কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্প প্রশ্ন উত্তর|উচ্চমাধ্যমিক বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর PDF
কে বাঁচায় কে বাঁচে -মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়| দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর |HS bengali k bachai k bacha question answer pdf download.
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্প প্রশ্ন উত্তর

আজ আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি উচ্চমাধ্যমিক কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর PDF। Class 12 bengali question answer pdf|WBCHSE পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা গল্প কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর pdf download তোমাকে সাহায্য করবে।
তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে |মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর pdf download করো এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে প্রাক্টিস করে থাকতে থাক।ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ Note ,Pdf ,Current Affairs,ও প্রতিদিন মকটেস্ট দিতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর নিচেদেওয়া
হলো।
দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর|
প্রশ্ন “মৃত্যুঞ্জয়কে সেও খুব পছন্দ করে”—মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করার কারণ কী ছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় নিরীহ, শান্ত, সহজসরল এবং সৎ হওয়ার পাশাপাশিমানবসভ্যতার প্রাচীনতম বস্তাপচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস বলে নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করত।
প্রশ্নবাড়ি থেকে বেরিয়ে কত পা হেঁটে মৃত্যুঞ্জয়কে ট্রামে উঠতে হত?
উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পে মৃত্যুঞ্জয়কে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু-পা হেঁটে ট্রামে উঠতে হত।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি থেকে কী কী খেয়ে এসেছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি থেকে ভাজা, ডাল, তরকারি, মাছ, দই আর ভাত খেয়ে এসেছিল।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া মোটেও শ্লথ বা নিস্তেজ ছিল না, শক্তির একটা উৎস ছিল তার মধ্যে।
প্রশ্ন নিখিল কেন মৃত্যুঞ্জয়কে ‘হয়তো মৃদু একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোও বাসে'?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় মানবসভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে পচা ঐতিহ্য আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস বলে নিখিল তাকে হয়তো মৃদু একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোও বাসে।
প্রশ্ন “...এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী?”—কেন এমন উক্তি?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় বেঁচে থাকা সত্ত্বেও একটা লোক না খেতে পেয়ে ফুটপাথে মারা গেল | প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে সেই অপরাধের কথাই বলা হয়েছে।
.প্রশ্ন “...আজ চোখে পড়ল প্রথম।”—কার চোখে কী প্রথম ধরা পড়ল?
উত্তর: 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের চোখে প্রথম ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য ধরা পড়ল।
প্রশ্ন “কী হল হে তোমার?”—কে, কাকে এ কথা বলেছিল?
উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের বমি করা ও শরীর খারাপ দেখে সহকর্মী নিখিল তাকে এ কথা বলেছিল।
প্রশ্ন “শত ধিক্ আমাকে।”—কেন এমন কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল কারণ দেশের লোকের অনাহারজনিত মৃত্যুর কথা জেনেশুনেও সে চারবেলা পেটপুরে খেয়েছে।
প্রশ্ন ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পটি প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পটি ১৩৫০ বঙ্গাব্দে প্রথম সারদাকুমার দাস সম্পাদিত ভৈরব পত্রিকার প্রথম শারদসংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে mcq প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন “এতদিন শুধু শুনে আর পড়ে এসেছিল...।”—কার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পের মৃত্যুঞ্জয়ের কথা বলা হয়েছে। সে এতদিন ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর কথা শুধু শুনে আর পড়ে এসেছিল।
প্রশ্ন “বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু'পা হেঁটেই সে ট্রামে ওঠে,”—যার কথা বলা হয়েছে সে ট্রাম থেকে কোথায় নামে?
উত্তর: : প্রশ্নোদ্ভূত অংশে মৃত্যুঞ্জয়ের কথা বলা হয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় ট্রাম থেকে প্রায় অফিসের দরজায় নামে।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় সেদিন অফিস আসার পথে কী পাঠ দেখল?
উত্তর : জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পে মৃত্যুঞ্জয় সেদিন অফিস আসার পথে তার জীবনে প্রথম মৃত্যু দেখল—সাধারণ ও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, 'অনাহারে মৃত্যু।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় এতদিন কী শুনে বা পড়ে এসেছে?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় এতদিন বিভিন্ন লোকের মুখে শুনে বা খবরের কাগজে প্রকাশিত খবর পড়ে জেনেছে ফুটপাথের দুর্ভিক্ষপীড়িত ক্ষুধার্ত মানুষের মৃত্যুর কথা।
প্রশ্ন লোকে কোথায় মরতেও যায় না বেশি?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িটা শহরের এমন এক নিরিবিলি অঞ্চলে, যে পাড়ায় ফুটপাথ বেশি না থাকায় দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষ মরতেও সেখানে যায় না।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা কয়েক মিনিটে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ল কেন?
উত্তর : ফুটপাথে অনাহারে মানুষকে প্রথম মরতে দেখে মৃত্যুঞ্জয় মনে এমনই আঘাত পায় যে, মনে বেদনাবোধ ও শরীরে কষ্টবোধ হতে থাকায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পে কোন্ ঘটনা নিখিলের কাছে সাধারণ সহজবোধ্য ঘটনা বলে মনে হয়?
উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে তুগল্পে ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যু নিখিলের কাছে অস্বাভাবিক
প্রশ্ন.”বা মর্মবিদারী কষ্টকর ঘটনা নয়, সাধারণ সহজবোধ্য বলে মনে হয়।
প্রশ্ন ফুটপাথে মানুষ মরার কথা কে, কোথায় হাব শুনেছে?
উত্তর: ফুটপাথে মানুষ মরার কথা খ্যাতনামা লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় খবরের কাগজে পড়ে বা লোকমুখে শুনেছে।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় অফিসে নিজের কুঠরিতে ঢুকেই চেয়ারে ধপ করে বসে পড়ল কেন?
উত্তর : ধপ করে বসে পড়ার কারণ হল, সে অফিস আসার পথে ফুটপাথে অনাহারে মানুষ মরতে দেখে মানসিক বেদনায় ও শারীরিক কষ্টবোধে রীতিমতো কাবু হয়ে পড়েছে।
প্রশ্ন গ্লাসে জলপান করে খালি গ্লাসটা নামিয়ে রেখে সে কী করল?
উত্তর : কলঘর থেকে ফিরে মৃত্যুঞ্জয় কাচের গ্লাসে জলপানm করে খালি গ্লাসটা নামিয়ে রেখে অর্থহীন শূন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের
দিকে তাকিয়ে রইল।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী নিখিলের কেমন চেহাৱা ও কী প্রকৃতির মানুষ?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী নিখিল চেহারার দিক থেকে রোগা, প্রকৃতির দিক থেকে তীক্ষ্ণবুদ্ধি এবং আলসে স্বভাবের মানুষ।
প্রশ্ন নিখিল অবসর জীবনটা কীভাবে কাটাতে চায়?
উত্তর : নিখিল নিরুবেগ অবসর জীবনটা বই পড়ে আর- একটা চিন্তার জগৎ গড়ে তুলে তারই ঘেরাটোপের মধ্যে নিশ্চিন্তে ও আরামে কাটিয়ে দিতে চায়।
প্রশ্ন নিখিলের মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করা ও ভালোবাসা কেমন?
উত্তর : নিখিল সহকর্মী মৃত্যুঞ্জয়কে অন্য সকলের মতো বেশ পছন্দ করে এবং হয়তো অল্প একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোও বাসে, অবশ্য মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তর্নিহিত শক্তির প্রকাশের কাছে কাবুও হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়কে নিখিলের ভালোবাসার কারণ কী?
উত্তর : নিখিলের ভালোবাসার কারণ, মৃত্যুঞ্জয় নিরীহ শান্ত দরদি ভালো মানুষ, সৎ ও সরল, তা ছাড়া মানব- সভ্যতার সবচেয়ে পুরোনো ও সবচেয়ে পচা আদর্শবাদের কল্পনা-তাপস।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্চয় কী বলে আনমনে আর্তনাদ করে উঠল?
উত্তর : 'মরে গেল! না খেয়ে মরে গেল ! এ ঘটনা মৃত্যুঞ্জয়ের এতদিনের ধ্যানধারণার বাইরে, সেজন্য আনমনে বলে মৃত্যুঞ্জয় আর্তনাদ করে উঠল।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় ও টুনুর মা একবেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে কেন?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় আর টুনুর মা একবেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, কারণ তারা তাদের সেই বেলার ভাত দুর্ভিক্ষপীড়িত ক্ষুধার্ত মানুষদের বিলিয়ে দেয়।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েগুলি চেঁচিয়ে কাঁদে কেন?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েগুলি বাপ চাকরি ছেড়ে ক্ষুধার্তমানুষের ভিড়ে সামিল হওয়ায় মা ভাবনা-চিন্তায় বিছানা নেওয়ায় অনাদরে, অবহেলায় ও ক্ষুধার জ্বালায় চেঁচিয়ে কাঁদে।
কে বাঁচায় কে বাঁচে 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ২.১৬ মৃত্যুগুয়ের মনে হতাশা জেগেছে কেন?
উত্তর : প্রখ্যাত সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের মনে হতাশা জেগেছে, কারণ তার ধারণা হয়েছে সর্বস্ব দান করেও কিছু ভালো করতে পারবে না।
প্রশ্ন ২.১৭ মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের কথা শোনে কিন্তু তার চোখ দেখে কী টের পাওয়া যায়?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের কথা শোনে বটে, কিন্তু তার চোখ দেখে টের পাওয়া যায় যে, সে আর কথার মানে বুঝতে পারে না।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের গা থেকে কী অদৃশ্য হয়ে যায়?
উত্তর : ফুটপাথে আশ্রয় নেওয়া দুর্ভিক্ষপীড়িত ক্ষুধার্ত মানুষগুলির সঙ্গী ও সহমর্মী হয়ে তাদের মতো জীবনযাপন করতে থাকায় তার গা থেকে ধূলিমলিন সিল্কের জামা অদৃশ্য হয়ে যায়।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় ফুটপাথে থাকে আর মারামারি করে কী খায়?
উত্তর : মৃত্যুঞ্জয় ফুটপাথে ক্ষুধার্ত মানুষগুলির সঙ্গে থাকে আর তাদের মতোই ক্ষুধার তাড়নায় খাবার পাওয়ার জন্য মারামারি করে লঙ্গরখানার খিচুড়ি খায়। সে অফিসের ট্রাম ধরে। তাকে বাজারদোকানও করতে হয় না। তাই মৃত্যুঞ্জয়ের ফুটপাথে হাঁটার প্রয়োজন হয় না।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির বাজার ও কেনাকাটা কে করত?
উত্তর: 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের ছোটোভাই ও তার বাড়ির চাকর তাদের বাড়ির বাজার এবং কেনাকাটা করত।
প্রশ্ন . “নইলে দর্শনটা অনেক আগেই ঘটে যেত সন্দেহ নেই।”—কীসের দর্শন?
উত্তর: এখানে ফুটপাথে মৃত্যুঞ্জয়ের দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে অনাহারে মৃত্যু দর্শনের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন . মৃত্যুঞ্জয় কখন প্রথম অনাহারে মৃত্যু দেখেছিল?
উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পে একদিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম অনাহারে মৃত্যু দেখেছিল।
প্রশ্ন নিজের চোখে অনাহারে মৃত্যু দেখার আগে মৃত্যুঞ্জয় সেই ব্যাপারে কীভাবে জেনেছিল?
উত্তর: নিজের চোখে অনাহারে মৃত্যু দেখার আগে পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয় শুধু খবরের কাগজ পড়ে আর লোকের মুখে শুনেই সেই ব্যাপারে জেনেছিল।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়দের বাড়ি কেমন জায়গায় অবস্থিত ছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়দের বাড়ি ছিল কলকাতা শহরের এক নিরিবিলি পাড়ায়, যেখানে ফুটপাথ বেশি ছিল না এবং লোকও বেশি মরতে দেখা যেত না।
প্রশ্ন ‘মনে আঘাত পেলে’ মৃত্যুঞ্জয়ের শরীর-মনে কী হয়?
উত্তর: ‘মনে আঘাত পেলে’ মৃত্যুঞ্জয়ের শরীরে তার প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। মনঃকষ্টের সঙ্গে সে শারীরিক কষ্টও অনুভব করে।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি থেকে কীভাবে অফিসে যেত?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু-পা হেঁটে রাস্তায় গিয়ে ট্রামে উঠত এবং ট্রাম থেকে অফিসের দোরগোড়ায় নামত।
প্রশ্ন অনাহারে মৃত্যু দেখার দিন অফিসে পৌঁছে মৃত্যুঞ্জয় কী করেছিল?
উত্তর: অনাহারে মৃত্যু দেখার দিন শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মৃত্যুঞ্জয় অফিসে পৌঁছে বাড়ি থেকে খেয়ে-আসা খাবারের সমস্তটাই বমি করে দিয়েছিল।
প্রশ্ন নিখিল অবসরজীবনটা কীভাবে কাটাতে চায়?
উত্তর: নিখিল বই পড়ে এবং নিজস্ব একটা চিন্তাজগৎ গড়ে তুলে তার অবসরজীবনটা কাটাতে চায়।
প্রশ্ন নিখিলের সমপদস্থ মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের থেকে কত টাকা বেশি মাইনে পায় এবং কেন?
উত্তর: একটা বাড়তি কর্মভারের জন্য নিখিলের সমপদস্থ মৃত্যুঞ্জয় তার
থেকে পঞ্চাশ টাকা বেশি মাইনে পায়।
প্রশ্ন নিখিলের চেহারা এবং প্রকৃতি কেমন ছিল?
উত্তর: নিখিলের চেহারা ছিল রোগা। প্রকৃতিগত দিক থেকে সে ছিল প্রখর
বুদ্ধিসম্পন্ন এবং একটু অলস।
প্রশ্ন “সংসারে তার নাকি মন নেই।” ―তার মন কীসে ছিল?
উত্তর: নিখিল মৃত্যুঞ্জয়ের দুবছর আগে বিয়ে করলেও সংসারে তার মন ছিল
না। বরং তার মন বইপত্র এবং চিন্তাজগতেই ডুবে থাকত।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি নিখিলের ব্যবহার কেমন ছিল?
উত্তর: আদর্শবাদী মৃত্যুঞ্জয়কে মৃদু হিংসা এবং মৃদু অবজ্ঞা করলেও নিখিল তাকে শুধু পছন্দই করত না, ভালোও বাসত।
প্রশ্ন “একটু বসেই তাই উঠে গেল কী?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় কলঘরে উঠে যায় সকালে বাড়ি থেকে খেয়ে আসা ভাজা,ডাল, তরকারি, মাছ, দই, ভাত সব খাবার বমি করে দেওয়ার জন্য।
প্রশ্ন ..নিখিল যখন খবর নিতে এল....।”—তখন মৃত্যুঞ্জয় কী করছিল?
উত্তর: নিখিল যখন মৃত্যুঞ্জয়ের খবর নিতে এল তখন মৃত্যুঞ্জয় কলঘর থেকে বমি করে ফিরে কাচের গ্লাসে জল খাচ্ছিল।
প্রশ্ন “নিখিল যখন খবর নিতে এল...।” – নিখিল কোথা থেকে, কার খবর নিতে এসেছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী-বন্ধু নিখিল পাশের কুঠুরি থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের খবর নিতে এসেছিল।
প্রশ্ন “গ্লাসটা খালি করে নামিয়ে রেখে”—মৃত্যুঞ্জয় কী করছিল?
উত্তর: গ্লাসটা খালি করে নামিয়ে রেখে মৃত্যুঞ্জয় শূন্যদৃষ্টিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে ছিল।
প্রশ্ন “হয়তো মৃদু একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোও বাসে।”—কে, কাকে ভালোবাসে?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের অফিসের সহকর্মী বন্ধু নিখিল তাকে পছন্দও করে এবং মৃদু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোও বাসে |
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় নিখিলকে কখন বলেছিল “মরে গেল! না খেয়ে মরে গেল!”?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে যখন নিখিল তাকে জিজ্ঞাসা করে, যে তার কী হয়েছে, তখনই সে কথাগুলি জানায়।
প্রশ্ন “ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যুর মতো সাধারণ সহজবোধ্য ব্যাপারটা”— ফুটপাথের অনাহারে মৃত্যুকে সাধারণ, সহজবোধ্য বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পটি পঞ্চাশের দশকে মন্বন্তরের পটভূমিকায় রচিত হয়েছে বলেই লেখক ফুটপাথের অনাহার-মৃত্যুর ঘটনাকে সাধারণ, সহজবোধ্য বলেছেন।
প্রশ্ন আনমনে অর্ধ-ভাষণে যেন আর্তনাদ করে উঠল মৃত্যুঞ্জয়। আর্তনাদটা কী ছিল?
উত্তর: নিখিল যখন সতর্কভাবে মৃত্যুঞ্জয়কে প্রশ্ন করল যে তার কী হয়েছে, তখন সে “মরে গেল! না খেয়ে মনে গেল,” বলে আর্তনাদ করে উঠেছিল।
প্রশ্ন “...মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল।”—মৃত্যুঞ্জয়ের অসুস্থতার কারণ কী?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় একদিন অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর মতো এক বীভৎস দৃশ্য দেখে ফেলে। সেটাই তার অসুস্থতার কারণ ছিল।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় মাইনের পুরো টাকাটা রিলিফ ফান্ডে দেওয়ার কথা জানালে সেই প্রসঙ্গে নিখিল তাকে কী বলেছিল?
উত্তর: নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে বলেছিল যে, পরিবারের ন জনের ভরণ-পোষণের জন্য এমনিতেই মাইনের টাকায় মৃত্যুঞ্জয় সংসার চালাতে পারে না, প্রতিমাসেই তাকে ধার করতে হয়।
প্রশ্ন “আমায় কিছু একটা করতে হবে ভাই।”—কী কারণে বক্তা কিছু করার তাগিদ অনুভব করেছিল?
উত্তর: অনাহার-মৃত্যু দেখার পর দুঃখে এবং অপরাধবোধে জর্জরিত মৃত্যুঞ্জয় অনাহারী মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করত। তার রাতে ঘুম হত না এবং খেতে বসলে সে খেতে পারত না।
প্রশ্ন “একবেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।”—বক্তার এ কাজের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: মন্বন্তরগ্রস্ত লোকদের খাবার বিলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বক্তা মৃত্যুঞ্জয়
সম্ভ্ৰীক এক বেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল।
প্রশ্ন “এ অন্যায় নয়? অত্যাচার নয়?”—বক্তা কাকে অন্যায় এবং অত্যাচার বলেছে?
উত্তর: সে না খেলে তার অসুস্থ স্ত্রী যে অন্ন গ্রহণ করে না, বক্তা মৃত্যুঞ্জয় তাকেই অন্যায় এবং অত্যাচার বলেছে।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় তার স্ত্রী সম্বন্ধে কেন বলেছিল, “মরে তো মরবে না খেয়ে।”?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় না খেলে তার অসুস্থ স্ত্রী অন্ন গ্রহণ করত না। তার আচরণে ক্ষুব্ধ এবং তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে উৎকণ্ঠায় মৃত্যুঞ্জয় এ কথা বলেছিল।
প্রশ্ন . অনাহার মৃত্যু দেখার আগে করা নিজের কোন্ কোন্ কাজের জন্য মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছিল?
উত্তর: ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ জেনেও চারবেলা পেটপুরে খাওয়া এবং ত্রাণকার্যে লোকাভাব থাকলেও সে কাজে অংশ না নিয়ে অবসর কাটানোর চিন্তায় মশগুল হয়ে থাকার জন্য মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছিল।
প্রশ্ন মাইনের দিন নিখিল মানি-অর্ডারের ফর্ম আনিয়ে কলম ধরে কী ভাবছিল?
উত্তর: নিখিল প্রতিমাসে তিন জায়গায় যে অর্থসাহায্য করে, সেই তিনটি সাহায্য পাঁচ টাকা করে কমিয়ে দেবে কি না সে কথাই ভাবছিল নিখিল।
প্রশ্ন . দুর্ভিক্ষের জন্য নিখিল তার জীবনযাত্রার কোন পরিবর্তন ঘটিয়েছিল?
উত্তর: দুর্ভিক্ষের জন্য নিখিল তার খাওয়াদাওয়া যতদূর সম্ভব কাটছাঁট করে কমিয়ে দিয়েছিল।
প্রশ্ন মৃত্যুঞ্জয় নিখিলকে কোন্ কোন্ বিশেষণে তিরস্কার করেছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় নিখিলকে ‘পাশবিক স্বার্থপর' তিরষ্কার করেছিল।
প্রশ্ন “...তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাঁচ অর্থহীন হয়ে গেছে।”- কার কোন অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় বেশ কিছুদিন ধরে শহরের দুর্ভিক্ষপীড়িতদের দুর্বিষহ জীবনের যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছে, সেই অভিজ্ঞতার কথাই এখানে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন “তারপর মৃত্যুঞ্জয়ের গা থেকে ধূলিমলিন সিল্কের জামা অদৃশ্য হয়ে যায়।”—কেন তার এই অবস্থা হয়েছিল?
উত্তর: ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখার পর অনাহারক্লিষ্ট মানুষদের সঙ্গে দিন কাটাতে কাটাতে ক্রমে তাদের দলে যোগদান করায় মৃত্যুঞ্জয়ের গায়ের জামা ক্রমশ অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল।
প্রশ্ন . “এখন সেটা বন্ধ করে দিয়েছে।”—কে, কী বন্ধ করে দিয়েছে?
উত্তর: দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের একঘেয়ে অভিযোগ শুনে শুনে বিরক্ত হয়ে মৃত্যুঞ্জয় তাদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করা বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রশ্ন “...তার চোখ দেখেই টের পাওয়া যায়...।”—কী টের পাওয়া যায়?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ দেখে নিখিল টের পায় যে তার কোনো কথার মানেই
মৃত্যুঞ্জয় বুঝতে পারছে না। তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাঁচ অর্থহীন হয়ে গেছে।
প্রশ্ন . মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েগুলি চেঁচিয়ে কাদে কেন?
উত্তর: অনাদরে অবহেলায় এবং ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েগুলি চেঁচিয়ে কাঁদে।
প্রশ্ন “মৃত্যুঞ্জয় অফিসে যায় না”—কোথায় যায়?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয় কলকাতা শহরের ফুটপাথে ও লঙ্গরখানাগুলিতে ঘুরে বেড়ায় |
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে ৫ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন “সেদিন আপিস যাবার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম মৃত্যু দেখল- অনাহারে মৃত্যু।”—এই দেখার ফলে মৃত্যুঞ্জয়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল?
উত্তর প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে? ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় অফিস যাওয়ার পথে একদিন ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখে। মন্বন্তরের সময়ে এমনটা আকছার ঘটলেও তা ছিল মৃত্যুঞ্জয়ের জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা | আবেগপ্রবণ আদর্শবাদী মৃত্যুঞ্জয় তাই করুণ এই দৃশ্যটি দেখার কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রচণ্ড মানসিক আঘাতের ফলে শারীরিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়ে। রীতিমতো কাহিল অবস্থায় অফিসে পৌঁছে সে অফিসের বাথরুমে বাড়ি থেকে খেয়ে আসা তৃপ্তির খাবার বমি করে বের করে দেয়। পাশের কুঠরি থেকে খবর নিতে আসে তার সহকর্মী বন্ধু নিখিল | নিখিল দেখে মৃত্যুঞ্জয় ভাবলেশহীন চাহনিতে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে, সামনে টেবিলের ওপর শূন্য কাচের গ্লাস রাখা। তাকে দেখে নিখিলের মনে হয় যে, নিশ্চয়ই কোনো-এক বড়ো সমস্যায় পড়েছে মৃত্যুঞ্জয়। সেই সমস্যার নিরর্থক, অন্যায্য কঠোরতায় শার্শিতে আটকে পড়া মৌমাছির মতো মৃত্যুঞ্জয় মাথা খুঁড়ছে। লেখক নিখিলের এই দেখার মধ্যে দিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ার একটা স্বচ্ছ ধারণা সুন্দরভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। এককথায় মৃত্যুঞ্জয়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল হতাশার, য্যাপার এবং অস্থিরতার।
প্রশ্ন| “অন্য সকলের মতো মৃত্যুঞ্জয়কে সেও খুব পছন্দ করে।”— কার কথা বলা হয়েছে? তার মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করার যে কারণ লেখক আলোচনা করেছেন এই প্রসঙ্গে সেটির বিবরণ দাও।
● উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটিতে মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী বন্ধু নিখিলের কথা বলা হয়েছে।
মৃত্যুঞ্জয় ছিল ন্যায়নীতিবোধসম্পন্ন, ধীরস্থির, নির্বিরোধী, সহানুভূতিশীল এক সাদাসিধে যুবক। কিন্তু শুধু তার এইসব ইতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই যে নিখিল তাকে পছন্দ করত, তা নয় | মানবসভ্যতার নষ্ট হয়ে যাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন যে ঐতিহ্য—আদর্শবাদ, তার কল্পনায় এবং সাধনায় মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে সঁপে দিয়েছিল বলেই নিখিল তাকে খুব পছন্দ করত। অবশ্য, মৃত্যুঞ্জয় যদি দুর্বল মনের কল্পনাবিলাসী আদর্শবাদী যুবক হত, তাহলে তাকে পছন্দ করার প্রসঙ্গ আসত না। দুটো কথার দ্বারা তাকে উত্ত্যক্ত করলেই তার মনের রাশি রাশি অন্ধকার বেরিয়ে এসে তাকে অবজ্ঞার পাত্র করে তুলত। মৃত্যুঞ্জয়ের মনের গঠন-প্রকৃতি তেমন নির্জীব বা শিথিল নয়। তার হৃদয় ও মস্তিষ্ক যথেষ্ট গতিশীল। তার হৃদয়ে শক্তির একটা ফোয়ারা রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত অপরিবর্তনীয়কে পরিবর্তিত করতে যে শক্তির প্রয়োজন হয়, বর্তমান জগতে যে শক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গেছে, তেমনই এক শক্তির অধিকারী ছিল সে। এই বিশেষ শক্তির অধিকারী বলেই মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি নিখিল মৃদু হিংসা পোষণ করত, ভাবত, সে নিজে মৃত্যুঞ্জয় হলে খারাপ হত না। নিখিল যে মৃত্যুঞ্জয়কে খুব পছন্দ করে এবং ভালোও বাসে, তার কারণ সম্বন্ধে লেখক এ কথাগুলিই পাঠকদের জানিয়েছেন।
প্রশ্ন |“অথচ নিখিল প্রশ্ন করলে সে জবাবে বলল অন্য কথা।” – নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে কেন প্রশ্ন করেছিল? মৃত্যুঞ্জয় কেন ‘অন্য কথা বলে? এখানে মৃত্যুঞ্জয়ের কোন্ম নোভাবের প্রকাশ ঘটে?
• উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পে ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয়ের মধ্যে এক তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল। এই দৃশ্য তাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিধবস্ত করে তুলেছিল। সমস্ত বিষয়টা খতিয়ে দেখে নিখিলের মনে হয়েছিল, ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে মৃত্যুঞ্জয় আসলে স্পষ্ট ধারণা করতেই পারছে না। মৃত্যুঞ্জয় হয়তো ফুটপাথের মানুষগুলোর জীবনযাপনের বীভৎসতা, ক্ষুধা অথবা মৃত্যুর রূপ বোঝার চেষ্টা করছে। “না খেয়ে মরা কী ও কেমন?”- এ প্রশ্নের উত্তরও সে খুঁজে চলেছে। তাই সমস্ত বিষয়টি ভালোভাবে জেনে নেওয়ার জন্যই নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে প্রশ্ন করেছিল।
● নিখিল যখন এই প্রশ্নগুলো মৃত্যুঞ্জয়ের সামনে রাখে, তখন জবাবে সে ‘অন্য কথা’ বলে। সে পালটা নিখিলকে জিজ্ঞাসা করে যে, সে নিজে দিব্যি খেয়েপরে বেঁচে রয়েছে অথচ একটা লোক না খেয়ে মরে গেল—এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী। সে নিজে চারবেলা খাচ্ছে আর কিছু মানুষ একবেলাও খেতে পাচ্ছে না— এই বৈষম্য তাকে কাতর করে তোলে। একদিকে সে তার ধরাবাঁধা জীবনে দৈনন্দিন কাজ শেষ করে নিশ্চিন্ত অবসর কাটায়, অন্যদিকে লোকের অভাবে ত্রাণকার্য সঠিকভাবে চালানো যায় না— এ কথা মনে হতেই মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে ধিক্কার দেয়।
● মৃত্যুঞ্জয়ের এই ভাবনাসূত্র তার মানবিক দায়বদ্ধতারই প্রমাণ দেয়। সে যে দুর্ভিক্ষকে উপর থেকে দেখে না, নিজেকে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড় করায় এবং সেখানে নিজের ভূমিকা কী হওয়া উচিত তা ভাবতে চায়।
কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর pdf,
প্রশ্ন “নিখিল ভেবেছিল বন্ধুকে বুঝিয়ে বলবে এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।”-কোন্ প্রসঙ্গে নিখিলের এই ভাবনা? এই ভাবনার মাধ্যমে নিখিলের চরিত্রের কোন্বৈ শিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে? ১+৪ [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৬]
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে ছোটোগল্পে আমরা দেখি যে, ফুটপাথে অনাহার মৃত্যু দেখার পর অফিসের মাইনের দিন মৃত্যুঞ্জয় সব টাকা নিখিলের হাতে দেয় ত্রাণ তহবিলে দান করার জন্য। বিস্মিত নিখিলের প্রশ্নের উত্তরে সে জানায় যে তারা সন্ত্রীক একবেলার ভাত দান করে দিচ্ছে। টুনুর মা অসুস্থ বলে মৃত্যুঞ্জয় তাকে খেতে বললেও পতিব্রতা স্ত্রী তা শোনে না। এই প্রসঙ্গেই নিখিল এমনটা ভেবেছিল।
● মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী নিখিল একজন হৃদয়বান, সামাজিক মানুষ। তবু ‘পঞ্চাশের মন্বন্তর'-এর অনাহার-মৃত্যুগুলি তার কাছে ছিল 'সাধারণ সহজবোধ্য ব্যাপার'। অনাহার-মৃত্যু দেখে ভেঙে-পড়া মৃত্যুঞ্জয়কে লক্ষ করে তার মনে হয়েছে যে, সব মানুষের সব সহানুভূতি অনাহারীদের খিদের আগুনে ঢাললেও তা নিভবে না, উলটে তা ইন্ধনই পাবে। তার মতে ভিক্ষাদানের মতো পাপকর্ম সাধারণ মানুষের কাছে সৎকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয় বলেই মানুষের অন্নের দাবি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। ত্রাণের ফলে কিছু লোক খেতে পেলেও আড়ালে থাকা আরও অনেক মানুষ না খেতে পেয়েই মারা যায়। তার মতে, এই অবস্থায় মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তদের আকণ্ঠ-আহার অন্যায় হলেও উপোস করে মারা যাওয়াটাও একান্তই অনুচিত। কারণ, নীতিধর্ম নয়, সমাজধর্মের দিক থেকেই নিখিল মনে করে, দশজনকে খুন করার থেকে বড়ো অপরাধ হল নিজে না খেয়ে মরা। মৃত্যুঞ্জয় একে ‘পাশবিক স্বার্থপরতা’ বললে নিখিল জানায় যে, অনাহারীরা যদি এমন স্বার্থপর হতে পারত, তবে “অন্ন থাকতে বাংলায় না খেয়ে কেউ মরত না। তা সে অন্ন হাজার মাইল দূরেই থাক বা একত্রিশটা তালা লাগানো গুদামেই থাক।” এই ভাবনার মাধ্যমে নিখিলের চরিত্রের বাস্তববাদী বৈশিষ্ট্যই প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্ন | “সেদিনের পর থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের মুখ বিষণ্ন গম্ভীর হয়ে আছে।” ―—কোন্ দিনের ইঞ্জিত দেওয়া হয়েছে? সেদিনের পর থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের মুখ কেন বিষণ্ন গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল ?
• উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় মন্বন্তরের সময়কালে যেদিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে একটি অনাহার-মৃত্যুর বীভৎস দৃশ্য দেখেছিল, সেই দিনটির কথাই প্রশ্নোধৃত অংশে বলা হয়েছে।
● এতকাল অবধি মৃত্যুঞ্জয় না-খেতে-পেয়ে মরার কথা কেবল শুনেছিল বা পড়েছিল | মন্বন্তরের সময় প্রায়শই ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু ঘটলেও তা ছিল মৃত্যুঞ্জয়ের জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা। মৃত্যুঞ্জয় ছিল ন্যায়নীতিবোধসম্পন্ন, অনুভূতিশীল, সাদাসিধে ভালোমানুষ । মানবসভ্যতার নষ্ট হয়ে যাওয়া যে সুপ্রাচীন ঐতিহ্য—আদর্শবাদ, তার কল্পনায় এবং সাধনায় মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সঁপে দিয়েছিল। জীবনে প্রথম ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর বীভৎস দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার পরে মৃত্যুঞ্জয়ের মনে এই অনাহার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন জেগে ওঠে। খিদের যন্ত্রণা না মৃত্যুযন্ত্রণা কোন্টা বেশি কষ্টকর তা নিয়েও তার মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তার মনে হয় তার মতো স্বচ্ছল মধ্যবিত্তদের দরিদ্র মানুষের জীবনযন্ত্রপা সম্পর্কে উদাসীনতাই হয়তো এর কারণ। এই মৃত্যুর ঘটনাটা মৃত্যুঞ্জয়কে এমন আহত করেছিল, অপরাধবোধে দীর্ণ করে দিয়েছিল যে, তারপর থেকেই সে বিষণ্ণ ও গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল।
k bachai k bacha question answer pdf
প্রশ্ন | “ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা” –বক্তা কে? কোন্ কাজকে পাশবিক স্বার্থপরতা বলা হয়েছে? ১+৪
• উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটির বক্তা হল মৃত্যুঞ্জয়।
● পঞ্চাশের মন্বন্তরকালে হঠাৎই একদিন ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয় অপরাধবোধে দীর্ণ হয়ে পড়ে। তার প্রিয় বন্ধু নিখিলের এতে মন খারাপ হয় | তবুও সে ভাবে যে, সব মানুষের সকল সহানুভূতি একত্রিত করে অনাহারীদের খিদের আগুনে ঢাললেও তা নিভবে না, উলটে তা ইন্ধনই পাবে। তার মতে, ভিক্ষাদানের মতো পাপকর্ম সাধারণ মানুষের কাছে সৎকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয় বলেই মানুষের অন্নের দাবি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। এরপর মাইনের দিন মৃত্যুঞ্জয় যখন তার মাইনের সব টাকা নিখিলের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়, তখন আর নিখিল স্থির থাকতে পারে না। পরিবারের প্রতি মৃত্যুঞ্জয়ের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে সে মৃত্যুঞ্জয়কে জানায় যে, মন্বন্তরকালে ভূরিভোজ অন্যায় হলেও উপোস করে মৃত্যুবরণ করাও একেবারেই উচিত নয়। তাই বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু খাদ্যের প্রয়োজন, ততটুকুই সে গ্রহণ করে। নিখিল আরও জানায় যে, যতদিন অবধি আত্মরক্ষার উপযোগী ন্যূনতম খাদ্য সে জোগাড় করতে পারবে, ততদিন অবধি সে সেই খাদ্য গ্রহণ করবে। দেশের সমস্ত লোক মরে গেলেও সে অন্যকে সেই আত্মরক্ষার উপযোগী খাবার দিতে পারবে না। সমাজধর্মের দিক থেকেই বলা যায় যে, দশজনকে হত্যা করার চেয়ে নিজে উপোস করে মৃত্যুবরণ করা আরও বেশি অপরাধ। নিখিলের এই কাজকেই মৃত্যুঞ্জয় পাশবিক স্বার্থপরতা' বলে অভিহিত করেছে।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর PDF
৪ “মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছল ছল করতে দেখে নিখিল চুপ করে থাকে।”—মৃত্যুঞ্জয়ের চোখ ছলছল করতে থাকার কারণ কী? চুপ করে থাকা সত্ত্বেও নিখিল মনে মনে কী ভাবতে লাগল ?
• উত্তর কারণ হয়েছে । নিখিলের কাছে এই ঘটনা সাধারণ ও সহজবোধ্য বলে মনে হলেও মৃত্যুঞ্জয়ের তা মনে হয়নি। সে এতদিন এই ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে ভুরিভোজ করে নিশ্চিন্তে দিন কাটিয়েছে। নিজের এই উদাসীনতার জন্য সে বেদনাহত এবং অনুতপ্ত। সে নিজেকে অপরাধী বলে মনে করে। ওই অপরাধের কী প্রায়শ্চিত্ত হতে পারে, সে-ভাবনা তাকে আলোড়িত করে। এই নির্লজ্জ অমানবিক আচরণের জন্য নিজেকে ধিক্কার জানাতেও মৃত্যুঞ্জয় পিছপা হয় না | মানসিকভাবে বিষণ্ণ মৃত্যুঞ্জয়ের অনুতাপে চোখ ছল ছল করে।
● মৃত্যুঞ্জয়ের ছল ছল চোখ দেখে নিখিল চুপ করে থাকে। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের দরদের ছোঁয়ায় তারও মন খারাপ হয়। তার মনে হয় দুর্ভিক্ষের দেশে সমস্ত দরদ, সব সহানুভূতি উজাড় করে ঢেলে দিলেও অপরিসীম ক্ষুধার আগুন নিভবে না | বরং তা ক্ষুধার আগুনকে ইন্ধন জোগাবে। নিখিলের মতে ভিক্ষে দেওয়া অস্বাভাবিক পাপ কাজ, কিন্তু তাকে পুণ্যকাজের পর্যায়ে উন্নীত করার ফলে মানুষের জীবনধারণের অন্নের প্রতি ন্যায্য দাবি জন্মায় না। ভিক্ষে দিয়ে দেশব্যাপী ক্ষুধার অন্ন জোগানো যায় না। এই রূঢ় বাস্তবকে আধ্যাত্মিক নীতি করে মধুর প্রলেপ দেওয়া আসলে অনিয়মের নামান্তর। চিতার আগুনে কোটি কোটি মৃতদেহ পোড়ানো হলেও পৃথিবীতে যত জ্যান্তমানুষ আছে, তাদের পুড়িয়ে ছাই করার ক্ষমতা চিতার আগুনের আছে। আসলে মানুষের সীমাহীন খিদে সেই আগুনে জ্বালানি রূপেই কাজ করে।
প্রশ্ন | ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখার পর থেকে মৃত্যুঞ্জয় কীভাবে সম্পূর্ণ পালটে গেল, তা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্প অবলম্বনে লেখো।
প্রশ্ন | মৃত্যুঞ্জয়।”—মৃত্যুঞ্জয় ধীরে ধীরে যেভাবে পরিবর্তিতঅথবা, “তারপর দিন দিন কেমন যেন হয়ে যেতে লাগল তা গল্প অবলম্বনে লেখো।
অথবা, “তারপর মৃত্যুঞ্জয়ের গা থেকে ধূলিমলিন সিল্কের জামা অদৃশ্য হয়ে যায়।”—মন্তব্যটির আলোকে ‘বে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পের মৃত্যুঞ্জয়ের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ ছোটোগল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় একদিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখে নিজেকে চরম অপরাধী বলে ভাবতে শুরু করে। দুর্ভিক্ষের দেশে চারবেলা পেট ভরে খাওয়া এবং অবসরযাপনের সুখকল্পনায় দিন কাটানোর গ্লানিতে তার মন ভরে ওঠে। বাড়িতে ভালো করে খেতে ও ঘুমোতে পারে না সে। সস্ত্রীক একবেলা না খেয়ে ওই খাবার সে অভুক্তদের বিলোনো শুরু করে। কিন্তু এতেও তার হতাশা দূর হয় না। নিখিলের মাধ্যমে পুরো মাসের মাইনেটা সে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়। ক্রমশ সে অফিসে অনিয়মিত হয়ে পড়ে, কাজে ভুল করে, প্রায়ই চুপচাপ বসে ভাবে। শহরের গাছতলায়, ডাস্টবিনের ধারে বা ফুটপাথে পড়ে থাকা দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলিকে দেখতে ঘুরে বেড়ায়। এভাবে ধীরে ধীরে ফুটপাথই হয়ে ওঠে তার আস্তানা | এরপর তার গা থেকে ধূলিমলিন সিল্কের জামা ও ধুতি অদৃশ্য হয়ে তার পোশাক হয়ে দাঁড়ায় ছেঁড়া কাপড়। আদুল গায়ে জমে মাটির স্তর, দাড়িতে মুখ ঢেকে যায়। একটি ছোটো মগ হাতে আরও দশজন অনাহারীর মতো সেও লঙ্গরখানায় লাইন দিয়ে কাড়াকাড়ি করে খিচুড়ি খায়, গ্রাম থেকে আসা দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলির মতো একঘেয়ে সুরে সেও বলা শুরু করে—“গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা। আমায় খেতে দাও!" এভাবেই মধ্যবিত্ত যুবক মৃত্যুঞ্জয় মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তার পেশা, পরিবার ও সমাজকে ত্যাগ করে ফুটপাথের জীবনে মিশে যায়।
প্রশ্ন | ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পের নিখিল চরিত্রটি পর্যালোচনা করো।
• উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র নিখিলের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নলিখিতভাবে আলোচনা করা যায়।
সংসার-উদাসীন: ছোটোগল্পটির নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের অফিসের সহকর্মী-বন্ধু ছিল নিখিল। প্রখর বুদ্ধিমান, রোগা চেহারার এই যুবকটি ছিল কিছুটা অলস প্রকৃতির। দুই সন্তানের পিতা নিখিলের সংসারে বিশেষ মন ছিল না বলে কেউ কেউ মনে করতেন। বইপত্র পড়ে এবং নিজের ভাবনার জগতে বিচরণ করেই অবসর সময় কাটাত এই অন্তর্মুখী যুবকটি।
বন্ধু-বৎসল: অফিসের সমপদস্থ সহকমী মৃত্যুঞ্জয়ের মাইনে নিখিলের থেকে সামান্য কিছু বেশি হলেও অন্য সকলের মতো নিখিলও তাকে বেশ পছন্দই করত। হয়তো তাতে কিছুটা অবজ্ঞামিশ্রিত ভালোবাসাও জড়িয়ে থাকত। তবে মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক শক্তির কাছে নিখিল কিছুটা যেন নিস্তেজ ছিল। মাঝেমাঝে তার এই ভেবে আপশোশ হত যে সে যদি নিখিল না হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হত, তাহলে মন্দ হত না। এর থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি তার সহকর্মী নিখিলের মৃদু ঈর্ষার পরিচয়ও পাওয়া যায়।
হৃদয়বান: তবে নিখিল স্বার্থপর ছিল না। সে প্রতিমাসে তিন জায়গায় অর্থসাহায্য পাঠাত। তা ছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে সে মৃত্যুঞ্জয়কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট থেকেছে। সে মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছে এবং মৃত্যুঞ্জয় অফিস যাওয়া বন্ধ করলে তার ছুটির ব্যবস্থাও করে দিয়েছে।
প্রশ্ন | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পের কাহিনিটি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পটি কলকাতার এক চাকুরিজীবী সংসারী যুবক মৃত্যুঞ্জয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে | পঞ্চাশের (১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের) মন্বন্তরকালে একদিন অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে মৃত্যুঞ্জয় অনাহার-মৃত্যুর এক বীভৎস দৃশ্য দেখে ফেলে। এই দৃশ্য দেখে সে এতটাই আঘাত পায় যে, এরপর থেকে ভিতরে বাইরে পালটে যেতে শুরু করে সে। অপরাধবোধে দীর্ণ মৃত্যুঞ্জয় ভালো করে খেতে-ঘুমোতে পর্যন্ত পারে না। সে ও তার স্ত্রী একবেলা না খেয়ে সে খাবার অনাহারীদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে শুরু করে। এমনকি, মাইনের দিন পুরো মাইনেটা মৃত্যুঞ্জয় তার সহকর্মী-বন্ধু নিখিলের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়। অনেক চেষ্টা করেও নিখিল তাকে নিরস্ত করতে ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে অফিস এবং সংসারের কথা ভুলে গিয়ে সে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের পর্যবেক্ষণ করতে কলকাতা শহর চষে বেড়াতে থাকে। তাদের সঙ্গে কথাও বলে মৃত্যুঞ্জয়। এরপর ক্রমে ক্রমে অফিসে, তারপর একসময় বাড়িতে যাওয়াও বন্ধ করে দেয় সে। শেষপর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয় ছেঁড়া কাপড়ে, খালি গায়ে, মগ হাতে লঙ্ঘরখানায় গিয়ে কাড়াকাড়ি করে খিচুড়ি খায় এবং বাকি সময় ফুটপাথে পড়ে থেকে অনাহারক্লিষ্ট সঙ্গীদের মতোই একঘেয়ে সুরে বলতে থাকে, “গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা । আমায় খেতে দাও!” এভাবেই মধ্যবিত্ত যুবক মৃত্যুঞ্জয় তার পরিবার, পেশা ও সমাজকে ত্যাগ করে অনাহারী সর্বহারাদের ভিড়ে মিশে যায়।
১ ছোটোগল্প হিসেবে ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ কতখানি সার্থক তা আলোচনা করো।
• উত্তর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ ছোটোগল্পে আমরা দেখি যে, এর প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় পঞ্চাশের (১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে) মন্বন্তরকালে অফিস যাওয়ার পথে একদিন ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর এক বীভৎস দৃশ্য দেখে ফেলে। এই দৃশ্য দেখে সে এতটাই আঘাত পায় এবং অপরাধবোধে দীর্ণ হয়ে পড়ে যে, তারপর থেকে ভালো করে খেতে ও ঘুমোতে পারে না সে। অনাহারীদের বাঁচানোর জন্য সে ও তার স্ত্রী তাদের একবেলার আহার বিলিয়ে দিতে থাকে। মাইনের দিন সে মাইনের পুরো টাকাটা সহকর্মী-বন্ধু নিখিলের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়। শহরের ফুটপাথে কিছুদিন- যাবৎ ঘুরে ঘুরে দুর্ভিক্ষপীড়িতদের লক্ষ করতে থাকে সে। এরপর ক্রমে ক্রমে একদিন সে অফিস এবং শেষে বাড়ি যাওয়াও বন্ধ করে দেয় এবং অনাহারীদেরই একজনে পরিণত হয়। মৃত্যুঞ্জয় ছেঁড়া ন্যাকড়া পরে, মুখ- ভরতি দাড়ি নিয়ে, মগ হাতে লঙ্গরখানায় গিয়ে মারামারি করে খিচুড়ি খায় আর ফুটপাথে পড়ে থেকে দুর্ভিক্ষপীড়িত সঙ্গীদের মতো একঘেয়ে সুরে বলতে থাকে—“গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা। আমায় খেতে দাও!” মন্বন্তরের কলকাতাকে কেন্দ্র করেই এই কাহিনিটি গড়ে উঠেছে। এই কাহিনিতে দেখা যায় দু-তিন মাসের স্বল্প পরিসরে মধ্যবিত্ত, সংসারী যুবক মৃত্যুঞ্জয় ক্রমে ক্রমে স্বেচ্ছায় ফুটপাথ-জীবনকে গ্রহণ করেছে। ছোটো আয়তনের এ গল্পে স্থান-কাল-ঘটনাগত ঐক্য ভালোভাবেই রক্ষিত হয়েছে। তিনটি চরিত্রের এই গল্পে ‘ঘটনার ঘনঘটা’, ‘অতিকথন’, ‘তত্ত্ব’ বা ‘উপদেশ’ অনুপস্থিত। গল্পশেষে মৃত্যুঞ্জয়ের বলা ছোটো বাক্য তিনটি পাঠককে চমকিত করে দ্রুত গল্পটিকে ক্লাইম্যাক্সের চরমে পৌঁছে দিয়েছে। সুতরাং কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ নিঃসন্দেহে একটি শিল্পসাৰ্থক ছোটোগল্প |
প্রশ্ন | ‘এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী??—কে, কোন্অ পরাধের প্রায়শ্চিত্তের কথা বলেছেন? বক্তা নিজেকে অপরাধী মনে করেছেন কেন? **[দ্বাদশ, '২০] [১+২+২]
উত্তর : গল্পের মূল চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় যখন দিনে চারবেলা উদরপূর্তি করে ভুরিভোজ করছে, তখন ফুটপাথের নিরন্ন ভুখা মানুষগুলি খেতে না পেয়ে মরছে। মৃত্যুঞ্জয় এই অপরাধের প্রাশ্চিত্তের কথা বলেছেন। বক্তাৱ নিজেকে অপরাধী মনে করার কারণ : ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যু নিখিলের কাছে সাধারণ ও স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এই ঘটনার প্রত্যক্ষ দর্শন মৃত্যুঞ্জয়ের মধ্যে প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তার মধ্যে মহত্তম মানবতাবোধকে জাগিয়ে তোলে। তার মধ্যবিত্ত আত্মসুখী স্বার্থসর্বস্ব মনোভাবের সঙ্গে প্রচণ্ড সংঘাত বাঁধে যায়। নিখিল তা প্রত্যক্ষ করে, কিন্তু তা তার ভাবনাচিন্তার স্তরেই থেকে যায়। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় অকপটে স্বীকার করে, ‘ভাবছি, আমি বেঁচে থাকতে যে লোকটা না খেয়ে মরে গেল, এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি ?’ চারবেলা পেট ভরে খাওয়া, তার মতে ধিক্কারজনক কাজ।
প্রশ্ন | . ‘তারপর দিন দিন কেমন যেন হয়ে যেতে লাগল মৃত্যুঞ্জয়। - মৃত্যুঞ্জয় কেমন হয়ে গিয়েছিল? হয়। কেন তার মধ্যে এই বদল দেখা গিয়েছিল?
উত্তর কেমন হয়ে যাওয়ার চিত্র ফুটপাথে অনাহারে না লোক মরতে দেখে মন ও শরীর দু-দিক থেকে মৃত্যুঞ্জয় অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই থেকে সে নিজেকে অপরাধী মনে করে। কারণ তার মনে হয় অনাহারে মানুষ মরছে, অথচ সে চারবেলা ভুরিভোজ পরা করছে। অনুতপ্ত মৃত্যুঞ্জয় ভাবে, এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কী? থরে দুর্ভিক্ষপীড়িত ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য সে কিছু করতে চায়। তার মাস মাইনের সমস্ত টাকা রিলিফ ফান্ডে দান করে। একবেলা খায়, অপর বেলার খাবার ক্ষুধার্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়। রাতে তা ঘুম হয় না। চিন্তাভাবনায় তার ভিতরটা যেন পুড়তে থাকে। তার অব গোলগাল মুখখানা থমথম করতে থাকে। অফিসে নিয়মিত যায় না। বাড়িতেও থাকে না। দিন দিন সে যেন কেমন হতে থাকে।
বদলের কারণ : এভাবে তার মধ্যে স্পষ্ট বদল লক্ষ করা যায়। সে শহুরের ফুটপাথে ঘুরে বেড়ায়। ডাস্টবিনের ধারে, গাছের তলায়, ফুটপাথে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে থেকে তাদের ধি, সঙ্গে আলাপ করে। তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা শোনে। তাদের ক্ষুধার যন্ত্রণা অনুভব করে। তাদের সঙ্গী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সহমর্মী হয়। তার উচ্চকোটি জীবনযাপনের আভিজাত্য ঝেড়ে ফেলে ধীরে ধীরে ক্ষুধার্ত ও নিরন্ন মানুষগুলির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। ব্যষ্টি মিলিত হয় সমষ্টিতে। তখন তার পরনে ছেঁড়া একটুকরো ন্যাকড়া, হাতে একটা মগ। লঙ্গরখানার খাবার খায় মারামারি, কাড়াকাড়ি করে। গলায় সত্যিকার ক্ষুধাত মানুষের খাদ্যের জন্য করুণ আকুতি। তার জীবনের এ পরিবর্তন। ও পরিণতি লোকদেখানো নয়, অকৃত্রিম ও অতিবাস্তব। মার্কসীয় দর্শনের বাস্তব রূপায়ণ।
[TAG]: দ্বাদশ শ্রেণি কে বাঁচায় কে বাঁচে, কে বাঁচায় কে বাঁচে mcq,উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বড় প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন ,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে ৫ নং প্রশ্ন উত্তর,বাংলা কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর