ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়: লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ফুলের ব্যবসা শুরু, আজ কোটি টাকার আয়! পড়ুন সফলতার গল্প
সফলতার গল্প: পড়াশোনার বাইরেও আলাদা একটা যে জগত আছে, তা আবারো প্রমাণিত হয়ে গেল। সামান্য এক চাষীর ছেলে প্রমাণ করে দিয়েছেন পুঁথিগত পড়াশোনায় জীবনের শেষ উপায় নয়। চলুন আজকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে সেই চাষীর ছেলের সফলতার গল্প আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আজকের এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন
পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের অরূপ কুমার ঘোষ চাষ নিয়ে বরাবরই উৎসাহ ও আগ্রহী ছিলেন। বর্তমানে তার বয়স ৩২ বছর|
তিনি বলেছেন কৃষকরা নতুন নতুন জাতের ফুলের চাষ এবং চাষের পদ্ধতিগুলি উন্নত উন্নতি করার পরিকল্পনার অভাব রয়েছে কৃষকদের মধ্যে। ২০১০ সালে, বাণিজ্যে স্নাতকের দ্বিতীয় বছর শেষ করার পরে, তিনি কলেজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। তিনি জানান ''2nd Year পর আমি পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলাম। অনেক মানুষই চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করে, কিন্তু তিনি প্রতিদিন সকাল 9টা থেকে বিকাল 5টা পর্যন্ত কাজ করতে একদম আগ্রহী ছিলেন না বা পছন্দ করতেন না।''
অরূপ কুমারের পরিবার পরিবার থেকে তাকে ধান চাষ করতে আগ্রহী করা হয় কিন্তু তিনি পরিবারের উল্টো পথে হাঁটেন। তিনি মনে করেন ''প্রথাগতভাবে চাষ খুব বেশি লাভজনক নয় এবং প্রচুর পরিশ্রম্য করতে হয়'' তাই তিনি বুদ্ধি খাটিয়ে ফুল চাষের দিকে মন দেন এবং ফুল চাষ নিয়ে সম্পূর্ণভাবে গবেষণা করেন এবং তার প্রয়োগ করেন।
তিনি ফুলটা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য হায়দ্রাবাদের গুড়িমালকাপুর ফুলের বাজারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি সেখানে গিয়ে চমকে যান। তিনি দেখেন হায়দ্রাবাদের গুড়িমালকাপুর ফুলের বাজারে কোলাঘাট থেকে গাঁদা ফুল, টিউব গোলাপ এবং অন্যান্য ফুল সংগ্রহ করে আনা হয় এবং বিক্রি করা হয়। তাই তিনি হায়দ্রাবাদে ফুলের ব্যবসাকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য একটি দোকানে কাজ করেছিলেন। তিনি প্রথমদিকে প্রতি মাসে ৩৫০০ টাকা বেতনে ফুলের দোকানে কাজ করতেন। তিনি এখানে মনে করেন যে আমার মাসিক বেতনের থেকে ফুলের ব্যবসাকে আরও ভালভাবে বোঝার, ব্যবসা শেখার একটা দারুন সুযোগ। তিনি যখন তিন মাস পর বাড়ি ফিরছিলেন তখন তার মালিক তাকে তার কাজ দেখে উৎসাহ হয়ে মাসিক ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দোকানের মালিকের কথা রাখতে পারেননি, তিনি বাড়ি ফিরে চলে এসেছিলেন।
এরপর তিনি কোলাঘাটে ফিরে যান এবং অন্যান্য শহরের ফুলের দোকানগুলিতে গাঁদা এবং গ্ল্যাডিওলাস প্যাক এবং বিক্রি করতে শুরু করেন। দৈনন্দিন জীবনে গাঁদা ফুলের চাহিদা থাকে কারণ এটি সামাজিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তিনি জানান “প্রতি পিস ১২০ টাকায় গাঁদা স্ট্রিং কিনতাম এবং ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতাম, প্রত্যেকদিন ১০০ টি স্ট্রিং থেকে ২,০০০ থেকে ৩,০০০ টাকা লাভ করতাম।“
অরূপ কুমার ঘোষ বলেন যে তিনি ২০১১ সালে স্থানীয় গাঁদা গাছের চারা কিনে জমিতে স্থানীয় চাষপদ্ধতি অনুসরণ করে চাষ শুরু করেন। কিন্তু ফলস্বরূপ ফুলগুলি ছোট ছিল এবং তিনি বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলে। তিনি আরও জানান ''এখান থেকেই আমার জীবনের বড় মোড় ঘুরে যায়।''
তিনি থাইল্যান্ড থেকে ২৫ গ্রাম গাঁদা ফুলের বীজ নিয়ে আসেন। বীজ নিয়ে আসার পর তিনি তাদের 1 বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলের চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় না বিখ্যাত ফুল ব্যবসায়ী অরূপ কুমার ঘোষ কে। মাঝপথে কলেজের পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া অরূপ কুমার ঘোষ আজ 3-4 কোটি টাকার ফুলের ব্যবসা তৈরি করে ফেলেছেন।
Competitive Exam Math BOOK PDF - চাকরির পরীক্ষার জন্য গণিত বই PDF
Part -1
Part -2