বুধুয়ার পাখি - অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত | দশম শ্রেণীর বাংলা কবিতা বুধুয়ার পাখি
আজ আমি আপনাদের এই পোস্টের মাধ্যমে দশম শ্রেণীর বাংলা কবিতা: বুধুয়ার পাখি, কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত লেখা কবিতাটি শেয়ার করছি। কবিতাটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন|
বুধুয়ার পাখি - অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত |
বুধুয়ার পাখি
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত
জানো এটা কার বাড়ি? শহুরে বাবুরা ছিল কাল,
ভীষণ শ্যাওলা এসে আজ তার জানালা দেয়াল
ঢেকে গেছে, যেন ওর ভয়ানক বেড়ে গেছে দেনা,
তাই কোনো পাখিও বসে না।
এর চেয়ে আমাদের কুঁড়েঘর ঢের ভালো, ঢের
দলে-দলে নীল পাখি নিকোনো নরম উঠোনের
ধান খায়, ধান খেয়ে যাবে...
বুধুয়া অবাক হয়ে ভাবে।
এবার রিখিয়া ছেড়ে বাবুড়ির মাঠে
বুধুয়া অবাক হয়ে হাঁটে,
দেহাতি পথের নাম ভুলে
হঠাৎ পাহাড়ে উঠে পাহাড়ের মতো মুখ তুলে
ভাবে : ওটা কার বাড়ি, কার অত নীল,
আমার ঘরের চেয়ে আরো ভালো, আরো
নিকোনো উঠোন তার, পাখিবসা বিরাট পাঁচিল।
ওখানে আমিও যাব, কে আমায় নিয়ে যেতে পারো?
এইভাবে প্রতিদিন বুধুয়ার ডাকে
কানায় কানায় আলো পথের কলশে ভরা থাকে,
ঝাঁকে-ঝাঁকে পাখি আসে, কেউ তার দিদি, কেউ মাসি,
রুপোলি ডানায় যারা নিয়ে যায় বুধুয়ার হাসি ।
কবি পরিচিতি
অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত (১৯৩৩-২০২০) : জন্ম কলকাতায়। পড়াশুনো করেছেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, প্রেসিডেন্সি কলেজ, ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। একালের বিখ্যাত কবি ও প্রাবন্ধিক। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য ও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। পরে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ইংরেজি ও জার্মান ভাষাতেও তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে—‘যৌবন বাউল', ‘নিষিদ্ধ কোজাগরী’, ‘রক্তাক্ত ঝরোখা’, ‘গিলোটিনে আলপনা’, ‘জ্বরের ঘোরে তরাজু কেঁপে যায়’, ‘এক একটি উপভাষায় বৃষ্টি পড়ে’ইত্যাদি। ‘ধুলো মাখা ঈথারের জামা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ এবং ‘মরমী করাত’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘সাহিত্য অকাদেমি’ পুরস্কার পান। বহু প্রবন্ধগ্রন্থ লিখেছেন, অনুবাদ করেছেন গ্যোয়টে, ব্রেশট সহ বহু জার্মান কবির কবিতা ও নাটক। জার্মানির ‘গ্যোয়টে পুরস্কার’, ‘আনন্দ পুরস্কার’ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সুধা বসু পুরস্কার’ পেয়েছেন।