ভারতবর্ষ |ভারতবর্ষ গল্প প্রশ্ন উত্তর|উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভারতবর্ষ গল্প প্রশ্ন উত্তর PDF

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ভারতবর্ষ-সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ|দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ প্রশ্ন উত্তর |HS bengali Bharatabarsa question answer pdf download.
ভারতবর্ষ |ভারতবর্ষ গল্প প্রশ্ন উত্তর|উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভারতবর্ষ গল্প প্রশ্ন উত্তর PDF
ভারতবর্ষ গল্প প্রশ্ন উত্তর

আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি উচ্চমাধ্যমিক ভারতবর্ষ প্রশ্ন উত্তর PDF। Class 12 bengali india question answer pdf|WBCHSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা গল্প ভারতবর্ষ প্রশ্ন উত্তর pdf download. তোমাকে সাহায্য করবে।


তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |মহাশ্বেতা দেবীের লেখা ভারতবর্ষ প্রশ্ন উত্তর pdf download করো এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভারতবর্ষ প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।

Read More:--


দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভারতবর্ষ 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর |

কমবেশি ২০টি শব্দে উত্তর দাও।

প্রশ্ন ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বাজারটির পিছনে কী কী ছিল?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ' গল্পের বাজারটির পিছনে ছিল ঘন বাঁশবনে ঢাকা একটি গ্রাম এবং ইটভাটা।

প্রশ্ন  বাজারটিতে রাতের বেলায় কী কী দেখা যেত?

উত্তর: বাজারটিতে রাত্রিবেলায় দূরে শহরের দিকে চলে যাওয়া দু-একটা চলমান ট্রাক এবং নেড়িকুত্তাকে দেখা যেত।

প্রশ্ন বাজারটিতে রাত্রিবেলায় কী শোনা যেত?

উত্তর: নিস্তব্ধ বাজারটিতে রাত্রিবেলায় মাঝে মাঝে শহরের দিকে যাওয়া চলমান ট্রাকের শব্দ এবং বটগাছে পেঁচার ডাক শোনা যেত।

প্রশ্ন  বাজার-পার্শ্ববর্তী গ্রামটির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

উত্তর: বাজার-পার্শ্ববর্তী গ্রামটি ছিল ঘন বাঁশবনে ঢাকা এবং সেই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না।

প্রশ্ন . বাজারটি কোথায় গড়ে উঠেছিল?

উত্তর: পিচের সড়ক আদ্যিকালের একটি বটগাছের পাশে যেখানে বাঁক নিয়েছিল, সেখানেই বাজারটি গড়ে উঠেছিল।

প্রশ্ন . বাজারে কোন্ কোন্ দোকান ছিল?

উত্তর: বাজারটিতে তিনটি চায়ের দোকান, দুটো সন্দেশের দোকান, তিনটে পোশাকের দোকান, একটা মনিহারি দোকান এবং দুটি মুদিখানা ছিল।

প্রশ্ন  ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে কোন্ বাংলা মাস এবং কোন্ বাংলা ঋতুর কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে?

উত্তর: গল্পটিতে পৌষ মাস এবং ঋতু হিসেবে শীতকালের কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে।

প্রশ্ন  রাঢ়বাংলার শীতের চরিত্র কেমন?

উত্তর: রাঢ়বাংলার শীত খুব জাঁকালো প্রকৃতির, বৃষ্টি হলে তা হয় ধারালো।

প্রশ্ন  “তাই লোকের মেজাজ গেল বিগড়ে।”—লোকের মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল কেন?

উত্তর: পৌষের শীতে বৃষ্টির সঙ্গে জোরালো বাতাস বইতে শুরু করায় ধানের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়ে যাবে বলে লোকের মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল।

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভারতবর্ষ mcq প্রশ্ন উত্তর|

.প্রশ্ন  “লোকেরা চেঁচিয়ে উঠল...”—চেঁচিয়ে উঠল কী বলে?

উত্তর: “মরবে রে, নির্ঘাত মরবে বুড়িটা!”—এ কথা বলেই লোকেরা চেঁচিয়ে উঠেছিল।

প্রশ্ন . “লোকেরা চেঁচিয়ে উঠল...”—কখন লোকেরা চেঁচিয়ে উঠেছিল?

উত্তর: বুড়ি চায়ের দোকানে ঢুকে চা খেয়ে, তার দাম মিটিয়ে যখন ভরা বর্ষার মধ্যে রাস্তায় আবার নেমেছিল—তখনই লোকেরা চেঁচিয়ে উঠেছিল।

প্রশ্ন . “বুড়ি ঘুরে বলল...”—কী বলেছিল?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বুড়িটা ঘুরে দাঁড়িয়ে চায়ের দোকানে বসে থাকা লোকদের বলেছিল, “তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।”

প্রশ্ন  ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বুড়ি যে বটতলায় গিয়েছিল, সেই বটতলাটা সে- সময়ে কেমন ছিল?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ' গল্পে উল্লিখিত বটতলাটা সেইসময় জনহীন ছিল এবং সেখানকার মাটি ভিজে কাদা কাদা হয়ে গিয়েছিল।

প্রশ্ন  “বোঝা গেল, বুড়ির এ অভিজ্ঞতা প্রচুর আছে।”—বুড়ির কীঅভিজ্ঞতা ছিল?

উত্তর: বটগাছতলায় বটের গুঁড়ির কাছে থাকা একটি শিকড়ের ওপর বসে পেছনের গুড়ির কোটরে পিঠ ঠেকিয়ে বসার অভিজ্ঞতার কথা এখানে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন . “কেউ কেউ বলল”—কেউ কেউ কী বলল?

উত্তর: কেউ কেউ বলেছিল যে, বটগাছতলায় না গিয়ে গ্রামের বারোয়ারিতলায় গেলেই বুড়ি ভালো করত। দুর্যোগে বটগাছতলায় সে নির্ঘাত মারা পড়বে। লোভাবে তার নিবাস কোথায় তা

প্রশ্ন . “অন্যদিনে লাগলে একদিনের ব্যাপার। অন্যদিন বলতে কোন্ কোন্দি নের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর। অন্যদিন বলতে রবি, সোম, বৃহস্পতি ও শুরু—এই চার দিনের কথা. বলা হয়েছে।

প্রশ্ন “... কিন্তু যেদিন ছাড়ল, সেদিন...”—কী ছাড়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ' গল্পে পৌষমাসের এক মঙ্গলবার যে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল, সেই বৃষ্টি ছাড়ার অর্থাৎ থেমে যাওয়ার কথা এখানে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন  “... কিন্তু যেদিন ছাড়ল, সেদিন ...”—কী দেখা গেল?

উত্তর: পৌষের বৃষ্টি যেদিন ছাড়ল সেদিন আকাশ পরিষ্কার হয়ে সূর্যের উজ্জ্বল মুখ দেখা গেল।

ভারতবর্ষ 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন উত্তর|

প্রশ্ন  “...সবাই আবিষ্কার করল...”-কখন সবাই আবিষ্কার করল?

উত্তর: পৌষের বৃষ্টি থেমে গেলে যেদিন পরিষ্কার আকাশে সূর্যের উজ্জ্বল মুখ দেখা গেল, সেদিনই সবাই আবিষ্কার করল।

প্রশ্ন . সবাই আবিষ্কার করল ...”—কী আবিষ্কার করল?

উত্তর: সবাই আবিষ্কার করল যে, বটগাছের গুঁড়ির কোটরে পিঠ রেখে বুড়ি চিৎ হয়ে অসাড়ভাবে পড়ে রয়েছে।

প্রশ্ন . ‘ভারতবর্ষ' গল্পের বিশাল মাঠটি কোথায় ছিল?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ' গল্পের বিশাল মাঠটি ছিল বাজারের উত্তরদিকে।

প্রশ্ন . ‘ডাওর’ কাকে বলে?

উত্তর: রাঢ়বাংলার শীতকালে বৃষ্টি হলে সেই শীত আরও বেড়ে যায়। গ্রাম- বাংলার তথাকথিত ছোটোলোকদের ভাষায় সেই অবস্থাকে বলে ‘ডাওর'।

প্রশ্ন . "রাঢ়বাংলার শীত এমনিতেই খুব জাঁকালো।"-'রাঢ়বাংলা' বলতে কোন্ স্থানকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ‘রাঢ়বাংলা' বলতে এককথায় গঙ্গার পশ্চিম তীরবর্তী স্থানকে বোঝায়। এর দক্ষিণে দ্বারকেশ্বর নদ, পশ্চিমে মানভূম-সিংভূম, উত্তরে অজয় নদ এবং পূর্বে গঙ্গা রয়েছে।

প্রশ্ন . “ধানের মরশুম—আজ না-হোক, কাল পয়সা পাবেই...” –‘ধানের মরশুম' বলতে কোন্ সময়কালকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ধানের মরশুম বলতে এই গল্পে ধান কাটার সময়কে অর্থাৎ শীতকালকে বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন . কোথায় গড়ে উঠেছে একটা ছোট্ট বাজার’?

উত্তর: পিচের সড়ক আদ্যিকালের একটি বটগাছের পাশে যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেখানেই ‘ছোট্ট বাজার’টি গড়ে উঠেছে।

প্রশ্ন ..মাঝে-মাঝে বিমর্ষ সভ্যতার মুখ চোখে পড়ে...”-কখন?

উত্তর: যখন গ্রামের কাঁচা রাস্তায় সবুজ ঝোপের ফাঁক দিয়ে বাজারের দিকে এগিয়ে আসে গ্রাম্য কোনো যুবক বা যুবতী, তখনই বিমর্ষ সভ্যতার মুখ চোখে পড়ে।

প্রশ্ন  “...এগিয়ে আসে কোনো যুবক বা যুবতী;”—এই যুবক বা যুবতী কোন্ পোশাকে সজ্জিত থাকে?

উত্তর: প্রশ্নোত্ত যুবক বা যুবতী আমেদাবাদের মিলে তৈরি সম্ভা পোশাকে সজ্জিত থাকে।

প্রশ্ন  “কিন্তু বাজারে বিদ্যুৎ আছে।”—লেখক ‘কিন্তু’ অব্যয়টি ব্যবহার করেছেন কেন?

উত্তর: বাজারের চারপাশের গ্রামগুলিতে যেহেতু বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, সে

প্রশ্ন . ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নদীটা কোথায় ছিল?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নদীটা বাজার-পাশ্ববর্তী মাঠ পেরিয়ে দুই মাইল দূরে অবস্থিত ছিল।

প্রশ্ন  নদীর চড়ায় বুড়ির দেহটা কীভাবে পড়েছিল?

উত্তর: নদীর চড়ায় তপ্ত বালিতে উজ্জ্বল সূর্যালোকে বুড়ির দেহটা চিত হয়ে পড়েছিল।

প্রশ্ন . বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে রেখে এসে শববহনকারীরা কী করছিল?

উত্তর: বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে রেখে এসে শববহনকারীরা দিগন্তের আকাশের দিকে তাকিয়ে ঝাঁক ঝাঁক শকুনের নেমে আসার অপেক্ষা করছিল।

প্রশ্ন  বুড়ি মরে গেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সবাই কী করেছিল?

উত্তর: বুড়ি মরে গেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সবাই গ্রামের চৌকিদারকে খবর দিয়েছিল।

তার। হবের স্মৃতিতে

প্রশ্ন  বুড়ির দেহকে কীভাবে নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?  

উত্তর: বুড়ির দেহকে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

প্রশ্ন  “হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল।”—কোন্ দৃশ্য দেখা গেল?

উত্তর: হঠাৎ বিকেলে দেখা গেল যে, উত্তরের মাঠ অতিক্রম করে বাজারের দিকে একটা চ্যাংদোলা আসছে   এবং বুড়ি যে মুসলমান—তার প্রমাণস্বরূপ শববাহকরা কী বলেছিল হিন্দুদের?

উত্তর: বুড়ি যে মুসলমান—তার প্রমাণস্বরূপ মুসলমান শববাহকরা জানিয়েছিল যে, তাদের অনেকেই বুড়িকে বিড়বিড় করে ‘আল্লা’ ব  বিসমিল্লা’ বলতে শুনেছিল।

প্রশ্ন . “...তখন জানা গেল ব্যাপারটা।”—ব্যাপারটা কী ছিল?

উত্তর: ব্যাপারটা ছিল যে মুসলমান পাড়ার লোকেরা নদীর চড়া থেকে বুড়ির ফেলে দেওয়া মৃতদেহ চ্যাংদোলায় করে তুলে নিয়ে এসেছে।

মোল্লাসাহেব শহরের দিকে যাওয়ার সময় বটতলায় কী শুনেছিলেন?

উত্তর: মোল্লাসাহেব শহরের দিকে যাওয়ার সময় বটতলায় আশ্রয় নেওয়া বুড়িকে কলমা পড়তে স্পষ্ট শুনেছিলেন।

প্রশ্ন  “দু-দিকের সশস্ত্র জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে”—কী দেখছিল?

উত্তর: দু-দিকের সশস্ত্র জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছিল যে, বুড়ির দেহটা নড়ছে এবং নড়তে নড়তে বুড়ি উঠে বসার চেষ্টা করছে।

প্রশ্ন x দীর্ঘ ঘুম থেকে উঠে দু-পাশের ভিড় দেখে বুড়ির কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

উত্তর: দীর্ঘ ঘুম থেকে উঠে দু-পাশের ভিড় দেখে প্রাথমিকভাবে বুড়ির মুখটা বিকৃত হয়ে গেলেও এরপর ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠেছিল সে।

৪৭. চৌকিদারের কথার উত্তরে বুড়ি কী বলেছিল?

উত্তর: চৌকিদারের কথার উত্তরে বুড়ি শতগুষ্টি-সহ চৌকিদারের মৃত্যুকামনা করে বলেছিল—“মর্, তুই মর্ | তোর শতগুষ্টি মরুক!”

প্রশ্ন  বুড়িটা নড়ে ওঠার ঠিক আগে চৌকিদার কী করছিল?

উত্তর: বুড়িটা নড়ে ওঠার ঠিক আগে চৌকিদার পালা করে হিন্দু ও মুসলিমপক্ষ—এই দু-পক্ষের দিকে একবার করে পিচে লাঠি ঠুকছিল এবং খবরদার বলে চিৎকার করছিল।

প্রশ্ন . “বুড়ি খেপে গিয়ে বলল—চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা?” —কখন বলেছিল?

উত্তর: দু-পক্ষের বিবদমান জনতা যখন বুড়িকে জিজ্ঞাসা করেছিল বুড়ি হিন্দু না মুসলমান, তখনই বুড়ি খেপে গিয়ে কথাগুলো বলেছিল।

প্রশ্ন . “আমি যাচ্ছি শহরে—মামলার দিন।”—বক্তা কে?

উত্তর: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন মোল্লাসাহেব।

প্রশ্ন “...তারপর ওনার আসতে আসতে রাত-দুপুর।”—কে, কখন একথা বলে?

উত্তর: ‘ভারতবর্ষ' গল্পের বৃদ্ধাটির মৃত্যু হয়েছে ভেবে গ্রামবাসীরা চৌকিদারকে খবর দিলে সে এসে মৃতদেহ পরীক্ষা করে থানায় খবর না দেওয়ার যুক্তিতে কথাটি বলে।

প্রশ্ন  “...তারপর ওনার আসতে আসতে রাত-দুপুর।”—কেন আসতে রাত- দুপুর হবে?

উত্তর: থানাটি বটতলা থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরে অবস্থিত বলে সেখানে খবর দিলে থানা থেকে পুলিশের আসতে রাত-দুপুর হবে।

প্রশ্ন “উঁকি মেরে সব দেখে-শুনে বললেন...”—কখন? ‘উঁকি মেরে সব দেখে-শুনে বললেন...”—কী বললেন?

উত্তর: বাজারে বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীর মধ্যে যখন বচসা চলছিল, তখনই বাস থেকে নেমে ভটচাজমশাই অকুস্থলে প্রবেশ করেন।

উত্তর: ভটচাজমশাই ‘অসম্ভব’ কথাটা বলে জানান যে, তিনি সকাল মোল্লাসাহেবের সঙ্গে একই বাসে শহরে যাবার আগে মুমূর্ষু বুড়িকে ‘শ্রীহরি শ্রীহরি শ্রীহরি’ বলতে স্পষ্ট শুনেছিলেন।

প্রশ্ন . “তাঁর সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”—কার সপক্ষে?

উত্তর: বুড়িকে যে ভটচাজমশাই মুমূর্ষু অবস্থায় ‘শ্রীহরি’ বলতে শোনেন, অর্থাৎ বুড়ি যে হিন্দু, তার সপক্ষে প্রমাণ জুটেছিল।

প্রশ্ন . “তাঁর সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”—প্রমাণটা কী জুটেছিল?

উত্তর: ভটচাজমশাইয়ের সপক্ষে নকড়ি নাপিত প্রমাণ জুগিয়েছিল যে, ক্ষৌরকর্ম করতে বটতলায় গিয়ে সে বুড়িকে ‘হরিবোল’ বলতে স্পষ্ট শুনেছে |

প্রশ্ন . “মাঝে-মাঝে মোল্লাসায়েব চেঁচিয়ে উঠছেন...”—কী বলে চেঁচিয়ে উঠছেন?

উত্তর: মোল্লাসায়েব চেঁচিয়ে বলছিলেন—“মোছলেম ভাইসকল। জেহাদ, জেহাদ! নারায়ে তকবির—আল্লাহু আকবর।”

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভারতবর্ষ ৫ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর|

প্রশ্ন |.'ভারতবর্ষ' গল্প অবলম্বনে বাজারের চায়ের দোকানে বসে- থাকা গ্রামবাসীদের আড্ডার পরিচয় দাও।

● উত্তর সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ' গল্পে রাঢ়বাংলার যে ছোট্ট গ্রাম্য বাজারের পরিচয় পাওয়া যায়, সেই বাজারটা চারপাশের গ্রামের পুরুষদের কাছে একটা আড্ডার স্থান ছিল। বৈচিত্র্যহীন গ্রাম্যজীবনে সভ্যতার ছোঁয়া পেতে তাই সেখানে তারা প্রায়শই আসত, বাজারের চায়ের দোকান তিনটিতে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিত। পৌষমাসের অকাল দুর্যোগের শেষ দিনটিতে তেমনিভাবেই বাজারের চায়ের দোকানে এসে বসেছিল কয়েকজন অলস গ্রামবাসী। খেতের ধান তখনও কেটে নেওয়া হয়নি বলে সেই অসময় দুর্যোগে ধানের প্রভূত ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় তাদের মেজাজ তিরিক্ষে হয়ে ছিল। চায়ের দোকানে বসে গল্পচ্ছলে তাই তারা রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের অপেক্ষা করছিল। কেউ কেউ হতাশ হয়ে ঈশ্বর বা আল্লার মুণ্ডুপাতও করছিল। একজন যুবক চাষি তো চরম ক্ষোভ ও হতাশায় চিৎকার করে বলতে শুরু করল যে, তাদের মাথার ওপর ঈশ্বর বা আল্লা নামধারী কোনো নিয়ন্ত্রক নেই—কেউই নেই । সুতরাং ঈশ্বর বা আল্লার থাকা বা না থাকা নিয়ে তর্ক বেধে গেল এইবার। তর্কটা যখন হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে গেল, তখনই সেই আড্ডার বিষয় পরিবর্তিত হল। আড্ডার নিয়মষ্ট হল এই যে, তার কোনো প্রসঙ্গ-অপ্রসঙ্গ থাকে না। যাই হোক, এরপরই বোম্বাইয়ের চলচ্চিত্র জগতের গায়ক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি, মুখ্যমন্ত্রী এবং বিধায়কের প্রসঙ্গ চলে আসে আলোচনায়। পাড়ার সরা বাউরির বিষয়ে নানা আলোচনাও প্রসঙ্গত এসে পড়ে। এইভাবে আড্ডা যখন জমে ওঠে, তখনই সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে সেখানে এক বৃদ্ধার আগমন ঘটে।



প্রশ্ন ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পটিতে অকাল-দুর্যোগ সম্বন্ধে যে আলোচনা করা হয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ' গল্পটিতে কাহিনির সূত্রেই লেখক রাঢ়বাংলার অকাল প্রাকৃতিক দুর্যোগের আলোচনা করেছেন। পৌষমাসের এক মঙ্গলবার রাঢ়বাংলার একটি গ্রাম্য বাজারে হঠাৎই উত্তরের মাঠ থেকে কনকনে ঠান্ডা বাতাস ধেয়ে আসতে শুরু করেছিল। তারপরই ছাইরঙের মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি। রাঢ়ের প্রবল জাঁকালো শীত সেই বৃষ্টিপাতের ফলে তীক্ষ্ণতর হয়। পৌষের এই বৃষ্টিকে ভদ্রলোকে বলে ‘পউষে বাদলা', ছোটো জাতের লোকেরা বলে ‘ডাওর | কিন্তু যেহেতু পৌষের বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বাতাসও চলছিল, তাই অবস্থাটা ইতরজনের ভাষায় ছিল 'ফাঁপি' অর্থাৎ সংকটজনক অবস্থা। খেতের ধান তখনও যেহেতু কেটে নেওয়া হয়নি, তাই কৃষিজীবী গ্রামবাসীরা ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় তিরিক্ষে-মেজাজের হয়ে উঠেছিল। অকালবর্ষণের সেই দিনগুলিতে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে-আসা গরিব মানুষগুলি গল্পগুজব করতে করতে তাই রোদ-ঝলমল দিনের অপেক্ষা করছিল। সেখানে বসে হতাশ হয়ে কেউ কেউ ঈশ্বর বা আল্লার মুণ্ডুপাতও করছিল। বিখ্যাত জ্ঞানী পুরুষ ডাক তার বচনে বলেছিলেন যে, পৌষে শনিবার বৃষ্টি শুরু হলে সাত দিন, মঙ্গলবারে হলে পাঁচ দিন, বুধবারে হলে তিন দিন থাকে এবংঅন্য বারগুলিতে হলে একদিনই বৃষ্টি থাকে। তবে মঙ্গলবারে শুরু হওয়া বৃষ্টির শেষদিন এবং তার পরের রৌদ্রোজ্জ্বল দিন—এই দু-দিনের কাহিনি নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের পটভূমি।


প্রশ্ন |.“কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত কে জানে”–‘সে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? জনতা মারমুখী হয়ে উঠেছিল কেন? ১+৪

• উত্তর সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের প্রশ্নোদ্ভূত অংশে ‘সে’ বলতে নীল উর্দি পরা, এলাকার চৌকিদারের কথা বলা হয়েছে।

→ পৌষমাসের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে রাতৃবাংলার একটি গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাজারে এক বৃদ্ধার আগমনকে ঘিরে গল্পের সূচনা | দুর্যোগের রাত কেটে গেলেও পরদিন সকালে বৃদ্ধা না ওঠায় তাকে মৃত বলে ধরে নেয় গ্রামবাসীরা। ভিখিরি বৃদ্ধার মৃতদেহকে নিয়ে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের সূচনা হয়। হিন্দুরা চ্যাংদোলা করে মৃতদেহটি নদীর চরে ফেলে এলেও মুসলিমরা সেটি গ্রামে ফিরিয়ে আনে মুসলিম মতে সৎকার করার জন্য। কারণ, গ্রামের মোল্লাসাহেব জানিয়েছেন যে, মামলার কাজে শহরের বাস ধরতে যাওয়ার সময় তিনি বুড়িকে কলমা পড়তে শুনেছেন। হিন্দুদের মধ্যে থেকে প্রতিবাদ আসে। ভটচাজমশাই জানান যে মোল্লাজির সঙ্গেই একই বাস ধরতে যাওয়ার সময় তিনি বুড়িকে শ্রীহরি বলতে শুনেছেন । এইভাবেই নকড়ি নাপিত বনাম ফজলু সেখ, নিবারণ বাগদি বনাম করিম ফরাজি, হিন্দু বনাম মুসলমান দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়ে ওঠে। তর্কাতর্কি, উত্তেজনার পরে বাঁশের চ্যাংদোলা নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। চারপাশের দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায় | গ্রাম থেকে ছুটে আসে সশস্ত্র মানুষেরা। বুড়ির মৃতদেহের পাশে অস্ত্রহাতে জনতা দাঁড়িয়ে যায় | উভয়পক্ষ ‘নারায়ে তকবির’, ‘আল্লাহু আকবর’ আর ‘জয় মা কালী’ চিৎকার করে। মৃতদেহের অধিকারের জন্য পরস্পরের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠে।

Class 12 bengali india question answer,

“শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।”— কার কথা বলা হয়েছে? সে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল কেন? ১+৪ [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৫]

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে শীতের দিনে ‘ফাঁপি’-র প্রতিকূল আবহাওয়ায় গ্রামে চলে আসা বৃদ্ধা—যার মৃতদেহকে ঘিরে হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছিল—সেই বৃদ্ধার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

● গ্রামের মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা নদীর চড়ায় ফেলে আসা বৃদ্ধার মৃতদেহকে গ্রামে ফিরিয়ে আনে এবং তাকে মুসলমান দাবি করে কবরস্থ করার উদ্যোগ নেয় | এই নিয়ে হিন্দু এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষের উপক্রম হয় | বুড়ির মৃতদেহের দু-পাশে দুই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র মানুষেরা দাঁড়িয়ে যায়। মোল্লাসাহেবের নেতৃত্বে একপক্ষ থেকে চিৎকারওঠে “আল্লাহু আকবর”, অন্যপক্ষ থেকে ভচাযমশাইয়ের নেতৃত্বে গর্জন শোনা যায়—“জয় মা কালী ।” উভয়পক্ষকে ঠেকিয়ে রাখতে চৌকিদার প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়ে। এই সময়েই দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য | বুড়ির মৃতদেহটি নড়ছে এবং আস্তে আস্তে তা উঠে বসার চেষ্টা করছে। লড়াই ফেলে সশস্ত্র জনতা সেদিকে তাকিয়ে থাকে। বুড়ি উঠে দাঁড়ায়, ভিড়কে দেখে এবং বিকৃত মুখে হেসে ওঠে। তারপর ধীরে ধীরে রাস্তা ধরে সে এগিয়ে যায়। যুযুধান মানুষেরা সরে গিয়ে তাকে পথ করে দেয় । দূরের দিকে ক্রমশ অস্পষ্টহয়ে-যাওয়া বৃদ্ধা যেন ভারতবর্ষের অন্তরাত্মার প্রতীক হয়ে ওঠে। বিদ্বেষ বা উগ্রতার কোনো জায়গা নেই | এর মাধ্যমেই লেখক বোঝাতে চান যে মানুষের ধর্মপরিচয় নিয়ে বিদ্বেষ বা উগ্রতার কোনো জায়গা নেই।

প্রশ্ন ‘দেখতে-দেখতে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়াল চারদিকে।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার বিবরণ দাও। ১+৪ [নমুনা প্রশ্ন]

উত্তর সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ' গল্পে রাতৃবাংলায় এক পৌষমাসের অকালদুর্যোগে মৃত এক থুথুড়ে ভিখারিনির মৃতদেহের সৎকারকে ঘিরে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যে প্রবল বিরোধের সূত্রপাত হয়েছিল, সে প্রসঙ্গেই এই মন্তব্য করা হয়েছে।

● বৃদ্ধা ভিখারিনি প্রাণ হারিয়েছে বলে মনে করে কয়েকজন হিন্দু গ্রামবাসী তাকে শুকনো নদীর চড়ায় ফেলে আসে। কিন্তু সেদিনই বিকেলে দেখা যায় যে, কয়েকজন মুসলমান আরবি মন্ত্র পড়তে পড়তে বুড়িকে কবর দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে আসছে। বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে মোল্লাসাহেবের নেতৃত্বে মুসলমানরা এবং ভটচাজমশাইয়ের নেতৃত্বে হিন্দুসম্প্রদায় প্রবল বচসায় জড়িয়ে পড়ে। চারিদিকে ক্রমে ক্রমে প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই উত্তেজনার ফলশ্রুতিতে বাজারের দোকানপাট একে একে বন্ধ হতে শুরু করে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে দুই সম্প্রদায়ের বহু মানুষ অস্ত্রশস্ত্র-সহ অকুস্থলে জড়ো হতে শুরু করে। বুড়ির মাচার দু-পাশে জড়ো হওয়া দু-দলের জনতা অসহায় চৌকিদারের উপস্থিতিতে পরস্পরের উদ্দেশ্যে প্ররোচনামূলক উক্তি করতে থাকে। মোল্লাসাহেব ‘নারায়ে তকবির’, ‘আল্লাহু আকবর' ইত্যাদি ধর্মীয় স্লোগান তুলে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে থাকেন। অন্যদিকে ভটচাজমশাই মাঝে-মাঝেই চিৎকার করে মা কালীর নামে জয়ধ্বনি দিতে লাগলেন। এরকম দাঙ্গা-পরিস্থিতির মাঝখানেও কর্তব্য-সচেতন বিপন্ন আইনরক্ষক চৌকিদার তার লাঠিটি উঁচিয়ে দু-পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো পক্ষ এক কদম এগোনোর চেষ্টা করলেই সে লাঠি ঠুকে ‘সাবধান’ বা ‘খবরদার’ বলে গর্জন করতে থাকে | কিন্তু তার প্রচেষ্টা যখন বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়ার মুখে, ঠিক তখনই দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে উঠে দাঁড়িয়ে বুড়ি সেই উত্তেজনায় জল ঢেলে দেয়।

ভারতবর্ষ বড় প্রশ্ন উত্তর pdf|

প্রশ্ন |. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের ‘বুড়ি’-কে একটি উদ্দেশ্য ও আদর্শের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা যায়। —এই অভিমতের পক্ষে বা বিপক্ষে তোমার বক্তব্য যুক্তি-সহ আলোচনা করো।

উত্তর সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের কোলকুঁজো থুথুড়ে ভিখারিনি বৃদ্ধাটি ছিল রাক্ষসীর মতো দেখতে। তার ক্ষয়াটে ছোট্ট মুখমণ্ডলের বলিরেখাগুলি স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে, মাথা-ভরতি সাদা চুল, পরনে ছেঁড়া নোংরা একটি কাপড়, গায়ে জড়ানো তুলোর এক চিটচিটে কম্বল আর হাতে একটি ছোটো লাঠি। অসহায় ভিখারিনি হলেও সে অত্যন্ত তেজি, মেজাজি এবং আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মহিলা। তার তেজ এবং চালচলন নিয়ে আড্ডাধারীরা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করলে সে তাদের তীব্রভাবে ভর্ৎসনা করে। যখন দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর চারপাশের মারমুখী হিন্দু-মুসলিম জনতাকে দেখে-শুনে সে ক্যাক ফ্যাক করে হেসে ওঠে তখন বৃদ্ধার রসিকতাবোধের প্রমাণ পাওয়া যায়। লেখক এই বৃদ্ধা চরিত্রের মধ্য দিয়েই ভারতমাতার প্রাচীনত্ব, দারিদ্র্য এবং অসহায়তা যেমন প্রকাশ করেছেন, তেমনই তার ধর্মনিরপেক্ষতাও প্রকাশিত হয়েছে। তাই গল্পের শেষে ভিড়ের মধ্য থেকে একজন যখন বুড়ি হিন্দু না মুসলমান তা জিজ্ঞাসা করে, তখন বুড়ি ক্ষিপ্ত হয়ে জানায়—“... চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা? আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে?” সুতরাং বৃদ্ধার চরিত্রের মধ্য দিয়েই লেখক গল্পের জনতাকে এবং পাঠকদের এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন যে, প্রদেশ হিন্দুর নয়, মুসলমানের নয়, এদেশ আপামর ভারতবাসীর। সুতরাং এ গল্পের বুড়িটি একটি উদ্দেশ্য ও আদর্শের প্রতীক।

...

প্রশ্ন |.সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী গল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ ছোটোগল্পটি কতখানি সার্থকতা আলোচনা করো।

প্রশ্ন |.অথবা, ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে গল্পকার সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের যে বক্তব্য উন্মোচিত হয়েছে, তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।

• উত্তর নিজ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ এবং নিজ-সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজন সম্বন্ধে ইতিবাচক এবং অন্যান্য ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ এবং ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষজন সম্বন্ধে নেতিবাচক পক্ষপাতিত্ব পোষণ করার মানসিকতাকেই বলা হয়সাম্প্রদায়িকতা (Communalism)। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ' গল্পে পৌষের অকাল-দুর্যোগে এক থুথুড়ে বৃদ্ধ ভিখারিনি দীর্ঘসময় ধরে মৃতের মতো হয়ে থাকলে, তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে সেই মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীর মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। মোল্লাসাহেবের উসকানিতে মুসলমানরা এবং ভটচাজমশাইয়ের উসকানিতে হিন্দুরা পরস্পরের বিরুদ্ধে মারমুখী হয়ে ওঠে এবং রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই সবাইকে অবাক করে দিয়ে বুড়িটি নড়েচড়ে উঠে দাঁড়ায়। ব্যাজার মুখে দু-দিকের ভিড়ে দৃষ্টিপাত করে দুই সম্প্রদায়ের ছেলেমানুষি কাণ্ডটা বুঝতে পেরে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে ওঠে সে। তারপর বুড়ি গালাগাল ও শাপশাপান্ত করে সেই অতি-কৌতূহলী,নির্বোধ জনতাকে। বুড়ি হিন্দু না মুসলমান—এ কথা একজন জিজ্ঞাসা করলেজনতাকে ‘নরকখেকো’, ‘শকুনচোখো’ বলে গালাগাল দিয়ে বুড়ি জানায় যে,তারা তাদের চোখের মাথা খেয়েছে। এভাবেই সেই বড়ো আকারের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় জল ঢেলে দিয়ে বুড়ি উধাও হয়ে যায়। ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে লেখক নিপুণভাবে সাম্প্রদায়িকতার স্বরূপ চিত্রিত করেছেন। গল্পের শেষে তিনি গল্পের জনতা এবং পাঠককে অসাম্প্রদায়িক এক মানবিক অনুভবে উত্তীর্ণ করেছেন। সুতরাং সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী গল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ’ সার্থক।


HS bengali Bharatabarsa question answer|

প্রশ্ন |. ‘দেখতে-দেখতে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়াল চাৱদিকে।—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার বিবরণ দাও।

উত্তর : প্রসঙ্গ : বিকেলে বুড়ির মড়া মাঠ পেরিয়ে চ্যাংদোলায় বাজারে হাজির হয়। বুড়ির জাত-ধর্ম নিয়ে হিন্দু- মুসলমানের দাবি-প্রতিদাবিকে ঘিরে বচসা, তর্কাতর্কি, উত্তেজনা, হল্লা, চ্যাংদোলা নিয়ে টানাটানির মাধ্যমে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়ায়।এই হল উত্তেজনা ছড়ানোর প্রসঙ্গ। উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার বিবরণ :প্রচণ্ড উত্তেজনা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে দোকানগুলির ঝাঁপ বন্ধ হতে থাকে। তারপরদেখা যায় গ্রাম থেকে অনেক লোক দৌড়ে আসে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়ে। বুড়ির মড়ার দু-পাশে হিন্দু ও মুসলমান দু-দলে ভাগ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। দু-দলের হাতে অস্ত্র। পরস্পরে গালাগালি চলে। মোল্লাসাহেব জেহাদ ঘোষণা করে আল্লাহ্আ কবর আওয়াজ তোলেন। অন্যদিকে ভটচাজমশাইয়ের গলায় আওয়াজ ওঠে, মা কালী কী জয়। চলে ধুন্ধুমার গর্জন ও প্রতিগর্জন। বিবদমান দু-পক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে চৌকিদার, যে পক্ষ এগোয়, রাস্তায় লাঠি ঠুকে তাদের সতর্ক করে।


প্রশ্ন |.. সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ' গল্পটি সংক্ষেপে লেখো। গল্পটির 'ভারতবর্ষ' নামকরণ কতখানি যথাযথ ও সার্থক, আলোচনা করো। [৩২]

সংক্ষিপ্ত কাহিনি : সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখা ‘ভারতবর্ষ' একটি ছোটোগল্প। গল্পের কাহিনি ছোটো। কাহিনিটি হল পিচ রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ছোট্ট বাজারের চায়ের দোকানে সকাল- সন্ধ্যায় চা পানের সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের গ্রাম থেকে আসা মানুষের আড্ডা বসে। একদিন সকালে শীতের অকাল বাদলার হালকা বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাসের দুর্যোগের মধ্যে এক ঘুরথুরে কুঁজো ভিখিরি বুড়ি কীভাবে চায়ের দোকানে এল, তা সবার বিস্ময়। দোকানে চা খেয়ে চায়ের দাম মিটিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দোকানে যারা আড্ডাদিচ্ছিল তাদের মধ্যে নানাজন নানা প্রশ্ন করে, কোত্থেকে এসেছে, কোথায় থাকে, টাট্টুর মতো তেজি ইত্যাদি। বুড়ি মেজাজি, প্রতিটা প্রশ্নের সাফ সাফ জবাব দেয়। বুড়ি রাস্তার বাঁকে বটগাছের মোটা শিকড়ে বসে গাছের গুঁড়ির খোঁদলে পিঠ রাখে। শীতের দুর্যোগ সরে গিয়ে সূর্যের মুখ দেখা গেলে, সবাই আবিষ্কার করে বুড়ি বটতলায় মারা গেছে। চৌকিদারের নির্দেশমতো চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে মাঠ পেরিয়ে নদীর চরে বুড়ির মড়া ফেলে আসা হয়। বিকেলে দেখা যায় মুসলমানপাড়ার লোকেরা চ্যাংদোলা করে বুড়ির মড়া বয়ে আনছে মাঠ পেরিয়ে মোল্লাসাহেবের নির্দেশে। তিনি নাকি বুড়িকে আল্লার নাম করে মরতে দেখেছেন। তাই বুড়ির মড়া কবর দেওয়া হবে। ভটচাজমশায় তার প্রতিবাদ করেন। কারণ তিনি দেখেছেন, বুড়ি শ্রীহরি নাম উচ্চারণ করতে করতে মারা গেছে। হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের দাবি বুড়ি তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের। মারামারি হওয়ার উপক্রম। চৌকিদার বিবদমান দু-পক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিনিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। পরিশেষে বুড়ি উঠে বসে। তারপর দাঁড়িয়ে জনতার মাঝখান দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দূরে অদৃশ্য হয়ে যায়। সে হিন্দু না মুসলমান জিজ্ঞেস করায় জবাব দেয়, তারা কি দেখতে পাচ্ছে না সে কে। চোখ গেলে দেওয়ার ভয় দেখায়।নামকরণ আলোচ্য গল্পের মধ্যে গল্পকার সৈয়দ মুস্তাফ  সিরাজ বিশাল দেশ ভারতবর্ষের একটি খণ্ডাংশের কাহিনিকে উপস্থাপন করেছেন। ভারতবর্ষের দুই প্রধান ধর্মসম্প্রদায় হল হিন্দু ও মুসলমান। উভয় ধর্মাবলম্বী মানুষের বাস পাশাপাশি। দুই সম্প্রদায় যেন একই বোঁটার দুটি ফুল। এমনই সম্প্রীতিসূত্রে তারা গাঁথা। কিন্তু পরিতাপের কথা, ধর্মের ধ্বজাধারী মৌলবাদীরা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে ধর্মরক্ষার জিগির তুলে সাধারণ ধর্ম- বিশ্বাসীদের উত্তেজিত করে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, গল্পে তা চমৎকারভাবে চিত্রিত হয়েছে। বুড়ি হল ধর্মনিরপেক্ষ জাগ্রত শুভবোধ ও চেতনার প্রতীক। সে সবার মাঝে সুপ্ত। আপৎকালে সে জাগ্রত হয়ে বিবদমান দু-পক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে, সে কে তা চিনে নিতে। সত্য স্বরূপ দেখার প্রকৃত দৃষ্টি থাকলে, শুভবোধ ও চেতনা জাগ্রত হলে মৌলবাদীদের সৃষ্ট বিভ্রান্তির ফাঁদে পা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে না। ভারত-ইতিহাসের যে মূলীভূত সত্য বিভেদের মধ্যে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য-সংহতি, যা এই মহাদেশের অস্তিত্বের ধারক ও বাহক, লেখক ভারতের এক খণ্ডাংশের কাহিনির মধ্যে তাকে বাণীরূপ দিয়েছেন। বিন্দুতে সিন্ধুদর্শন করিয়েছেন। গল্পের ‘ভারতবর্ষ' নামকরণ যথাযথ ও সার্থক হয়েছে।


[TAG]: দ্বাদশ শ্রেণি ভারতবর্ষ, ভারতবর্ষ mcq,উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বড় প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ প্রশ্ন ,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভারতবর্ষ ৫ নং প্রশ্ন উত্তর,বাংলা ভারতবর্ষ বড় প্রশ্ন উত্তর

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url