“প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ” কোথাকার প্রজারা, কী কারণে প্রলয়ের আশঙ্কায় বিষাদ ভাবছে?
“প্রলয় গণিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ।” – কোথাকার প্রজারা, কী কারণে প্রলয়ের আশঙ্কায় বিষাদ ভাবছে?
“প্রলয় গগিয়া প্ৰজা ভাবয়ে বিষাদ।”—কী দেখে প্রজাদের প্রলয় মনে হয়েছিল? এই প্রলয়ের ফলে কী হয়েছিল?
উত্তর: মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' নামক কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশের আকাশ মেঘে ঢেকে যায়| উত্তর-পূর্ব কোণে মেঘের সঙ্গে দেখা দেয় বিদ্যুৎচমক। চারদিকে মুশলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। এইসব দেখেই প্রজাদের মনে প্রলয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়।
● কলিঙ্গের আকাশে ঈশান কোণে, মেঘ জমা হয়। ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায় | দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজের সঙ্গে শুরু হয় মুশলধারায় বৃষ্টি | বিপদের আশঙ্কায় প্রজারা ঘর ছেড়ে দ্রুত পালাতে থাকে | ঝড়ের দাপটে শস্যখেত এবং সবুজ গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। আটটি দিকের আটটি হাতি যেন বৃষ্টিধারায় সব ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায় | প্রবল বৃষ্টিতে পথঘাট জলে ডুবে যায়। ঘোর অন্ধকারে দিন-রাত্রির পার্থক্য মুছে যায়। জলমগ্ন রাস্তায় সাপ ভেসে বেড়াতে থাকে । ভীত প্রজারা এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে। সাত দিন ধরে একটানা বৃষ্টির ফলে কৃষিকাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঘরবাড়িও নষ্ট হয়ে যায়। ভাদ্র মাসের তালের মতো বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করে পড়তে থাকে। দেবীর আদেশে সমস্ত নদনদী কলিঙ্গের দিকে ছুটে আসে দেবীর আদেশে। পর্বতের মতো উঁচু ঢেউয়ের আঘাতে বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। দেবী চন্ডীর আদেশে সৃষ্ট এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসহায়, ভীত প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় অবশেষে কলিঙ্গ ত্যাগ করে চলে যায়।