বাংলা ভাষা ও বিজ্ঞানচর্চা প্রবন্ধ রচনা | মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চা প্রবন্ধ রচনা

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

ভূমিকা : অতীতে মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার সুযােগের অভাব ও বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা এখনও উপেক্ষিত ও বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার নিদর্শন সত্ত্বেও অনীহার অবসান হয়নি : উপসংহার

বাংলা ভাষা ও বিজ্ঞানচর্চা প্রবন্ধ রচনা | মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চা প্রবন্ধ রচনা

প্রবন্ধ রচনা বাংলা ভাষা ও বিজ্ঞানচর্চা | মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চা প্রবন্ধ রচনা | আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা প্রবন্ধ রচনা



ভূমিকা: যে ভাষায় মানুষ প্রথম কথা বলতে শেখে, চিন্তা করতে শেখে সেই মাতৃভাষা মানুষের আত্মপ্রকাশে সবচেয়ে বড়াে সহায়ক। এ কথা আজ সর্বত্রই স্বীকৃত যে শিক্ষার ক্ষেত্রে মাতৃভাষার কোনাে বিকল্প নেই। শুধু শিক্ষা নয়, সৃজনধর্মী চিন্তায়, গবেষণায় মাতৃভাষার ব্যবহার যেভাবে অনুকূলতা সৃষ্টি করে তার তুলনা মেলা ভার। পৃথিবীর যেসমস্ত দেশ জ্ঞান- বিজ্ঞানে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে, লক্ষ করলে দেখা যাবে, তাদের অনুশীলনের মাধ্যম মাতৃভাষা।


অতীতে মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার সুযােগের অভাব : দুর্ভাগ্যের বিষয় অতীতে উচ্চশিক্ষার বাহন হিসেবে আমাদের মেনে নিতে হয়েছিল ইংরেজিকে। আমাদের বিজ্ঞানচর্চার মাধ্যম ছিল তাই ইংরেজি। নিজের ভাবনা নিজের ভাষায় ব্যক্ত করার মধ্যে যে স্বাচ্ছন্দ্য থাকে একটি বিজাতীয় ভাষায় তা সম্ভব নয়। ভাষা-শিক্ষার সংকটে পড়ে অনেক মেধাবী বাঙালি শিক্ষার্থীর প্রতিভার আশানুরূপ বিকাশ ঘটত না।


বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা এখনও উপেক্ষিত : স্বাধীনতার পরে শিক্ষাক্ষেত্রে মাতৃভাষার মর্যাদা অনেক বেড়েছে। কাগজেকলমে মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষাদানের ব্যাপারটিও অনেক ক্ষেত্রে মেনে নেওয়া হয়েছে। তবু কার্যক্ষেত্রে মাতৃভাষায় বিজ্ঞান অনুশীলনের প্রসঙ্গটি এখনও উপেক্ষিত রয়ে গেছে। বলা হয়ে থাকে, বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলি চর্চা করার মতাে বই এবং পরিভাষা বাংলায় নেই। সেইসঙ্গে এও বলা হয়ে থাকে যে, বিজ্ঞানের মতাে একটি আন্তর্জাতিক বিষয়ের চর্চা বাংলাতে হলে তা জগৎবাসীর কাছ থেকে দূরেই থেকে যাবে। যুক্তি হিসেবে এগুলি অসার প্রয়ােজনের তাগিদে মানুষ অনেক কিছুই তৈরি করে নেয়।বই এবং পরিভাষার ক্ষেত্রেও সেই একই কথা বলা যেতে পারে। আর গবেষণা যে ভাষাতেই হােক না কেন, ভাষান্তরের মাধ্যমে খুব সহজেই তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যেতে পারে। Life and Experience of a Bengali Chemist, যার বাংলা অনুবাদ আত্মচরিত। নামে প্রকাশ পায়। তবে প্রফুল্লচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ রচনা দ্বিভাষিক হিন্দু।




বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার নিদর্শন সত্ত্বেও অনীহার অবসান হয়নি: ফরাসি, জার্মান, জাপানি, রুশ প্রভৃতি ভাষায় বিজ্ঞানের চর্চা সম্ভব হয়েছে। রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জগদানন্দ রায়,সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা প্রমুখের কিছু কিছু রচনায় বৈজ্ঞানিক ভাবনা যেভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে, তাতে বুঝতে পারি বাংলা ভাষাও বিজ্ঞানের ভাবনা ও সূত্র প্রকাশ করতে সক্ষম। সেই সঙ্গেই এটাও স্বীকার্য যে, বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবান পূর্বসূরিদের প্রয়াস সত্ত্বেও বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি।


উপসংহার: আমাদের মাতৃভাষা বাংলাতে বিজ্ঞানচর্চা যে সম্ভব, সে বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই। ইচ্ছে করলেই যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা আমরা দূর করতে পারি। তার জন্য প্রয়ােজন সাধু সংকল্প আর সমবেত উদ্যোগ | যে উদ্যোগ শুধু কথায় সীমাবদ্ধ থাকবে না,কাজেও পরিণত হবে।



অনুসরণে লেখা যায় :

বাংলা ভাষা ও বিজ্ঞানচর্চা


:অনুসরণে লেখা যায় :

তােমার প্রিয় বাঙালি বিজ্ঞানী ॥ প্রফুল্লচন্দ্র—ভারতের রসায়নচর্চার অগ্রপথিক


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url