কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টির কাব্যাংশ অবলম্বনে কলিঙ্গের বিপর্যয়ের বর্ণনা দাও | কলিঙ্গে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় আলোচনা করো
কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টির কাব্যাংশ অবলম্বনে কলিঙ্গের বিপর্যয়ের বর্ণনা দাও
অথবা,কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কবিতায় প্রকাশিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চিত্র কিতটা বাস্তবতার সঙ্গে চিত্রিত হয়েছে আলোচনা করো।
অথবা, ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কবিতায় কলিঙ্গে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছিল তা কীভাবে কলিঙ্গবাসীর জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছিল বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আখেটিক খণ্ডের অন্তর্গত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কাব্যাংশে দেবী চণ্ডী তাঁর কৃপাধন্য ব্যাধ কালকেতুর তৈরি গুজরাট নগরে বসতি প্রতিষ্ঠার জন্য কলিঙ্গদেশে প্লাবন ঘটান। কলিঙ্গের আকাশে ঈশান কোণে মেঘ জমা হয়। ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর ধ্বনির সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। বিপদের আশঙ্কায় প্রজারা ঘর ছেড়ে দ্রুত পালাতে থাকে। ঝড়ের দাপটে শস্যখেত এবং সবুজ গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। আটটি দিকের আটটি হাতি যেন বৃষ্টিধারায় সব ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায় | প্রবল বর্ষণে পথঘাট জলে ডুবে যায়। ঘোর অন্ধকারে দিন-রাত্রির পার্থক্য মুছে যায়। জলমগ্ন রাস্তায় সাপ ভেসে বেড়াতে থাকে । ভীত প্রজারা এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে নিস্তার পেতে ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে। সাত দিন ধরে অবিরাম বর্ষণের ফলে কাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঘরবাড়িও নষ্ট হয়ে যায়। ভাদ্র মাসের তালের মতো বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করে পড়তে থাকে। দেবীর আদেশে সমস্ত নদনদী কলিঙ্গের দিকে ছুটে আসে দেবীর আদেশে। পর্বতের মতো উঁচু ঢেউয়ের আঘাতে বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। দেবী চণ্ডীর আদেশে সৃষ্ট এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসহায়, ভীত প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় শেষপর্যন্ত কলিঙ্গ ত্যাগ করে চলে যায়।