অষ্টম শ্রেণি ইতিহাস ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া প্রশ্ন উত্তর pdf | অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর pdf
ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া অষ্টম শ্রেণি ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর pdf | অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর pdf | class 8 history chapter 5 question answer in bengali
আসসালামু আলাইকুম,
তোমাকে আমাদের এই SKGUIDEBANGLA শিক্ষামূলক ওয়েবসাইটে স্বাগতম।
আজকে আমি তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি অষ্টম শ্রেণির ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া প্রশ্ন উত্তর pdf। অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস সহযোগিতা ও বিদ্রোহ প্রশ্ন উত্তর।অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস সহযোগিতা ও বিদ্রোহ প্রশ্ন উত্তর। class viii history chapter 5 question answer | অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া প্রশ্ন উত্তর pdf |class 8 history 5 chapter question answer pdf যা অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ যা আগত অষ্টম শ্রেণির টেস্ট ও ফাইনাল পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবে তোমাকে সাহায্য করবে ।
তাই দেড়ি না করে এই পোস্টের অষ্টম শ্রেণির ইতিহাসে ৫ নম্বর অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস অধ্যায় ৫ প্রশ্ন উত্তর , গুলো ভালো করে পড়ে নাও বা নীচে দেওয়া Download লিংকে ক্লিক করে ক্লাস 8 ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম অধ্যায় pdf download, Class 8 history five chapter questions answers pdf download করে নিতে পারো। এবং প্রতিদিন বাড়িতে বসে YouTube Live Class এর মাধ্যমে ক্লাস করতে চাইলে আমাদের YouTube Channel এ ভিজিট করো ও Subscribe করে নাও।
অষ্টম শ্রেণি ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর pdf download,অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস অধ্যায় ৭ প্রশ্ন উত্তর , অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় SAQ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর |
১. ভারতে ইংরেজি শিক্ষা প্রচলনে সরকারের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তরঃ ইংরেজ অনুগত দেশীয় কর্মচারীকুল সৃষ্টি করা।
২ .‘ভদ্রলোক’ কারা?
ঊনবিংশ শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত দেশীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণি ‘বাবু সম্প্রদায়’ বা ‘ভদ্রলোক’ বলে পরিচিত ছিল।
৪ .জেমস অগাস্টাস হিকি কে ছিলেন?
উত্তরঃ ‘বেঙ্গল গেজেট’ বা ‘হিকি’-র গেজেট পত্রিকার সম্পাদক।
৫ হিকি-র গেজেট প্রথম কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে।
6.ভারতে ইংরেজি ভাষার প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা কী?
উত্তরঃ হিকি-র গেজেট।
৭ বাংলায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র কী?
উত্তরঃ হিকি-র গেজেট।
৮ বাংলা ভাষার প্রথম মাসিক পত্রিকা কী?
উত্তরঃ দিগদর্শন।
৯ ‘দিগদর্শন’ কবে প্রথম প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে।
১০ গঙ্গাসাগরে কন্যাসন্তান বিসর্জন কবে আইন-বলে বন্ধ করা হয়?
উত্তরঃ ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে।
১১ সতীদাহ প্রথা কী?
উত্তরঃ মৃত স্বামীর চিতায় জীবন্ত স্ত্রীর সহমরণের ঘটনাকে সতীদাহ প্রথা বলা হত।
১২ সতীদাহ প্রথা কবে নিষিদ্ধ হয়?
উত্তরঃ ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ ডিসেম্বর।
১৩ কোন্ ভারতীয়ের উদ্যোগে সতীদাহ প্রথা রোধ করা হয়?
উত্তরঃ রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে।
১৪ ‘বিধবাবিবাহ আইন’ কবে থেকে কার্যকরী হয়?
উত্তরঃ ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই।
১৫ কোন্ ভারতীয়ের উদ্যোগে বিধবাবিবাহ আইন চালু হয়?
উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে।
১৬ ‘নব্যবঙ্গ’ বলতে কাদের বোঝানো হত?
উত্তরঃ কলকাতা হিন্দু কলেজের শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর অনুগামীরা ‘নব্যবঙ্গ’ নামে পরিচিত ছিল।
১৭ ঊনবিংশ শতকে প্রতিষ্ঠিত উত্তর কলকাতার একটি মহিলা বিদ্যালয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ বেথুন স্কুল।
১৮ ‘প্রার্থনা সমাজ’-এর প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ আত্মারাম পাণ্ডুরং।
১৯ ‘প্রার্থনা সমাজ-এর প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ মহাদেব গোবিন্দ রানাডে।
২০ পশ্চিম ভারতে নারীশিক্ষা প্রসারে উদ্যোগী একজন মহিলার নাম লেখো।
উত্তরঃ পণ্ডিতা রমাবাই।
২১ দক্ষিণ ভারতে বিধবাবিবাহ চালু করেন কে?
উত্তরঃ বীরেশলিঙ্গম পাণ্ডুলু।
২২ ‘লোকহিতবাদী' নামে পরিচিত ছিলেন কে?
উত্তরঃ গোপালহরি দেশমুখ।
২৩ মহারাষ্ট্রের নিম্নবর্ণের সমাজসংস্কারক নেতা কে ছিলেন?
উত্তরঃ জ্যোতিরাও ফুলে।
২৪ সাবিত্রীবাঈ কে ছিলেন?
উত্তরঃ বিশিষ্ট সমাজসংস্কারক ও জ্যোতিরাও ফুলে-র স্ত্রী।
২৫ ভারতে আধুনিকতার পথিকৃৎ কে?
উত্তরঃ রাজা রামমোহন রায়।
২৬ ‘আত্মীয় সভা’ কে, কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ রাজা রামমোহন রায়।
২৭ ‘ব্রাত্ম সমাজ’-এর প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ রাজা রামমোহন রায়।
২৮ ‘ব্রষ্মানন্দ’ উপাধি কে লাভ করেন?
উত্তরঃ কেশবচন্দ্র সেন।
২৯ ‘নববিধান ব্রাত্ম সমাজ’-এর প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ কেশবচন্দ্র সেন।
৩০ ‘আর্য সমাজ’ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।
৩১ ‘আর্য সমাজ’ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে।
৩২ ‘শুদ্ধি’ আন্দোলনের উদ্ভাবক কে ছিলেন?
উত্তরঃ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।
৩৩ ‘হিন্দু মেলা’র প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ নবগোপাল মিত্র।
৩৪ শিকাগো বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলন কবে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে।
৩৬ কাকে মুসলমান সমাজের রামমোহন বলা হয়?
উত্তরঃ স্যার সৈয়দ আহমদ খানকে।
৩৯ ‘বিধবাবিবাহ আইন’ কার আমলে কার্যকরী হয়?
উত্তরঃ লর্ড ক্যানিং-এর আমলে।
৪০ ‘সতীদাহ প্রথা’ বিরোধী আইন কে কার্যকরী করেন?
উত্তরঃ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক।
৪১ কোম্পানি আমলে ভারতের প্রথম কৃষকবিদ্রোহ কোনটি,
উত্তরঃ সন্ন্যাসী বিদ্রোহ বা ফকির বিদ্রোহ।
৪২ কোম্পানি আমলে ভারতের প্রথম উপজাতি বিদ্রোহ কোন্টি?
উত্তরঃ চুয়াড় বিদ্রোহ (১৭৬৮–৬৯–১৭৯৯ সাল পর্যন্ত)।
৪৩ সাঁওতাল বিদ্রোহ কবে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৫৫–৫৬ খ্রিস্টাব্দে।
৪৪ সাঁওতাল বিদ্রোহের দুই জন নেতার নাম লেখো।
উত্তরঃ সিধু ও কানহু।
৪৫ সাঁওতাল বিদ্রোহের সমর্থক একটি পত্রিকার নাম লেখো।
উত্তরঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট।
৪৬ ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তরঃ হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
৪৭ মোপালা বিদ্রোহ কোথায় সংঘটিত হয়?
উত্তরঃ দক্ষিণ ভারতের মালাবার উপকূলে।
৪৮ ‘ফরাজি’ কথার অর্থ কী?
উত্তরঃ ইসলাম-নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্যসমূহ।
৪৯ ফরাজি আন্দোলনের সূচনাকারী কে ছিলেন?
উত্তরঃ হাজি শরিয়ত উল্লাহ।
৫০ ফরাজি আন্দোলন কার আমলে চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছেছিল?
উত্তরঃ দুদু মিঞা বা হাজি মহম্মদ মহসিন-এর আমলে।
৫১ মুন্ডা বিদ্রোহ কবে সংঘটিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৯৯–১৯০০ খ্রিস্টাব্দে।
৫৪ ‘ওয়াহাবি আন্দোলন’ ভারতবর্ষে পরিচালনা করেন কে?
উত্তরঃ শাহ ওয়ালিউল্লাহ ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা করলেও প্রকৃত অর্থে এই আন্দোলনের সূচনা করেন রায়বেরিলির সৈয়দ আহমদ খান।
৫৫ ‘দামিন-ই-কোহ’ কথাটি অর্থ কী?
উত্তরঃ পাহাড়ের প্রান্তদেশ বা নিষ্কর জমি।
৫৬ কোন্ কোন্ পত্রিকা নীলচাষিদের পক্ষে দাঁড়ায়?
উত্তরঃ ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ এবং সোমপ্রকাশ।
৫৭ সিপাহি বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহ কবে সংঘটিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে।
৫৮ সিপাহি বিদ্রোহের সূচনাকালে হিন্দুস্থানের সম্রাট কে ছিলেন?
উত্তরঃ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।
৫৯ মহাবিদ্রোহের একজন নেতার নাম করো।
উত্তরঃ নানাসাহেব।
৬১ মোপলা বিদ্রোহ কোথায় হয়েছিল?
উত্তরঃ দক্ষিণ ভারতের মালাবার অঞ্চলে।
৬২ ইয়ং বেঙ্গলের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও।
৬৩ কে কোন্ বইতে নীল চাষিদের অত্যাচারের কাহিনি লিখেছিলেন?
উত্তরঃ দীনবন্ধু মিত্র, নীলদর্পণ নাটকে।
৬৪ ★পণ্ডিতা রমাবাঈ কে ছিলেন?
উত্তরঃ পশ্চিম ভারতের একজন সমাজসংস্কারক।
৬৫ ★শেষ মোগল সম্রাট কে?
উত্তরঃ বাহাদুর শাহ জাফর।
৬৬ ★সত্যশোধক সমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ জ্যোতিরাও ফুলে।
৬৭ কত খ্রিস্টাব্দে বাঁশের কেল্লা ধ্বংস হয়?
উত্তরঃ ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে।
৬৮ ★ব্রাক্ম সমাজ কত খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে?
উত্তরঃ ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে।
৬৯শেষ মোগল সম্রাটের কী পরিণতি হয়েছিল?
উত্তরঃ রেঙ্গুনে নির্বাসিত হন।
৭০ সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদের নাম কী?
উত্তরঃ মঙ্গল পাণ্ডে।
৭১ সিপাহি বিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?
উত্তরঃ লর্ড ক্যানিং।
৭২ ★হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক কে?
উত্তরঃ হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
৭৩ তিতুমির কোন্ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন?
উত্তরঃ ওয়াহাবি আন্দোলনের সঙ্গে।
৭৪ ‘ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ’ কোন্ বিদ্রোহকে বলা হয়?
উত্তরঃ সিপাহি বিদ্রোহকে।
৮১ সিপাহি বিদ্রোহের সময় ইংল্যান্ডের রানি কে ছিলেন?
রানি ভিক্টোরিয়া।
৮২ ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন?
লর্ড ক্যানিং।
৯১ ‘দিকু’ কাদের বলা হত?
উত্তরঃ সাঁওতালদের সমাজে বহিরাগতদের।
৯৩ নীলদর্পণ নাটকটি কে লেখেন?
উত্তরঃ দীনবন্ধু মিত্র।
৯৪ কত খ্রিস্টাব্দে নীলবিদ্রোহ হয়?
উত্তরঃ ১৮৫৯-১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে।
File Details:-
File Name:- Class 8 history chapter 5 short questions answers pdf
File Format:- PDF
File Size:- Mb
File Location:- Google Drive
Download: Click Here to Download
Class 8 ইতিহাস ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া | ক্লাস 8 ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর pdf download।Class 8 history 5th chapter question answer pdf
1.কে, কবে, শিশুকন্যা সাগরে বিসর্জন বন্ধ করেন?
উত্তরঃ ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলি সাগরে শিশুকন্যা বিসর্জনের মতো কুপ্রথা রদ করেন।
2.সতীদাহ প্রথা রদ ও বিধবাবিবাহ প্রচলনের জন্য রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোন্ কোন্ প্রবন্ধ রচনা করেন?
উত্তরঃ সতীদাহ প্রথা রদের জন্য রাজা রামমোহন রায় ‘প্রবর্ত্তক ও নিবর্ত্তকের দ্বিতীয় সম্বাদ' রচনা করেন। অন্যদিকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় ‘বিধবাবিবাহ’ প্রবন্ধে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।
3.ইয়ং বেঙ্গল’ বলতে কাদের বোঝানো হত? ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর তিনজনের সদস্যদের নাম লেখো।
অথবা, নব্যবঙ্গ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকে ডিরোজিওর অনুগামী পশ্চিমি শিক্ষায় শিক্ষিত যুক্তিবাদী যুব সম্প্রদায় 'ইয়ং বেঙ্গল’ বা ‘নব্যবঙ্গ' নামে পরিচিত ছিলেন।
ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর তিনজন সদস্যদের নাম হল- প্যারীচাঁদ মুখার্জি, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, রামতনু লাহিড়ি প্রমুখ।
4.কাকে কেন ‘দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর' হয়?
উত্তর> বীরেশলিঙ্গম পাণ্ডুলুকে বলা হয় 'দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর'। তিনিও বিদ্যাসাগর ঈশ্বরচন্দ্রের মতো দক্ষিণ ভারতে বিধবা- বিবাহ প্রচলন ও নারীশিক্ষা প্রসারে উদ্যোগী হয়েছিলেন।
5. ‘সত্যশোধক সমাজ’ কে প্রতিষ্ঠা করেন? এই সমাজের অবদান কী ছিল?
উত্তরঃ জ্যোতিরাও ফুলে সত্যশোধক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
মহারাষ্ট্র অঞ্চলে নারীশিক্ষার প্রসার, বিধবাবিবাহ প্রচলন ও নিম্নবর্গের মানুষের উন্নতিতে এই সমাজের অবদান ছিল অপরিসীম।
6. ‘আর্য সমাজ’-এর অবদান কী ছিল?
অথবা, আর্য সমাজের লক্ষ্য কী ছিল?
উত্তরঃ ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘আর্য সমাজ’ শুদ্ধি ও গো-রক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে উত্তর ভারতে হিন্দুধর্মের প্রভাব বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বৈদিক আদর্শের ভিত্তিতে হিন্দুধর্ম পুনর্গঠনে উদ্যোগ নিয়েছিল।
7. ‘আত্মীয় সভা’ ও ‘ব্রাহ্ম সমাজ’ কে, কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর> রাজা রামমোহন রায় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ‘আত্মীয় সভা এবং ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ‘ব্রায় সমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন।
8.কে, কী উদ্দেশ্যে হিন্দুমেলা স্থাপন করেন?
উত্তর) নবগোপাল মিত্র 'হিন্দু মেলা’- প্রচলন করেন।
১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই মেলার উদ্দেশ্য ছিল হিন্দুধর্মের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা এবং স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের আদর্শে দেশবাসীকে উজ্জীবিত করা।
9. ব্রাক্ষসভা কে, কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের ২০ আগস্ট রাজা রামমোহন রায় ব্রাঘসভা' প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ি এর নাম পরিবর্তন করে 'ব্রাহ্ম সমাজ' রাখা হয়।
10. সাধারণ জ্ঞানার্জন সমিতি কী?
উত্তর) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে ডিরোজিও অনুগামী নব্যবঙ্গ সম্প্রদায়ের সদস্যগণ ‘সাধারণ জ্ঞানার্জন সমিতি' নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের সর্বাঙ্গীণ অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন এবং তা জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করার উদ্দেশ্যেই এই সভা স্থাপিত হয়।
11.কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুইজন মহিলা গ্র্যাজুয়েটের নাম লেখো।
উত্তর) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুইজন মহিলা গ্র্যাজুয়েটের নাম হল চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়।
12. ‘শ্রীরামপুরত্রয়ী’ কাদেরকে বলা হত?
উত্তর> উইলিয়ম কেরি, মার্শম্যান ও উইলিয়ম ওয়ার্ড—এই তিনজন ধর্মযাজককে একত্রে শ্রীরামপুরত্রয়ী বলা হত।
13.উনিশ শতকের একটি সমাজসংস্কার আন্দোলনের উল্লেখ করো। এই আন্দোলনের পুরোভাগে কে ছিলেন?
উত্তর) উনিশ শতকের একটি সমাজসংস্কার আন্দোলন ছিল ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন'। এই আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন হিন্দু কলেজের তরুণ শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও।
14.ডিরোজিও-কে মনে রাখা হয় কেন?
উত্তর> বিভিন্ন কারণে ডিরোজিও ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। যেমন— ডিরোজিও ছিলেন উনিশ শতকের প্রথমার্ধের একজন উল্লেখযোগ্য সমাজসংস্কারক; (২) তিনি ছিলেন প্রগতিশীল চিন্তাধারার প্রবর্তক; (৩) ধর্মীয় ও সামাজিক গোঁড়ামি এবং কুসংস্কারের বিরোধী; 8 হিন্দু কলেজের স্বনামধন্য অধ্যাপক এবং ৫ ‘নব্যবঙ্গ' বা 'ইয়ং বেঙ্গল' আন্দোলনের নেতা।
15. ভারতে নারীশিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান কী ছিল?
উত্তর) ঊনবিংশ শতকে বাংলা তথা ভারতের নারীমুক্তির আন্দোলনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিদ্যালয় পরিদর্শকের সরকারি পদে থাকার সুবাদে তিনি ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় এবং ১০০টি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছিল ১৮৪৯ সালে বেথুন সাহেবের সহযোগিতায় ‘হিন্দু ফিমেল স্কুল' স্থাপন।
16.কে, কবে সতীদাহ প্রথা নিবারণ করেন?
অথবা, সতীদাহ প্রথার অবসান ঘটে কীভাবে?
উত্তর) রাজা রামমোহন রায়ের সহযোগিতায় গভর্নর জেনারেল উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ ডিসেম্বর এক আইনের মাধ্যমে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেন।
17. কার উদ্যোগে এবং কবে বিধবাবিবাহ আইন পাস হয়?
উত্তর) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে লর্ড ক্যানিং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে বিধবাবিবাহ আইন পাস করেন।
19. রামকৃয় মিশন কে, কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর) ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।
20.'আনন্দমঠ' কে রচনা করেছেন? এই বই-এর মূল উপদেশ কী?
উত্তর) সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘আনন্দমঠ’ রচনা করেন।
এই বই-এর মূল উপদেশ হল স্বদেশপ্রেমই শ্রেষ্ঠ ধর্ম।
21.। শুদ্ধি আন্দোলন কী? এই আন্দোলনের ফল কী হয়েছিল?
উত্তর) ভারতীয় ধর্ম ও সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা অ-হিন্দুদের হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত করা এবং ধর্মত্যাগী হিন্দুদের হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ইত্যাদি ছিল স্বামী দয়ানন্দের শুদ্ধি আন্দোলনের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
শুদ্ধি আন্দোলন অনেকাংশে সাফল্য লাভ করলেও এই আন্দোলনের ফলে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
প্রশ্ন ৩১ ‘ওয়াহাবি’ কথার প্রকৃত অর্থ কী? ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ কে ছিলেন?
উত্তরঃ ‘ওয়াহাবি’ কথার প্রকৃত অর্থ নবজাগরণ।
ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন সৈয়দ আহমদ খান।
প্রশ্ন ৩২| ওয়াহাবিদের আদর্শ কী ছিল?
অথবা, ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য কী ছিল?
উত্তরঃ ‘ওয়াহাবি’ শব্দের অর্থ হল ‘নবজাগরণ’। প্রাথমিকভাবে ওয়াহাবি আন্দোলনের মূল আদর্শ বা লক্ষ্য ইসলামের শুদ্ধিকরণ হলেও পরবর্তীকালে এই আন্দোলন সামন্ততন্ত্র ও ব্রিটিশ-বিরোধী হয়ে ওঠে।
23.তিতুমিরের প্রকৃত নাম কী? তাঁর নির্মিত দুর্গটি কী নামে পরিচিত?
উত্তর) তিতুমিরের প্রকৃত নাম মির নিসার আলি। তাঁর নির্মিত দুর্গটি বাঁশের কেল্লা নামে পরিচিত ছিল।
24.তিতুমিরকে কেন মনে রাখা হয় ?
অথবা, তিতুমির সম্পর্কে কী জান?
উত্তর) তিতুমির ছিলেন বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা। তাঁর নেতৃত্বে বারাসাত বিদ্রোহ ছিল ধর্মীয় আন্দোলনের মোড়কে অত্যাচারী জমিদার, নীলকর ও ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে এক গ্রামীণ প্রতিবাদী আন্দোলন। বারাসাত বিদ্রোহের নায়ক হিসেবেই তিতুমিরকে মনে রাখা হয়।
25.চুয়াড় বিদ্রোহ কবে, কোথায় হয়?
উত্তর) ১৭৬৮ সাল থেকে ১৭৯৯ সালের মধ্যে একাধিকবার চুয়াড় বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। মেদিনীপুর, ঘাটশিলা, বাঁকুড়া অঞ্চলে এই বিদ্রোহ হয়।
26.কোল বিদ্রোহের দুজন নেতার নাম করো।
উত্তর কোল বিদ্রোহের দুজন নেতা ছিলেন বুদ্ধ ভগৎ ও জোয়া ভগৎ।
27.সাঁওতাল বিদ্রোহ কোথায় হয়েছিল এবং কেন?
অথবা, সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ কী?
উত্তরঃ ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে বিহারের ছোটোনাগপুর অঞ্চলের এক বিস্তীর্ণ এলাকায় সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়। এই বিদ্রোহের কারণ ছিল— ১) ইংরেজ কর্মচারী, জমিদার, মহাজনদের লোভ ও লুণ্ঠনের
প্রবৃত্তি; ২ ঋণের জন্য ব্যক্তিগত ও দাসত্বজনিত দুর্দশা; এবং৩ পুলিশের সীমাহীন দুর্নীতি।
28.সাঁওতাল বিদ্রোহের দুজন নেতার নাম করো।
উত্তর) সাঁওতাল বিদ্রোহের দুজন নেতা ছিলেন সিধু ও কানহু।
29. মহাবিদ্রোহের দুটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর) মহাবিদ্রোহের দুটি কারণ হল : (১) রাজনৈতিক—লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করে কুশাসনের অজুহাতে বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যগ্রাস এবং (২) অর্থনৈতিক –১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রায় ১০০ বছর ধরে শোষণের ফলে ভারতের অবশিল্পায়ন এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি।
-
30.১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?
অথবা, সিপাহি বিদ্রোহের পিছনে প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে অভ্যুত্থানের প্রত্যক্ষ কারণ ছিল এনফিল্ড রাইফেলের প্রবর্তন। গুজব রটে যে, এই কার্তুজ গোরু ও শুয়োরের চর্বি দিয়ে তৈরি। তাই এই রাইফেলের কার্তুজ দাঁতে কেটে ভরার সময় ধর্মনাশ হবে, এই আশঙ্কায় হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের সেনারা কার্তুজ ব্যবহারে অসম্মত হয় এবং বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায়।
31. এনফিল্ড রাইফেল কী?
উত্তর কোম্পানি প্রবর্তিত নতুন এক ধরনের রাইফেল, যা ছিল প্রচলিত রাইফেলের চেয়ে বেশি কার্যকরী। এর টোটা দাঁতে কেটে বন্দুকে ব্যবহার করতে হত।
33. ঝাঁসির রানি বিখ্যাত কেন?
উত্তর) ইংরেজ কোম্পানি ঝাঁসি রাজ্য অধিগ্রহণ করলে তার প্রতিবাদে রানি লক্ষ্মীবাঈ সিপাহি বিদ্রোহে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি মহাবিদ্রোহের একজন নেত্রী ছিলেন। যুদ্ধে অসম সাহস ও বীরত্ব দেখানো সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত তিনি সম্মুখ সমরে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জুন মৃত্যুবরণ করেন।
34.বাংলায় নীলবিদ্রোহ কবে হয়েছিল? এই বিদ্রোহের দুজন নেতার নাম লেখো।
উত্তরঃ ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় জমিদার ও নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীলবিদ্রোহ সংগঠিত হয়। এই বিদ্রোহের দুজন নেতা হলেন বিচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাস।
35. বাংলা ভাষায় প্রথম সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকাগুলির নাম লেখো।
উত্তরঃ বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা সমাচার দর্পণ এবং প্রথম মাসিক পত্রিকা দিগদর্শন। শ্রীরামপুর মিশনের মার্শম্যানের সম্পাদনায় পত্রিকা দুটি প্রকাশিত হয়।
অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর pdf | ক্লাস 8 ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
1.ঊনবিংশ শতকে বাংলা তথা ভারতে প্রচলিত সমাজব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকের বাংলা তথা ভারত মধ্যযুগীয় কুসংস্কার দ্বারা আচ্ছন্ন ছিল। মূলত শাস্ত্রধর্মী শিক্ষা ও তা সুবিধাভোগী শ্রেণির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সমাজ ছিল তমসাচ্ছন্ন। সমাজে নারীর সম্মান ছিল অবহেলিত। সতীদাহ ব্যবস্থা, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ সমাজে বহুল প্রচলিত ছিল। আচরণ-সর্বস্বতা ধর্মীয় পঙ্কিলতায় দেশ ডুবে গিয়েছিল। নারীশিক্ষা ছিল চূড়ান্ত অবহেলিত। যুক্তিবাদ বা মানবতাবাদের প্রসার তখনও ঘটেনি, ফলত, সেই সময়কার অচলায়তন সমাজ-ব্যবস্থা মানবজীবনে উন্নতি সাধন করতে পারেনি।
2.নব্যবঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে প্রচলিত ভারতীয় সমাজের উপর সাময়িক কিন্তু সংগঠিত আক্রমণ হেনেছিল নব্যবঙ্গ আন্দোলন। অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান পরিবারের সন্তান ও হিন্দু কলেজের শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও (১৮০৯-১৮৩১ খ্রি.) ছিলেন এই আন্দোলনের মুখ্য কারিগর। তিনি ও তাঁর অনুগামী হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও ছাত্রসমাজ যেমন—সতীদাহ প্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, পৌত্তলিকতা প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সরব প্রতিবাদ গড়ে তোলেন এবং পশ্চিমি যুক্তিবাদী শিক্ষাপ্রসারে ও নারীশিক্ষা বিকাশে সচেষ্ট হন। এ্যানকোয়েবার, জ্ঞানঅন্বেষণ, পার্থেনন, অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন প্রভৃতি পত্রিকা ও
3. সমাজসংস্কারক হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ করো।
উত্তরঃ বাংলার সমাজসংস্কার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান পুরোহিত ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
তিনি নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং মাতৃভাষায় শিশুশিক্ষা প্রসারে ‘কথামালা’, ‘বোধোদয়’, ‘বর্ণপরিচয়’ প্রভৃতি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে বর্ণ আধিপত্যের অবসান, মাতৃভাষার পাশাপাশি পাশ্চাত্য যুক্তিবাদের প্রসার কালীমতি দেবীর কলকাতায় করাই ছিল তাঁর লক্ষ প্রচলন। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই ‘বিধবা বিবাহ' আইন পাস করেন। বিদ্যাসাগর নিজের পুত্রের সঙ্গে এক বিধবার যেমন বিবাহ দিয়েছিলেন, তেমনি তাঁর ছোট্ট কথা প্রভাবে শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ব্রাহ্ম সমাজ-সংস্কারক বিধবা বিবাহ সহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক ১৮৫৫ থেকে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পঁচিশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জন বিধবার পুনর্বিবাহ কাজে অংশ নিয়েছিলেন।
4. মুন্ডা বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?
উত্তর> অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগ থেকে ঔপনিবেশিক আধিপত্য বিরোধী যে উপজাতি বিদ্রোহের সূচনা হয় তার শেষ উল্লেখযোগ্য অধ্যায় ছিল মুন্ডা বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের কারণগুলি ছিল— ইংরেজরা মুন্ডাদের প্রাচীন খুঁৎকাঠি বা যৌথ জমি ব্যবস্থা বিলোপ করে জমিদারি ব্যবস্থার প্রবর্তন করে, যা মুন্ডাদের
অসন্তোষের কারণ হয়ে ওঠে। •
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে মুন্ডা কৃষকরা কর ও দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে ওঠে।
• ইংরেজদের বিচারব্যবস্থায় মুন্ডাদের নিজস্ব আইনকানুন স্বীকৃতি হারায় ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্য মিশনারিরা মুন্ডাদের সনাতন রীতিনীতি ও ধর্মের সমালোচনা করায় মুন্ডারা ইংরেজ-বিরোধী হয়ে ওঠে।
● জমিদার, ইংরেজ কর্মচারী ও মহাজনরা বিনা মজুরিতে বাধ্যতামূলক শ্রমদান বা বেটবেগারি প্রথা চালু করে মুন্ডাদের ওপর শোষণ চালায়। উপরোক্ত কারণগুলির সঙ্গে বিরসার অলৌকিক ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা মুন্ডা আন্দোলনকে সংগঠিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
5. মুন্ডা বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে লেখো।
উত্তর> রাঁচি অঞ্চলে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে ভারতের প্রাচীনতম আদিবাসী জাতি মুন্ডা ব্রিটিশ বিরোধী মুণ্ডা আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের বড়োদিনে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে ছোটোনাগপুরের ডোমবাড়িকে কেন্দ্র করে প্রায় ৪০০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। হিংসা ছিল বিদ্রোহের প্রধান বৈশিষ্ট্য। শেষপর্যন্ত ব্রিটিশ পুলিশবাহিনীর গুলিতে বিরসা মুন্ডা সহ অনেক মুন্ডার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে বিদ্রোহ ধ্বংস হয়। মুন্ডা বিদ্রোহের প্রকৃতি সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যায়, এই বিদ্রোহের ভিত্তি ছিল কৃষি, পন্থা ছিল হিংসা ও লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক। ইতিহাসে মুণ্ডা বিদ্রোহ ‘উলগুলান' বা মহাবিশৃংখলা (Great Tunutt) নামে পরিচিত। যাইহোক, এই বিদ্রোহের ফলেই অবশেষে সরকার মুন্ডাদের স্বার্থ রক্ষার্থে, ছোটোনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন (১৯০৮ খ্রি.) পাস করেন।
6. সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর) সাঁওতাল বিদ্রোহ কেবল সাঁওতালদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, প্রকৃতিগতভাবে এই বিদ্রোহ মূলত কৃষক বিদ্রোহ ছিল। স্থানীয় মুসলিম তাঁতি, তেলি, কামার, ডোম, চামার প্রভৃতি সম্প্রদায় ও পেশার মানুষ এবং নিম্নবর্গের দরিদ্র হিন্দুরাও এই বিদ্রোহে যোগ দেয়। এই বিদ্রোহের ফলস্বরূপ-
(১) সাঁওতাল বিদ্রোহের অবসান হলে বিহারের সাঁওতাল অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে পৃথক সাঁওতাল পরগনা গঠন করা হয়।
২ এই অঞ্চলে সাঁওতালদের প্রচলিত নিজস্ব আইন চালু করা হয়।
(৩) সাঁওতালদের পৃথক উপজাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। চরিত্রগতভাবে এই বিদ্রোহ শুধুমাত্রজমিদার, রাজকর্মচারী ও মহাজন বিরোধী ছিল না— স্পষ্টতই এই বিদ্রোহ ছিল ইংরেজ-বিরোধী উপজাতি বিদ্রোহ।
7. সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা
উত্তর * ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা : বাংলার সমাজসংস্কার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান পুরোহিত ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি ধর্মরহিত সমাজসংস্কারে ব্রতী হয়েছিলেন। তিনি নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং মাতৃভাষায় শিশু শিক্ষা প্রসারে ‘কথামালা’, ‘বোধোদয়’, ‘বর্ণপরিচয়’ প্রভৃতি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে বর্ণ আধিপত্যের অবসান, মাতৃভাষার পাশাপাশি পাশ্চাত্য যুক্তিবাদের প্রসার করাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। তবে তাঁর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ ছিল ‘বিধবাবিবাহ’ প্রচলন। তাঁর প্রচেষ্টায় লর্ড ক্যানিং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই ‘বিধবা বিবাহ’ আইন পাস করেন। তিনি নিজের পুত্রের সঙ্গে এক বিধবার যেমন বিবাহ দিয়েছিলেন, তেমনি তাঁর প্রভাবে শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ব্রাহ্ম সমাজ সংস্কারক বিধবা বিবাহ সহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিয়েছিলেন।
8. নীল বিদ্রোহের কারণগুলি লেখো।
উত্তর নীল বিদ্রোহের কারণ : ১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বিদেশি নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে ব্যাপক কৃষক আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল তা ‘Blue Mutiny' বা নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। প্রধানত একটি অলাভজনক বাণিজ্যিক ফসলের বলপূর্বক উৎপাদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই আন্দোলন গড়ে ওঠে। উনিশ শতকের প্রথম দিকে নীল ব্যাবসা ছিল খুবই লাভজনক। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের সাহায্যে নীলকরদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একচেটিয়াভাবে নীল উৎপাদন করা এবং এদেশে বসবাস করার সুযোগ করে দেয়।
● নীল চাষের সময় কৃষকদের ‘দাদন’ বা অগ্রিম অর্থ দিয়ে তার জমিতে নীল চাষে বাধ্য করা হত। সুদসহ দাদনের অর্থ কৃষকরা কখনোই শোধ করতে পারত না, ‘সমাচার দর্পণ’
পত্রিকার মতে—‘যে চাষি একবার নীলের দাদন নেয় তার মরণ পর্যন্ত খালাস নেই'।
● নীলকরদের পক্ষে নীল উৎপাদন লাভজনক হলেও কৃষকদের কাছে তা লাভজনক ছিল না।
● নীল চাষ ছিল বাধ্যতামূলক। নীল চাষ না করলে চাষিদের ওপর চলত নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচার। ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক ‘পঞ্চম আইন' দ্বারা নীলকরদের অত্যাচার দমন করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়।
10. নীলবিদ্রোহের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর> নীলবিদ্রোহের গুরুত্ব :নীল চাষিদের বিদ্রোহ ভারতের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসে একগৌরবজনক অধ্যায়।এই আন্দোলনের গুরুত্বগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলি হল-ব্রিটিশের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনই ছিল প্রথম সংঘবদ্ধব্যাপক অসহযোগ আন্দোলন। কৃষক, মধ্যবিত্ত ও জমিদার শ্রেণি একত্রে প্রত্যক্ষ বাপরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে একে গণবিদ্রোহের রূপ দান করে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের শক্তি যে কত প্রবল তা এই বিদ্রোহের মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয়েছিল।এই বিদ্রোহের ফলে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সরকার‘বঙ্গীয় নীল চাষ আইন’ তৈরি করে। যেখানে বলা হয়নীল চাষ সম্পূর্ণভাবে কৃষকের ইচ্ছাধীন হবে। এর ফলে বলপূর্বক নীল চাষ বন্ধ হয়। নীল বিদ্রোহের ফলে ব্রিটিশ শোষণনীতির স্বরূপ ভারতের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের কাছে স্পষ্ট হয়। এর ফলে তাঁদের ইংরেজ-বিরোধী মনোভাব তীব্র হয়, জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ঘটে।
11. সিপাহি বিদ্রোহ কবে সংঘটিত হয়? সিপাহিবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল? বিদ্রোহের কয়েকজন নেতৃত্বের নাম লেখো।
উত্তর বিদ্রোহের সময়কাল : সিপাহি বিদ্রোহ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়েছিল।
© বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ : এনফিল্ড রাইফেল-সংক্রান্ত হ ঘটনাই ছিল সিপাহি বিদ্রোহের প্রধান ও প্রত্যক্ষ কারণ। এই সময় কোম্পানি প্রচলিত রাইফেলের পরিবর্তে অধিক কার্যকরী স
ও উন্নত মানের এনফিল্ড রাইফেল প্রচলনের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রটে যায় যে, নতুন রাইফেলের বুলেটে গোরু ও শুয়োরের চর্বি মেশানো আছে। এই বুলেট বা টোটা দাঁতে কেটে ব্যবহার করতে হত। গোরু ও শুয়োরের মাংস খাওয়া যথাক্রমে হিন্দু ও ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নিষিদ্ধ ছিল। ফলে জাত যাবার ভয়ে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের সিপাহিরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
12. মহাবিদ্রোহের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ আলোচনা করো। বিদ্রোহ কেন ব্যর্থ হয়েছিল?
উত্তরঃ মহাবিদ্রোহের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত সিপাহি বিদ্রোহ ভারত ইতিহাসের এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। এক শতাব্দী ধরে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ধূমায়িত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ধর্মীয় এবং সামরিক অসন্তোষের পরিণাম ছিল এই মহাবিদ্রোহ।
মহাবিদ্রোহের রাজনৈতিক কারণ : ১ বিগত একশো বছরে কোম্পানির আগ্রাসী নীতি দেশীয় রাজশক্তির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন করে তুলেছিল।
২) বিশেষ করে লর্ড ওয়েলেসলির অধীনতামূলক মিত্ৰতা নীতি, লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতি, এবং অভিসন্ধিমূলক রাজ্য অধিগ্রহণ নীতি ভারতীয় শাসক গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে। তাঞ্জোর, কর্নাটকের রাজপরিবারের ভাতা বন্ধ, নানাসাহেবের বৃত্তি বন্ধ, মোগল সম্রাটের উপাধি বিলোপ ও প্রাসাদ থেকে বহিষ্কারের মতো ঘটনায় হিন্দু-মুসলমান রাজশক্তির মধ্যে কোম্পানি-বিরোধী ক্ষোভ সৃষ্টি করে। দেশীয় রাজন্যবর্গের এই সমস্ত ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিদ্রোহে রূপান্তরিত হয়।
অর্থনৈতিক কারণ : কোম্পানি শাসনে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক নিদারুণ সংকটের সৃষ্টি হয়—
১ পলাশি লুণ্ঠন, নতুন ভূমি-রাজস্ব ব্যবস্থা, অবশিল্পায়ন, শুল্ক বৈষম্যনীতি প্রভৃতির মাধ্যমে কোম্পানির আর্থিক শোষণ ভারতকে এক রিক্ত রাষ্ট্রে পরিণত করে।
২ অযোধ্যায় তালুকদারি ব্যবস্থা প্রবর্তন, বোম্বে প্রেসিডেন্সিতে ‘ইমন কমিশন’-এর নিষ্কর জমি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত, রাজপৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত বিভিন্ন শ্রেণির ইত্যাদি কর্মচ্যুতি কোম্পানি-বিরোধী অসন্তোষকে তীব্র করে তোলে। ঐতিহাসিক মেটকাফের মতে, অত্যধিক করের বোঝা ও ইংরেজ ব্যবহৃত আইনি ব্যবস্থা, যা মহাজনদের সুবিধা দিয়েছিল, তা ছিল গ্রামাঞ্চলে সৃষ্ট বিদ্রোহের মূল কারণ।
বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ : সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পিছনে মূলত যে কারণগুলি কাজ করেছিল সেগুলি হল—
১ কেন্দ্রীয় সংগঠনের অভাব, ও অনুন্নত মানের অস্ত্রশস্ত্র ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, ৩ নির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট লক্ষ্য ও আদর্শের অভাব, ৪ যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রুটি, ৫ এক শ্রেণির দেশীয় রাজন্যবর্গের নির্লিপ্ততা ও বিরোধিতা, ৬ ক্যাম্বেল, আউট্রাম-এর—মতো যোগ্য সেনাপতির কোম্পানির পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ, ও দেশীয় বুদ্ধিজীবী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিদ্রোহে অংশগ্রহণ না করা, ৮ শিখ, গোৰ্খা প্রমুখ যোদ্ধা জনগোষ্ঠীকে বিদ্রোহ দমনে ব্যবহার প্রভৃতি।
13. সিপাহি বিদ্রোহের প্রকৃতি আলোচনা করো।
উত্তর) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রকৃতি বা স্বরূপ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক বা মতভেদ রয়েছে। যেমন : সিপাহি বিদ্রোহ : স্যার জন লরেন্স, চার্লস রেকস, আর্ল রবার্টস প্রমুখ ইংরেজ ঐতিহাসিকদের মতে, এই বিদ্রোহ নিছক সিপাহি বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছু ছিল না। সমসাময়িক ভারতীয় লেখক দাদাভাই নৌরজি, সৈয়দ আহমদ, দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, কিশোরীচাঁদ মিত্র প্রমুখেরা এই মতকে সমর্থন জানিয়েছেন। যেমন—
জাতীয় বিদ্রোহ : ঐতিহাসিক জে. বি. নর্টন, আলেকজান্ডার ডাফ, জন কে প্রমুখ এই বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, তাঁদের মতে এই বিদ্রোহ প্রথমে সিপাহিদের মধ্যে শুরু হলেও ক্রমশ তা এক জাতীয় বিদ্রোহের রূপ গ্রহণ করেছিল। বিশিষ্ট মনীষী কার্ল মার্কস-এর চোখেও এই বিদ্রোহ ছিল জাতীয় বিদ্রোহ।
গণ বিদ্রোহ : ঐতিহাসিক শশীভূষণ চৌধুরী, গৌতম ভদ্র, রুদ্রাংশ মুখার্জি প্রমুখের মতে, সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছাড়া এই বিদ্রোহ এত বিস্তৃতি ও গুরুত্ব পেত না। তাই এই বিদ্রোহকে জন বিদ্রোহ বা গণ বিদ্রোহ বলাই যুক্তিযুক্ত।
সামন্ত বিদ্রোহ : রজনীপাম দত্ত, এম. এন. রায়, জওহরলাল নেহেরু প্রমুখেরা এই বিদ্রোহকে সামন্ত বিদ্রোহ বলে চিহ্নিত করা করেছেন। ঐতিহাসিক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, এই বিদ্রোহ ক্ষয়িষ্ণু অভিজাততন্ত্রের ও মৃতপ্রায় শ্রেণির ‘মৃত্যুকালীন - ও আর্তনাদ’। তাদের মতে পুরাতন ভারতীয় সামাজিক, অর্থনৈতিক হয় ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য সামন্ত প্রভুরা এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেছিল।
প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ : দেশপ্রেমিক বিনায়ক সাভারকার দ্য ইন্ডিয়ান ওয়ার অব্ ইন্ডিপেন্ডেন্স’ গ্রন্থে মহাবিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন, তাকে সমর্থন করেছেন অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, সুশোভন সরকার প্রমুখ ব্যক্তিত্বরা। তবে ঐতিহাসিক মেটকাফকে অনুসরণ করে পরিশেষে বলা যায়, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ছিল সিপাহি বিদ্রোহের চেয়ে বেশি, আবার জাতীয় বিদ্রোহের চেয়ে কম। তাই একে মহাবিদ্রোহ বলে বিচার করাই যুক্তিযুক্ত। তবে সিপাহি বিদ্রোহের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ভারত সরকার এই বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে স্বীকৃতি
প্রদান করেছে।
14. মহারানির ঘোষণাপত্র-এর সুপারিশগুলি লেখো।
উত্তর মহারানির ঘোষণাপত্রের সুপারিশ সমূহ : ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহ দমন করার পর ভারতে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার প্রভূত পরিবর্তন সাধিত হয়। মহারানি ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিরূপে লর্ড ক্যানিং ভারতে এসে এলাহাবাদে অনুষ্ঠিত এক দরবারে যে ঘোষণা পাঠ করেন (১৮৫৮,১ নভেম্বর) তা মহারানির ঘোষণাপত্র নামে পরিচিত। এই ঘোষণায় বলা হয়— কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে ব্রিটিশ সার্বভৌমত্বের অধীনে আনা হবে। গভর্নর জেনারেল ভাইসরয় হিসেবে পরিচিত হবেন। বিদ্রোহ
স্বত্ববিলোপ নীতি পরিত্যক্ত হবে এবং দেশীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে কোম্পানি ইতিপূর্বে যে চুক্তি করেছে সেগুলি মেনে চলা হবে। দেশীয় রাজন্যবর্গ দত্তক গ্রহণ করতে পারবে। প্রত্যক্ষ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে মুক্তি দেওয়া হবে। বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি ফেরত দেওয়া হবে। নতুন কোনো রাজ্য দখল বা দেশীয় রাজ্যগুলির অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হবে না। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ভারতীয়দের যোগ্য সরকারি চাকরি প্রদান করা হবে। ভারতবাসীর ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতিতে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।
বিনামূল্যে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন
File Details:-
File Name:- Class 8 history 5 no chapter questions answers pdf
File Format:- PDF
File Size:- Mb
File Location:- Google Drive
Download: Click Here to Download
আরও পোস্ট দেখো B
A
B
C
THANK YOU & WELCOME