ভাত |উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভাত গল্প প্রশ্ন উত্তর PDF |দ্বাদশ শ্রেণির ভাত গল্প প্রশ্ন উত্তর|
ভাত -মহাশ্বেতা দেবী| দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভাত প্রশ্ন উত্তর |HS bengali vat question answer pdf download.
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভাত প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো।
দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা ভাত 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন বড়োবউয়ের উচ্ছবকে ভালো লাগেনি কেন?
উত্তর: উচ্ছবের বন্য চেহারা, উগ্র চাহনি এবং তার খাটো করে পরা নোংরা লুঙ্গি দেখে বড়োবউয়ের উচ্ছবকে ভালো লাগেনি।
প্রশ্ন বামুন ঠাকুর বড়োবউকে কী বলেছিল?
উত্তর: বামুন ঠাকুর বড়োবউকে বলেছিল যে, উচ্ছব ভাত খাওয়ার বিনিময়ে সে বাড়িতে কাজ করবে।
প্রশ্ন . বড়োপিসিমা বড়ো বাড়ির কে ছিলেন?
• উত্তর: বড়োপিসিমা ছিলেন বুড়োকর্তার অবিবাহিত বৃদ্ধা বোন এবং বড়োবউমা-সহ বাড়ির অন্য বউমাদের পিসিশাশুড়ি।
প্রশ্ন বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে ‘নাটা-ঝামটা’ হচ্ছিলেন কখন?
উত্তর: অল্পবয়সে স্ত্রী মারা যাওয়ায় বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে ‘নাটা-ঝামটা’ হচ্ছিলেন।
প্রশ্ন বড়োপিসিমা সংসারের কোন্ কোন্ দায়িত্ব সামলাতেন?
উত্তর: বড়োপিসিমা বাড়ির রান্নাঘর, ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগানো, দাদা অর্থাৎ বুড়োকর্তার সেবা করা—এসব দায়িত্ব সামলাতেন।
প্রশ্ন “সে জন্যেই হোম-যজ্ঞি হচ্ছে।"-হোম-যক্তির কারণ কী?
উত্তর: বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা লিভার ক্যানসারে মরতে বসেছিলেন বলে তাঁকে বাঁচাতেই হোমযজ্ঞ হচ্ছিল।
vপ্রশ্ন . বুড়োকর্তার কী রোগ হয়েছিল?
উত্তর: বুড়োকর্তার লিডার ক্যানসার অর্থাৎ যকৃতে কর্কট রোগ হয়েছিল।
প্রশ্ন মেজোবউ শাশুড়ির জন্য কী কী মাছ রান্না করছিল?
উত্তর: মেজোবউ শাশুড়ির জন্য ইলিশ, পাকাপোনা, চিতল, ট্যাংরা এবং বড়ো ভেটকি মাছ রান্না করছিল।
প্রশ্ন . বড়োবউ শ্বশুরের ঘরে কিছুক্ষণের জন্য ঢুকেছিল কেন?
উত্তর: বড়োবউ, শ্বশুরের দেখভালের জন্য নিযুক্ত নার্সকে চা খাওয়ার জন্য কিছুক্ষণ ছাড়তেই শ্বশুরের ঘরে ঢুকেছিল।
১১. “সেই জন্যেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।”—কী জন্য?
উত্তর: বড়ো বাড়ির বড়ো, মেজো ও ছোটো ছেলে সকাল এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না বলেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।
১২. বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করার দরকার ছিল না কেন?
উত্তর: আঠারোটা দেবত্র বাড়ি এবং বাদা অঞ্চলের প্রচুর উর্বর জমির মালিক হওয়ার জন্য বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করার প্রয়োজন ছিল না
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভাত mcq প্রশ্ন উত্তর
১৩ বড়োবউ শ্বশুরের জন্য কী কী করত?
উত্তর: ঘরে পাতা দই ও ইসবগুল দিয়ে শরবত দেওয়া এবং শ্বশুরের জন্য রুটি বা লুচি তৈরি করা এবং তাঁর বিছানা পাতা ও পা টেপার কাজ করত বড়োবউ।
১৪. বড়ো বাড়িতে তান্ত্রিক কে এনেছিলেন?
উত্তর: : বড়ো বাড়ির ছোটো বউয়ের বাবা তান্ত্রিক ডেকে এনেছিলেন।
* যজ্ঞিহোমের জন্য কত পরিমাণ করে কাঠ লাগে?
অথবা, যজ্ঞের জন্য কী কী কাঠ আনা হয়?
উত্তর: যজ্ঞের জন্য বেল, ক্যাওড়া, তেঁতুল, বট, অশ্বত্থ প্রভৃতি গাছের আধ মন করে কাঠে লাগে।
প্রশ্ন ঝিঙেশাল চালের ভাত দিয়ে কী খাওয়া হয়?
উত্তর: ঝিঙেশাল চালের ভাত নিরামিষ ডাল এবং তরি-তরকারি দিয়ে খাওয়া হয়।
প্রশ্ন বড়ো বাড়িতে কনকপানি এবং পদ্মজালি চাল রান্না হয় কী জন্য?
উত্তর: বড়োবাবু কনকপানি ছাড়া এবং মেজো ও ছোটোবাবু পদ্মজালি চাল ছাড়া ভাত খায় না বলে তাদের জন্য এই দু-রকমের চাল রান্না করা হত।
প্রশ্ন . ‘ভাত’ গল্পে মোটা-সাপ্টা চাল খেত কারা?
উত্তর: বড়ো বাড়িতে রাঁধুনি এবং ঝি-চাকররা মোটা-সাপ্টা চাল খেত।
প্রশ্ন “খুবই অদ্ভুত কথা | তাঁর বিয়ে হয়নি।”—কার বিয়ে হয়নি?
উত্তর: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে বড়োপিসিমার বিয়ে হয়নি।
প্রশ্ন . বুড়োকর্তার বাড়িগুলোর নাম কী ছিল?
উত্তর: ‘ভাত’ গল্পে বুড়োকর্তার বাড়িগুলির নাম ছিল শিব, মহেশ্বর, ত্রিলোচন, উমাপতি ইত্যাদি ।
প্রশ্ন “শ্বশুর তার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান।”-শ্বশুর কার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান ছিল?
উত্তর: ‘ভাত' গল্পে বড়ো বাড়ির বড়োবউয়ের কাছে তার শ্বশুর ঠাকুরদেবতা সমান ছিল।
প্রশ্ন ‘ভাত' গল্পের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: ‘ভাত' গল্পের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ইতিহাসনির্ভর জীবনী ঝাঁসীর রাণী। সেগুলো সব এক মাপে কাটতে হবে।”—কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে হোমযজ্ঞের উদ্দেশ্যে যে বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট ও তেঁতুল গাছের আধমন কাঠ কাটা হচ্ছিল, তার কথাই বলা হয়েছে।
প্রশ্ন “...বড়োবউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি।”—কী?
উত্তর: কাজে নতুন যোগ দেওয়া উচ্ছবের উগ্র চাহনি বড়োবউয়ের ভালো লাগেনি।
প্রশ্ন “কোথা থেকে আনলে?”—কে, কাকে, কার সম্বন্ধে এই প্রশ্ন করেছে?
উত্তর: বড়োবউমা বড়োপিসিমাকে উচ্ছব সম্বন্ধে এই প্রশ্ন করেছে।
প্রশ্ন . “বড়ো বাড়ির লোকরা বলে....”—কী বলে?
উত্তর: বড়ো বাড়ির লোকেরা বলে যে, বড়োপিসিমার ঠাকুরের সঙ্গে বিয়ে
হয়েছে এবং তাই তিনি দেবতার সেবিকা।
বাদায় থাকে, অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি।”—বাদায় থাকা লোকদের ভাতের আকাঙ্ক্ষা সাধারণত থাকে না কেন?
উত্তর: বাদা অর্থাৎ নিম্নভূমিতে জলের অভাব না থাকায় প্রচুর ফসল হয় । তাই বাদায় থাকা লোকেদের ভাতের আকাঙ্ক্ষা থাকে না বলে মনে করা হয়েছে।
‘এসব কথা সত্যি না মিথ্যে কে জানে।”—কোন্ কথা?
উত্তর: অবিবাহিতা বড়োপিসিমা বলেছিলেন যে, শিব তাঁর পতিদেবতা। তাই তাঁকে যেন মানুষের সাথে বিয়ে দেওয়া না হয়। এখানে এই তথ্যের সত্যতা সম্বন্ধেই বলা হয়েছে।
৪২. “...তার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান।”—কে, কার কাছে?
উত্তর: বড়োবউয়ের কাছে তার শ্বশুরমশাই অর্থাৎ বুড়োকর্তা দিলেন। ঠাকুর-দেবতা তুল্য |
vপ্রশ্ন “আজ এই হোম যক্তি হচ্ছে”-হোমযজ্ঞের জন্য কোন কোন্
উপকরণ প্রয়োজন?
উত্তর: হোমযজ্ঞ অনুষ্ঠানে বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল— এই পাঁচপ্রকার গাছের কাঠ, কালো বিড়ালের লোম, শ্মশানের বালি ইত্যাদি উপকরণের প্রয়োজন।
প্রশ্ন উচ্ছবের বউ তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় কী করছিল?
উত্তর: উচ্ছবের বউ তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় ছেলেমেয়েকে জড়িয়ে জাপটে ধরেছিল এবং ঠান্ডায় ও ভয়ে কাঁপছিল।
প্রশ্ন উচ্ছব তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় কী করছিল?
উত্তর: উচ্ছব তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে তার ঘরের মাঝখানের মাতালের মতো কাঁপতে থাকা খুঁটিটিকে মাটির দিকে চেপে ধরার চেষ্টা করছিল আর ভগবানকে ডাকছিল।
প্রশ্ন লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী ‘ভাত’ গল্পে ভগবানকে নিয়ে কোন্ বিদ্রুপ করেছেন?
উত্তর: ‘ভাত’ গল্পে তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে উচ্ছব ভগবানকে ডাকায় লেখিকা বলেছেন যে, দুর্যোগের মধ্যে ভগবানও বোধ হয় কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমোন।
প্রশ্ন “সাধন দাশের কথা উচ্ছব নেয় না।” –সাধন দাশ কী বলেছিল?
উত্তর: সাধন দাশ উচ্ছবকে বলেছিল যে, তার পরিবারের লোকজনকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বানের জল তাকেও টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, গাছে বেঁধে সে রক্ষা পেয়েছে।
প্রশ্ন “টিনের বেশ একটা মুখবন্ধ কৌটো ছিল ঘরে।”—কৌটোটির মধ্যে কী ছিল?
উত্তর: কৌটোটির মধ্যে ভূমিহীন উচ্ছবের সরকারের কাছে জমি চাওয়ার আবেদনপত্রের নকল কাগজ ছিল।
ভাত 1 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর প্রশ্ন উত্তর|
প্রশ্ন ১২, “সে কৌটোটা বা কোথায়।”—কৌটোটা কেমন ছিল?
উত্তর: কৌটোটা ছিল টিনের তৈরি মুখবন্ধ করা চমৎকার দেখতে এবং বড়ো।
প্রশ্ন . রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি।"-কার খাওয়া হয়নি?
উত্তর: বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যাওয়ার পর ক-দিন ধরে উচ্ছবের লঙ্গরখানার রান্না খিচুড়ি খেতে যাওয়া হয়নি।
প্রশ্ন পুরোহিত মহানাম শতপথি উৎসবদের গ্রামে আসতে দেরি করছিল কেন?
উত্তর: পুরোহিত মহানাম শতপথির অন্য দুটো গ্রামে শ্রাদ্ধকর্মের কাজ সমাধা করার জন্যই উচ্ছবদের গ্রামে আসতে দেরি হচ্ছিল।
এট্টা কতা বটে” —কথাটা কী?
উত্তর: এখানে কথাটি হল—“সরকার ঘর করতে খরচা দেবে।”
১৬. কারা, কেন উচ্ছবদের গ্রাম থেকে কলকাতায় যাচ্ছিল?
উত্তর: উচ্ছবদের গ্রাম থেকে বাসিনীর বোন এবং ভাজ কিছুকাল ঠিকে কাজ করার উদ্দেশ্যে কলকাতায় যাচ্ছিল।
২০. সতীশ মিস্তিরির কী কী ধানে মড়ক লেগেছিল?
উত্তর: হরকুল, পাটনাই এবং মোটা—সতীশ মিস্তিরির এই তিনপ্রকার ধানেই মড়ক লেগেছিল।
২১. উচ্ছবকে কাঁদতে দেখে সাধনবাবু কী বলেছিল?
উত্তর: উচ্ছবকে কাঁদতে দেখে সাধনবাবু জানতে চেয়েছিল, মনিবের ধান নষ্ট হওয়ায় উচ্ছব কেন কাঁদছে।
প্রশ্ন “বাদায় এদের চাল হয়!”—‘বাদা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘বাদা’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল নিম্নভূমি বা জঙ্গলাকীর্ণ ভূমি। এই
ধরনের জমিতে জলের অভাব থাকে না বলে ধান ভালো হয়।
প্রশ্ন লোকটি কী নামে পরিচিত?
উত্তর: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পে লোকটির নাম উৎসব হলেও সে উচ্ছব নাইয়া নামে পরিচিত ছিল।
প্রশ্ন . শ্রাদ্ধ করার জন্য কাকে খবর দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: শ্রাদ্ধ করার জন্য পুরোহিত মহানাম শতপথিকে খবর দেওয়া হয়েছিল।
প্রশ্ন উৎসবের স্ত্রী-সন্তান কীভাবে মারা যায়?
উত্তর: এক রাতে মাতলা নদীর প্রবল বন্যায় উৎসবের স্ত্রী-সন্তান জলে ভেসে গিয়ে মারা যায়।
প্রশ্ন ঝড়বৃষ্টির রাতে উচ্ছব কী কী খেয়েছিল?
অথবা, “সেই সন্ধ্যেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল।”—সে কী খেয়েছিল?
উত্তর: ঝড়বৃষ্টির সন্ধ্যায় উচ্ছব অনেকটা ট্রিঞ্জে শাক সেদ্ধ এবং গুগলি সেদ্ধ, মুন ও লংকাপোড়া দিয়ে ভাত মেখে খেয়েছিল।
প্রশ্ন “খেতে খেতে চন্নুনীর মা বলেছিল...” – কী বলেছিল?
উত্তর: চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলেছিল যে, দেবতার লক্ষণ ভালো নয় যারা নৌকা নিয়ে বেরিয়েছে তারা নৌকা-সহ না ডুবে মরে।
প্রশ্ন . “ব্যাস্, সব খোলামেলা, একাকার তারপর থেকে।”—সব একাকার হয়ে যায় কখন থেকে?
উত্তর: ঝড়বৃষ্টির রাতে হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানিতে উচ্ছব, যখন মাতাল মাতলার সফেন জলকে ছুটে আসতে দেখে তারপর থেকেই সব একাকার হয়ে যায় তার।
প্রশ্ন কী হলে “উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত”?
উত্তর: চন্নুনীদের অর্থাৎ বউ-ছেলেমেয়েকে যদি ভগবান বাঁচিয়ে রাখতেন, তাহলে উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত।
প্রশ্ন . বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে মারা না গেলে বিপর্যয়ের পর কী করত উচ্ছব?
উত্তর: বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে মারা না গেলে উচ্ছবরা সবাই মিলে তাদের টিনের মুখবন্ধ কৌটোটা নিয়ে ভিয়ে বেরোত।
প্রশ্ন “গতীশবাবুর নাতি ফুট খায়।” –সতীপবাবু কে ছিল?
উত্তর: সতীশ মিস্তিরি ছিল ধনী কৃষক, যার জমিতে কাজ করে উচ্ছব দিন গুজরান করত।
প্রশ্ন এ মুখবন্ধ টিনের কৌটোটা কোথা থেকে পেয়েছিল উচ্ছব?
উত্তর: সতীশবাবুর নাতির বেবি ফুডের মুখবন্ধ টিনের কৌটোটা উচ্ছবের পছন্দ হয় বলে সতীশবাবুর কাছ থেকে সে কৌটোটা চেয়ে এনেছিল |. "তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল..."-তান্ত্রিকের পুরোনো বিধানটা কী ছিল?
উত্তর: তান্ত্রিকের পুরোনো বিধান ছিল যে, হোমে বসার আগে যেন তাড়াতাড়ি খাওয়াদাওয়া সেরে ফেলা হয়।
প্রশ্ন “তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল...” – তান্ত্রিকের নতুন বিধান কী?
উত্তর: তান্ত্রিক নতুন বিধান হল যে, হোমের আগেই সব কিছু রান্না করে রাখতে হবে, কিন্তু খেতে হবে হোমের পরে।
প্রশ্ন বাসিনী উচ্ছবকে লুকিয়ে খাবার দিতে কী অজুহাতে উঠোনে এসেছিল?
উত্তর: বাসিনী ঝুড়িবোঝাই শাক ধুতে আসার অজুহাতে উচ্ছবকে লুকিয়ে খাবার দিতে উঠোনে এসেছিল।
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ভাত ৫ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর|ভাত বড় প্রশ্ন উত্তর pdf,
প্রশ্ন | 'ভাত খাবে কাজ করবে।—কী প্রসঙ্গে, কে এ কথা বলেছে? উদ্দিষ্ট লোকটি কীভাবে কী কাজ করল? [১+১+৩]
প্রসঙ্গ : প্রথম থেকেই লোকটার চাহনি বড়োবাড়ির বড়ো বউয়ের ভালো লাগেনি। উগ্র চাহনি। খুব খাটো ময়লা লুঙ্গি কোমরে জড়ানো। বুনো বুনো চেহারা। এ নিয়ে লোকটার সম্পর্কে বড়ো বউয়ের প্রশ্ন।
উক্তির বক্তা : আর সেই প্রসঙ্গেই ‘ভাত খাবে কাজ করবে, কথাটা বলেছে বামুন ঠাকুর।
কীভাবে কী কাজ করল : লোকটার নাম উৎসব। কিন্তু তার পরিচয় উচ্ছব নাইয়া, পিতা হরিচরণ নাইয়া, এই নামে। মাতলা নদীর পাড়ে বাদা অঞ্চলে বাস। গরিব হাভাতে শ্রেণির মানুষ। তুমুল ঝড়-জলে আর মাতলার সফেন জলোচ্ছ্বাসে তার স্ত্রী-পুত্র-মেয়ে মারা গেছে। নিঃস্ব, গৃহহারা, নিরন্ন ও ক্ষুধার্ত হয়ে অশেষ দুঃখকষ্ট ও শোকে দিন কাটছিল। বড়োবাড়ির চাকরানি বাসিনী তাকে এনেছে বড়োবাড়ির হোম-যজ্ঞির কাঠকুটো কাটতে। ভাত খাওয়ার বিনিময়ে সে এ কাজ করবে। বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল গাছের কাঠ এসেছে আধমন করে। মোট আড়াই মন কাঠ। যজ্ঞের জন্য নির্দিষ্ট মাপ করে কাটারি দিয়ে উচ্ছব কাঠ কাটতে থাকে। তারই মাঝে ভাতের খিদে তাকে অস্থির করে। অবশ্য ভাতের আশাই তাকে শক্তি জোগায়। কাজের মাঝেই গরম ভাতের গন্ধ তাকে উতলা করে। তার ভাতের খিদে চাগিয়ে ওঠে। তার হাতের ভারী ও ধারালো কাটারিখানা কাঠের ওপর নামে আর ওঠে। মাঝে হাত ওঠানামা বন্ধ হতেই বড়ো পিসি তাগিদ দেয়, ‘কী হল, হাত চালাও বাছা। ওদিকে শুষচে কত্তা। হোম হবে।’ ‘বড় খিদে লেগেছে মা গো ! উচ্ছবের গলায় কাতর মিনতি ঝরে। পিসি কয়, ‘এই শোন কতা। ভাত নামলেও খাওয়া নেই এখন। তান্ত্রিকের নতুন বিধান হল, সর্বস্ব রেঁধে রাখো, হোম হলে খেও। তুমি হাত চালাও। বাধ্য হয়ে উচ্ছবের হাত চলতে থাকে। কাঠ কাটা শেষ হলে আড়াই মন কাঠ পাঁচ ভাগ করে রেখে আসে দালানে।
প্রশ্ন | “তাঁর বিয়ে হয়নি।”—‘তাঁর’ বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর বিয়ে না হওয়ার কারণ কী? তাঁর বাড়িতে কত রকমের চাল ছিল?
উত্তর মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে ‘তাঁর’ বলতে বড়োপিসিমার কথা বলা হয়েছে।
→ বড়োপিসিমা এ বাড়ির বউদের পিসিশাশুড়ি হন। এত বড়ো বাড়ির মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিয়ে হয়নি। তাঁর অবিবাহিত থাকা সম্বন্ধে নানা জনে নানা ব্যাখ্যা দেয়। প্রথমত, চারপাশের সবাই বলে যে, বড়ো বাড়ির সংসার সামলানোর জন্যই নাকি পয়সা থাকা সত্ত্বেও বড়োপিসিমার বিয়ে দেওয়া হয়নি। বড়োপিসিমা যখন বিয়ের উপযুক্ত হন, তখন এ বাড়ির জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে। ফলে তখন বড়োকর্তা সংসার নিয়ে নাজেহাল হচ্ছিলেন। তাই আর তিনি কন্যার বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেননি। দ্বিতীয় মত হল, বড়োপিসিমা নিজেই নাকি বলেছিলেন, শিবঠাকুরই তাঁর পতিদেবতা। তাই কোনো মানুষের সঙ্গে বড়োপিসিমা তাঁর বিয়ে দিতে বারণ করেছিলেন | বড়ো বাড়ির লোকেরাও তেমনটাই বিশ্বাস করে।
→ বড়োপিসিমার বাড়িতে অনেক প্রকারের চাল মজুত করা ছিল। নিরামিষ ডাল ও তরকারির সঙ্গে খাওয়া হত ঝিঙেশাল চালের ভাত | মাছ রান্না হলে রামশাল চালের ভাত করা হত। বড়োবাবু খেতেন কনকপানি চালের ভাত। মেজো এবং ছোটো ছেলে বারোমাস পদ্মজালি চালের ভাত খেত। এ ছাড়া, রাঁধুনি ও পরিচারিকাদের জন্য রান্না হত সাধারণ মোটা-সাপ্টা চাল | অৰ্থাৎ চরিত্রভেদে এবং ব্যঞ্জনভেদে সেখানে আলাদা আলাদা চালের ভাত রান্না হত।
দ্বাদশ শ্রেণির ভাত গল্প বড় প্রশ্ন উত্তর|
প্রশ্ন |মহাশ্বেতা দেবীর 'ভাত' ছোটোগল্প অবলম্বন করে ঝড়জল- বন্যার রাতটির বর্ণনা দাও।
উত্তর মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে ঝড়জল বন্যার যে রাত উচ্ছবকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছিল, সেদিন সন্ধ্যাতেই অনেকদিন পর সে সপরিবারে পেট পুরে খেয়েছিল। খেতে খেতে চন্নুনীর মা বলেছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। নৌকা নিয়ে যারা বেরিয়েছিল, তাদের নৌকাসহ ডুবে মরে যাওয়ার আশঙ্কাও সে প্রকাশ করেছিল। এরপরই শুরু হয় প্রবল ঝড়বৃষ্টি। ঝড়বৃষ্টিতে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝখুঁটিটি ‘মাতাল আনন্দে টলছিল' ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই উচ্ছব সর্বশক্তিতে ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা মাটির দিকে চেপে ধরে ছিল। কিন্তু তার মনে হচ্ছিল মা বসুন্ধরা যেন সেই খুঁটি রাখতে
প্রশ্ন | “যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে তাই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল।”—দুর্যোগটির বর্ণনা দাও। দুর্যোগটি উচ্ছবকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল ? ৩+২ [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৬]
● উত্তর মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে আমরা দেখি, দুর্যোগের দিন সন্ধ্যাবেলায় চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। নৌকা নিয়ে যারা বেরিয়েছিল, নৌকা-সহ তাদের ডুবে মরার আশঙ্কাও সে প্রকাশ করেছিল। এরপরই শুরু হয় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি | সেই দুর্যোগে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝখানের খুঁটিটি ‘মাতাল আনন্দে টলছিল’ ধনুষ্টংকার রোগীর মতো| তাই ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা উচ্ছব মাটির দিকে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরেছিল এবং ভয়ে ভগবানের নাম নিচ্ছিল। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েদের জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় আর ভয়ে কাঁপছিল। এসময় হঠাৎ বিদ্যুতের আলোর ঝলকানিতে উচ্ছব দেখে, মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে | নিমেষের মধ্যে সেই বানের জল উচ্ছবের বউ-ছেলেমেয়েকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় | গাছে বেঁধে কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে যায় উচ্ছব।
→ ঘটনার আকস্মিকতায় সাময়িকভাবে উচ্ছবের বুদ্ধি লোপ পায়। বউ- ছেলেমেয়ে-সহ সবকিছু ফিরে পাবার আশায় শুনসান বাড়ি ছেড়ে তাই সে নড়ে না। লঙ্গরখানায় দেওয়া খিচুড়ি তাই তার খাওয়া হয় না। কয়েকদিন পর সরকার শুকনো চাল দিলে দীর্ঘদিন যাবৎ উপোসি উচ্ছব তা চিবিয়েই কয়েকদিন কাটায় | এরপর সে ভাত খাওয়ার জন্য পাগল হলেও কেউ তাকে ভাত দেয় না। এ সময় মাঝে-মাঝেই তার মনে পড়ে সেই দুর্যোগের রাতটার কথা। তার মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেয়ে সে ভূত হয়ে যাচ্ছে, ভাত খেলেই সে পুনরায় মানুষ হবে এবং বউ-ছেলেমেয়ের দুঃখে কাঁদতে পারবে। তাই কয়েকদিন পেট পুরে ভাত খেতে সে কলকাতা রওনা হয়।
প্রশ্ন |“তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু!”—সতীশবাবু কী বুঝবে না? সতীশবাবু উচ্ছবের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল? ২+৩
অথবা, “দেশজোড়া দুর্যোগেও তোমার ঘরে রান্না হয়” —‘তোমার’ অর্থে কার কথা বলা হয়েছে? উদ্ধৃতির আড়ালে যে সামাজিক বৈষম্যের দিকটি আছে, তা আলোচনা করো। ২+৩
উত্তর এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে উচ্ছব নাইয়া মন্তব্য করেছে যে, সতীশবাবু ভাত না খেতে পারার জ্বালা বুঝতে পারবে না।
● সতীশবাবু অবস্থাপন্ন গৃহস্থ। উচ্ছবদের মতো নদীর পাড়ে তার বাড়ি নয় আর মেটে ঘরেও সে থাকে না। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে তার পাকা বাড়ি তাই ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা নেই। এ ছাড়া ধান, চালও সে পাকা ঘরে রেখেছে। ফলে চোর- ডাকাতের পক্ষেও তা চুরি করা সম্ভব নয়। দেশজুড়ে যখন দুর্যোগ চলছিল, লঙ্গরখানা খোলা হয়েছিল, তখনও সতীশবাবুর ঘরে রোজ রান্না হয়েছে। তাই ঘরবাড়ি এবং স্ত্রী-পুত্র হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়া উচ্ছবদের মতো হতদরিদ্র মানুষের ক্ষুধার জ্বালা সতীশবাবুর মতো নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা লোকেরা কিছুতেই বুঝতে পারবে না। মাতাল মাতলা নদীর আগ্রাসী ঢেউয়ে উচ্ছব ভিটেমাটি, স্ত্রী-সন্তানদের হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। খিদের জ্বালায় সতীশবাবুর কাছে উচ্ছব একদিন ভাতের প্রার্থনা করলে সতীশবাবু তাকে ফিরিয়ে দেয়। উচ্ছবকে খেতে দিলে পঙ্গপালের মতো দলে দলে অভুক্ত মানুষ তার কাছে এসে জড়ো হবে। সতীশবাবু তাই উচ্চবকে জানায় যে, ভগবানের মারের হাত থেকে সে উচ্ছবকে বাঁচাতে পারবে না। এর কিছুদিন পরই সতীশবাবু তার ভাগচাষি, অভাগা উচ্ছব সম্বন্ধে মন্তব্য করে যে, উচ্ছবের মতিভ্রম হয়েছে। বউ-সন্তানদের অপঘাতে মৃত্যু হলে মানুষযেখানে শোকে পাগল হয়ে যায়, সেখানে উচ্ছব ‘ভাত ভাত’ করে মরছে।সতীশবাবু উচ্ছবের সঙ্গে এমনই অমানবিক আচরণ করেছিল।
প্রশ্ন |“নইলে দেহে ক্ষমতা ছিল না।”—কার দেহে ক্ষমতা ছিনা? কেন ক্ষমতা ছিল না? ১+৪
উত্ত এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উক্তিটিতে উচ্ছব নাইয়ার দেহের ক্ষমতার অভাবের কথা বলা হয়েছে।
→ পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকায় মাতলা নদীর তীরবর্তী কোনো এক অঞ্চলেস্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভরা সংসার ছিল উচ্ছবের | কিন্তু একদিন শীতের রাতে সেখানে প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় | মাতাল মাতলার জল ভাসিয়ে নিয়ে যায় উচ্ছবের ঘরবাড়ি এবং স্ত্রী-সন্তানদের | পরদিন সকাল থেকে উদ্গ্রীব হয়ে উচ্ছব খুঁজে বেড়াতে থাকে তার হারিয়ে যাওয়া বউ এবং ছেলেমেয়েকে। ঘটনার আকস্মিকতায় শোকে পাগল হয়ে যায় উচ্ছব। নিজের পরিবারকে হয়রান হয়ে খোঁজার জন্য লঙ্গরখানা থেকে দেওয়া খিচুড়িও তার আর খাওয়া হয় না। তারপর যেদিন সে স্বাভাবিক হয়, সেদিন থেকে খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কিছুদিন সরকার প্রদত্ত কাঁচা চাল জল দিয়ে চিবিয়ে খেলেও ভাতের অভাবে উচ্ছবের শরীর ক্লান্ত, দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এর ওপর স্ত্রী- সন্তানদের হারিয়ে মানসিকভাবে সে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে, তার শারীরিক সক্ষমতা এই ঘটনায় অনেকটা হ্রাস পেয়েছিল। তাই কলকাতায় গিয়ে গ্রামজুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে সে পেটভরে ভাত খাওয়ার আশাতেই অনেক কষ্টে কাঠ কাটার কাজটা করতে পেরেছিল।
Class 12 bengali rice question answer pdf
প্রশ্ন |১“মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।”—কারা, কেন উচ্ছবকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়?
উত্তর এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে আমরা উচ্ছব নামক একটি চরিত্রের সাক্ষাৎ পাই। মাতলা নদীর বন্যায় স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের হারিয়ে পাগল হয়ে যাওয়া উচ্ছব বেশ কিছুদিন অভুক্ত থাকার পর ভাতের আশায় তার গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিবের বাড়ি কলকাতায় চলে আসে। সেখানে ভাত খাওয়ার বিনিময়ে তাকে সেই বাড়ির বুড়োকর্তার আয়ুবৃদ্ধির জন্য করা হোমযজ্ঞের কাঠ কাটতে হয়েছিল। এদিকে তান্ত্রিকের বিধান অনুযায়ী, যজ্ঞ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু খাওয়া বারণ ছিল। তাই খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে-পড়া উচ্ছবও ভাত খেতে পারেনি। মাঝে বাসিনীর দেওয়া ছাতু জল খেয়ে খিদে মেটানোর চেষ্টা করে উচ্ছব | যদিও এই সামান্য খাবারে তার পেট ভরেনি । কাঠ কাটা শেষ করে বাড়ির বাইরে গিয়ে উচ্ছব তাই শিবমন্দিরের বারান্দায় বসে। সেখানে শুয়ে ক্লান্তির ভারে, ক্ষুধার তাড়নায় এবং স্ত্রী-সন্তানের স্মৃতিতে শোকাতুর হয়ে কাঁদতে কাঁদতে একসময় সে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম ভাঙার পরে সে বুঝতে পারে, বাড়ির কর্তা প্রয়াত হয়েছেন এবং অশৌচ লাগার জন্য রান্না করা সব ভাত বাইরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে । বহুদিন ধরে ভাত-উপোসী উচ্ছব বাসিনীর ফেলে- দিতে-আসা ভাতের ডেকচি নিয়ে হনহনিয়ে খানিকটা হেঁটে, পরে এক দৌড়ে স্টেশনে গিয়ে মনের সুখে ভাত খায় | অনেকদিন পরে আশ মিটিয়ে ভাত খেয়ে স্টেশনেই তৃপ্ত উচ্ছব সেই পেতলের ডেকচিটি জাপটে, তার কানায় মাথা ছুঁয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে পুলিশ ঘুমন্ত উচ্ছবকে স্টেশনেই ধরে ফেলে এবং পেতলের ডেকচি চুরির অপরাধে তাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়।
=
প্রশ্ন | “বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন।”—‘বাদা’ কাকে বলে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এই রকম মনে হওয়ার কারণ কী? ১+৪ [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৬]
উত্তর মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে থাকা ‘বাদা’ শব্দটির অর্থ হল জল-জঙ্গলপূৰ্ণ নীচু জমি |
→ ঝড়বৃষ্টির যে রাতে উচ্ছব তার স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাকে হারিয়েছিল, সেদিন সন্ধ্যায় উচ্ছব পেট ভরে সপরিবারে ভাত খেয়েছিল। তারপর সর্বস্বান্ত উচ্ছব তার বন্যাবিধবস্ত ভিটেতে উন্মাদের মতো কয়েকদিন পড়ে থাকায় লঙ্গরখানার ‘রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি’ | তার যখন সম্বিত ফেরে তখন রান্না খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। কাঁচা চাল চিবিয়েই তাই তার দিন কাটতে থাকে ৷ দীর্ঘদিন ভাত না খাওয়া উচ্ছব ভাবে, “পেটে ভাত নেই ব’লে উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে । ভাত খেলে সে মানুষ হবে।” উচ্ছব যার জমিতে কাজ করত, সেই সতীশ মিস্তিরিও যখন তাকে একবারের জন্যও ভাত দিতে অস্বীকার করে, তখন সে ভাতের আকাঙ্ক্ষাতেই কলকাতায় গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে আসে। সেখানে পেটভাতের চুক্তিতে কাঠ কাটার কাজে সে লেগে যায়। সুন্দরবনের নোনা জলের বাদার অধিবাসী উচ্ছব দেখে যে, বাসিনীর মনিবদের মিষ্টিজলের বাদায় হওয়া নানাপ্রকার চালে তাদের ঘর ভরে আছে। কিন্তু সেদিনই সে বাড়ির বুড়োকর্তার মৃত্যু হলে তারা যখন বাড়ির সমস্ত ভাত এবং অন্যান্য রান্না খাবার ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তখন পরিশ্রান্ত, অভুক্ত উচ্ছব আর মাথা ঠিক রাখতে পারে না। বাসিনীর হাত থেকে অশৌচ বাড়ির ভাতের ডেচকিটা ছিনিয়ে নিয়ে সে স্টেশনে ছুটে আসে এবং সেখানে বসে ডেচকিতে হাত ঢুকিয়ে খাবল খাবল ভাত খেতে থাকে সে। তার স্ত্রী তাকে এমন সুখ দিতে পারেনি কখনোই | বাস্তবিকই স্বৰ্গসুখ লাভ করে উচ্ছব। এ কারণেই তার তখন মনে হয়, মিঠে জলের বাদার ভাত খেলেই সে ‘আসল বাদা’ অর্থাৎ ‘অন্নের দেশ’-এর খোঁজ পেয়ে যাবে।
HS bengali vat question answer pdf
প্রশ্ন |“বাসিনী এনেছে। বাদায় অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি।” –বাসিনী কে? ও কাকে এনেছে? তার ভাতের আহিংকে এতখানি কেন? ১+১+৩ [কারমেন্স হাই স্কুল]
উত্তর মহাশ্বেতী দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিতে উল্লিখিত বাসিনী হল বড়ো বাড়ির পরিচারিকা।
● বাসিনী তার গ্রাম সম্পর্কিত দাদা উচ্ছবকে তার মনিবের বাড়িতে এনেছে।
● ‘ভাত’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছবের জীবনে এক ঝড়বৃষ্টির রাতে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। যেদিন মাতলার বানে তার বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যায়। সেদিন সন্ধ্যাতেই উচ্ছব বউ-ছেলেমেয়ে সহ পেট পুরে ভাত খেয়েছিল বহুদিন পর। সেই বন্যার রাতের পর জল নেমে গেলেও কয়েকদিন ধরে সে তার ভিটেয় পড়েছিল প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আশায় | ফলে লঙ্গরখানার ‘রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি। রান্না খিচুড়ি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে তার সংবিৎ ফিরে আসে। ফলে কয়েকদিনের উপবাসের পর সে বেশ কয়েকদিন কাঁচা চাল চিবিয়েই কাটিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেতে পেয়ে দিশেহারা উচ্ছব ভেবেছিল, “পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে। ভাত খেলে সে মানুষ হবে। তখন বউ ছেলে মেয়ের জন্য কাঁদবে।” যার জমিতে সে কাজ করে সেই সতীশ মিস্তিরি যখন তাকে একদিনের জন্যও ভাত খেতে দিতে অরাজি হয়, তখন সে পেট ভরে ভাত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষাতেই গ্রামজুতো বোন বাসিনীর কলকাতাস্থ মনিবের বাড়িতে আসে। সুন্দরবনের বাদায় বাস করা উচ্ছবের একারণেই ‘ভাতের আহিংকে এতখানি' ছিল।
প্রশ্ন | মহাশ্বেতা দেবীর লিখিত 'ভাত' গল্প অবলম্বনে টাকুর চরিত্র আলোচনা করো।
মহাশ্বেতা দেবীর লেখা 'ভাত' গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব। উচ্ছব দিনমজুর। নিরন্ন ভুখা মানুষ। স্ত্রী-পুত্র-কন্যাহারা, গৃহহারা। ভাতের আহিংকে তার তীব্র। বাদা অঞ্চলের মানুষ হয়েও সে হাভাতে।শোকসত্তাপ ও প্রিয়জনের প্রতি আন্তরিক টান এক রাতের তুমুল ঝড়-বৃষ্টিতে ও মাতলার জলোচ্ছ্বাসে স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ও ঘরদোর হারিয়ে উচ্ছব হয়ে যায় গৃহ ও স্বজনহারা। সে-দুঃখ, সে-শোক উচ্ছবকে যেন পাগল করে তোলে। খাওয়ার কথা সে ভুলে যায়। ত্রাণের বিলি করা রান্না খিচুড়ি তার মুখে ওঠে না। তার ওই শোকসন্তপ্ত অবস্থা তার প্রিয়জনের প্রতি যে মমত্ব ও আন্তরিক টান, সে পরিচয়ই বহন করে।
ভাতের তীব্র আহিংকে : শোকসত্তাপ সামলে সে যখন সংবিৎ ফিরে পায়, তখন ভাতের খিদে তাকে অস্থির ও ব্যাকুল করে তোলে। তার ভাতের আহিংকে তীব্রতর হয়। বাসিনীর মনিবের বাড়ি কলকাতায়। বড়ো বাড়ি। সে বাড়িতে ‘ভাত খাবে কাজ করবে' এই শর্তে কাজে লেগে যায়। বহু কাঙ্ক্ষিত ভাত হাতে আসায় কী তীব্র গতিতে
খিদে মেটানো: বাবুর বাড়িতে হোমের কাঠ কাটার ফাঁকে ফাঁকে ফুটন্ত ভাতের গন্ধ উচ্ছবের ভাতের খিদেকে উতলা করে তোলে। বাসিনীর কাছে একমুঠো চাল মুখে ফেলে জল খেতে চায়। বড়ো পিসির কাছে আবদার করে অকপটে বলে, বড় খিদে লেগেছে মাগো।' ভাত খেয়ে খিদে মেটানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা তাকে অস্থির করে, কিন্তু বাধায় বাধায় রান্না ভাত তার অধরা থেকে যায়। বুড়ো কর্তার মৃতদেহ শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর বাড়ির অশুচি ভাত ফেলে দেওয়ার জন্য বাসিনী বাড়ির বাইরে এলে তার হাত থেকে ভাতের ডেকচি উচ্ছব নিজের হাতে তুলে নিয়ে দৌড় লাগায়। প্রায় এক নিশ্বাসে স্টেশনে পৌঁছে গিয়ে খাবলের পর খাবল ভাত খেতে থাকে। যেন দুর্ভিক্ষপীড়িত ভুখা মানুষের খিদে মেটানো।
মানবিক গুণের পরিচয় : তার ভাতের খিদের কাছে শুচি- অশুচির বিধিনিষেধ তুচ্ছ হয়েছে। বাসিনী অশুচির কথা তুলতে বাদার কামটের মতো দাঁত বের করে হিংস্র ভঙ্গি করেছে উচ্ছব। তবে ভাতের স্পর্শে সে স্বর্গীয় সুখ অনুভব করেছে। তার মৃত স্ত্রী- পুত্র-কন্যার ক্ষুধার কথা মনে হওয়ায় ওই মর্মান্তিক দুঃখের মধ্যেও সান্ত্বনা পেতে চেয়েছে এই ভেবে যে, তার খাওয়ার মধ্য দিয়ে তারাও খাচ্ছে। আর তার মনে হয়েছে, ভাত খেয়ে শরীরে বল পেলে বাবুদের বাদাটার খোঁজ সে করবে। খোঁজ পেলে শুধু নিজের জন্যে নয়, দেশে তার মতো হা-ভাতে গরিবদেরও সন্ধান দেবে। এসবঅনুভূতি ও ভাবনার মধ্য দিয়ে তার মানবিক গুণের পরিচয় মেলে। দুর্ভাগ্যের কথা, ওই পয়মন্ত বাদার সন্ধান সে পায়নি।
[TAG]: দ্বাদশ শ্রেণি ভাত, ভাত mcq,উচ্চমাধ্যমিক বাংলা বড় প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা প্রশ্ন উত্তর,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভাত প্রশ্ন ,দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ভাত ৫ নং প্রশ্ন উত্তর,বাংলা ভাত বড় প্রশ্ন উত্তর