সবুজ জামা বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অষ্টম শ্রেণী বাংলা সবুজ জামা কবিতা হাতেকলমের সমাধান প্রশ্ন উত্তর।Class 8 bengali sobuj jama question answer pdf
সবুজ জামা বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অষ্টম শ্রেণী বাংলা সবুজ জামা কবিতা প্রশ্ন উত্তর।।Class 8 bengali sobuj jama question answer pdf সবুজ জামা কবিতা প্রশ্ন উত্তর
সবুজ জামা -বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
১ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
১.১ বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
১.২ তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।[OEQ]
উত্তর: বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হল ‘গ্রহচ্যুত’ ও ‘ভিসা অফিসের সামনে।
২ নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও।
২.১ তোতাইবাবুর সবুজ জামা চাই কেন?
উত্তর: তোতাইবাবু গাছের মতো সবুজ ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে চায়, তাই তার সবুজ জামা চাই।
২.২ সবুজ গাছেরা কোন্ পতঙ্গ পছন্দ করে?
উত্তর: সবুজ গাছেরা প্রজাপতি বা প্রজাপতির মতো রঙিন পতঙ্গ পছন্দ করে।
২.৩ সবুজ জামা আসলে কী?
উত্তর: গাছেদের সবুজ পাতা যেমন তাদের প্রাণধারণে সাহায্যকারী, তেমনই তোতাইবাবুর সবুজ জামা হলতার প্রাণশক্তির প্রতীক।
২.৪ “এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তো খেলা”— এখানে কোন্ খেলার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে গাছেদের এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার সঙ্গে তুলনা করে শিশুদের একপায়ে ছুটে ছুটে খেলার কথা বলা হয়েছে।
২.৫ তোতাই সবুজ জামা পরলে কী কী ঘটনা ঘটবে?
উত্তর: তোতাই সবুজ জামা পরলে তার কাছে প্রজাপতি এসে বসবে আর তার কোলে ঝরে পড়বে একটা, দুটো, তিনটে লাল-নীল ফুল।
৩ নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৩.১ “দাদু যেন কেমন, চশমা ছাড়া চোখে দেখে না।”—এই পঙ্ক্তির মধ্যে ‘যেন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে কেন? এইরকম আর কী কী শব্দ দিয়ে একই কাজ করা যায় ?
উত্তর: ‘যেন' শব্দটি ব্যবহারের কারণ: সাধারণত তুলনামূলক অব্যয় হিসেবে ‘যেন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এখানে ‘যেন’ অব্যয় ব্যবহার করে কবি বোঝাতে চেয়েছেন, দাদু সেইসব মানুষের দলে, যারা চশমা ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না। কবির মতে, এইসব মানুষ সহজ ও স্বাভাবিকভাবে কোনো কিছুই গ্রহণ করতে পারে না।
● এইরকম শব্দের তালিকা: এইরকম অন্য তুলনামূলক শব্দগুলি হল: মতো, ন্যায়, ইত্যাদি। যেমন, ভূতের মতো দাঁড়িয়ে আছ কেন?
তিনি বৃক্ষের ন্যায় সহনশীল।
৩.২ ‘সবুজজামা’কবিতায় তোতাইয়ের সবুজ জামা চাওয়ার মাধ্যমে কবি কী বলতে চাইছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইয়ের সবুজ জামা চাওয়ার মাধ্যমে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নতুন যুগের শিশু ও প্রকৃতির মধ্যে এক চমৎকার বন্ধন তৈরি করতে চেয়েছেন। তোতাইবাবু এখানে নতুন যুগের প্রতিনিধি। সে সবুজ জামা গায়ে দিয়ে গাছের মতোই প্রাণবন্ত ও সৃজনশীল হয়ে উঠতে চায়। এর মধ্য দিয়ে কবি বোঝাতে চেয়েছেন, পুথিগত শিক্ষায় নয়, আগামী প্রজন্ম বেড়ে উঠুক প্রকৃতির মাঝে, প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে। চোখে গতানুগতিকতার ঠুলি এঁটে তারা যেন দুনিয়াকে না দেখে। বরং তারা কৃত্রিমতার মুখোশ খুলে তাদের চারপাশের পৃথিবীর সঙ্গে সহজসরল সম্পর্ক গড়ে তুলুক, এটাই কবির কাম্য। তবেই এই পৃথিবী প্রজাপতি আর ফুলেদের মতো রঙিন হয়ে উঠবে। প্রকৃতির মতো মানুষও হয়ে উঠবে সৃজনশীল।
অষ্টম শ্রেণী বাংলা সবুজ জামা কবিতা প্রশ্ন উত্তর
৪ নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও।
৪.১ ‘ইস্কুল’ শব্দটির ধ্বনিতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা লেখো এবং একইরকম আরও দুটি শব্দ লেখো।
উত্তর: ইংরেজি ‘স্কুল’ শব্দের শুরুতে যে যুক্তব্যঞ্জন আছে, উচ্চারণের সুবিধার জন্য তার আগে 'ই' স্বরধ্বনি এসেছে, অর্থাৎ এখানে
‘আদিস্বরাগম’ ঘটেছে।
স্কুল > ইস্কুল
এইরকম আরও দুটি উদাহরণ— ১. স্টেশন > ইস্টিশন,
২. স্টিমার > ইস্টিমার।
৪.২ ‘চোখ’ শব্দটিকে ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে অন্তত তিনটি বাক্য লেখো।
উত্তর: ‘চোখ’ শব্দটিকে ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে লেখা তিনটি বাক্য হল:
১. নজরে রাখা অর্থে
২. ইশারা অর্থে
৩. পছন্দ বা ঘৃণা অর্থে অঙ্কের স্যার সুমনকে কী চোখে দেখেন তা কি তুই জানিস না!
আমি পুরো ব্যাপারটাই চোখে চোখে রেখেছি।
সুজন চোখ টিপতেই আমি ওকে বলটা পাস করলাম।
২. কার সবুজ জামা চাই?
অথবা, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরচিত ‘সবুজ জামা’ কবিতায় কার একটি সবুজ জামা চাই?
১. কারা সবুজ জামা পরে?
● গাছেরা সবুজ জামা পরে।
[অক্রুরমণি করোনেশন ইন্সটিটিউশন, মালদা]
→ বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিরচিত ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইবাবুর সবুজ জামা চাই।
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
১. “চাই তো—কিন্তু তুই এখন অ-আ-ক-খ শিখবি।/ইস্কুলে যাবি।”—কবিতার এই অংশটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।
→ বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাই নামের এক ছোট্ট শিশু গাছেদের মতো সবুজ জামা চায়। কিন্তু তোতাইয়ের এই অদ্ভুত ইচ্ছা বড়োরা সমর্থন করে না। বড়োরা মনে করেন তোতাইয়ের এই সময় স্কুলে যাওয়া এবং অ-আ-ক- খ শেখা উচিত, নিজের খেয়ালখুশি মতো চলা উচিত নয়।
অতএব কবিতার এই অংশটিতে ছোটোদের প্রতি বড়োদের শাসন ও কর্তব্যবোধের পরিচয় ফুটে উঠেছে।
প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান
৩. গাছেরা কীভাবে দাঁড়িয়ে থাকে?
● গাছেরা ‘এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে কারণ তারা মানুষের মতো চলতে পারে না।
৪. তোতাইয়ের সবুজ জামা চাওয়ার ইচ্ছা বড়োদের পছন্দ হয়নি কেন?
→তোতাইয়ের সবুজ জামা চাওয়ার ইচ্ছা বড়োদের পছন্দ না হওয়ার কারণ, বড়োরা চেয়েছিলেন, তোতাইয়ের স্কুলে গিয়ে অ-আ-ক-খ শেখা উচিত।
২. “গাছেরা এক-পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে/তাদের জামা তুই গায়ে দিতে চাস কেন?”—কবিতার এই অংশটির অর্থ বুঝিয়ে দাও।
● বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা 'সবুজ জামা’ কবিতায় শিশু তোতাই প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে দিতে চায়। তাই তার ইচ্ছা গাছেদের মতো সবুজ জামা পরবে। কিন্তু বড়োরা তোতাইয়ের এই ধরনের ইচ্ছাকে সমর্থন করেন না। তাঁদের মতে তোতাই মানবশিশু, তাই গাছেদের মতো সবুজ জামা পরে স্থির হয়ে থাকা তাকে মানায় না। আসলে বড়োরা তোতাইয়ের শিশুসুলভ ইচ্ছার প্রকৃত কারণ বুঝতেই পারেননি।
১. “তবেই না তার ডালে প্রজাপতি বসবে”—কার ডালে কেন প্রজাপতি বসবে?
সাধারণত গাছের ডালে প্রজাপতি বসে। ‘সবুজ জামা’ কবিতায় শিশু তোতাই গাছেদের মতো সবুজ জামা পরতে চায়। কারণ সে জানে সবুজের টানেই প্রজাপতিরা উড়ে আসে। তাই তোতাই মনে করে, সবুজ জামা পরে গাছ হলে তার গায়েও ঝাঁকে ঝাঁকে রঙিন প্রজাপতি উড়ে এসে বসবে।
২. ‘সবুজ জামা’ কবিতা সূত্রে কবির ভাব মানসিকতার পরিচয় দাও।
→ কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সমাজ ও প্রকৃতিতে সবুজের সমারোহ দেখতে উদ্গ্রীব। সবুজ শুধু প্রকৃতির রং নয়, প্রাণ ও তারুণ্যেরও প্রতীক। তাই কবি তোতাই নামের শিশুটির মধ্য দিয়েই পুথিগত শিক্ষার বদলে প্রকৃতির উন্মুক্ত পরিবেশে মিশে যেতে চেয়েছেন। স্কুলের প্রথাগত শিক্ষার পরিবর্তে প্রকৃতির কাছেই পাঠ নিতে চেয়েছেন।
৩. তোতাই শিশু। বড়োদের মতো বৈষয়িক চিন্তাভাবনা তার মধ্যে নেই। প্রকৃতি তাকে আকর্ষণ করে। তাই গাছের সবুজ রং তার ভালো লাগে। সে-ও সবুজ জামা পরে গাছের মতো একপায়ে তোতাইয়ের সবুজ জামা চাই কেন?