিজেদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে পারি, তবে দুঃখ-দুর্দশার সংকীর্ণ জগতের বাইরে থাকা বিশ্বভুবনকে মস্ত বড়ো বলে মনে হয়। তখন আকাশ হয়ে ওঠে
আরও নীল, ভোরের আলো হয়ে ওঠে মধুর, মৃত্যুর চেয়ে জীবনকেই অনেক বেশি কাঙ্ক্ষিত বলে মনেহয়। নিজের সুখে সমস্ত জগৎকেই তখন সখী বলে বোধ হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বোঝাপড়া প্রশ্ন উত্তর |অষ্টম শ্রেণী বাংলা গল্প বোঝাপড়া প্রশ্ন উত্তর|
১. ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কবি মনকে কী বলতে চেয়েছেন? অথবা, “মনেরে আজ কহ যে”—মনকে কবি কী বলতে বলেছেন?
→ ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কবি মনকে বলতে চেয়েছেন যে, ভালো বা মন্দ যা-ই আসুক, সত্যকে সহজভাবে স্বীকার করে নিতে হবে।
২. ‘বোঝাপড়া’ কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
→ ‘বোঝাপড়া’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ক্ষণিকা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কোন্ বিষয়কে সহজে গ্রহণ করতে বলেছেন?
[অকুরমণি করোনেশন ইন্সটিটিউশন, মালদা]
→ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় জীবনের সত্যকে সহজে গ্রহণ করতে বলেছেন।
৪. “মনেরে আজ কহ যে, ভালোমন্দ যাহাই আসুক সহজে।” (শূন্যস্থানটি পূরণ করো)
। “মনেরে আজ কহ যে, ভালোমন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে।”
৫. মান্ধাতার আমল থেকে কী নিয়ম চলে আসছে?
. মান্ধাতার আমল থেকে এই নিয়মই চলে আসছে যে, প্রত্যেকেই কিছু ফাঁকি দেয় এবং কিছু ফাঁকির মধ্যে নিজেও পড়ে। “মান্ধাতারই আমল থেকে”—‘মান্ধাতার আমল' বলতে কী বোঝ?
→ ‘মান্ধাতার আমল’ একটি প্রচলিত বাগ্ধারা। মান্ধাতা ছিলেন অতি প্রাচীনকালের সূর্যবংশীয় এক রাজা। বহু প্রাচীনকালের অনুষঙ্গ ব্যবহার করতে ‘মান্ধাতার আমল’ বাগ্ধারাটি প্রয়োগ করা হয়।
৭. “তোমারি কি এমন ভাগ্য...”—উদ্ধৃতিটি কার রচিত?
→ প্রশ্নে উল্লিখিত উদ্ধৃতিটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত
অষ্টম শ্রেণী বাংলা বোঝাপড়া হাতেকলমের সমাধান
১. ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কবি প্রকৃতপক্ষে কোন্ বোঝাপড়ার কথা বলেছেন?
→ ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কবি প্রকৃতপক্ষে মনের সঙ্গে বোঝাপড়া অর্থাৎ সহিতা অভ্যাস করার কথা বলেছেন।
২. “মান্ধাতার আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম—” কবি কোন্ রকমের কথা বলেছেন?
অথবা, “চলে আসছে এমনি রকম”—‘এমনি রকম’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
→ ‘এমনি রকম’ বলতে মানুষের স্বভাবের বৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীতে নানা ধরনের মানুষ রয়েছে। একজন মানুষ সবাইকে ভালোবাসতে পারে না, কাউকে কাউকে প্রতারণাও করে। সে নিজেও সবসময় অন্য মানুষের ভালোবাসা পায় না, কখনো-কখনো প্রতারিতও হয়। জীবনপথে চলতে গেলে ফাঁকি দেওয়া ও প্রতারিত হওয়াকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। যুগ যুগ ধরে এমনটাই ঘটে চলেছে। ‘এমনি রকম’ বলতে কবি এই বিষয়টিকেই বোঝাতে চেয়েছেন।
৩. “বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!”—এখানে কোন্ জখমের কথাবলা হয়েছে?
কোনো মানুষ সারাজীবন ধরে শুধুই যে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করে, এমন নয়। তাকে বহু প্রতারণার সম্মুখীন হতে হয়। এভাবেই জীবনে অনেকের কাছ থেকেই তাকে নানারকম আঘাত বা জখম পেতে হয়। ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কবি বলেছেন, কোনো মানুষই ভাগ্যবলে এই জখম বাঁচিয়ে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারে না।
৪. “মনেরে আজ কহ যে,”—কবি মনকে কী করতে বলেছেন?
‘বোঝাপড়া’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বলেছেন যে, ভালোমন্দ যা-ই আসুক না কেন, সত্য বা বাস্তবকে সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে। মানুষের অবহেলা, অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়, বন্ধু বা স্বজন বিচ্ছেদ, অবিচার ও বঞ্চনা, ভাগ্যের প্রতি দোষারোপ সব সরিয়ে রেখে নতুন উদ্যমে জীবনকে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। এর মধ্য দিয়েই প্রকৃত সুখ খুঁজে পাওয়া যাবে।
৫. “মনেরে আজ কহ যে”—কার উক্তি? মনকে কী বলার কথা বলা হচ্ছে?
আলোচ্য উক্তিটি ‘বোঝাপড়া’ কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি।
> মনের প্রতি বক্তব্য: কবি পৃথিবীর সকল মানুষকে বলেছেন তাদের মনকে বোঝাতে যে, জীবনে ভালো বা মন্দ যাই আসুক না কেন, সেই বাস্তবকে যেন সে সহজে গ্রহণ করতে পারে।
৬. “তোমারি কি এমন ভাগ্য/বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!”- পঙ্ক্তিটির মর্মার্থ লেখো।
→ সুখ ও দুঃখ নিয়েই জীবন—এ কথা সকলেই জানে। তবুও সামান্য দুঃখেই মানুষ কাতর হয়ে পড়ে। অন্যের দুঃখ মেনে নিলেও নিজের দুঃখ আমাদের ক্ষতবিক্ষত করে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ভাগ্যের বিবর্তনে সকলের ভাগ্যেই দুঃখ আসবে। এত সৌভাগ্যবান কেউ নেই যে সেই জখম থেকে বাঁচতে পারবে।
Class 8 bengali question answer pdf
১. “মুহূর্তেকে পাঁজরগুলো / উঠল কেঁপে আর্তরবে”—কেন এমন হল?
সুখে থাকতে থাকতে সুখেই যখন মানুষের অভ্যাস হয়ে যায়, দুঃখের সামান্য আশঙ্কাও যখন মানুষ করে না, তখনই হঠাৎ অপ্রত্যাশিত দুঃখের আঘাতে বুকের পাঁজর কেঁপে ওঠে।
২. “মুহূর্তেকে পাঁজরগুলো উঠল কেঁপে আর্তরবে”—কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে? পাঁজরগুলোর আর্তরবে কেঁপে ওঠার তাৎপর্য কী?
● প্রসঙ্গ: বহু সময় ধরে দুর্দশার সঙ্গে লড়াই করে সুখের মুখ দেখতে-না-দেখতেই কারও কারও জীবনে আচমকা নেমে আসে গভীর বিপদ। এই বিষয়টি বোঝাতেই উদ্ধৃত কথাটি বলা হয়েছে।
তাৎপর্য: হঠাৎ পাওয়া মানসিক আঘাতে মনের ভিতর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। এই কষ্টের বর্ণনা দিতেই পাঁজরগুলোর আর্তরবে কেঁপে ওঠা বলা হয়েছে।
৩. “সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয়”—কোন্ কবিতার অংশ? এখানে কাকে শ্রেয় বলা হয়েছে? ১+১
→ আলোচ্য পঙ্ক্তিটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘বোঝাপড়া’কবিতার অংশ।
→ এখানে সকলের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করে মরার চেয়ে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকাকেই শ্রেয় বলা হয়েছে।
৪. “সেইখানে হয় জাহাজডুবি।”—‘জাহাজ-ডুবি’ হওয়া বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
আলোচ্য অংশে ‘জাহাজ-ডুবি’ হওয়া বলতে ভীষণ বিপদের কথা বোঝানো হয়েছে। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বলতে চাওয়া হয়েছে, যেখানে কেউ বিপদের আশঙ্কা করে না, সেখানেই অপ্রত্যাশিতভাবে যাবতীয় বিপদের মুখে পড়তে হয়।
২. ‘বিধি’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
→ আলোচ্য কবিতায় ‘বিধি’ বলতে বিধাতা অথবা ভাগ্যকে বোঝানো হয়েছে।
৩. মানুষের জীবনে আঁধার নেমে আসে কেন?
→ মানুষের নিজের দোষেই তার জীবনে আঁধার নেমে আসে।
৪. বিধির সঙ্গে বিবাদ করে মানুষ কী করে?
→ মানুষ বিধি বা ভাগ্যের সঙ্গে অযথা বিবাদ করে নিজের পায়ে কুড়ুল মারে।
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
১. কখন আঁধার ঘরে প্রদীপ জ্বালানো সম্ভব?
আমিত্ব ও অহংবোধ পরিত্যাগ করে মানুষকে জগৎসংসারের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে। পাশাপাশি ভাগ্যের প্রতি দোষারোপ বন্ধ করে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে জীবনকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তবেই একাকিত্বের অন্ধকার দূর করে প্রদীপ জ্বলে উঠবে, জীবনও ভরে উঠবে আলোয়।
২. মনের সঙ্গে বোঝাপড়ার পর কী করা আবশ্যক?
> মনের সঙ্গে বোঝাপড়ার পর মানুষের উচিত অন্যেরসৌভাগ্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত না হয়ে জগতের বাস্তব সত্যের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া। তাহলেই মনের মধ্যে জ্বলে উঠবে উপলব্ধির প্রদীপ। সেই আলোতেই একাকিত্বের অন্ধকার দূর হবে, জীবন সহজ ও সুন্দর হয়ে উঠবে।
৩. “কতটুকুন তফাত হলো”—কী তফাতের কথা বলা হয়েছে?
→ প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে প্রত্যেক মানুষের চরিত্রগত বা বৈশিষ্ট্যগত বা কর্মগত কিছু তফাত থাকে। এখানে সেই তফাতের কথাই বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সেই তফাতকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতেও বারণ করা হয়েছে।
৫. কবি কী ভুলে যেতে বলেছেন?
→ জীবনে পাওয়া-না-পাওয়ার ক্ষেত্রে কার সঙ্গে কতটুকু তফাত হল কবি তা ভুলে যেতে বলেছেন।
৬. ‘নিজের ছায়া মস্ত’ করে তুললে কী হয়?
→ নিজের ছায়া মস্ত করে তুললে অর্থাৎ আমিত্বকে গুরুত্ব দিলে জীবনে একাকিত্বের অন্ধকার নেমে আসে।