গ্রহরূপে পৃথিবী নবম শ্রেণী ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | Grohorupe Prithibi Class 9th Geography

WhatsAp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নবম শ্রেণী ভূগোল প্রথম অধ্যায় গ্রহরূপে পৃথিবী প্রশ্ন ও উত্তর | Grohorupe Prithibi Class 9th Geography , Class 9 Geography Grohorupe Prithibi Question and Answer 

গ্রহরূপে পৃথিবী নবম শ্রেণী ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

v ভারতীয় বিজ্ঞানী আর্যভট্ট বলেন পৃথিবী গোলাকার ।   

v পৃথিবীর পরিধি প্রথম নির্ণয় করেন এরাটোস্থেনিস।   

v বৃহস্পতির উপগ্রহের সংখ্যা 67 টি।   

v পৃথিবীর গড় ব্যাস 12800 কিমি।   

v পৃথিবীর গড় ব্যাসার্ধ 6400 কিমি।   

v পৃথিবীর নিরক্ষীয় ব্যাস মেরুব্যাসের তুলনায় 43 কিমি বেশি । 

v সৌরজগতের সবচেয়ে বড়াে গ্রহ হল – বৃহস্পতি   

v পৃথিবীর নিরক্ষীয় ব্যাস – 12757 কিমি।   

v সৌরজগতের নিকটতম ও ক্ষুদ্রতম গ্রহ হল-বুধ   

v এরাটোথেনিসের মতে পৃথিবীর গড় পরিধি –  40000 কিমি।   

v USA GPS পরিষেবার জন্য মহাকাশে – 24 টি উপগ্রহ স্থাপন করেছে । 

v পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব – 14 কোটি 95 লক্ষ কিমি । 

v কুলীন গ্রহদের মধ্যে আবর্তনের সময় সর্বাধিক – শুক্রের 

v পৃথিবীর ক্ষেত্রমান – 51 কোটি 9 লক্ষ বর্গকিমি।   

v সূর্য থেকে দূরত্ব অনুসারে সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহটির নাম – পৃথিবী।   

v বহিস্থ গ্রহের উদাহরণ হল- বৃহস্পতি   

v সম্প্রতি মহাকাশে প্রেরিত ভারতের GPS পদ্ধতির নাম হল –  IRNSS    

v ইউরেনাস গ্রহের যমজ গ্রহ হল—নেপচুন   

v সর্বাধিক উপগ্রহের সংখ্যা – বৃহস্পতি   

v প্রশ্ন সৌরজগতের সবচেয়ে সুন্দর গ্রহ ( Elegant Planet ) হল — শনি 

v এরাটোথেনিসের মতে পৃথিবীর পরিধি – 250000 স্টেডিয়া   

v ইউরেনাস আবর্তন কার – দক্ষিণ থেকে উত্তরে   

v প্লুটোকে বলা হয় – বামন গ্রহ ।   

v যে অভিযাত্রী সমুদ্রপথে সমগ্র পৃথিবী ঘুরে পৃথিবীর গলাকার আকৃতির প্রমাণ দেন তিনি হলেন  ফার্দিনান্দ ম্যাঙ্গেলান 

v পৃথিবীর গোলত্ব প্রমালে ইংল্যান্ডের বেডফোর্ড খালে পরীক্ষা করেন – এ.আর.ওয়ালেস     

v প্রথম পৃথিবীর ওজন পরিমাপ করেন -ক্যাভেনডিশ 

v পৃথিবীর গড় ব্যাসার্ধ – 6371 কিমি   

v পৃথিবীকে গোলাকার ধরেই জ্যামিতিক পদ্ধতিতে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেন – এরাটোসথেনিস।   

v পৃথিবীকে এক পাক ঘুরতে চাঁদের কত সময় লাগে -27 দিন 8 ঘণ্টা   

v পৃথিবীর পরিধি প্রথম কে নির্ণয় করেন-এরাটোস্থেনিস।   

v পৃথিবীর গড় ব্যাসার্ধ কত - 6400 কিলোমিটার।   

v কোথায় ধ্রুবতারার উন্নতি কোণ 90°- সুমেরু বিন্দুতে।   

v পৃথিবীর ক্ষেত্রফল কত -51 কোটি 9 লক্ষ বর্গ কিলোমিটার।   

v সূর্য বাদে পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র কোনটি -প্রক্সিমা সেন্টারাই।   

v পৃথিবীর নিকটতম গ্রহ কোনটি -শুক্র।

v সৌরজগতের কোন গ্রহের উপগ্রহের সংখ্যা সর্বাধিক -বৃহস্পতি   

v USA পরিচালিত কৃত্রিম উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতায় সংস্থাপন করা হয়েছে -20185 কিমি।   

v GPS পদ্ধতির প্রধান ব্যবহারিক ক্ষেত্র কোনটি -অবস্থান নির্ণয় করা হয়   

v কোন্ দুটি গ্রহের কক্ষপথের মাঝে পৃথিবীর কক্ষপথ অবস্থিত -শুক্র মঙ্গল   

v প্রাচীনকালে ধ্রুবতারা মানুষ দেখে উত্তর দিক নির্ণয় করত ।   

v মারিয়ানা খাত প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ।   

v আকাশ যেখানে ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে মেশে , তাকে বলে -দিগন্ত রেখা।   

v নেপচুনের একবার পরিক্রমণের সময় -165 বছর।   

v নীলাভ সবুজ বর্ণের গ্রহ -ইউরেনাস।   

ভারতের প্রথম চন্দ্রযান এর নাম চন্দ্রযান -1

v বেডফোর্ড লেভেল পরীক্ষা করা হয় – 18700    

v পৃথিবীর নিরক্ষীয় ব্যাস ও পৃথিবীর মেরুব্যাসের মধ্যে পার্থক্য হল – 43কিমি   

v পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘােরেপ্রথম বলেন – কোপারনিকাস 

v কুলীন গ্রহের সংখ্যা 8টি ।   

v পিথাগােরাস ছিলেন – গ্রিক  দার্শনিক । 

v গ্রহদের মধ্যে আয়তনে পৃথিবীর স্থান – পঞ্চম   

v সৌরজগতের একটি অন্তর্ভাগের গ্রহের উদাহরণ হল –  শুক্র   

v কোন গ্রহটির আবর্তনের সময় পরিক্রমণের সময় অপেক্ষা বেশি ? –  শুক্র     

v ভারতের মহাকাশ গবেষণা বিষয়ক সংস্থা –  ISRO    

v ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দিগন্তরেখার পরিধি - বাড়ে ।   

v বামন গ্রহ হল – প্লুটো ,সেরেস ,হাউমিয়া     

v মিথেন গ্যাস বেশি থাকায় ইউরেনাস গ্রহটির রং সবুজ   

v আমরা কোন ছায়াপথে বাস করি - আকাশ গঙ্গা ছায়াপথ।   

v আমাদের নিকটতম নক্ষত্রের নাম কী-সূর্য।   

v সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলাে পৌছাতে কত সময় লাগে 8 মিনিট 20 সেকেন্ড

v সৌরজগতে কয়টি গ্রহ আছে-8টি   

v সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহাণুর নাম কী -সেরেস   

v পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কত -3লক্ষ্য 84হাজার কিমি।   

v কোন্ দুটি গ্রহ বাদে সকল গ্রহই পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে-শুক্রইউরেনাস।   

v বলয়যুক্ত গ্রহ কোনটি -শনি গ্রহ   

v Geoid শব্দের অর্থ কী -পৃথিবী মতো।   

v পৃথিবীর প্রথম মহাকাশচারীর নাম কী -ইউরি গ্যাগারিন।   

v ভারতের প্রথম মহাকাশচারীর নাম কী -রাকেশ শর্মা ।   

v কোন্ গ্রহকে লালগ্রহ বলা হয় -মঙ্গলকে ।   

v পৃথিবীর প্রথম মহিলা মহাকাশচারীর নাম কী -ভ্যালেন্তিনা তেরেসকোভা ।   

v NASA- র পুরো কথাটি কী -National Aeronautics and Space Administration

v পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থানের নাম কী -mount Everest    

v ISRO- র পুরো কথাটি কী -Indian Space Research Organisation    

v কোন্ গ্রহ দুটির মধ্যে অসংখ্য গ্রহাণুপুঞ্জ রয়েছে -মঙ্গলবৃহস্পতি   

v কোন্ দুটি গ্রহের কোন উপগ্রহ নেই -বুধ শুক্র।   

v পৃথিবীর কোন্ অঞ্চলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সবচেয়ে বেশি -মেরু অঞ্চলে।   

v কোন গ্রহের একদিন পৃথিবীর জন্য এক বছরের থেকে বড় -শুক্র।   

v ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নাম কী -আর্য ভট্ট   

v সূর্য যে ছায়াপথের অন্তর্গত তার নাম কী -আকাশগঙ্গা   

v সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম গ্রহ কোনটি -বুধ   

v পৃথিবীর উম্নতম স্থান কোনটি-আলবিজিয়া (লিবিয়া )।   

v চাঁদের আলা পৃথিবীতে আসতে কত সময় লাগে-1.2 সেকেন্ড।   

v দিনের বেলায় বুধের উষ্ণতা কত-450°সে।   

v সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ কোনটি- বুধ।   

v সূর্যের সবচেয়ে দূরের গ্রহ কোনটি- নেপচুন।   

v ইসরোর সদর দপ্তর বেঙ্গালুরু।   

v সৌরজগতের বৃহত্তম উপগ্রহ টাইটান|

v সৌরজগতে পৃথিবীর ঘনত্ব সর্বাধিক।   

v সৌরজগতের শীতলতম কুলীন গ্রহ হল নেপচুন।   

v দুটি অতিশয় গ্যাসীয় গ্রহ হল বৃহস্পতিশনি।   

v মহাশূন্যের দ্বীপ বলা হয় ছায়াপথ কে।

v জাপানকে সূর্যোদয়ের দেশ বলা হয়।

v ভারতের অরুণাচল প্রদেশে প্রথম সূর্যোদয় দেখা যায়।

v গ্যানিমিড বৃহস্পতির উপগ্রহ।   

মঙ্গলের দুটি উপগ্রহ হল ফোবোসডিভোর্স।   

 নবম শ্রেণী ভূগোল প্রথম অধ্যায় গ্রহরূপে পৃথিবী 2 প্রশ্ন ও উত্তর


1. বামন গ্রহ :   
উত্তর: 2006 সালে ইনটারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (IAU) প্রদত্ত সংজ্ঞানুসারে যে-সকল জ্যোতিষ্ক একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে সূর্যের চারদিকে ঘোরে, অথচ তারা উপগ্রহ নয়, ও জ্যোতিষ্কটি পর্যাপ্ত ভরযুক্ত এবং প্রায় গোলাকার, কিন্তু ও জ্যোতিষ্কটি নিজ কক্ষপথের নিকটস্থ অঞ্চল থেকে কোনো মহাজাগতিক বস্তুকে সরিয়ে দিতে অক্ষম, তারাই বামন গ্রহ নামে পরিচিত।    
বৈশিষ্ট্য : -----------
(i) বামন গ্রহের জন্য ব্যাস অন্তত 400 কিমি হওয়া প্রয়োজন।    
(ii) বামন গ্রহের ভর তুলনামূলক ভাবে কম। 
(iii) বামন গ্রহরা মাঝে মাঝে কক্ষপথের থেকে বিচ্যুত হতে পারে।     
(iv)  বামন গ্রহের ভরকেন্দ্র সেই গ্রহের মধ্য নাও থাকতে পারে।
উদাহরণ : সৌরজগতে আপাতত বামন গ্রহের সংখ্যা 5টি। যথা – ইরিস, সেরেস, প্লুটো, হাউমিয়া এবং ম্যাকম্যাক।

2. গ্রহ (Planet) :  উত্তর : মহাকাশে এমন কিছু জ্যোতিষ্ক আছে, যাদের নিজস্ব আলো ও উত্তাপ নেই, যারা অন্য কোনো নক্ষত্রের আলোকে আলোকিত হয় এবং নির্দিষ্ট কক্ষপথে নক্ষত্রগুলির চারদিকে পরিক্রমণ করে, তাদের গ্রহ বলে।
বৈশিষ্ট্য : (i) গ্রহের নিজস্ব আলো ও উয়তা নেই।   
(ii) গ্রহরা নক্ষত্রদের আলোয় আলোকিত হয়।
(iii) গ্রহরা আকৃতিতে নক্ষত্রদের তুলনায় ছোটো হয় ৷ 
উদাহরণ : পৃথিবী, বৃহস্পতি, শনি, বুধ প্রভৃতি।

3. উপগ্রহ (Satellite) : উত্তর: মহাকাশে নিজস্ব আলো, উত্তাপহীন যে জ্যোতিষ্কগুলি গ্রহের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিক্রমণ করছে, তাদের উপগ্রহ বলে।
বৈশিষ্ট্য : (i) উপগ্রহের নিজস্ব আলো ও তাপ নেই।
(ii) উপগ্রহরা নক্ষত্রের আলোকে আলোকিত । 
(iv) উপগ্রহ গ্রহের তুলনায় ছোটো হয়।
(v) উপগ্রহেরা গ্রহের আকর্ষণে আকর্ষিত হয়।
উদাহরণ : পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। ফোবোস ও ডিমোস হল মঙ্গলের উপগ্রহ।

4. সূর্য (Sun) :  
উত্তর : পৃথিবী থেকে প্রায় 15 কোটি কিলোমিটার দূরে নিকটতম নক্ষত্র সূর্য অবস্থিত। সমগ্র সৌরজগতের ভরের 99.9 শতাংশ নিয়ে সূর্য গঠিত। সৌরজগতে একমাত্র সূর্যের নিজস্ব জ্যোতি আছে। আয়তনে সূর্য পৃথিবী অপেক্ষা 13 লক্ষ গুণ বড়ো। সূর্যের আলো উজ্জ্বল ও উত্তাপ প্রচণ্ড। সূর্যের আলোকে গ্রহ ও উপগ্রহগুলি আলোকিত হয় ও উত্তাপ পায়। সৌরজগতের মধ্যমণি হল সূর্য।
পৃথিবী থেকে দূরত্ব : প্রায় 14.96 কোটি কিমি ।
বহির্ভাগের উম্বুতা : 5,507°C।
কেন্দ্রাঞ্চলের উন্নতা : 1,50,000,00°C।
গড় ব্যাস : 13,91,980 কিমি। পরিক্রমণের বেগ : 285 কিমি/সেকেন্ড।
সৌরবছরের সময়কাল : 224x10° আলোকবর্ষ।
প্রধান উপাদান : হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম।
নিজ অক্ষে আবর্তনের সময় : 25 দিন 9 ঘণ্টা 7 মিনিট ।

5. কুলীন গ্রহ (True Planet) : 
উত্তর 2006 সালে ইনটারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (IAU) প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুসারে — যে-সকল জ্যোতিষ্কের নিজস্ব আলো নেই, ও যাদের একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথ আছে এবং সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে অবিরাম ঘুরছে, ও যা পর্যাপ্ত ভরযুক্ত, যা তার উদস্থৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ও প্রায় গোলাকার আকৃতি পাওয়ার জন্য যথেষ্ট, যারা নিজেদের কক্ষপথের সন্নিহিত অঞ্চল থেকে অন্য সব মহাজাগতিক বস্তুকে সরিয়ে দিতে পারে, তাদের কুলীন গ্রহ বলে। বর্তমানে সৌরজগতে মোট আটটি কুলীন গ্রহ রয়েছে। এরা আবার দুপ্রকার—
অন্তঃস্থ গ্রহ : বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল ।
বহিস্থ গ্রহ : বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।


6. পৃথিবী (Earth) :  
গ্রহের প্রকার : অন্তঃস্থ গ্রহ, কুলীন গ্রহ। করেন।
আবিষ্কর্তা : কোপারনিকাস পৃথিবীকে গ্রহরূপে চিহ্নিত
সূর্য থেকে দূরত্ব : প্রায় 15 কোটি কিমি। এটি সূর্যের তৃতীয় নিকটতম গ্রহ ৷
নিরক্ষীয় ব্যাস : নিরক্ষীয় ব্যাস প্রায় 12,757 কিমি।
মেরুব্যাস প্রায় 12,714 কিমি।
বায়ুমণ্ডলীয় উপাদান : মূলত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের প্রাধান্য। এ ছাড়া কার্বন ডাইঅক্সাইড, হিলিয়াম, রেডন, জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা, নিষ্ক্রিয় গ্যাস ইত্যাদি। আবর্তন গতির সময়কাল : 23 ঘণ্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড (নাক্ষত্রদিন) প্রায়।
পরিক্রমণ গতির সময়কাল : 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড প্রায় (সৌরবছর)।
তাপমাত্রা : গড়ে 22°C প্রায়।
উপগ্রহ : একটি (চাঁদ)।
বিশেষত্ব : একমাত্র এই গ্রহে প্রাণ আছে। এটি নীলগ্রহ নামেও পরিচিত। এ ছাড়াও অন্য নাম 'ভারী গ্রহ’, ‘সজীব গ্রহ’।

7. উল্কা (Meteors): উত্তর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে, পৃথিবীর প্রবল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে প্রচণ্ড গতিতে ভূপৃষ্ঠের দিকে ধাবমান জ্যোতিষ্কদের উল্কা বলে। উল্কা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে 11-72 কিমি বেগে ভূ-পৃষ্ঠের দিকে নেমে আসে। এই ঘটনাকে উল্কাপাত বা তারাখসা বলে। আকাশে অনেক উল্কা একসঙ্গে ঝরে পড়লে তাকে উল্কাবৃষ্টি বলে। 

8. ISRO : ISRO-র পুরো নাম ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন'। ভারতে মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণার উদ্দেশ্যে স্থাপিত হয়।
স্থাপন : 1969 সালের 15 আগস্ট।
সদর দপ্তর : বেঙ্গালুরু।
পরিচালনার দায়িত্ব : স্পেস কমিশন অ্যান্ড ডিপার্টমেন্ট অফ স্পেস।
অধীনস্থ মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র : ইসরোর অধীনে 18টি মহাকাশ গবেষণা ও রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে বেঙ্গালুরুর ইসরো স্যাটেলাইট সেন্টার', তিরুবন্তপুরমের ‘বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টার', শ্রীহরিকোটার ‘সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার', আমেদাবাদে ‘স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার' বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে কেরালার থুম্বাতেও রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্ৰ গড়ে উঠেছে।
'ইসরো'র উল্লেখযোগ্য কাজ : আর্যভট্ট, ভাস্কর, রোহিণী, অ্যাপোলো, চন্দ্রায়ন ইত্যাদি শ্রেণির কৃত্রিম উপগ্রহগুলি মহাকাশে প্রেরণে সমর্থ হয়েছে। টেলিযোগাযোগ, বেতার সম্প্রচার, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে INSAT সিরিজের উপগ্রহগুলিকেও ISRO সাফল্যের সঙ্গে উৎক্ষেপণ করতে পেরেছে।

9. চাঁদ (Moon): 
উপগ্রহ : চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। 
পৃথিবী থেকে দূরত্ব : পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব প্রায় 3
লক্ষ 84 হাজার 401 কিমি। 
ক্ষেত্রমান : চাঁদের ব্যাস মাত্র 3 হাজার 476 কিমি অর্থাৎ, এর ক্ষেত্রমান পৃথিবীর পঞ্চাশ ভাগের মাত্র একভাগ ৷
গতি : পৃথিবীর চারদিকে একবার ঘুরতে চাঁদের সময় লাগে প্রায় 27 দিন ৪ ঘণ্টা। উত্তাপ ও আলো : চাঁদের নিজের তাপ ও আলো নেই। সূর্য থেকেই চাঁদ আলো ও উত্তাপ পায়। চাঁদে দিনেরবেলার সর্বোচ্চ উন্নতা থাকে প্রায় 125°C এবং রাত্রে সর্বনিম্ন উষ্ণতা –160°C থাকে।
ভর : চাঁদের ভর 7.35 × 1019 টন ।
মাধ্যাকর্ষণ শক্তি : চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর
নিজের চারদিকে একবার ঘুরতেও চাঁদের প্রায় ওই একই সময় লাগে। তাই আমরা সব সময় চাঁদের একটি পৃষ্ঠই দেখতে পাই ৷

10.কৃত্রিম উপগ্রহ (Artificial Satellite): 
উত্তর : মানুষের তৈরি যে যন্ত্রগুলি পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে, তাদের বলা হয় কৃত্রিম উপগ্রহ।  উদাহরণ : পৃথিবীর প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্ফুটনিক - 1, ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ আর্যভট্ট।

গুরুত্ব : আবহাওয়ার পূর্বাভাস, সমুদ্র পরিবহণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কতা, মহাকাশ গবেষণায় কৃত্রিম উপগ্রহের গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া মোবাইল, ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগের কাজে কৃত্রিম উপগ্রহগুলি ব্যবহার করা হয়।

11. আর্যভট্ট: নামকরণ : আর্যভট্ট হল ISRO নির্মিত ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ। প্রাচীন ভারতীয় গণিতজ্ঞ আর্যভট্টের নামানুসারে উপগ্রহটির নামকরণ করা হয়েছে।  ওজন : প্রায় 360 কেজি।   উৎক্ষেপণের সময় ও স্থান : 1975 সালের 19 এপ্রিল

12. শনি গ্রহকে বলয় গ্রহ বলা হয় কেন ?  
উত্তর : শনিগ্রহের চারপাশের লক্ষ কোটি পাথরের টুকরো, বরফের কণা, ধূলিকণার    উপর সূর্যালোক পড়ে চক্র বা বলয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই গ্রহের নাম হয় 'বলয় গ্রহ' বা Ring planet।
আবিষ্কার : গ্যালিলিয়ো সর্বপ্রথম এই বলয় প্রত্যক্ষ করেন। পরবর্তীকালে 1659 সালে হাইগেনস (Heygnes) এটি আবিষ্কার করেন।
বলয়ের সংখ্যা : শনি গ্রহের প্রধান বলয়ের সংখ্যা হল 7টি এবং অপ্রধান বলয়ের সংখ্যা 320টি। বৃহস্পতি, ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহের বলয় থাকলেও এগুলি শনির বলয়ের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ। সৌন্দর্য ও জটিলতায় শনির বলয় অদ্বিতীয়।

13. পৃথিবীর কোন্ অঞ্চলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সবচেয়ে বেশি? 
উত্তর পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সবচেয়ে বেশি কারণ – এখানে কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তি (Centrifugal force) সবথেকে কম। ও পৃথিবীর অভিগত গোলকাকার আকৃতির জন্য পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে মেরু অঞ্চলের দূরত্ব কম। তাই মাধ্যাকর্ষণ বল এখানে সব থেকে বেশি।

14. কাকে কেন পৃথিবীর যমজ গ্রহ বলা হয় ? 
উত্তর: শুক্র গ্রহকে পৃথিবীর যমজ গ্রহ বলা হয়। এই দুই গ্রহের বৈশিষ্ট্যগত দিকগুলি প্রায় একই, মহাকাশ থেকে দেখতে একই লাগে, তাই এদেরকে যমজ গ্রহ বা Twin planet বলে।
সাদৃশ্য :    i. ব্যাস : পৃথিবীর ব্যাস 12,742 কিমি ও শুক্রের 12,112 কিমি। 
                ii. ঘনত্ব : পৃথিবীর ঘনত্ব 5.52 গ্রাম/সেমি ও শুক্রের 5.30 গ্রাম/সেমি। পৃথিবীর ও শুক্রের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সমরূপ বলে একে ‘যমজ ভাই' বলা হয়। পৃথিবী থেকে এই গ্রহকে খালি চোখে দেখা যায় ভোরবেলায় ও সন্ধ্যাবেলায়, তাই এই শুক্র গ্রহকে ‘শুকতারা' বা ‘সন্ধ্যাতারা’ও বলে।

15. জিয়ড (Geoid) বলতে কী বোঝো? ★★★
উত্তর গ্রিক শব্দ 'geo' ও 'eidos' মিলে 'Geoid' শব্দের উৎপত্তি। ‘geo’-এর অর্থ ‘পৃথিবী’ এবং ‘eidos’-এর অর্থ ‘দর্শন’ বা ‘দেখতে’। অর্থাৎ, Geoid শব্দের অর্থ ‘পৃথিবীর মতো দেখতে” বা‘পৃথিবীর সদৃশ' (Earth Shaped)। পৃথিবীর প্রকৃত আকৃতি কোনো বস্তুর সঙ্গে তুলনা করা যায় না বলে বলা হয় পৃথিবীর আকৃতি ‘পৃথিবীর সদৃশ' বা 'Geoid'। 'Geoid' ব্যবহার করেন বিজ্ঞানী জোহান বেনডিক্ট লিসটিং।

16. যখন কম্পাস, ম্যাপ ছিল না তখন মানুষ কীসের সাহায্যে দিক নির্ণয় করত?
উত্তর: যখন কম্পার্স, ম্যাপ ছিল না তখন মানুষ রাতে ধ্রুবতারা দেখে উত্তর দিক, হ্যাডলির অকট্যান্ট নামক নক্ষত্র দেখে দক্ষিণ দিক, ভোরবেলা শুকতারা দেখে পূর্ব দিক এবং সন্ধ্যাবেলা সন্ধ্যাতারা দেখে পশ্চিম দিক নির্ণয় করত। দিনেরবেলা সূর্য দেখেও দিক নির্ণয় করত।

17. দিগন্তরেখা কাকে বলে? 
উত্তর: কোনো ফাঁকা মাঠ বা কোনো উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে মনে হয় আকাশ ও ভূমি যেন দূরে এক জায়গা বরাবর বৃত্তাকারে মিলিত হয়েছে। এই বৃত্তরেখাকে দিগন্তরেখা বলে। যত উঁচু থেকে দেখা যায় বৃত্তাকার দিগন্তরেখার পরিধি তত বৃদ্ধি পায়।

18. আকাশগঙ্গা (Milky way) কী ? 
উত্তর সংজ্ঞা : মহাবিশ্বের অসংখ্য ছায়াপথের মধ্যে যেটিতে সূর্য তার পরিবার নিয়ে আছে, আর সেই পরিবারের অংশ হিসেবে আমরাও আছি, তাকে আকাশগঙ্গা ছায়াপথ বলা হয়। এর অপর নাম 'মিল্কি ওয়ে' (Milky way)।
বৈশিষ্ট্য : প্রায় 10 হাজার কোটি নক্ষত্র,গ্যাস, ধূলিকণা নিয়ে আকাশগঙ্গা গঠিত। 
এটি একটি প্যাঁচানো বা সর্পিল আকৃতির ছায়াপথ। 
খালি চোখে রাতের আকাশে যততারা দেখা যায়, সবই আকাশগঙ্গা ছায়াপথের তারা।আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে কিছুটা দুরে প্রান্তভাগে আছে আমাদের সৌরজগৎ।
19. আলোকবর্ষ (Light year) কী ? উত্তর: মহাশূন্যের অতি বিশাল দূরত্ব মাপার একক হল আলোকবর্ষ। আলোর গতিবেগ 1 সেকেন্ডে প্রায় 2 লক্ষ 99 হাজার কিমি। এই গতিবেগে 1 বছরে আলো যতটা দূরত্ব যায়, তা হল এক আলোকবর্ষ (9.46 x 1012 কিলোমিটারের সমান।

20.  GPS কী ? 
উত্তর GPS-এর পুরো কথাটি হল Global Positioning System । যার দ্বারা মানুষের তৈরি 24টি কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে ভূ পৃষ্ঠের ওপর কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা যায়। জাহাজ চালানো থেকে শুরু করে মিসাইল উৎক্ষেপণ সবেতেই সঠিক দিশা ও নির্ভুল নির্দেশ দিতে GPS-এর ব্যবহার করা হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রথম GPS চালু করে। বর্তমানে GPS handset দ্বারা মানচিত্র প্রস্তুত, জরিপ কার্য, টোপোম্যাপ তৈরি, মৌজা ম্যাপ তৈরি, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভে, শহর পরিকল্পনা সম্ভবপর হয়েছে।

21.নীহারিকা (Nebula) কাকে বলে? 
উত্তর ‘নীহার' শব্দের অর্থ ‘তুষারকণা'। মহাশূন্যের মাঝে ছড়িয়ে থাকা হাইড্রোজেন, হিলিয়াম গ্যাস ও ধূলিকণার বিরাট তুষারের মতো সাদা মেঘকে নীহারিকা বা নেবুলা বলে। উদাহরণ : লেগুন নেবুলা, গ্রেট নেবুলা, ক্যাটস্ আই নেবুলা

22.জ্যোতিষ্ক (Celestial body) কাকে বলে? 
উত্তর : যারা মহাকাশে জ্যোতি বা আলো বিতরণ করে সেই অসংখ্য আলোর বিন্দুকে এককথায় জ্যোতিষ্কবলা হয়। মহাকাশে নানারকম জ্যোতিষ্ক দেখা যায়, যেমন—নক্ষত্র, গ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ, উপগ্রহ, ধূমকেতু,প্রভৃতি।

23.ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি (Galaxy) কাকে বলে? 
উত্তর মহাকাশে লক্ষ লক্ষ তারা, ধূলিকণা এবং গ্যাসীয় মেঘপুঞ্জের সমাবেশে গঠিত উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ককে ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি বলে। এগুলি প্যাঁচানো, ডিম্বাকার প্রভৃতি নানা আকৃতির হয়। 
উদাহরণ : মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা, অ্যানড্রোমিডা প্রভৃতি।

24. মঙ্গলকে লালগ্রহ বলা হয় কেন? অথবা, মঙ্গলের মাটির রং লাল কেন ? 
উত্তর মঙ্গল গ্রহের মাটিতে প্রচুর রেড অক্সাইড বা লোহা রয়েছে। বিশুদ্ধ লোহার রং লাল। তাই মঙ্গলের মাটি লাল। এই কারণে মহাকাশে মঙ্গলকে লাল রং-এর দেখায় বলে ‘লালগ্রহ' নাম দেওয়া হয়েছে।

25. ইউরেনাসকে সবুজ গ্রহ বলা হয় কেন? 
উত্তর সৌরজগতের সপ্তম গ্রহ হল ইউরেনাস। বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান-হাইড্রোজেন (83%), হিলিয়াম (15%), মিথেন (2%) -এর সমন্বয়ে গঠিত। গ্রহের উপরিস্তরে মিথেন গ্যাসের প্রাধান্য থাকায় এই গ্রহ লাল আলোকে শোষণ করে নেয় এবং গ্রহটিকে সবুজ রঙের দেখায়।
26. সৌরজগতের কোন্ কোন্ গ্রহের বলয় আছে?
উত্তর সৌরজগতের চারটি গ্রহের বলয় আছে। যথা— বৃহস্পতি ও শনি, ও ইউরেনাস ও নেপচুন।

27. বহিস্থ গ্রহ (Outer Planet) কাকে বলে? 
উত্তর সৌর পরিবারে যে-সমস্ত গ্রহগুলি অন্তঃস্থ গ্রহগুলির চেয়ে অনেক দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করছে তাদের, বহিস্থ গ্রহ বলে। যেমন— বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।

28. সৌরজগতের সবচেয়ে বড়ো ও সবচেয়ে ছোটো উপগ্রহের নাম কী?
উত্তর সৌরজগতের সবচেয়ে বড়ো উপগ্রহ হল শনির উপগ্রহ টাইটান এবং সবচেয়ে ছোটো উপগ্রহ হল মঙ্গলের উপগ্রহ ডাইমোস।

29. বুধ সূর্যের নিকটতম গ্রহ হলেও শুক্রগ্রহের উয়তা সবচেয়ে বেশি কেন ?
উত্তর বুধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ হওয়ায় এর গড় উয়তা প্রায় 430°C। কিন্তু দ্বিতীয় স্থানে থাকা শুক্রগ্রহের গড় উয়তা প্রায় 465°C। কারণ, শুক্রগ্রহের বায়ুমণ্ডলে রয়েছে প্রচুর কার্বন ডাইঅক্সাইড যা উয়তাকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।

30. পৃথিবীকে 'জলগ্রহ' বা 'নীলগ্রহ' বলা হয় কেন ?
উত্তর সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ পৃথিবী যার 70.8% অর্থাৎ প্রায়36.1 বর্গকিমি অঞ্চল জুড়ে রয়েছে জল। তাই মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে নীল দেখায়। এ কারণে পৃথিবীকে ‘জলগ্রহ' বা ‘নীলগ্রহ' বলা হয় ।

31. পৃথিবীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন স্থানগুলি কী কী ?
উত্তর পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান হিমালয় পর্বতের মাউন্ট এভারেস্ট, উচ্চতা 8848 মিটার। পৃথিবীর সর্বনিম্ন স্থান হল প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে মারিয়ানা খাত, গভীরতা 11,034 মিটার।



1. পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতির প্রমাণগুলি লেখো। ★★★
উত্তর: পৃথিবীর গোলকাকার আকৃতি সম্পর্কিত প্রমাণ :
গোলাকার ছায়া : চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়ে। এই ছায়া গোলাকার দেখায়। কোনো গোলকাকার বস্তুর ছায়াই একমাত্র গোলাকার হয়। সুতরাং, পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার।
দূরবীক্ষণ যন্ত্র : দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা গেছে, সৌরজগতের সব গ্রহই গোলকাকার। পৃথিবী একটি গ্রহ, অতএব পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার হওয়াই স্বাভাবিক।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত : পৃথিবী সমতল হলে ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র একই সময়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হত। পৃথিবী গোলকাকার বলেই পূর্বের দেশগুলিতে আগে এবং পশ্চিমের দেশগুলিতে পরে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়।
জাহাজের দৃশ্য : সমুদ্রে একটি আশ্চর্য ব্যাপার দেখা যায়। কোনো জাহাজ যখন সমুদ্র থেকে তীরের দিকে ফেরে তখন প্রথমে জাহাজের মাস্তুল দেখা যায়, তারপর অর্ধেক জাহাজ এবং শেষে পুরো জাহাজটি দেখতে পাওয়া যায়। গোলকাকার পৃথিবীর গোলকাকার সমুদ্রপৃষ্ঠের জন্যই এরূপ ঘটে।
দিগন্তরেখা : কোনো ফাঁকা মাঠ বা কোনো উঁচু জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকালে মনে হয় আকাশ ও ভূমি যেন দূরে এক জায়গায় বৃত্তাকারে মিলিত হয়েছে। এই বৃত্তরেখাকে দিগন্তরেখা বলে। জাহাজের ডেকে, কিংবা পর্বতের চূড়া কিংবা এরোপ্লেন, যত ওপর থেকে দেখা যাবে ততই বৃত্তাকার দিগন্তরেখা বড়ো মনে হবে। পৃথিবী গোলকাকার বলেই এরূপ সম্ভব।
ধ্রুবতারার অবস্থান : যখন ম্যাপ, কম্পাস ছিল না তখন উত্তর আকাশের ধ্রুবতারা দেখে মানুষ দিক নির্ণয় করত। কিন্তু মজার ব্যাপার যতই উত্তর দিকে যাওয়া যাবে তারাটিকে ততই প্রতি রাতে ওপরের দিকে উঠতে দেখা যাবে। পৃথিবী গোল বলেই এমন হয় । পৃথিবী যদি সমতল হত তাহলে তারাটিকে একই জায়গায় দেখা যেত। আবার পৃথিবীর গোলকাকৃতির জন্যই দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে ধ্রুবতারা দেখা যায় না ।
নাবিকদের ভূপ্রদক্ষিণ : 1519 খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজ ভূপর্যটক ম্যাগেলান 5টি জাহাজ নিয়ে এবং পরে ড্রেক, কুক প্রমুখ নাবিকগণ জাহাজে যাত্রা শুরু করে ক্রমাগত পশ্চিম দিকে গিয়ে শেষ পর্যন্ত একই বন্দরে অর্থাৎ, যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন সেখানে ফিরে আসেন। এই ভূপ্রদক্ষিণের মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, পৃথিবী সমতল নয়, বরং গোলকাকার।
বেডফোর্ড লেভেল পরীক্ষা : 1870 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের বেডফোর্ড খালে এ.আর. ওয়ালেস সমান উচ্চতাবিশিষ্ট তিনটি খুঁটি 1 কিমি অন্তর একই সরলরেখায় রেখে ভেলার সাহায্যে ভাসিয়ে দিয়ে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখেন মাঝের খুঁটির মাথা প্রথম ও তৃতীয় খুঁটির মাথার চেয়ে সামান্য উঁচু হয়ে রয়েছে। পৃথিবী গোলকাকার বলেই এমনটি ঘটে।
প্রত্যক্ষ প্রমাণ : বর্তমানে ওপরের এইসব পর্যবেক্ষণ আর যুক্তির মাধ্যমে পরোক্ষ প্রমাণ আর দরকার পড়ে না। মহাকাশচারীরা মহাশূন্য থেকে স্বচক্ষে উজ্জ্বল নীল গোলকের মতো পৃথিবী দেখেছেন। কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশযান, এরোপ্লেন থেকে ছবি তুলেও দেখা গেছে, পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার।


2. পৃথিবীর অভিগত গোলকাকৃতির সপক্ষে প্রমাণ দাও । ★★★
উত্তর :সাধারণভাবে আমরা পৃথিবীর আকৃতি গোলকাকার বললেও বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা এবং মহাশূন্য থেকে তোলা ছবি থেকে জানা গেছে যে পৃথিবীর আকার ঠিক গোলকাকার নয়, এর উত্তর ও দক্ষিণ মেরু প্রদেশ চাপা এবং নিরক্ষীয় অঞ্চল স্ফীত। আমরা জানি, যেসব গোলাকার বস্তুর উত্তর ও দক্ষিণ দিক সামান্য চাপা এবং পূর্ব ও পশ্চিম দিক সামান্য ফোলা তাকে অভিগত গোলক বলে।সুতরাং পৃথিবীর আকৃতিও অভিগত গোলকের ন্যায়। এর সপক্ষে প্রধান প্রমাণগুলি হল –

পৃথিবীর নিরক্ষীয় ও মেরু ব্যাস : হিসাব করে দেখা গেছে, পৃথিবীর নিরক্ষীয় ব্যাস 12,757 কিমি এবং মেরু ব্যাস 12,714 কিমি। এর থেকে প্রমাণ হয় যে উত্তর-দক্ষিণে মেরু অঞ্চল পূর্ব-পশ্চিমে অপেক্ষা নিরক্ষীয় অঞ্চল (12757- 12714 = 43)  কিমি বেশি ফোলা।
কোনো বস্তুর ওজনের পার্থক্য : পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলক বলে মেরু অঞ্চল নিরক্ষীয় অঞ্চলের চেয়ে পৃথিবীর কেন্দ্রের নিকট অবস্থিত। সেইজন্য মেরু অঞ্চলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় বেশি। আর এই কারণেই কোনো বস্তুকে নিরক্ষীয় অঞ্চলে ওজন করার পর তাকে আবার মেরু অঞ্চলে ওজন করলে বস্তুর ওজন নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় বেশি হয়।
পৃথিবীর আবর্তন গতি : কোনো নরম গোলাকার বস্তুকে (যেমন—মাখা ময়দা, কাদার মণ্ড) খুব জোরে ঘোরালে কেন্দ্রমুখী ও কেন্দ্রবহির্মুখী শক্তির প্রভাবে গোলকটির মধ্যভাগ স্ফীত ও উপর-নীচদুই তল সামান্য চাপা হয়ে থাকে। জন্মলগ্নে পৃথিবী যখন উত্তপ্ত নমনীয় অবস্থায় ছিল তখন আবর্তন গতির প্রভাবে পৃথিবীর আকৃতিও অভিগত গোলকের রূপ নিয়েছে।
নক্ষত্রের উন্নতি কোণের পার্থক্য : নিরক্ষরেখা থেকে কোনো নক্ষত্রকে আকাশের যে স্থানে দেখা যায়, উত্তরে বা দক্ষিণে 111 কিমি অগ্রসর হলে সেই নক্ষত্রকে 1° সরতে দেখা যায়। কিন্তু মেরু বিন্দু থেকে যে-কোনো দিকে ওই একই দূরত্ব অগ্রসর হলে কোনো নক্ষত্রকে 1°-এর কম সরতে দেখা যায়। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চল সামান্য চাপা
ঘড়ির সময়ের পার্থক্য : 1671 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিজ্ঞানী জন রিচার্ড তাঁর 1.5 মিটার লম্বা পেন্ডুলামযুক্ত ঘড়িটি যা প্যারিসশহরে (49° উত্তর) সঠিক সময় দিত সেটিকে নিয়ে যখন নিরক্ষীয় অঞ্চলের কেইন দ্বীপে (O°) যান তখন লক্ষ করেন ঘড়িটি 2½ মিনিট ধীরে চলছে। ঘড়িটির সময় ঠিক করতে তিনি পেন্ডুলামটিকে » ইঞ্চি ছোটো করে দেন। —এই ঘটনার 16 বছর পর নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র থেকে এই বিষয়ের সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। নিরক্ষীয় অঞ্চলের কেইন দ্বীপে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব প্যারিস শহরের তুলনায় কমহওয়ায় ঘড়িটি ধীরে চলত। এর থেকে প্রমাণ হয় যে, নিরক্ষীয় অঞ্চল স্ফীত তাই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব কম এবং মেরুর দিক ক্রমশ চাপা তাই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব বেশি।
পৃথিবীর বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য : 1736-37 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের ‘রয়্যাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স' কুইটো শহর (0°অক্ষাংশ), প্যারিস (49° উত্তর অক্ষাংশ) এবং ল্যাপল্যান্ড (66½° উত্তর)— এই তিনটি স্থানে পৃথিবীর পরিধির এক একটি নির্দিষ্ট চাপের (Arc of diameter) দৈর্ঘ্য পরিমাপ করে। দেখা যায়, কুইটো শহরে এই চাপের দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম এবং অন্য দুই শহরে চাপের দৈর্ঘ্য ক্রমান্বয়ে বেশি। ল্যাপল্যান্ডে চাপের দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হওয়ার কারণ হল, মেরু অঞ্চল অপেক্ষাকৃত চাপা এবং কুইটো শহরে চাপের দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম হওয়ার কারণ হল নিরক্ষীয় অঞ্চল স্ফীত। পরিমাপ করে দেখা গেছে কোনো দ্রাঘিমারেখার ওপর 1 ডিগ্রি অক্ষাংশের বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্য নিরক্ষীয় অঞ্চলে 110.57 কিমি এবং মেরু অঞ্চলে 111.7 কিমি। এর দ্বারা প্রমাণিত হয়, পৃথিবীপৃষ্ঠেরবক্রতা নিরক্ষীয় অঞ্চলে বেশি, মেরু অঞ্চলে কম ৷
কৃত্রিম উপগ্রহের প্রদক্ষিণ : কৃত্রিম উপগ্রহগুলির প্রদক্ষিণ থেকেও লক্ষ করা গেছে যে প্রদক্ষিণকালে কৃত্রিম উপগ্রহগুলি নিরক্ষরেখার উপর এলে তা প্রদক্ষিণ বৃত্তের বাইরে চলে যায় এবং মেরু অঞ্চলে প্রদক্ষিণ বৃত্তের ভিতরে ঢুকে পড়ে। পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার হলে এরূপ হত না ৷ উপরিউক্ত প্রামাণ্য তথ্যগুলির সাহায্যে আমরা জানতে পারি পৃথিবী সম্পূর্ণ গোলাকার নয়, পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের মতো।

3. জিপিএস (GPS) বলতে কী বোঝো? জিপিএস-এর ব্যবহার উল্লেখ করো। ★★★
উত্তর : জিপিএস (GPS) : জিপিএস কথাটির সম্পূর্ণ অর্থ হল Global Positioning System। এটি কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ন্ত্রিত বিশ্বব্যাপী অবস্থান নির্ণায়ক একটি বিশেষ Radio মাধ্যম, যার দ্বারা পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর কোনো স্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমা নির্ণয়ের মাধ্যমে সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা যায়।
সূচনা : সত্তরের দশকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সেই দেশে সামরিক ক্ষেত্রে GPS ব্যবহারে বিশেষ পদক্ষেপ নেয় পরবর্তীকালে 1995 সালের পর এই ব্যবস্থাপনা বিশ্বের আমজনতার মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
GPS-এর কার্যাবলি : GPS একটি কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। যে-কোনো আবহাওয়াতে দুনিয়ার যে-কোনো চলমান অবস্থান আর সময়ের তথ্য সরবরাহ করাটাই এর মূলকাজ। GPS এক ধরনের একমুখী ব্যবস্থা। কারণ, যারা এটি ব্যবহার করে তারা শুধু উপগ্রহ প্রেরিত সংকেত গ্রহণ করতে পারে, কিছু পাঠাতে পারে না।
GPS সিস্টেমের মূল অংশ হল 24টি স্যাটেলাইট এবংGPS রিসিভার (যে উপগ্রহ প্রেরিত সংকেত গ্রহণ করে)। ভূপৃষ্ঠ থেকে 20000 কিমি ওপরে 6টি অরবিটে 24টি স্যাটেলাইট- পৃথিবীর চারদিকে 24 ঘণ্টায় (বা 1 দিনে) দুবার করে ঘুরছে। GPS-এর কার্যপ্রণালীটি খুবই জটিল প্রকৃতির। মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে নির্দিষ্ট একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ভূপৃষ্ঠে মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাব প্রভৃতি বিভিন্ন গ্রাহক যন্ত্র (Receiver) ওই স্যাটেলাইটের তরঙ্গের সঙ্গে নিজের সংযোগস্থাপন করে এবং সেখান থেকে বিশ্বব্যাপী সংযোগ ব্যবস্থাগড়ে তোলে।
উদাহরণ : বর্তমানে 30টিরও বেশি উপগ্রহকে কাজে লাগিয়ে সারা পৃথিবীব্যাপী GPS পরিষেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপগ্রহ হল – Block I, II, IIA, IIR, IIF প্রভৃতি।

GPS-এর ব্যবহার : বর্তমানে পৃথিবীতে কৃত্রিম উপগ্রহেরকার্যপ্রণালী যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে GPS-এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। যেমন : 
সঠিক অবস্থান নির্ণয় : GPS-এর মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের যে-কোনো স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমা, উচ্চতা সহজেই পরিমাপ করা যায়।
যানবাহন সংক্রান্ত তথ্য : জাহাজ, বিমান এমনকি সড়কপথে এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে-কোনো যানের সঠিক দিশা, অবস্থান নির্ণয় করা যায়।
প্রতিরক্ষামূলক কাজ : প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীদের নিকট এটি একটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিমূলক হাতিয়ার।
জরিপ কার্যে : বর্তমানে পৃথিবীর কোনো অঞ্চলকে জরিপ(survey) করার জন্য, শহর পরিকল্পনা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং জরিপ কাজে, মৌজা মানচিত্রে সীমানা নির্ধারণে GPS প্রযুক্তি এক দক্ষ যন্ত্র হিসেবে কাজ করে।
ম্যাপ প্রস্তুতিতে : উপগ্রহ চিত্রের দ্বারা মানচিত্র প্রস্তুতিতে আজকাল GPS পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। 
আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য প্রদান : বায়ুমণ্ডলের আবহাওয়ার বিভিন্ন অবস্থা (ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত) সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দ্রুত আহরণ করতে GPS পরিষেবার সাহায্য নেওয়া হয়।
সঠিক জ্যামিতিক অবস্থান নির্ণয় করতে : Geographi- cal Information System (GIS)-কে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে GPS প্রযুক্তি। ফলে যে-কোনো বস্তু, যেমন Powerlines, Buildings, Property boundaries প্রভৃতির সঠিক জ্যামিতিক অবস্থান নির্ণয় করা যায়।
দুর্গত এলাকা পরিদর্শন : এই পরিষেবার মাধ্যমে পৃথিবীর যে-কোনো দুর্গত অঞ্চল পরিদর্শন ও সেখানে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যায়।


4.  পৃথিবীর আকৃতি পৃথিবীর মতো— ধারণাটি স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করো। অথবা, পৃথিবীর প্রকৃত আকৃতিতে 'Geoid'-এর ধারণাটি লেখো। অথবা, পৃথিবী কি সত্যিই গোল? – প্ৰমাণ করো। 
উত্তর অতি প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর প্রকৃত আকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ভৌগোলিক ভিন্ন ভিন্ন মত প্রদান করেছেন। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন পৃথিবী সম্পূর্ণ গোল, আবার অনেকে পৃথিবীকে পেয়ারা বা ন্যাসপাতির সঙ্গেও তুলনা করেছেন। কিন্তু মহাকাশে প্রেরিত বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহ কিংবা কোনো মহাকাশযান থেকে তোলা চিত্রে ধরা পড়েছে পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের ন্যায় হলেও একে সম্পূর্ণ অভিগত গোলক বলা যায় না। কারণ ------
পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান হিমালয় পর্বতের ‘মাউন্ট এভারেস্ট’ 8848 মিটার উঁচু। আবার সর্বনিম্ন স্থান প্রশান্ত মহাসাগরের ‘মারিয়ানা খাত’ 11,034 মিটার গভীর। সব থেকে উঁচু ও নীচু স্থানের মধ্যে পার্থক্য প্রায় 20 কিমি। (8848 + 11,034) = 19,882 মিটার বা প্রায় 20 কিমি)। তাই পৃথিবীর অনিয়মিত তরঙ্গায়িত গোলকাকৃতি পৃষ্ঠের সঙ্গে বাস্তবিক পক্ষে কোনো পদার্থের আকৃতির মিল নেই। বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহ মারফত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে – (i) পৃথিবীর উত্তর মেরু চাপা নয়, কেবলমাত্র দক্ষিণ মেরুই একটু চাপা। 
(ii) উত্তর গোলার্ধের মধ্য অংশ কিছুটা বসা কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধের মধ্য অংশ কিছুটা ফোলা ৷ 
সুতরাং, পৃথিবীর এরূপ আকৃতি আমাদের পরিচিত কোনো বস্তু যেমন কমলালেবু, ন্যাসপাতি, পেয়ারা বা আপেলেরআকৃতির সঙ্গে তুলনা করা যায় না। তাই বলা হয় পৃথিবীর আকৃতিপৃথিবীর মতো। যাকে ইংরেজিতে বলে ‘জিয়ড' (Geoid)। সমুদ্রের গড় পৃষ্ঠতল অনুযায়ী কল্পিত পৃথিবীর আকৃতিকে জিয়ড (Geoid) বলে। এই আকৃতির উপরিভাগ জিয়ডপৃষ্ঠ (Geoid Surface) নামে পরিচিত।



5. মানুষের আবাসস্থলরূপে পৃথিবীর গ্রহণযোগ্যতা আলোচনা করো। 
    অথবা, পৃথিবী মানুষের বসবাসযোগ্য হয়ে উঠেছে কেন? 
উত্তর সৌরজগতে একমাত্র পৃথিবীতেই প্রাণের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। মানুষের আবাসস্থলরূপে পৃথিবীর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে,
অনুকূল অবস্থান: পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব হল প্রায় 15 কোটি কিলোমিটার। এই দূরত্বের জন্য পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা
প্রায় 15° সেন্টিগ্রেড থাকে। ফলে, পৃথিবী খুব একটা ঠান্ডা কিংবা গরম না হওয়ায় মানুষের বসবাসের পক্ষে খুবই উপযোগী হয়েছে।
পর্যাপ্ত সূর্যালোক : সূর্যালোক ছাড়া উদ্ভিদের বিকাশ সম্ভব নয়, প্রাণীকুলও জীবনধারণ করতে পারবে না। পৃথিবী সূর্য থেকে এমন দূরত্বে থাকে যে পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায়, তাই পৃথিবীতে আবাসস্থল গড়ে উঠেছে।
সুবিস্তৃত জলমণ্ডল : পৃথিবীর » অংশই হল জল। সাগর, মহাসাগর, নদী, নালা, খাল, হ্রদ, পুকুর, ভূগর্ভ কিংবা অন্যান্য জলাশয়ে থাকা জল মানবজীবনকে বিভিন্নভাবে সমৃদ্ধ করে, যেমন— (i) পানযোগ্য জল মানুষের বেঁচে থাকতে ও তৃয়া মেটাতে সাহায্য করে। (ii) পরিবহণের মাধ্যম রূপে কাজ করে। (iii) সেচের কাজে লাগে। (iv) শিল্পপ্রক্রিয়াকরণে লাগে। (v) উদ্ভিদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। (vi) পরোক্ষভাবে বৃষ্টিপাত ঘটায় প্রভৃতি ।
সুবিস্তৃত বায়ুমণ্ডল : ভূপৃষ্ঠের ওপর বিভিন্ন গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত হালকা চাদরের ন্যায় বায়ুমণ্ডলের গুরুত্ব অনেকখানি ।
যেমন— (i) বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের একটি ভারসাম্য বজায় থাকে বলেই CO, এবং O,-এর সাহায্যে পৃথিবীতে উদ্ভিদ ও মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণী সহজেই বেঁচে থাকতে পারে। (ii) বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন পরোক্ষভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে নাইট্রোজেনের চাহিদা মেটায়। (iii) বায়ুমণ্ডলীয় জলীয়বাষ্প বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে পৃথিবীতে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে।
শিলামণ্ডলের প্রভাব : পৃথিবীর বহিরাবরণে থাকা শিলামণ্ডল বিভিন্নভাবে মানুষের অর্থনৈতিক কাজকর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন— (i) মাটিকে কেন্দ্র করে মানুষসহ বিভিন্ন জীবের আশ্রয়স্থল গড়ে ওঠে। (ii) মাটিতে বেড়ে ওঠা উদ্ভিদের কাছ থেকে মানুষ বেঁচে
থাকার জন্য ফল, ফুল, কাঠ, মধু, মোম, বিভিন্ন ওষধি, এমনকি বিশুদ্ধ বায়ু পেয়ে থাকে। (iii) মাটিকেই মানুষ ফসল উৎপাদনের একমাত্র মাধ্যমরূপে বেছে নেয়। (iv) পৃথিবীতে বিভিন্ন শিলায় প্রাপ্ত বিভিন্ন খনিজ সম্পদ (লোহা, তামা, বক্সাইট, ম্যাঙ্গানিজ, অভ্র প্রভৃতি) ও শক্তি সম্পদ (কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি)-কে কেন্দ্র করে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন আবর্তিত হয়।
মোট কথা বারিমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও শিলামণ্ডলের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ পৃথিবীকে বিভিন্ন উদ্ভিদ, প্রাণীর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বাসযোগ্য গ্রহে পরিণত করেছে, বিকাশলাভ করেছে জীবমণ্ডল।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url